প্রভুপ্রেমিকদের মিলনমেলা by জহির উদ্দিন বাবর
পবিত্র নগরী মক্কা ও বায়তুল্লাহ শরিফকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর আল্লাহপ্রেমের মেলা বসে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খোদার প্রেমে বিভোর বান্দারা ভিড় জমান। প্রতিটি মুমিনের হৃদয়কোণে সঞ্চিত আশা_ জীবনে একবার হলেও আল্লাহর ঘরে গিয়ে হাজির হওয়া। আল্লাহর ঘরের মেহমানদের মিছিলে নিজেকে যুক্ত করা।
প্রেমিক ও প্রেমাস্পদের এই মিলনমেলায় শরিক হতে পারার আনন্দ এবং এ থেকে বঞ্চিত হওয়ার খেদ প্রতিটি মুমিনকেই ছুঁয়ে যায়। বায়তুুল্লাহর নির্মাতা হজরত ইবরাহিমের (আ.) মুক্ত আহ্বান যাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করেছে, তারাই ছুটে আসতে পারেন আল্লাহর ঘরের মেহমান হতে।
সারাবিশ্ব থেকে আল্লাহর ঘরের মেহমানরা এবারও জড়ো হয়েছেন মক্কা-মদিনায়। পবিত্র হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে এবার প্রায় ৩০ লাখ মুসলমান ছুটে গেছেন সৌদি আরব। সবাই এখন হজের মূল আহকামগুলো পালন মুহূর্তের অপেক্ষায়। ৭ জিলহজ রাতেই হাজি সাহেবরা চলে যাবেন মিনায়। মক্কা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে তাঁবুর শহরখ্যাত মিনায় তাদেরকে অবস্থান করতে হবে হজের আগে-পরে মোটামুটি পাঁচ দিন। ওয়াজিব এই আমলটি পালন করতে হয় প্রত্যেক হাজিকে। হজরত ইবরাহিমের (আ.) স্মৃতিবিজড়িত মিনা প্রান্তরে অবস্থান করে মূলত হাজি সাহেবরা ইবাদত-বন্দেগি করেন। হাজার হাজার তাঁবুর মধ্যে লাখ লাখ খোদাপ্রেমিক মাওলাকে খুঁজে পাওয়ার সাধনায় রত হন। ৮০০ বছর আগে ইবরাহিম (আ.) তার শিশুপুত্র ইসমাইলকে (আ.) আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্য এই প্রান্তরেই কোরবানি করতে নিয়ে এসেছিলেন। প্রভুর নির্দেশের সামনে আত্মত্যাগের যে নজির ইবরাহিম (আ.) রেখেছিলেন; সে সুন্নত অনুসরণে আজও হাজি সাহেবরা ১০ জিলহজ মিনায় কোরবানি করেন। যেখানে শয়তান ইবরাহিমকে (আ.) ধোঁকা দিয়েছিল, সেখানে প্রতীকী কঙ্কর নিক্ষেপের মাধ্যমে হাজিরা শয়তানকে দূরে তাড়ান। তিন শয়তানকে পর পর তিন দিন কঙ্কর মারা হজের অন্যতম আহকাম। মিনা থেকে হাজিদের যেতে হয় আরাফায়। ৯ জিলহজ আরাফায় দিনব্যাপী অবস্থানই হজের মূল বিধান। সেলাইবিহীন কাপড় পরে লাখ লাখ হাজি সকালেই রওনা হন আরাফা অভিমুখে। সবার মুখে লাব্বাইকের তালবিয়া। প্রভু হে, বান্দা হাজির_ এ আকুতি সবার অন্তরে। হাজার হাজার বছর আগে পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবী আদম ও হাওয়া (আ.) যেখানে দীর্ঘদিন পর মিলিত হয়েছিলেন, সেটাই আজকের আরাফা। এখানেই জাবালে রহমত। দোয়া কবুলের অন্যতম স্থান এটি। সারা বছর যত জনকে ক্ষমা করা হয়, আরাফার দিন সে পরিমাণ লোককে ক্ষমা করেন আল্লাহ। নিমগাছের ছায়াঢাকা আরাফা প্রান্তরে বিশ্বের প্রায় ৩০ লাখ খোদাপ্রেমিক যখন একসঙ্গে হাজির হন এবং প্রত্যেকেই সকাতর আকুতি জানাতে থাকেন মাওলার দরবারে; সে দৃশ্য বলে বা লিখে বোঝানোর নয়। এই আরাফার মাঠেই একদিন মানব জাতিকে একত্র করবেন আল্লাহ। সেদিনের দৃশ্যটুকু কেমন হবে, তা কিছুটা টের পাওয়া যায় হজের দিনের আরাফার প্রান্তর দেখলে। এখানে মসজিদে নামিরায় খুতবা দেন হজের ইমাম। মুসলমানদের গাইডলাইন দেন সে খুতবায়। জোহর ও আসরের নামাজ একত্রে পড়তে হয় এখানে। হাজি সাহেবদের আরাফার দিন কাটে ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত দোয়ায়।
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই হাজি সাহেবরা ছুটে চলেন মুজদালিফার প্রান্তরে। হজের অন্যতম এ বিধানটি পালন করতে হয় এখানে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করে। পরদিন সকালে যেতে হয় মিনায়। কোরবানি, শয়তানকে কঙ্কর মারা এবং বায়তুল্লাহ তওয়াফের মাধ্যমে শেষ হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা। এভাবে হজের প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদতের, প্রভুকে খুঁজে ফেরার। হজের মতো অপূর্ব দৃশ্য আর বিরল মুহূর্ত পৃথিবীতে আর কোনোটি নেই। সেই দৃশ্য প্রতিটি মুসলমানের জন্য কাঙ্ক্ষিতও বটে।
zahirbabor@yahoo.com
সারাবিশ্ব থেকে আল্লাহর ঘরের মেহমানরা এবারও জড়ো হয়েছেন মক্কা-মদিনায়। পবিত্র হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে এবার প্রায় ৩০ লাখ মুসলমান ছুটে গেছেন সৌদি আরব। সবাই এখন হজের মূল আহকামগুলো পালন মুহূর্তের অপেক্ষায়। ৭ জিলহজ রাতেই হাজি সাহেবরা চলে যাবেন মিনায়। মক্কা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে তাঁবুর শহরখ্যাত মিনায় তাদেরকে অবস্থান করতে হবে হজের আগে-পরে মোটামুটি পাঁচ দিন। ওয়াজিব এই আমলটি পালন করতে হয় প্রত্যেক হাজিকে। হজরত ইবরাহিমের (আ.) স্মৃতিবিজড়িত মিনা প্রান্তরে অবস্থান করে মূলত হাজি সাহেবরা ইবাদত-বন্দেগি করেন। হাজার হাজার তাঁবুর মধ্যে লাখ লাখ খোদাপ্রেমিক মাওলাকে খুঁজে পাওয়ার সাধনায় রত হন। ৮০০ বছর আগে ইবরাহিম (আ.) তার শিশুপুত্র ইসমাইলকে (আ.) আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্য এই প্রান্তরেই কোরবানি করতে নিয়ে এসেছিলেন। প্রভুর নির্দেশের সামনে আত্মত্যাগের যে নজির ইবরাহিম (আ.) রেখেছিলেন; সে সুন্নত অনুসরণে আজও হাজি সাহেবরা ১০ জিলহজ মিনায় কোরবানি করেন। যেখানে শয়তান ইবরাহিমকে (আ.) ধোঁকা দিয়েছিল, সেখানে প্রতীকী কঙ্কর নিক্ষেপের মাধ্যমে হাজিরা শয়তানকে দূরে তাড়ান। তিন শয়তানকে পর পর তিন দিন কঙ্কর মারা হজের অন্যতম আহকাম। মিনা থেকে হাজিদের যেতে হয় আরাফায়। ৯ জিলহজ আরাফায় দিনব্যাপী অবস্থানই হজের মূল বিধান। সেলাইবিহীন কাপড় পরে লাখ লাখ হাজি সকালেই রওনা হন আরাফা অভিমুখে। সবার মুখে লাব্বাইকের তালবিয়া। প্রভু হে, বান্দা হাজির_ এ আকুতি সবার অন্তরে। হাজার হাজার বছর আগে পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবী আদম ও হাওয়া (আ.) যেখানে দীর্ঘদিন পর মিলিত হয়েছিলেন, সেটাই আজকের আরাফা। এখানেই জাবালে রহমত। দোয়া কবুলের অন্যতম স্থান এটি। সারা বছর যত জনকে ক্ষমা করা হয়, আরাফার দিন সে পরিমাণ লোককে ক্ষমা করেন আল্লাহ। নিমগাছের ছায়াঢাকা আরাফা প্রান্তরে বিশ্বের প্রায় ৩০ লাখ খোদাপ্রেমিক যখন একসঙ্গে হাজির হন এবং প্রত্যেকেই সকাতর আকুতি জানাতে থাকেন মাওলার দরবারে; সে দৃশ্য বলে বা লিখে বোঝানোর নয়। এই আরাফার মাঠেই একদিন মানব জাতিকে একত্র করবেন আল্লাহ। সেদিনের দৃশ্যটুকু কেমন হবে, তা কিছুটা টের পাওয়া যায় হজের দিনের আরাফার প্রান্তর দেখলে। এখানে মসজিদে নামিরায় খুতবা দেন হজের ইমাম। মুসলমানদের গাইডলাইন দেন সে খুতবায়। জোহর ও আসরের নামাজ একত্রে পড়তে হয় এখানে। হাজি সাহেবদের আরাফার দিন কাটে ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত দোয়ায়।
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই হাজি সাহেবরা ছুটে চলেন মুজদালিফার প্রান্তরে। হজের অন্যতম এ বিধানটি পালন করতে হয় এখানে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করে। পরদিন সকালে যেতে হয় মিনায়। কোরবানি, শয়তানকে কঙ্কর মারা এবং বায়তুল্লাহ তওয়াফের মাধ্যমে শেষ হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা। এভাবে হজের প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদতের, প্রভুকে খুঁজে ফেরার। হজের মতো অপূর্ব দৃশ্য আর বিরল মুহূর্ত পৃথিবীতে আর কোনোটি নেই। সেই দৃশ্য প্রতিটি মুসলমানের জন্য কাঙ্ক্ষিতও বটে।
zahirbabor@yahoo.com
No comments