তারা কেন হারলেন by শাহেদ চৌধুরী

একতরফা নির্বাচনেও হেরে গেলেন আওয়ামী লীগের ১১ জন বর্তমান এমপি। তাদের মধ্যে একজন নীতিনির্ধারক নেতাসহ দু'জন প্রতিমন্ত্রীও রয়েছেন। তাদের প্রায় সবার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ এমপি হওয়ার পর থেকেই গণবিচ্ছিন্ন হয়ে ছিলেন। তাদের আত্মীয়-স্বজনের বাড়াবাড়ির কারণে মানুষ রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগও রয়েছে একজনের বিরুদ্ধে। ভোটাররা নৌকার মাঝি বদল করেছেন। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়ী করেছেন।
নৌকার মাঝি বদল :বিস্ময়কর বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহর বেলায়। তিনি ফরিদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতি মজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন চৌধুরী) কাছে পরাজিত হয়েছেন। দলের নীতিনির্ধারক নেতাদের একজন হওয়ার পরও কাজী জাফর উল্যাহর পরাজয়কে নানাভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
তাদের দৃষ্টিতে ক্লিন ইমেজ থাকার পরও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক এমপি কাজী জাফর উল্যাহর ভাগ্য বিপর্যয়ের জন্য দায়ী তার সমর্থক আওয়ামী লীগের একশ্রেণীর নেতাকর্মী। তারা নিজেদের স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন ব্যবহার করেছেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন অনেককে। তাদের দুর্ব্যবহারের মাত্রা রীতিমতো সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়ন না হওয়ার বিষয়টি। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় হওয়ায় তার প্রতিপক্ষ নিক্সন চৌধুরী বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তারা নৌকার পরিবর্তন চাননি। নৌকার মাঝি বদল করেছেন। ভাঙ্গার পৌর মেয়র ফায়েজুর রহমানের উদৃব্দতি দিয়ে ফরিদপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক হাসানউজ্জামান জানিয়েছেন, 'আমাদের মতো নেতাদের কারণেই কাজী জাফর উল্যাহর মতো একজন বড় নেতার পরাজয় হয়েছে। কাজী সাহেব কোনো অন্যায় না করলেও তার অনুসারী নেতারা মানুষের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করেছেন।' একই মন্তব্য করেছেন ভাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান সুধীন সরকার মঙ্গল।
নির্বাচনেও অবাঞ্ছিত : মহাজোট সরকারের বেশ দাপুটে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান। একটানা প্রায় পাঁচ বছর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু নির্বাচনে দাপট দেখাতে পারেননি তিনি। ঢাকা-১ আসনে হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের কাছে।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান নেতাকর্মীসহ প্রায় সবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তার বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। স্বজনপ্রীতি এবং আত্মীয়করণের পাশাপাশি পরিবারতন্ত্রেই সীমিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় এই দফতর সম্পাদক। এ ছাড়া একাধিক গণমাধ্যমে অবিরাম তার দুর্নীতির প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।
এসব কারণে দোহার ও নবাবগঞ্জ আওয়ামী লীগ নির্বাচনের আগেই তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল। বেশিরভাগ স্থানীয় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। তারা জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার করেছেন। শেষতক তিনি নির্বাচনেও অবাঞ্ছিত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মান্নান খান বলেছেন, তার প্রতিপক্ষ নির্বাচনে অর্থ ছড়িয়েছেন। সে অর্থের কাছে বিক্রি হয়েছেন নেতাকর্মীদের কেউ কেউ। অবশ্য নবনির্বাচিত এমপি সালমা ইসলাম এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পরাজিত মান্নান খানের ক্ষুব্ধ সমর্থকরা সালমা ইসলামের সমর্থক_ যারা বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের, তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন।
প্রতিশ্রুতিতে অনীহা : রাঙামাটি থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক সত্রং চাকমা জানিয়েছেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অনীহা থাকায় রাঙামাটিতে পরাজিত হয়েছেন পাবর্ত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি পাহাড়ি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় খুব সক্রিয় ছিলেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে পাহাড়ি জনপদের মানুষ এবার তাকে পরিত্যাগ করেছে।
গণবিচ্ছিন্নতার খেসারত : আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সে তুলনায় ঢাকা-৭ আসনে তার প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি মোহাম্মদ সেলিম বেশ পিছিয়ে।
এর পরও কেন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন পরাজিত হলেন_ এ জিজ্ঞাসা সবার। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেছেন, এমপি হওয়ার পরও গণবিচ্ছিন্ন ছিলেন ডা. জালাল। নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার তেমন একটা যোগাযোগ ছিল না। তবে বিএনপি সমর্থকদের সমর্থন হাজি মোহাম্মদ সেলিমকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছিল বলে অনেকে মনে করছেন। হাজি সাহেব দিনরাত তুচ্ছজ্ঞান করে অবিরাম নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন।
পিতা-পুত্রের কীর্তি! : রাজশাহী ব্যুরো থেকে কাজী শাহেদ জানিয়েছেন, জনগণ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় রাজশাহী-৩ আসনের বর্তমান এমপি এবং জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা দলের নতুন প্রার্থী আয়েন উদ্দিনের কাছে হেরেছেন। নওহাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল গফুরেরও একই অভিমত। পবা উপজেলা কৃষক লীগ সভাপতি মুনসুর আলীর দৃষ্টিতে, পরিবারকে হাইলাইট করার জবাব ব্যালটে হয়েছে।
মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম দুর্নীতির কারণে মেরাজ মোল্লা হেরেছেন বলে মন্তব্য করেছেন। এই এমপি ট্রেনচালকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ছিলেন। সংবর্ধনার নামে সোনার নৌকা উপহার নিয়েছেন। দলের ভেতরে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেছেন। কমিশন আদায় ও নিয়োগবাণিজ্য নিয়ে তার বিরুদ্ধে রয়েছে ক্ষোভের আগুন।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে চার ছেলের অপকর্ম। ছোট ছেলে মোস্তাকের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি এখন কারাগারে। বড় ছেলে আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে মোহনপুর থানা এবং মেঝ ছেলে জালাল উদ্দিনের নির্দেশে পবা থানা প্রশাসন ওঠবস করত। মাদক ও জমিজমাসহ সব ধরনের মামলা তাদের মাধ্যমেই দফারফা হতো। এসবের খেসারত দিয়েছেন মেরাজ মোল্লা।
দলীয় বিভক্তি : মেহেরপুর প্রতিনিধি ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, দলীয় বিভক্তির কারণে গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক মেহেরপুর-২ আসনে পরাজিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মকবুল হোসেন। তিনি এ আসনের সাবেক এমপি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত। এমএ খালেকের বিরুদ্ধে দলের আরেকটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নবনির্বাচিত এমপি মকবুল হোসেন। তার গ্রুপে রয়েছেন গাংনী পৌর মেয়র আহম্মদ আলী। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেছেন, কর্মীদের সঙ্গে থাকার ফল পেয়েছেন মকবুল হোসেন। সে সঙ্গে দলীয় বিভক্তির ঘটনায় হেরেছেন এমএ খালেক।
মূর্তিমান আতঙ্ক : নেত্রকোনা প্রতিনিধি খলিলুর রহমান ইকবাল জানিয়েছেন, নেত্রকোনা-১ আসনের বর্তমান এমপি মোশতাক আহমেদ রুহী দলীয় মনোনয়ন পাননি। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছবি বিশ্বাসের কাছে হেরেছেন। অনেকেই বলছেন, স্বজনপ্রীতিসহ কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগে বিভাজনের কারণেই হেরেছেন রুহী।
এমপি হয়েই তিনি পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করেছেন। বিরোধী দল ছাড়াও নিজ দলের লোকজনের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছেন। তার ভয়ে অনেকে এলাকা ছেড়েছেন। কলমাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মঞ্জুরুল হক তারা বলেছেন, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সব কর্মকাণ্ড চালাতেন জনবিচ্ছিন্ন রুহী।
মান্নান ভূঁইয়ার হাঁস : নরসিংদী প্রতিনিধি প্রীতিরঞ্জন সাহা জানিয়েছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও সর্বশেষ এলাকাবাসীসহ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার কারনে নরসিংদী-৩ আসনের বর্তমান এমপি জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন পরাজিত হয়েছেন। তার আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধেও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। নির্বাচনে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিবাদের খেসারতও দিতে হয়েছে মোহনকে। স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লার সঙ্গে ছিলেন বেশিরভাগ নেতাকর্মী। বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া গত নির্বাচনে হাঁস প্রতীক নিয়ে লড়েছেন। এবার হাঁস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী যুদ্ধে নেমে মান্নান ভূঁইয়ার প্রতি সন্মান জানানোর অনুরোধ জানিয়ে সফল হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজ মোল্লা।
ছেলে বটে : দুই ছেলের সীমাহীন অপকর্মের কারণে কুষ্টিয়া-১ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি আফাজ উদ্দিন আহমেদ পরাজিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সাজ্জাদ রানা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরীফ উদ্দিন রিমনের উদৃব্দতি দিয়ে জানিয়েছেন, গত নির্বাচনের পর থেকে আফাজ উদ্দিন আহমেদের দুই ছেলের কাছে জিম্মি ছিল দৌলতপুরের মানুষ।
তাদের নানা অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরূপ প্রভাব নির্বাচনে পড়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বর্তমান এমপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গেও নিবিড় যোগাযোগ না রাখা। স্থানীয় একজন নেতা বলেছেন, আফাজ উদ্দিন আহমেদ এমপি হলেও সবকিছুর নিয়ন্ত্রণে ছিলেন তারা ছেলেরা। উপজেলা প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাও হেনস্তা হয়েছেন তাদের কাছে।
একক কর্তৃত্ব : যশোর-৬ আসনের এমপি শেখ আবদুল ওহাব দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে যশোর-৪ আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি যশোর-৪ আসনের বর্তমান এমপি রণজিৎ কুমার রায়ের কাছে পরাজিত হয়েছেন। নানা অপকর্মের পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতিতে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টার কারণে হেরেছেন অধ্যক্ষ ওহাব। থানা পুলিশসহ স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, সব কিছুতেই ছিল তার একক কর্তৃত্ব। জনপ্রতিনিধির মতামতও গ্রাহ্য করতেন না। অভয়নগর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মালেকও এমন অভিযোগ করেছেন তার বিরুদ্ধে।
যশোর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক তৌহিদুর রহমান জানিয়েছেন, গত নির্বাচনের পর বদলে যান হুইপ অধ্যক্ষ আবদুল ওহাব। তার বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি সন্ত্রাস এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও আছে এই এমপির বিরুদ্ধে। তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখতেন না। এমনকি সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকেও থেকেছেন দূরত্বে। তার প্রশ্রয় পেয়েই নওয়াপাড়া শহরসহ পুরো উপজেলাজুড়ে গামছা বাহিনী, শিমূল বাহিনী নামে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ বাহিনী গড়ে উঠেছে।
উন্নয়ন নয় দুর্নীতি : ঝিনাইদহ প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান টিপু জানিয়েছেন, দলীয় নেতাসহ তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় ঝিনাইদহ-২ আসনে বর্তমান এমপি সফিকুল ইসলাম পরাজিত হয়েছেন। জনবিচ্ছিন্নতাও একটি কারণ। তিনি বেশিরভাগ সময়ই নির্বাচনী এলাকায় থাকতেন না। এলাকার উন্নয়নের পরিবর্তে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত থাকার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনে এর প্রভাব পড়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে পারেননি সফিকুল ইসলাম। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর অভিযোগ, এমপি হওয়ার পর থেকে তাদের খোঁজ-খবর নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি সফিকুল ইসলাম। কোনো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির দাওয়াত পেলে এলাকায় আসতেন।
যুদ্ধাপরাধী : আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি আনোয়ার হোসেন পিরোজপুর-৩ আসনে পরাজিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন পিরোজপুর প্রতিনিধি ফসিউল ইসলাম বাচ্চু। মূলত এই অভিযোগের কারণেই তিনি নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ পরোক্ষভাবে তার বিরোধিতা করেছে।

No comments

Powered by Blogger.