সরকারি প্রতিবেদন-যুক্তরাজ্যে মানবপাচার বাড়ছে

যুক্তরাজ্যে মানবপাচারের সংখ্যা বাড়ছে। দেশটির মানবপাচার-বিষয়ক আন্তমন্ত্রণালয় দলের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পাচার হয়ে ৯৪৬ জন যুক্তরাজ্যে ঢুকেছে। ২০১০ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭১০। আন্তমন্ত্রণালয় দলের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিবিসি এ খবর দিয়েছে।


চীন, ভিয়েতনাম, নাইজেরিয়া ও ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত অপরাধ সংগঠনগুলো বেশি হুমকির সৃষ্টি করেছে বলেও সতর্ক করেছে দলটি। তারা জানায়, যুক্তরাজ্যে মানবপাচারের সঙ্গে ৯২টি সংগঠন জড়িত। তবে প্রতিবছর কতজন পাচার হয়ে যুক্তরাজ্যে ঢুকছে, এর সঠিক কোনো হিসাব সরকারের কাছে নেই।
আন্তমন্ত্রণালয়ের দলের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাচারের শিকার হয়ে যুক্তরাজ্যে ঢোকা ব্যক্তিদের শনাক্তকারী ও তাদের সহায়তাকারী সংস্থা ন্যাশনাল রেফারাল মেকানিজম গত বছর ৯৪৬ জনকে শনাক্ত করতে সমর্থ হয়। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ৭১২ জন, শিশু ২৩৪টি। ২০১০ সালে পাচার হয়ে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ছিল ৫২৪ জন এবং শিশু ছিল ১৮৬টি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাচারের শিকার হয়ে যুক্তরাজ্যে ঢোকা শিশুদের ভিক্ষা করানোসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়ানো হয়। এ ধরনের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে বলে প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। শিশুদের অধিকার রক্ষায় কর্মরত দ্য চাইল্ড এক্সপ্লয়টেশন অ্যান্ড অনলাইন প্রোটেকশন সেন্টারের হিসাবে প্রতিবছর প্রায় ৩০০ শিশু পাচার হয়ে যুক্তরাজ্যে ঢোকে।
প্রতিবেদনে দুটি ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, দুই ব্যক্তিকে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অবৈধভাবে বিক্রির উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। তবে আইনপ্রয়োগকারী সংশ্লিষ্ট সংস্থা এ চক্রের সন্ধান পায় এবং ওই দুই ব্যক্তিকে পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করে।
লন্ডন মহানগর পুলিশের উপপরিদর্শক কেভিন হাইল্যান্ডের মতে, পাচারের শিকার ব্যক্তিরা সাধারণত লরি বা কনটেইনারে করে যুক্তরাজ্যে ঢোকে। তবে বেশির ভাগই আইনসম্মতভাবে পাচারকারীদের সঙ্গী হিসেবে আসে। তারা উন্নত জীবনের আশায় নিজ দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায়। হাইল্যান্ড জানান, অনেককে ভালো ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়। তবে পরে তারা প্রতারিত হয়। প্রতিবছর লন্ডন পুলিশ পাচারবিষয়ক ১০০টির বেশি মামলা পরিচালনা করে বলেও তিনি জানান।

No comments

Powered by Blogger.