রাজশাহীর জনপ্রতিনিধি-দশের কল্যাণ চিন্তা শিকেয়!
একজন জনপ্রতিনিধি দশের কল্যাণ চিন্তা করবেন, এমনটাই স্বাভাবিক। নিজের পরিবার-পরিজনের ভালো-মন্দ ভাবনায় থাকবে না, তাও নয়। তাই বলে দেশের ও দশের আয়-উন্নতির ভাবনা বিদায় করে দিয়ে তিনি নিজের পরিবারের উন্নতি নিয়েই বেশি করে ভাবতে থাকবেন, তা কি হয়? তাহলে জনগণ তাকে নির্বাচিত করল কেন, আর কেনইবা তিনি
নির্বাচনের সময় জনগণকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন? আসলে গণতন্ত্র মানে শুধু নির্দিষ্ট সময় অন্তর নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের পদ্ধতিই শুধু নয়, এর সঙ্গে জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং সুশাসন ও জবাবদিহিতার প্রশ্ন জড়িয়ে থাকে। আমাদের দেশের একশ্রেণীর রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধির মধ্যে ভোটের বাইরে গণতন্ত্রের আর তেমন সদার্থ রয়েছে বলে মনে হয় না। তা না হলে বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর জনস্বার্থ ভুলে ব্যক্তি ও পরিবারের স্বার্থকে সবকিছুর ঊধর্ে্ব স্থান দিতে পারেন কী করে! রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাংসদ মেরাজ মোল্লার পরিবার তোষণের যে বয়ান সোমবার সমকালের প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে তা উদ্বেগের। তার মতো অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত আরও অনেক সংসদ সদস্য রয়েছেন, এতেও সংশয় নেই। গণমাধ্যমে নিয়মিত এ ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। এটি জনপ্রতিনিধি সম্পর্কে, এমনকি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। কোনো জনপ্রতিনিধির স্বজন তোষণ-পোষণের দায় নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের নয়। মেরাজ মোল্লা যে স্বজন তোষণে এগিয়ে আছেন সে তথ্য এমনকি তার দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় কর্মীরাও তুলে ধরছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে। জনগণ নিশ্চয়ই দেখতে চায় না যে, তাদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর জনপ্রতিনিধিরা সবসময় নিজের ও পরিবারের আখের গোছাতেই ব্যস্ত থাকুক। তারা তাদের প্রতিনিধিকে সমাজের কল্যাণে, এলাকার উন্নয়নে সবসময় সামনের সারিতে দেখতে চান। যদি সুশাসনের ঘাটতি না পড়ত এবং জবাবদিহিতা থাকত তাহলে জনপ্রিতিনিধিরা মেরাজ মোল্লার মতো নিজের ও পরিবারের আখের গোছানোর কথা ভাবারও সুযোগ পেতেন না। নিজের ও পরিবারের নয়, দশের কল্যাণ চিন্তায় সদাব্যস্ত জনপ্রতিনিধি চায় মানুষ। হায়, এ প্রত্যাশা কখনও পূরণ হবে কি-না কেউ জানে না!
No comments