২৮ হাজার সিরীয় 'নিখোঁজ'-'সিরিয়ার সংঘাতে জ্বলবে পুরো মধ্যপ্রাচ্য'

সিরিয়ায় দেড় বছর ধরে চলা সরকারবিরোধী আন্দোলনে অন্তত ২৮ হাজার লোক গুম হয়েছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর আশঙ্কা, নিখোঁজ ব্যক্তিরা সরকারি বাহিনী বা মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর হাতে অপহৃত হয়েছে। সরকারের সন্ত্রাসী তৎপরতা থেকে কেউই নিরাপদ নয় বলেও হুঁশিয়ারি করেছে তারা।


এদিকে সিরিয়াবিষয়ক জাতিসংঘ ও আরব লিগের বিশেষ দূত লাখদার ব্রাহিমি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সিরিয়ার সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যেই আগুন জ্বালিয়ে দেবে।
ইন্টারনেটভিত্তিক আন্দোলনকারী গোষ্ঠী আভাজ জানায়, ২০১১ সালের মার্চে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গুমের শিকার ১৮ হাজার ব্যক্তির নাম আছে তাদের কাছে। এ রকম আরো অন্তত ১০ হাজার ঘটনার খবর জানা আছে তাদের। গুমের শিকার হয়েছে_এমন পরিবারের সদস্যদের সাক্ষ্য অনুযায়ী এ হিসাব তৈরি করেছে আভাজ। সরকার অনুগত বাহিনীগুলোই গুমের এ ঘটনাগুলোর জন্য দায়ী বলেও দাবি করছে সংগঠনটি।
সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস নামের একটি সংগঠনও আভাজের হিসাব সমর্থন করেছে। তবে সাওয়াসিয়া নামের আরেকটি সিরীয় মানবাধিকার সংগঠন অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের সংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি বলে উল্লেখ করেছে।
আভাজের পরিচালক অ্যালিস জে বলেন, 'সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনীগুলো রাস্তা থেকে লোকজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে এবং নির্যাতনকেন্দ্রে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বাজার করতে যাওয়া নারী বা জ্বালানি কিনতে যাওয়া কৃষক, কেউই নিরাপদ নয়। লোকজনকে সন্ত্রস্ত করার জন্যই সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ কাজ করছে। গুম হয়ে যাওয়া প্রত্যেকটি মানুষের পরিণতি নিয়ে তদন্ত করা উচিত এবং জড়িতদের শাস্তি দেওয়া উচিত।'
সিরিয়ার হাসাকা শহরের মানবাধিকারবাদী আইনজীবী মোহাম্মদ খলিল বলেন, 'দুই কারণে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকার গুমের ঘটনা ঘটাচ্ছে। তারা এর মাধ্যমে বিদ্রোহ দমন করতে চাইছে এবং সরকারের বিরোধিতায় যোগ না দিতে লোকজনকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।'
এদিকে সিরিয়াবিষয়ক আন্তর্জাতিক দূত লাখদার ব্রাহিমি বলেছেন, সিরিয়ার সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। লেবাননের রাজধানী বৈরুতে গত বুধবার তিনি বলেন, 'এ সংঘাত শুধু সিরিয়ার ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। হয় এটি শেষ হবে, নয়তো পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। পুরো অঞ্চলকেই তা জ্বালিয়ে দেবে।' ঈদুল আজহার সময় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে আলোচনার জন্য আগামীকাল শনিবার ব্রাহিমির দামেস্ক যাওয়ার কথা রয়েছে।
মারেত আল নুমান শহরে গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় ৪৪ জন মারা গেছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.