স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক-উভয় পক্ষের সমান সহযোগিতা কাম্য
সম্প্রতি ঢাকায় শেষ হলো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক। এ বৈঠক দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বহুকাল ধরেই বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারের কাছে সীমান্তে গুলি ও বাংলাদেশিদের হত্যার ঘটনা উদ্বেগের কারণ হয়ে আছে।
ভারতের সঙ্গে যেকোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সীমান্তে গুলি ও হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে প্রতিবাদ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে চলেছে। ভারতও হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে চলেছে। কিন্তু সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়নি। প্রতিবারই ভারত হত্যাকাণ্ড বন্ধের অঙ্গীকার করে এবং বাংলাদেশের নাগরিক হত্যার মাধ্যমে তা ভঙ্গ করে। এ সপ্তাহের স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে সীমান্তে গুলির ঘটনা কমার কথা উল্লেখ করে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে সীমান্তে গুলি ও অন্যান্য ঘটনা হ্রাস পেয়েছে। তবে অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো, ঢাকায় ভারতের স্বরাষ্ট্রসচিব আর কে সিং যখন সীমান্তে হত্যা কমিয়ে শূন্যের কোঠায় আনার প্রতিশ্রুতি দিলেন তার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্রীনাথপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন মো. রবিউল ইসলাম এবং আহত হয়েছেন আরো পাঁচজন বাংলাদেশি। এতে দেশবাসীর মনে বৈঠকের সফলতা বা প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এ বছর সীমান্তে ছয়জন বাংলাদেশির মৃত্যুর কথা বললেও বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হিসাবে দেখা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ২৮। মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার'-এর হিসাবে দেখা গেছে, ২০১০ সালে সীমান্তে নিহত হয়েছে ৩৭ জন এবং ২০১১ সালে ৩৯ জন।
দীর্ঘদিন ধরেই দিল্লি দাবি করে আসছে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়ে থাকে। কিন্তু এ দাবি সর্বদা সত্য নয় বলে বাংলাদেশ এর তীব্র প্রতিবাদ করেছে। একজন ফেলানী বা নিরস্ত্র রবিউল ইসলাম ভারতের নিরাপত্তার জন্য কিভাবে হুমকি হতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা জানি, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বেশির ভাগ অঞ্চলের দুই পাশেই ফেনসিডিল, গরু থেকে শুরু করে হেরোইন বা অস্ত্রের চোরাকারবার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে আছে। এ ধরনের চোরাকারবার দুই দেশের অর্থনীতিই শুধু নয়, সীমান্তের সামাজিক জীবনের ওপরও ব্যাপক বিরূপ প্রভাব ফেলছে। যুব সমাজকে নেশাগ্রস্ত এবং এক শ্রেণীর মানুষকে অর্থলিপ্সু করে তুলছে। অনেকে সীমান্ত অবৈধভাবে পার হতে চেষ্টা করছে। সীমান্ত প্রহরীদের প্রশ্রয়ে সীমান্ত এলাকায় কাঁচা পয়সার লোভে কৃষিকাজ ফেলে চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়ার আত্মঘাতী প্রবণতাও লক্ষ করা যাচ্ছে। ভারত ও বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে চোরাকারবার এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা নিয়ে সুনির্দিষ্ট শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এ অপরাধে গুলি করে হত্যা করা বাংলাদেশ ও ভারতের আইন, সর্বোপরি আন্তর্জাতিক আইনেরও পরিপন্থী। এটা অমানবিক এবং সব ধরনের আইনের লঙ্ঘন। অন্যদিকে এ ভয়ানক চোরাচালান পেশার সঙ্গে বিএসএফ এবং বিজিবির এক শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আমরা মনে করি, এ ব্যাপারে দুই দেশের ঊর্ধ্বতন মহলের উচিত আন্তরিকতার সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে দুই দেশের যৌথ ইশতেহারে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সদিচ্ছা ছাড়াও পারস্পরিক আইনি সহায়তা, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তান্তর ও সংঘবদ্ধ অপরাধ রোধ করতে তিনটি আলাদা চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে চুক্তির সুফল খুব একটা দৃশ্যমান নয়। এবারের স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আশা ছিল স্থল সীমান্ত চুক্তিটি প্রাধান্য পাবে এবং প্রথম দিকেই থাকবে। কিন্তু দেখা গেছে, বিবৃতির ১৪টি অনুচ্ছেদের মধ্যে ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে এর ঠাঁই হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বিশেষ করে ভারতের নিরাপত্তার প্রশ্নে সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ যে ভূমিকা রেখেছে তাতে দিল্লি বারবার সন্তোষ প্রকাশ করেছে। কিন্তু শুধু সন্তোষ প্রকাশই যথেষ্ট নয়, বাংলাদেশের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর বাস্তবায়নে ভারত যেভাবে কালক্ষেপণ করছে তা অসহযোগিতার শামিল। আমরা সমতার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা প্রসারিত দেখতে চাই। বন্ধ দেখতে চাই নিরীহ বাংলাদেশিদের মৃত্যুর মিছিল।
দীর্ঘদিন ধরেই দিল্লি দাবি করে আসছে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়ে থাকে। কিন্তু এ দাবি সর্বদা সত্য নয় বলে বাংলাদেশ এর তীব্র প্রতিবাদ করেছে। একজন ফেলানী বা নিরস্ত্র রবিউল ইসলাম ভারতের নিরাপত্তার জন্য কিভাবে হুমকি হতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা জানি, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বেশির ভাগ অঞ্চলের দুই পাশেই ফেনসিডিল, গরু থেকে শুরু করে হেরোইন বা অস্ত্রের চোরাকারবার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে আছে। এ ধরনের চোরাকারবার দুই দেশের অর্থনীতিই শুধু নয়, সীমান্তের সামাজিক জীবনের ওপরও ব্যাপক বিরূপ প্রভাব ফেলছে। যুব সমাজকে নেশাগ্রস্ত এবং এক শ্রেণীর মানুষকে অর্থলিপ্সু করে তুলছে। অনেকে সীমান্ত অবৈধভাবে পার হতে চেষ্টা করছে। সীমান্ত প্রহরীদের প্রশ্রয়ে সীমান্ত এলাকায় কাঁচা পয়সার লোভে কৃষিকাজ ফেলে চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়ার আত্মঘাতী প্রবণতাও লক্ষ করা যাচ্ছে। ভারত ও বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে চোরাকারবার এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা নিয়ে সুনির্দিষ্ট শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এ অপরাধে গুলি করে হত্যা করা বাংলাদেশ ও ভারতের আইন, সর্বোপরি আন্তর্জাতিক আইনেরও পরিপন্থী। এটা অমানবিক এবং সব ধরনের আইনের লঙ্ঘন। অন্যদিকে এ ভয়ানক চোরাচালান পেশার সঙ্গে বিএসএফ এবং বিজিবির এক শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আমরা মনে করি, এ ব্যাপারে দুই দেশের ঊর্ধ্বতন মহলের উচিত আন্তরিকতার সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে দুই দেশের যৌথ ইশতেহারে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সদিচ্ছা ছাড়াও পারস্পরিক আইনি সহায়তা, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তান্তর ও সংঘবদ্ধ অপরাধ রোধ করতে তিনটি আলাদা চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে চুক্তির সুফল খুব একটা দৃশ্যমান নয়। এবারের স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আশা ছিল স্থল সীমান্ত চুক্তিটি প্রাধান্য পাবে এবং প্রথম দিকেই থাকবে। কিন্তু দেখা গেছে, বিবৃতির ১৪টি অনুচ্ছেদের মধ্যে ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে এর ঠাঁই হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বিশেষ করে ভারতের নিরাপত্তার প্রশ্নে সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ যে ভূমিকা রেখেছে তাতে দিল্লি বারবার সন্তোষ প্রকাশ করেছে। কিন্তু শুধু সন্তোষ প্রকাশই যথেষ্ট নয়, বাংলাদেশের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর বাস্তবায়নে ভারত যেভাবে কালক্ষেপণ করছে তা অসহযোগিতার শামিল। আমরা সমতার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা প্রসারিত দেখতে চাই। বন্ধ দেখতে চাই নিরীহ বাংলাদেশিদের মৃত্যুর মিছিল।
No comments