অপচিকিৎসায় প্রাণ যায় যায়

বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভূতবাড়ি গ্রামের ভাসানি হক (২৪) প্রেমিকাকে বিয়ে করতে না পারার দুঃখে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরিবারের লোকজন কবিরাজ দিয়ে তাঁর চিকিৎসা করায় তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন তাঁর প্রাণ যায় যায় অবস্থা।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভাসানি হক উপজেলার ভূতবাড়ি গ্রামের তবিবর রহমানের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে টাঙ্গাইল শহরের একটি আসবাবপত্রের দোকানে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। সেখানে দোকানের পাশের বাড়ির এক গৃহবধূর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ অবস্থায় সপ্তাহখানেক আগে ভাসানি তাঁর প্রেমিকাকে বিয়ে করার জন্য গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিন্তু ভাসানির পরিবারের লোকজন এ বিয়েতে রাজি হননি। প্রেমিকাকে বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়ে ভাসানি ৩১ আগস্ট বিষপান করেন। তখন পরিবারের লোকজন তাঁকে চিকিৎসার জন্য পাশের বানিয়াজান (জাংগাল) গ্রামের আলী হোসেনের স্ত্রী সাজেদা খাতুনকে নিয়ে আসেন। সাজেদা খাতুন এলাকায় কবিরাজ হিসেবে পরিচিত। তিনি অসুস্থ ভাসানিকে একটি গাছের পাতার রস পান করান। এরপর রোগীকে ঝাড়ফুঁক ও পানিপড়া দিয়ে চিকিৎসা করেন। এভাবে দুদিন চিকিৎসার পর ভাসানি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ভাসানির ভাই স্বপন মিয়া বলেন, ভাসানির শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে রোববার বিকেলে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হলে ওই দিন সন্ধ্যায় তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এখন পর্যন্ত তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি।
কবিরাজ সাজেদা খাতুন বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কবিরাজি চিকিৎসা করছি। আমার হাতে এ ধরনের অনেক রোগী ভালো হয়েছে। ভাসানি খালি পেটে বিষ পান করায় তাঁর শরীরে গাছান্ত ওষুধ কাজ করে নাই।’
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হোসনে ফিরোজা বলেন, বিষপানের কোনো রোগীকে কবিরাজি চিকিৎসা দেওয়া চলে না। এ ধরনের রোগীর বেলায় প্রথমে পাকস্থলী থেকে বিষ বের করে ফেলতে হয়। পরে তাকে অন্যভাবে শারীরিক চিকিৎসা দিতে হয়। ভাসানির শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। এ কারণে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় পাঠানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.