আমদানি বিকল্প ফসলে সুদ ভর্তুকি কাজে আসছে না by শেখ আবদুল্লাহ
আমদানি বিকল্প ফসল উৎপাদনে ব্যাংক ঋণের সুদে দেওয়া ভর্তুকি কোনো কাজে আসছে না; বরং এ সুবিধা চলে যাচ্ছে করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের পকেটে। অন্যদিকে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের মসলা, ডালসহ আমদানি বিকল্প শস্য আমদানি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে বিভিন্ন মসলা পণ্য আমদানিতে ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার ব্যয় হয়েছে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে এ আমদানি বেড়েছে প্রায় ৪০০ শতাংশ। এ ছাড়া ডাল আমদানিতে প্রায় পৌনে ৪০০ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। এসব ফসল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বিভিন্ন ধরনের মসলা আমদানি বাবদ ৩২ মিলিয়ন ডলার, ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ৭৬ মিলিয়ন ডলার, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৮০ মিলিয়ন ডলার, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৬২ মিলিয়ন ডলার এবং ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১০৯ মিলিয়ন ডলারের আমদানি ব্যয় হয়েছে। অন্যদিকে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ডাল আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ১৬৪ মিলিয়ন ডলার। ২০০৯-১০ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ মিলিয়ন ডলারে। এদিকে ২০১০-১১ অর্থবছরে সরকারি ব্যাংকগুলো আমদানি বিকল্প শস্য চাষে ৭০ কোটি ৮১ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে দেখা গেেেছ, এসব ঋণের বেশির ভাগই রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া হয়েছে। এবার এই ঋণ প্রকৃত কৃষকদের মাঝে বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কড়াকড়ি আরোপ করায় ঋণ বিতরণ কমে গেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মাত্র ২১ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ বিতরণ হয়েছিল ২৩ লাখ টাকা।
মসলা চাষে কৃষকদের অনীহা, বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন না হওয়া, কৃষক পর্যায়ে পর্যাপ্ত মূল্য না পাওয়া, চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমে যাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং কিছু করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মসলা রফতানির কারণে মসলা আমদানি বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতিমধ্যে দেশে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হয়েছে, যারা প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানি করছে। এসব প্রতিষ্ঠান অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের সঙ্গে মসলাও প্রক্রিয়া করে রফতানি করছে। এতে যেমন ভর্তুকির মাধ্যমে উৎপাদিত মসলা রফতানি হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের চাহিদা মেটাতে মসলা আমদানি করতে ব্যয় করতে হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্র্রা। এ ছাড়া এসব পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি থাকায় দামও কমছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসেবে মরিচ, রসুন, আদা, হলুদ, পেঁয়াজ, জিরা, ধনিয়ার আমদানি বাড়ছে। যদিও সম্প্রতি পেঁয়াজের আমদানি কমছে। সম্প্রতিকালে সবচেয়ে বেশি বাড়ছে শুকনো মরিচ আমদানি। ১০ বছরের ব্যবধানে শুকনো মরিচ আমদানি বেড়েছে ১০ গুণ। ১০ বছর আগে যেখানে শুকনো মরিচ আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল সাড়ে ৬ কোটি টাকা, গত অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ১০০ কোটি টাকারও বেশি। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে আরও কমে শুকনা মরিচ আমদানি হয় ১৫১ টন। আমদানিমূল্য এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা। তবে ২০০৯-১০ অর্থবছরে পুরো চিত্র পাল্টে যায়। এ বছর আমদানি হয় তিন হাজার ২৩৬ টন। আমদানিমূল্য ২৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। তবে গত অর্থবছরে আমদানি হয় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ শুকনা মরিচ। এ বছর আমদানি হয় ১০ হাজার ৪০৭ টন শুকনা মরিচ, যার আমদানিমূল্য ১০১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। দেশে মরিচের চাষ বেড়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। বেড়েছে আদা, রসুন ও হলুদ আমদাানি। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দেশে ৫ হাজার ১০১ টন আদা আমদানি হয়েছিল। এতে ব্যয় হয়েছিল ১৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আর ২০১০-১১ অর্থবছরে আমদানি হয় ৩২ হাজার ৩৪৬ টন, যার আমদানি ব্যয় ২৩২ কোটি টাকা। গত তিন অর্থবছর ধরে প্রায় একই পরিমাণ আদা আমদানি হচ্ছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দেশে ১২ হাজার ৮৪১ টন রসুন আমদানি হয়েছিল যার দাম ছিল ১৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরেও আমদানির পরিমাণ কমে হয় অর্ধেক। তবে ৩৪ হাজার ৩১৬ টন রসুনের আমদানিমূল্য পড়ে ৩৮৭ কোটি টাকা। এর আগের দুটি অর্থবছরে রসুনের আমদানি ছিল এর দ্বিগুণ। পরিমাণের দিক থেকে হলুদ আমদানিতে গত ছয় বছরে খুব বেশি হেরফের হয়নি। তবে দাম বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমদানি ব্যয় বেশি গুনতে হয়েছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৪ হাজার ২৭৪ টন হলুদ আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ১৭ কোটি ১৪ লাখ টন। আর ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩ হাজার ৪৩২ টন হলুদ আমদানিতে ব্যয় হয় ৭৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দেশে এক লাখ ৭৪ হাজার ৪৩৬ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল। এতে ব্যয় হয়েছিল ২৩৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরে আমদানি আরও কমে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৯৮ টনে। আমদানি ব্যয়ও কমে দাঁড়ায় ৪৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চাষাাবাদেও পরিবর্তন এসেছে। বৈচিত্র্যময় শস্য চাষে কৃষক এখন আর তেমন আগ্রহী নন। কৃষকরাও এখন প্রধান খাদ্যশস্য ধান চাষেই মনোযোগী বেশি। ধানের উৎপাদনও বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কমেছে মসলা উৎপাদন। আর সেজন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে দেশে মসলা আমদানি বাড়ছে। অথচ আমদানি নয়, এক সময় বরং মসলা রফতানিতেই সুখ্যাতি ছিল বাংলাদেশের। এখনও কিছু মসলা বিদেশে রফতানি হয়। তবে প্রধান মসলা পণ্যগুলো বহুলাংশেই আমদানিনির্ভর। এক বছর আমদানি কম হয় তো পরের বছর দু'তিন গুণ বেড়ে যায়।
মসলা চাষে কৃষকদের অনীহা, বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন না হওয়া, কৃষক পর্যায়ে পর্যাপ্ত মূল্য না পাওয়া, চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমে যাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং কিছু করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মসলা রফতানির কারণে মসলা আমদানি বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতিমধ্যে দেশে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হয়েছে, যারা প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানি করছে। এসব প্রতিষ্ঠান অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের সঙ্গে মসলাও প্রক্রিয়া করে রফতানি করছে। এতে যেমন ভর্তুকির মাধ্যমে উৎপাদিত মসলা রফতানি হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের চাহিদা মেটাতে মসলা আমদানি করতে ব্যয় করতে হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্র্রা। এ ছাড়া এসব পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি থাকায় দামও কমছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসেবে মরিচ, রসুন, আদা, হলুদ, পেঁয়াজ, জিরা, ধনিয়ার আমদানি বাড়ছে। যদিও সম্প্রতি পেঁয়াজের আমদানি কমছে। সম্প্রতিকালে সবচেয়ে বেশি বাড়ছে শুকনো মরিচ আমদানি। ১০ বছরের ব্যবধানে শুকনো মরিচ আমদানি বেড়েছে ১০ গুণ। ১০ বছর আগে যেখানে শুকনো মরিচ আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল সাড়ে ৬ কোটি টাকা, গত অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ১০০ কোটি টাকারও বেশি। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে আরও কমে শুকনা মরিচ আমদানি হয় ১৫১ টন। আমদানিমূল্য এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা। তবে ২০০৯-১০ অর্থবছরে পুরো চিত্র পাল্টে যায়। এ বছর আমদানি হয় তিন হাজার ২৩৬ টন। আমদানিমূল্য ২৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। তবে গত অর্থবছরে আমদানি হয় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ শুকনা মরিচ। এ বছর আমদানি হয় ১০ হাজার ৪০৭ টন শুকনা মরিচ, যার আমদানিমূল্য ১০১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। দেশে মরিচের চাষ বেড়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। বেড়েছে আদা, রসুন ও হলুদ আমদাানি। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দেশে ৫ হাজার ১০১ টন আদা আমদানি হয়েছিল। এতে ব্যয় হয়েছিল ১৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আর ২০১০-১১ অর্থবছরে আমদানি হয় ৩২ হাজার ৩৪৬ টন, যার আমদানি ব্যয় ২৩২ কোটি টাকা। গত তিন অর্থবছর ধরে প্রায় একই পরিমাণ আদা আমদানি হচ্ছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দেশে ১২ হাজার ৮৪১ টন রসুন আমদানি হয়েছিল যার দাম ছিল ১৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরেও আমদানির পরিমাণ কমে হয় অর্ধেক। তবে ৩৪ হাজার ৩১৬ টন রসুনের আমদানিমূল্য পড়ে ৩৮৭ কোটি টাকা। এর আগের দুটি অর্থবছরে রসুনের আমদানি ছিল এর দ্বিগুণ। পরিমাণের দিক থেকে হলুদ আমদানিতে গত ছয় বছরে খুব বেশি হেরফের হয়নি। তবে দাম বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমদানি ব্যয় বেশি গুনতে হয়েছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৪ হাজার ২৭৪ টন হলুদ আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ১৭ কোটি ১৪ লাখ টন। আর ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩ হাজার ৪৩২ টন হলুদ আমদানিতে ব্যয় হয় ৭৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দেশে এক লাখ ৭৪ হাজার ৪৩৬ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল। এতে ব্যয় হয়েছিল ২৩৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরে আমদানি আরও কমে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৯৮ টনে। আমদানি ব্যয়ও কমে দাঁড়ায় ৪৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চাষাাবাদেও পরিবর্তন এসেছে। বৈচিত্র্যময় শস্য চাষে কৃষক এখন আর তেমন আগ্রহী নন। কৃষকরাও এখন প্রধান খাদ্যশস্য ধান চাষেই মনোযোগী বেশি। ধানের উৎপাদনও বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কমেছে মসলা উৎপাদন। আর সেজন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে দেশে মসলা আমদানি বাড়ছে। অথচ আমদানি নয়, এক সময় বরং মসলা রফতানিতেই সুখ্যাতি ছিল বাংলাদেশের। এখনও কিছু মসলা বিদেশে রফতানি হয়। তবে প্রধান মসলা পণ্যগুলো বহুলাংশেই আমদানিনির্ভর। এক বছর আমদানি কম হয় তো পরের বছর দু'তিন গুণ বেড়ে যায়।
No comments