জাতীয় জরিপ প্রকল্পের তথ্য-ক্ষুধার্ত মানুষ ও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে by শেখ সাবিহা আলম
দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু আছে এমন পরিবারগুলোর শতকরা ৭৫ ভাগের ওপর খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে। বেড়েছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা দুই-ই। দি ন্যাশনাল ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন সার্ভিল্যান্স প্রজেক্টের (এফএসএনএসপি) আওতায় পরিচালিত এক জরিপের তথ্য এটি। জরিপটি পরিচালনা করেছে জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
জরিপে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভোগা পরিবারের সংখ্যা ছিল ৪৫ শতাংশের কম। মাত্র এক বছর পর ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত যেসব পরিবারে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু আছে, তাদের ৭৫ শতাংশ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে। খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বাড়ার হার ছিল ৬৯ শতাংশ। ২০১০ সালে ১৬ শতাংশ পরিবার ক্ষুধার্ত ছিল, ২০১১ সালে তা ওঠে ৩১ শতাংশে।
প্রকল্পটির প্রধান পরামর্শক মির্জা আলতাফ প্রথম আলোকে বলেন, এই গবেষণায় ক্ষুধার্ত বলতে বোঝানো হয়েছে এমন একটি অবস্থাকে, যখন এক-দুই দিন থেকে শুরু করে ১০ দিন পর্যন্ত মানুষের কাছে খাবার ছিল না বা খাবার কিনে খাওয়ার মতো টাকাপয়সা ছিল না। আর খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বলতে বোঝানো হয়েছে এমন এক পরিস্থিতিকে, যখন মানুষ ৩-১০ দিন পর্যন্ত পর্যাপ্ত খাবার পায়নি।
জাতিসংঘ শিশু তহবিলের পুষ্টি বিভাগের প্রধান মো. মহসীন বলেন, ‘খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সঙ্গে পুষ্টি-পরিস্থিতির প্রত্যক্ষ যোগাযোগ আছে। পুষ্টি-পরিস্থিতি ভালো নয়। তবে সরকার দরিদ্র মানুষকে খাদ্যসহায়তা দেওয়ায় তারা অন্তত বেঁচে আছে।’
গত ১৩ ডিসেম্বর জরিপটির উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত অর্থবছরে ওএমএস, ভিজিএফ, ভিজিডিসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে প্রায় ২২ লাখ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে। এসব খাদ্যশস্যের কারণে দরিদ্র লোকের দানাদার খাদ্যশস্যের কোনো অভাব হয়নি। কিন্তু সব নাগরিকের জন্য পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা এখনো সম্ভব হয়নি।
পুষ্টি-পরিস্থিতি বিষয়ে দেশের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এস কে রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে বণ্টনের অব্যবস্থাপনা বহুকাল ধরে চলে আসছে। মাছ-মাংস, ডিম, দুধ, ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবারের উৎপাদন কম। বেশির ভাগ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা নেই। পুষ্টিজ্ঞানেরও অভাব রয়েছে। সব মিলিয়ে একটা জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’
তবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে সারা বছর খাদ্যশস্য বিতরণের সরকারি উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।
জরিপে যা আছে: জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ দেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি-পরিস্থিতির ওপর ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার দফায় চারটি পৃথক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল, ২০১০ সালের জুন থেকে আগস্ট, ২০১০ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এবং ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সিলেট, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগে খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা। এর আওতায় ছিল ১০ হাজার ৯৮০টি পরিবার।
প্রতিবেদন বলছে, ২০১০ সালের প্রথম চার মাসের তুলনায় ২০১১ সালের প্রথম দিকে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে ৬৯ শতাংশ। এর মধ্যে চাঁদপুর, ঢাকা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, মাদারীপুর , মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, রাজশাহী, শরীয়তপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, বগুড়া, জামালপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, খুলনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, শরীয়তপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে খাদ্যনিরাপত্তাহীন পরিবার ও ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে এ ৪৩টি জেলার মধ্যে নয়টি জেলার কয়েকটি উপজেলায় আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক ছিল।
এই ক্ষুধা ও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা নারী ও শিশুদের পুষ্টি-পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, ২০১০ সালে বয়সের তুলনায় কম ওজনের শিশুর সংখ্যা ছিল ৩১ শতাংশ, ২০১১ সালে তা হয় ৩৩ শতাংশ।
চারটি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পুষ্টিহীনতা। ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পরিচালিত জরিপে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোয় রুগ্ণ শিশুর সংখ্যা ছিল ১২ দশমিক ৫। জুন থেকে আগস্টে এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ২ শতাংশে। অন্যান্য অঞ্চলেও রুগ্ণ শিশুর সংখ্যা বেড়েছে।
পুষ্টি-পরিস্থিতির বিবেচনায় সিলেট অঞ্চল সবচেয়ে পিছিয়ে আছে বলে এ প্রতিবেদনের গবেষকেরা উল্লেখ করেছেন। ২০১০ সালের প্রথম ভাগে সারা দেশে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ। সিলেটে এই হার ছিল ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ। খর্বাকৃতি শিশুর সংখ্যাও এ অঞ্চলে বেশি, ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ। উচ্চতার তুলনায় ওজন কম এমন শিশুর সংখ্যা গোটা দেশে ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ, সিলেটে ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ। রুগ্ণ শিশু গোটা দেশে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, সিলেটে ১১ দশমিক ৪।
গরুর মাংস, ডিম, চাল, আটা, আলু, মসুর ও খেসারি ডাল, সরিষা ও সয়াবিন তেল—এই দ্রব্যগুলো কিনতে প্রতিটি পরিবারের খরচ বেড়েছে ৯ শতাংশ।
গর্ভকালীন অবস্থায় নারীদের আয়রন ও ফলিক এসিডসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় বেশি। জরিপে দেখা গেছে, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে নারীদের মাত্র ৩৮ ও ৪১ শতাংশ যথাযথ পরিমাণে এ দুটি উপাদান গ্রহণ করে। এই হারকে ‘অগ্রহণযোগ্য ও নিম্নমানের’ আখ্যা দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর ফলাফল হিসেবে দুর্বল শিশুর জন্ম হয় ও তারা ধারাবাহিকভাবে নানা রোগে আক্রান্ত হয়। জাতীয় জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের সাবেক পরিচালক ফাতিমা পারভীন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসের মাধ্যমে পুষ্টি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। যেসব জায়গা অনগ্রসর, সেখানে মা ও শিশুদের সম্পূরক খাবার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন এ কর্মসূচিতে।’
প্রকল্পটির প্রধান পরামর্শক মির্জা আলতাফ প্রথম আলোকে বলেন, এই গবেষণায় ক্ষুধার্ত বলতে বোঝানো হয়েছে এমন একটি অবস্থাকে, যখন এক-দুই দিন থেকে শুরু করে ১০ দিন পর্যন্ত মানুষের কাছে খাবার ছিল না বা খাবার কিনে খাওয়ার মতো টাকাপয়সা ছিল না। আর খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বলতে বোঝানো হয়েছে এমন এক পরিস্থিতিকে, যখন মানুষ ৩-১০ দিন পর্যন্ত পর্যাপ্ত খাবার পায়নি।
জাতিসংঘ শিশু তহবিলের পুষ্টি বিভাগের প্রধান মো. মহসীন বলেন, ‘খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সঙ্গে পুষ্টি-পরিস্থিতির প্রত্যক্ষ যোগাযোগ আছে। পুষ্টি-পরিস্থিতি ভালো নয়। তবে সরকার দরিদ্র মানুষকে খাদ্যসহায়তা দেওয়ায় তারা অন্তত বেঁচে আছে।’
গত ১৩ ডিসেম্বর জরিপটির উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত অর্থবছরে ওএমএস, ভিজিএফ, ভিজিডিসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে প্রায় ২২ লাখ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে। এসব খাদ্যশস্যের কারণে দরিদ্র লোকের দানাদার খাদ্যশস্যের কোনো অভাব হয়নি। কিন্তু সব নাগরিকের জন্য পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা এখনো সম্ভব হয়নি।
পুষ্টি-পরিস্থিতি বিষয়ে দেশের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এস কে রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে বণ্টনের অব্যবস্থাপনা বহুকাল ধরে চলে আসছে। মাছ-মাংস, ডিম, দুধ, ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবারের উৎপাদন কম। বেশির ভাগ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা নেই। পুষ্টিজ্ঞানেরও অভাব রয়েছে। সব মিলিয়ে একটা জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’
তবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে সারা বছর খাদ্যশস্য বিতরণের সরকারি উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।
জরিপে যা আছে: জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ দেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি-পরিস্থিতির ওপর ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার দফায় চারটি পৃথক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল, ২০১০ সালের জুন থেকে আগস্ট, ২০১০ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এবং ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সিলেট, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগে খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা। এর আওতায় ছিল ১০ হাজার ৯৮০টি পরিবার।
প্রতিবেদন বলছে, ২০১০ সালের প্রথম চার মাসের তুলনায় ২০১১ সালের প্রথম দিকে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে ৬৯ শতাংশ। এর মধ্যে চাঁদপুর, ঢাকা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, মাদারীপুর , মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, রাজশাহী, শরীয়তপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, বগুড়া, জামালপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, খুলনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, শরীয়তপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে খাদ্যনিরাপত্তাহীন পরিবার ও ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে এ ৪৩টি জেলার মধ্যে নয়টি জেলার কয়েকটি উপজেলায় আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক ছিল।
এই ক্ষুধা ও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা নারী ও শিশুদের পুষ্টি-পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, ২০১০ সালে বয়সের তুলনায় কম ওজনের শিশুর সংখ্যা ছিল ৩১ শতাংশ, ২০১১ সালে তা হয় ৩৩ শতাংশ।
চারটি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পুষ্টিহীনতা। ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পরিচালিত জরিপে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোয় রুগ্ণ শিশুর সংখ্যা ছিল ১২ দশমিক ৫। জুন থেকে আগস্টে এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ২ শতাংশে। অন্যান্য অঞ্চলেও রুগ্ণ শিশুর সংখ্যা বেড়েছে।
পুষ্টি-পরিস্থিতির বিবেচনায় সিলেট অঞ্চল সবচেয়ে পিছিয়ে আছে বলে এ প্রতিবেদনের গবেষকেরা উল্লেখ করেছেন। ২০১০ সালের প্রথম ভাগে সারা দেশে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ। সিলেটে এই হার ছিল ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ। খর্বাকৃতি শিশুর সংখ্যাও এ অঞ্চলে বেশি, ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ। উচ্চতার তুলনায় ওজন কম এমন শিশুর সংখ্যা গোটা দেশে ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ, সিলেটে ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ। রুগ্ণ শিশু গোটা দেশে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, সিলেটে ১১ দশমিক ৪।
গরুর মাংস, ডিম, চাল, আটা, আলু, মসুর ও খেসারি ডাল, সরিষা ও সয়াবিন তেল—এই দ্রব্যগুলো কিনতে প্রতিটি পরিবারের খরচ বেড়েছে ৯ শতাংশ।
গর্ভকালীন অবস্থায় নারীদের আয়রন ও ফলিক এসিডসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় বেশি। জরিপে দেখা গেছে, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে নারীদের মাত্র ৩৮ ও ৪১ শতাংশ যথাযথ পরিমাণে এ দুটি উপাদান গ্রহণ করে। এই হারকে ‘অগ্রহণযোগ্য ও নিম্নমানের’ আখ্যা দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর ফলাফল হিসেবে দুর্বল শিশুর জন্ম হয় ও তারা ধারাবাহিকভাবে নানা রোগে আক্রান্ত হয়। জাতীয় জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের সাবেক পরিচালক ফাতিমা পারভীন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসের মাধ্যমে পুষ্টি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। যেসব জায়গা অনগ্রসর, সেখানে মা ও শিশুদের সম্পূরক খাবার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন এ কর্মসূচিতে।’
No comments