সেই 'লাদেন গ্রুপ'ই সক্রিয় 'জামায়াতে আরাকান' নামে by তোফায়েল আহমদ
'জামায়াতে আরাকান' নামের একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের চার কর্মী কক্সবাজারে ধরা পড়েছে। চারজন স্বীকার করেছে, তারাসহ জঙ্গিদের একটি দল বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার পুবে পাহাড়ে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে কৃষি খামার গড়ার নামে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে জমি নিয়ে তাতে বাংকার খনন করে স্থাপন করে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প।
ধরা পড়া জঙ্গিরা বলেছে, উচ্চতর প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে তারা আফগানিস্তান হয়ে সিরিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এই জঙ্গিদের কাছ থেকে কক্সবাজারের পুলিশ 'আত-তাহরীদ' নামের একটি জিহাদি ম্যাগাজিনসহ অন্য কাগজপত্র উদ্ধার করেছে। জিহাদি পত্রিকায় আল-কায়েদাসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের নেতাদের সাক্ষাৎকারসহ বিভিন্ন তথ্য রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত চার জঙ্গির বিরুদ্ধে কক্সবাজার মডেল থানায় রবিবার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল সোমবার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে ম্যাজিস্ট্রেট পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ জঙ্গিদের নিয়ে কালের কণ্ঠে গত ৩০ মার্চ 'পাহাড়ে লাদেন গ্রুপের জমি কেনার ধুম- রহস্য খতিয়ে দেখছে প্রশাসন ও গোয়েন্দারা' শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের দীর্ঘ পাঁচ মাস পর পুলিশ সেই জঙ্গিদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলো। পাহাড়ে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত লোকজনকে এই অঞ্চলের অনেকেই 'লাদেন গ্রুপ' নামে ডেকে থাকে। কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু কক্সবাজার জেলার সীমানাসংলগ্ন বান্দরবানের পাহাড়ে পাঁচ হাজার একরের বেশি পরিমাণ জমি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো রাবার বাগান ও কৃষি খামারের নামে কিনে নিয়েছে।
গত ৩ আগস্ট কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুসকে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে গ্রেপ্তারের পরপরই এই চার জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাওলানা ইউনুসকে ১৩ দিন পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার পর এখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল কক্সবাজারের পুলিশ সুপার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিদের তিনজন ছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জামা'আতুল মুজাহিদীন (জেএমবি) এবং হরকত-উল-জিহাদের (হুজি) সক্রিয় সদস্য। তারা হচ্ছে যথাক্রমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের মুরগিডাঙ্গার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে আবদুল্লাহ ওরফে আবদুল্লাহ কাফি (২৬), দিনাজপুরের পার্বতীপুর পুরাতন বাজারের মৃত ইব্রাহিমের ছেলে ওমর ফারুক ওরফে কাজী ফারুক (৩৩), ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ার কুশমাইলের মৃত হযরত আলীর ছেলে আবদুর মতিন (৩৭) ও কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ বাহারছড়ার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ রুবেল (১৮)। রুবেল কক্সবাজার ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের ছাত্র। তাকে জঙ্গিরা কয়েক মাস আগে দলে ভিড়িয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ডায়েরি থেকে পুলিশ নিশ্চিত হয়, তারা জেএমবি ও হুজির সক্রিয় কর্মী ছিল।
গোপন সূত্রের সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বাবুল আকতার ও জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গত শনিবার রাত থেকে শুরু করে রবিবার পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে শহরের লালদীঘি, বাস টার্মিনাল ও বাহারছড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেন।
কাফি ও কাজী ফারুক বড় মাপের জঙ্গি বলে মনে করছে পুলিশ। তারা দুজন কক্সবাজার শহরে রিকশা ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার ইজি বাইক চালাত। মতিন নামের অন্যজন ফেরিওয়ালা হিসেবে কক্সবাজারে কাজ করে আসছিল। তারা কয়েক মাস আগে পাহাড় থেকে নেমে আসে উচ্চতর জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেওয়ার উদ্দেশ্যে আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় যাওয়ার জন্য। পুলিশ আরো জানায়, এই জঙ্গিরা বান্দরবানের পাহাড়ে আস্তানা গেড়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করেছে কক্সবাজারের পুলিশের কাছে। তবে অস্ত্র নয়, শারীরিক প্রশিক্ষণের কথা তারা দাবি করছে।
পুলিশ সূত্র মতে, পাহাড়ি আস্তানায় ৫০ জনেরও বেশি জঙ্গি সদস্য প্রশিক্ষণ নিত। সেখানে তাদের পরিবারের নারীরাও জঙ্গিবিষয়ক আলোচনায় অংশ নিত। ধরা পড়া জঙ্গিরা আরো বলেছে, আস্তানায় তারেক নামে তাদের একজন নেতা ছিল। তার সঙ্গে কয়েক মাস আগে মনোমালিন্যের কারণে দূরত্ব তৈরি হয়। পুলিশ তাদের এ দাবি যাচাই করে দেখছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার জানান, এসব জঙ্গি রোহিঙ্গাদের যোগাযোগের বিষয়টি এখনো স্বীকার করেনি। মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় রোহিঙ্গা জঙ্গিদের সংগঠিত করে তাদের কাজ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত বছরের ৩০ আগস্ট কক্সবাজারের রামু উপজেলার থোয়াইঙ্গাকাটা নামক এলাকার একটি মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তারকৃত ছয় রোহিঙ্গা জঙ্গির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রয়েছে কি না তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
গ্রেপ্তারকৃত চার জঙ্গির বিরুদ্ধে কক্সবাজার মডেল থানায় রবিবার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল সোমবার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে ম্যাজিস্ট্রেট পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ জঙ্গিদের নিয়ে কালের কণ্ঠে গত ৩০ মার্চ 'পাহাড়ে লাদেন গ্রুপের জমি কেনার ধুম- রহস্য খতিয়ে দেখছে প্রশাসন ও গোয়েন্দারা' শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের দীর্ঘ পাঁচ মাস পর পুলিশ সেই জঙ্গিদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলো। পাহাড়ে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত লোকজনকে এই অঞ্চলের অনেকেই 'লাদেন গ্রুপ' নামে ডেকে থাকে। কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু কক্সবাজার জেলার সীমানাসংলগ্ন বান্দরবানের পাহাড়ে পাঁচ হাজার একরের বেশি পরিমাণ জমি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো রাবার বাগান ও কৃষি খামারের নামে কিনে নিয়েছে।
গত ৩ আগস্ট কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুসকে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে গ্রেপ্তারের পরপরই এই চার জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাওলানা ইউনুসকে ১৩ দিন পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার পর এখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল কক্সবাজারের পুলিশ সুপার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিদের তিনজন ছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জামা'আতুল মুজাহিদীন (জেএমবি) এবং হরকত-উল-জিহাদের (হুজি) সক্রিয় সদস্য। তারা হচ্ছে যথাক্রমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের মুরগিডাঙ্গার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে আবদুল্লাহ ওরফে আবদুল্লাহ কাফি (২৬), দিনাজপুরের পার্বতীপুর পুরাতন বাজারের মৃত ইব্রাহিমের ছেলে ওমর ফারুক ওরফে কাজী ফারুক (৩৩), ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ার কুশমাইলের মৃত হযরত আলীর ছেলে আবদুর মতিন (৩৭) ও কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ বাহারছড়ার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ রুবেল (১৮)। রুবেল কক্সবাজার ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের ছাত্র। তাকে জঙ্গিরা কয়েক মাস আগে দলে ভিড়িয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ডায়েরি থেকে পুলিশ নিশ্চিত হয়, তারা জেএমবি ও হুজির সক্রিয় কর্মী ছিল।
গোপন সূত্রের সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বাবুল আকতার ও জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গত শনিবার রাত থেকে শুরু করে রবিবার পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে শহরের লালদীঘি, বাস টার্মিনাল ও বাহারছড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেন।
কাফি ও কাজী ফারুক বড় মাপের জঙ্গি বলে মনে করছে পুলিশ। তারা দুজন কক্সবাজার শহরে রিকশা ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার ইজি বাইক চালাত। মতিন নামের অন্যজন ফেরিওয়ালা হিসেবে কক্সবাজারে কাজ করে আসছিল। তারা কয়েক মাস আগে পাহাড় থেকে নেমে আসে উচ্চতর জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেওয়ার উদ্দেশ্যে আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় যাওয়ার জন্য। পুলিশ আরো জানায়, এই জঙ্গিরা বান্দরবানের পাহাড়ে আস্তানা গেড়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করেছে কক্সবাজারের পুলিশের কাছে। তবে অস্ত্র নয়, শারীরিক প্রশিক্ষণের কথা তারা দাবি করছে।
পুলিশ সূত্র মতে, পাহাড়ি আস্তানায় ৫০ জনেরও বেশি জঙ্গি সদস্য প্রশিক্ষণ নিত। সেখানে তাদের পরিবারের নারীরাও জঙ্গিবিষয়ক আলোচনায় অংশ নিত। ধরা পড়া জঙ্গিরা আরো বলেছে, আস্তানায় তারেক নামে তাদের একজন নেতা ছিল। তার সঙ্গে কয়েক মাস আগে মনোমালিন্যের কারণে দূরত্ব তৈরি হয়। পুলিশ তাদের এ দাবি যাচাই করে দেখছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার জানান, এসব জঙ্গি রোহিঙ্গাদের যোগাযোগের বিষয়টি এখনো স্বীকার করেনি। মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় রোহিঙ্গা জঙ্গিদের সংগঠিত করে তাদের কাজ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত বছরের ৩০ আগস্ট কক্সবাজারের রামু উপজেলার থোয়াইঙ্গাকাটা নামক এলাকার একটি মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তারকৃত ছয় রোহিঙ্গা জঙ্গির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রয়েছে কি না তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
No comments