তৈরি হলো কৃত্রিম কিডনি!

গবেষণাগারে তৈরি হৃৎপিণ্ডের সফল প্রতিস্থাপনে গোটা বিশ্ব আলোড়িত হয়েছিল। সেই সাফল্যের আগে, অনেকটা নিশ্চুপেই তৈরি হয়েছিল কৃত্রিম কিডনি। জৈব কিডনির সঙ্গে এর ব্যবহারিক এবং চারিত্রিক কোনো পার্থক্য নেই। শুধু আয়তনে প্রকৃত কিডনির অতি ক্ষুদ্র সংস্করণ। অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডের ইনস্টিটিউট ফর মলিকিউলার বায়োসায়েন্স গবেষকরা সম্প্রতি স্টেম সেলের সাহায্যে ল্যাবরেটরির পেট্রি ডিসের কৃত্রিম পরিবেশে এই ক্ষুদ্র কিডনি সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছেন। তারা আশা করছেন, ভবিষ্যতে বিকল হওয়া রোগীদের নতুন জীবন দেবে এই কৃত্রিম কিডনি। একই সঙ্গে কিডনির ওপর কোনো ওষুধের প্রভাব কেমন, তাও বোঝা যাবে এ কিডনি দিয়ে। কৃত্রিম কিডনির তৈরির শুরুতে বিশেষ তাপমাত্রা এবং রসায়ন মিশ্রণে স্টেম সেল রাখা হয়। এরপর সময়ে সময়ে সেই স্টেম সেলগুলোকে বিভিন্ন অনুঘটক রসায়নে ভেজানো হয়। প্রথমে স্টেম সেলগুলোকে কিডনির ভিতরের কোষের মতো কোষে পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়। গবেষকরা এই পদ্ধতিতে কিডনি গঠনকারী দুটি বিশেষ ধরনের কোষ তৈরিতে সফল হন। কৃত্রিম পরিবেশ সৃষ্টি করে সেই কোষগুলোকে আয়তনে বাড়ানো হতে থাকে। গবেষক দলের প্রধান মেলিসা লিটল জানান, 'প্রথমে আমরা এক ধরনের কোষ তৈরি করতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু দেখলাম দুই ধরনের কোষ তৈরি হয়ে গেছে। এই দুই প্রজাতির কোষের সমষ্টিই কিডনি গঠন করে। এই কিডনি মূলত বহু কোষের জটিল সমষ্টি এবং আয়তনে খুবই ছোট। তবে এই ছোট কিডনিটা সময়ের সঙ্গে আয়তনে বাড়বে।'
অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ৩৩ শতাংশ মানুষ কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত। সমস্যা সমাধানে আছে শুধুই ডায়ালিসিস এবং কিডনি প্রতিস্থাপন। ভারতবর্ষে কিডনির রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সেই তুলনায় কিডনি প্রতিস্থাপনের পরিকাঠামো যথেষ্ট নয়। চিকিৎসকদের মতে, এই গবেষণা কিডনি রোগীদের নতুন আশা দেখাবে।
প্রদীপ সাহা, সূত্র : নেচার

No comments

Powered by Blogger.