ইভিএম পদ্ধতি-প্রযুক্তির সুফল মিলেছে

নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেল কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে। এর আগে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি ওয়ার্ডের নির্বাচন ইভিএম পদ্ধতি অনুসরণ করে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে সাফল্য লাভের কারণেই নির্বাচন কমিশন কুমিল্লার নির্বাচনের পুরোটাই ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের উৎসাহ পায়। সেখানেও তারা সফল


হয়েছে শতভাগ। দুটি নির্বাচনে আংশিক এবং একটি নির্বাচনে শতভাগ পদ্ধতিটি ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং ভোটারদের কাছ থেকে কোনো আপত্তি পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই বলা যায়, বাংলাদেশে ইভিএম ব্যবহারে এখন আর আপত্তি থাকার কথা নয়। তার পরও প্রধান বিরোধী দল অর্থাৎ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ইভিএম মেশিন ব্যবহারে আপত্তি দেখিয়ে আসছে। চট্টগ্রামে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর বিজয়, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয়, সর্বশেষ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিএনপির দলত্যাগী প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার পর ইভিএম ব্যবহারে বিএনপির বিরোধিতা করারও নৈতিক ভিত্তি থাকে না। কারণ এসব নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীরা ইভিএমের ব্যবহারের ব্যাপারে কোনো আপত্তি দেখায়নি। প্রতিটি নির্বাচনেই ভোটাররা ইভিএম মেশিন ব্যবহার করে নিজেরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রত্যেকেই এ সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলেছেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এক লাখ ২৭ হাজার ৭২ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ না করা হলে সোয়া লাখের বেশি ভোট গুনতে হতো। এর ফলে সময়ক্ষেপণ ও জটিলতা দুই-ই হতো। জনবলও অনেক কম নিয়োগ করেই এত বড় কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা গেছে। স্বচ্ছতার বিষয়টিও প্রতিষ্ঠিত হলো। আগে ব্যালট ছিনতাই করার মতো অভিযোগ পাওয়া যেত। যেহেতু ইভিএম ব্যবহার করলে ব্যালটেরই প্রয়োজন হয় না, তাই সেখানে ব্যালট ছিনতাইয়েরও কোনো সুযোগ থাকছে না। দেরিতে নির্বাচনের ফল প্রকাশের সুযোগে নির্বাচনী ফলাফল বদলে ফেলার যে অভিযোগ অতীতে উঠেছিল, তাও আর থাকছে না। ইভিএম ব্যবহার করলে ব্যালট ছাপার বিড়ম্বনা থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে। আর্থিক ক্ষতি থেকেও রক্ষা পাবে সরকার। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় এর শরিক হওয়াই শ্রেয়। আমরা আশা করি, এ পদ্ধতির প্রতি বিরুদ্ধবাদীদের সহযোগিতা কিংবা সমর্থন এখন সংগত কারণেই মিলবে। নির্বাচন কমিশনের দৃঢ়তার প্রসঙ্গটি এখানে মুখ্য। এককথায় স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করার স্বার্থে যা মঙ্গলজনক_তাই করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.