নরসিংদীর পৌর মেয়রকে গুলি করে হত্যা
নরসিংদী পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদী শহরে তাঁর ওপর হামলা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। এখানেই রাত সোয়া ১১টায় চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পৌর মেয়র লোকমান (৪২) গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরে বিক্ষুব্ধ জনতা রাত নয়টা থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। তারা শহরের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালায়।
লোকমান হোসেনকে হত্যার প্রতিবাদে আজ বুধবার ভোর ছয়টা থেকে নরসিংদীতে ৭২ ঘণ্টা হরতালের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগ। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে লোকমান হোসেন দলীয় কিছু সমর্থক নিয়ে শহরের বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আসেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কার্যালয়ে ঢুকে মুখোশ পরা কয়েকজন সন্ত্রাসী অতর্কিতে লোকমান হোসেনকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। তাঁর গায়ে চারটি গুলি লাগে।
সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন মেয়র লোকমানকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল বাকি বলেন, ‘লোকমান হোসেনের পেটে, বুকের বাঁ পাশে ও ডান হাতে মোট চারটি গুলি লেগেছে। আমরা তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় পেয়েছি। তাই দেরি না করে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।’
ঢাকা মেডিকেল: আহত পৌর মেয়রকে রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সোয়া ঘণ্টা ধরে তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচার করেন। রাত সোয়া ১১টায় চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেলের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের আবাসিক সার্জন হরিদাস সাহা প্রথম আলোকে বলেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের বুকের বাঁ দিকে একটি ও পেটের বাঁ পাশে তিনটি গুলির চিহ্ন রয়েছে।
পৌর মেয়রকে হাসপাতালে আনার পর কয়েক শ মানুষ সেখানে ভিড় করে। নরসিংদীর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হাসপাতালের সামনে জড়ো হন। পুরো হাসপাতালে ভিড় জমে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়। একপর্যায়ে হাসপাতালের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেলে আসা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঠিকাদার সুদীপ্ত রায় প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভুঁইয়া, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্তাজ ভুঁইয়াসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ২০-২৫ জন নেতাসহ তাঁরা দলীয় কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় তাঁরা ঝালমুড়ি খাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হঠাৎ কার্যালয়ের দরজা জোরে ধাক্কা দিয়ে মুখোশ পরা এক যুবক ভেতরে ঢুকে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে ওই যুবক মেয়র লোকমানকে লক্ষ্য করে পর পর চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর দ্রুত বাইরে চলে যায়। যাওয়ার সময় বাইরে আরও কয়েকটি গুলি ছোড়ে মুখোশধারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, যুবকেরা সংখ্যায় চার-পাঁচজন ছিল। তাদের কয়েকজন কার্যালয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। গুলি করার পর তারা সবাই একসঙ্গে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
নিহত মেয়র লোকমানের চাচা কুতুব উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, দলের কমিটি গঠন নিয়ে কোন্দল ছিল। তার জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
নিহতের বোন সাজিয়া আফরিন হাসপাতালের গেটে বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বিচার চাই।’
মেয়র লোকমান গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাঁর শত শত কর্মী-সমর্থক বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা প্রথমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভেলানগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং কয়েক শ যান আটকা পড়ে। এ সময় ৫০টিরও বেশি বাস ও ট্রাকে ভাঙচুর করা হয়। রাত সাড়ে ১১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা সড়কে অবস্থান করছিলেন।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সার্কিট হাউসের সামনে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তাঁরা সার্কিট হাউসের দরজা-জানালায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এগিয়ে গেলে তাঁদের সঙ্গে জনতার পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে কর্মী-সমর্থকদের একটি অংশ রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে কর্মরত ব্যক্তিদের পিটিয়ে বের করে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় স্টেশনের দোকান ও বিভিন্ন কার্যালয়ে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নরসিংদী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
লোকমান হোসেন ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি নরসিংদীর ব্যাপক উন্নয়ন করেন। দ্বিতীয়বার তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হন।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, লোকমান হোসেনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন মেয়র লোকমানকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল বাকি বলেন, ‘লোকমান হোসেনের পেটে, বুকের বাঁ পাশে ও ডান হাতে মোট চারটি গুলি লেগেছে। আমরা তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় পেয়েছি। তাই দেরি না করে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।’
ঢাকা মেডিকেল: আহত পৌর মেয়রকে রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সোয়া ঘণ্টা ধরে তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচার করেন। রাত সোয়া ১১টায় চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেলের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের আবাসিক সার্জন হরিদাস সাহা প্রথম আলোকে বলেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের বুকের বাঁ দিকে একটি ও পেটের বাঁ পাশে তিনটি গুলির চিহ্ন রয়েছে।
পৌর মেয়রকে হাসপাতালে আনার পর কয়েক শ মানুষ সেখানে ভিড় করে। নরসিংদীর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হাসপাতালের সামনে জড়ো হন। পুরো হাসপাতালে ভিড় জমে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়। একপর্যায়ে হাসপাতালের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেলে আসা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঠিকাদার সুদীপ্ত রায় প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভুঁইয়া, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্তাজ ভুঁইয়াসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ২০-২৫ জন নেতাসহ তাঁরা দলীয় কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় তাঁরা ঝালমুড়ি খাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হঠাৎ কার্যালয়ের দরজা জোরে ধাক্কা দিয়ে মুখোশ পরা এক যুবক ভেতরে ঢুকে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে ওই যুবক মেয়র লোকমানকে লক্ষ্য করে পর পর চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর দ্রুত বাইরে চলে যায়। যাওয়ার সময় বাইরে আরও কয়েকটি গুলি ছোড়ে মুখোশধারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, যুবকেরা সংখ্যায় চার-পাঁচজন ছিল। তাদের কয়েকজন কার্যালয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। গুলি করার পর তারা সবাই একসঙ্গে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
নিহত মেয়র লোকমানের চাচা কুতুব উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, দলের কমিটি গঠন নিয়ে কোন্দল ছিল। তার জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
নিহতের বোন সাজিয়া আফরিন হাসপাতালের গেটে বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বিচার চাই।’
মেয়র লোকমান গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাঁর শত শত কর্মী-সমর্থক বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা প্রথমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভেলানগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং কয়েক শ যান আটকা পড়ে। এ সময় ৫০টিরও বেশি বাস ও ট্রাকে ভাঙচুর করা হয়। রাত সাড়ে ১১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা সড়কে অবস্থান করছিলেন।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সার্কিট হাউসের সামনে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তাঁরা সার্কিট হাউসের দরজা-জানালায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এগিয়ে গেলে তাঁদের সঙ্গে জনতার পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে কর্মী-সমর্থকদের একটি অংশ রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে কর্মরত ব্যক্তিদের পিটিয়ে বের করে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় স্টেশনের দোকান ও বিভিন্ন কার্যালয়ে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নরসিংদী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
লোকমান হোসেন ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি নরসিংদীর ব্যাপক উন্নয়ন করেন। দ্বিতীয়বার তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হন।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, লোকমান হোসেনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
No comments