বিরোধীদলীয় নেত্রীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী-তত্ত্বাবধায়ক এলে জেলেও যেতে হতে পারে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা এক-এগারোর সময় সফল হতে পারেনি, নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিল, তারাই এখন তত্ত্বাবধায়কের কথা বলছে। আর তাদের সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেত্রী সুর মেলাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে তখন পারিনি এবার কোনো রকমে তত্ত্বাবধায়ক আনতে পারলে আটঘাট বেঁধে নামব, যাতে দেশে আর নির্বাচন না হয়।’ শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেত্রীর উদ্দেশে এ সময় বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক এলে যে তারা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়ে
দেবে, তার নিশ্চয়তা কী। বরং জেলেও যেতে হতে পারে। খাল কেটে কুমির আনার দরকার কী?’ গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে ছাত্রলীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন উপলক্ষে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকে তত্ত্বাবধায়ক তত্ত্বাবধায়ক করছে। তারা ভোটে জিততে পারবে না, কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশ আছে। ফাঁকফোকর গলিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কোনো রকমে ক্ষমতায় যাওয়া যায় কি না—এটাই তাদের উদ্দেশ্য। তাদের চোখে আওয়ামী লীগের কিছুই ভালো লাগে না। তাদের সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (বিরোধীদলীয় নেত্রী) কি ভুলে গেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাঁর দুই ছেলেকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে মুচলেকা রেখে বিদেশ পাঠিয়ে দিয়েছিল। তাঁকে বিদেশ পাঠানোর সব প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছিল। তখন আমি দেশে না এলে দেশে গণতন্ত্র আসত না। তাঁকেও দেশ ছেড়ে চলে যেতে হতো।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওখানে তো তাঁর (বিরোধীদলীয় নেত্রী) লোক জিতেছেন। অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে বলেই তাঁর প্রার্থী জিতেছে। তিনি এখন কী বলবেন? ইভিএমে তো ভোট কারচুপি হয়নি। তাই যদি হয়, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দরকার কী? যেখানে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী এবং শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হচ্ছে।
বিদ্যুৎ নিয়ে সমালোচকদের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি, তখন সারা দেশেই বিদ্যুতের হাহাকার ছিল। ক্ষমতায় আসার তিন বছরের মধ্যে ৪৯টি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছি। দুই হাজার ৯০০ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করেছি। যখন আজ বিদ্যুতের অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করেছে, তখন একশ্রেণীর লোক এয়ারকন্ডিশনে বসে তত্ত্বকথা শোনাচ্ছেন।’
সম্প্রতি সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে একটি বৈঠকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই বৈঠকে বলেছি, রেন্টাল পাওয়ার সব বন্ধ করে দিই। তাহলে তেল কেনা লাগবে না, দামও বাড়াতে হবে না। কোনটা করবেন? আমরা যেখানে আলো দিতে চাই, তারা অন্ধকারে রাখতে চায়। এত যন্ত্রণা দিলে তো লাইন বন্ধ করে দিতে হয়।’
ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
No comments