আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল : জামায়াতের ৪ নেতার বিরুদ্ধে ৫ ডিসেম্বর অভিযোগ দাখিল
মানবতাবিরোধী অপরাধের কথিত অভিযোগে আটক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আগামী ৫ ডিসেম্বর দাখিল করা হবে। এছাড়া ট্রাইব্যুনাল এই চার জামায়াত নেতার জামিন আবেদন ষষ্ঠবারের মতো নাকচ করে দেন। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক মাওলানা নিজামীকে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে সকাল ৯টায় নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে এবং মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে ৯টা ৫৫ মিনিটে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে ট্রাইব্যুনালের কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসামি পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুন্সি আহসান কবির আদালতে বলেন, মুজাহিদকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে একটি প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। অথচ আরামদায়ক গাড়িতে আসামিদের হাজির করার জন্য আদালতের নির্দেশ রয়েছে। এসময় জামায়াত নেতাদের আইনজীবী তাজুল ইসলাম আদালতে বলেন, আসামিদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বলতে দিচ্ছে না পুলিশ। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে কোনো সন্তোষজনক উত্তরও দিচ্ছে না তারা। এ সময় আদালত তাদের বক্তব্য শোনেন এবং পরে এমন হবে না বলে আইনজীবীদের আশ্বস্ত করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী আদালতে বলেন, নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আলাদা ৪টি তদন্ত প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। তা ভালো করে দেখতে হবে। যতটুকু দেখছি তাতে ভালো প্রমাণাদি রয়েছে। আমরা আদালতে ফরমাল চার্জের জন্য সময় প্রার্থনা করছি। এ সময় আদালত আগামী ৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিলের দিন ধার্য করেন।
এপর্যায়ে জামায়াত নেতাদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানিতে আইনজীবী তাজুল ইসলাম আদালতে বলেন, আজ ফরমাল চার্জ জমা দেয়ার কথা ছিল। তারা দেননি। জামায়াত নেতাদের ১৫ মাস জেলে আটক রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত আমরা ৬ বার তাদের জামিন চেয়েছি। তাজুল বলেন, তাদের দু’জন মন্ত্রী ছিলেন। ৪ জন দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতা। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থাও ভালো নয়। তাদের সবার বয়স ৬০-এর ওপরে। জামিন দিলে তারা কোথাও পালিয়ে যাবেন না। তাদের পাসপোর্ট প্রয়োজনে সারেন্ডার করা হবে। আইন অনুযায়ী তারা জামিন পান। অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার সবকিছু বিবেচনা করে তাদের আদালতে জামিনের প্রার্থনা করেন। এ সময় প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, তারা জামিনযোগ্য নয়। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, লুট, গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের ৮ ধারা মতে দক্ষ তদন্ত কর্মকর্তারা তদন্ত করেছেন। তাদের জামিন দিলে বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। এ সময় আদালত বলেন, বিচার বাধাগ্রস্ত হবে এরকম কথা বলেন কেন। বিচার বাধাগ্রস্ত কোথায় হলো? এসময় রাষ্ট্রপক্ষের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, যারা প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী সেই ১৯৫ জনকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমা করে দিয়েছিল। এখন যাদের আটক করা হয়েছে, তারা ’৭১ সালে ছাত্র-যুবক ছিলেন। ন্যায়বিচার করতে হলে সেই ১৯৫ জনের বিচার করতে হবে। তাজুল বলেন, জামিন দিলে বিচার বাধাগ্রস্ত হয় না। আমরা বিচার চাই, আসামিরাও বলছেন, ন্যায়বিচার চান। আসলে বিচারে বাধার কথা বলে ন্যায়বিচার প্রাপ্তিকে বাধাগ্রস্ত করাই তাদের উদ্দেশ্য। পরে আদালত জামায়াতের ৪ নেতার জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।
এরপর আসামি পক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম আরেকটি আবেদন করেন। তিনি অডিও এবং ভিজুয়াল রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে সাক্ষ্য সংরক্ষণের আরজি জানান। এ ব্যাপারে পরে নির্দেশনা দেয়ার কথা জানান ট্রাইব্যুনাল।
আরেক আবেদনে তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলা একাডেমী ও ন্যাশনাল লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ আসামি পক্ষকে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন সংবাদপত্র ও অন্যান্য নথি ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। এ বিষয়ে তিনি ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা চান। ট্রাইব্যুনাল তথ্য অধিকার আইনের আওতায় বাংলা একাডেমী ও ন্যাশনাল লাইব্রেরিকে তথ্য প্রদানের জন্য আবেদন করার পরামর্শ দেন।
অপর এক আবেদনে তাজুল ইসলাম বলেন, সাক্ষীদের নাম-ঠিকানা আমরা এখনও পাইনি। তাদের নাম-ঠিকানা দিতে রাষ্ট্রপক্ষ আইনগত বাধ্য। আদালত বলেন, সাক্ষীদের নাম-ঠিকানা দিলে তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। পরে আদেশে এ আবেদন নাকচ করে দেন।
সবশেষে প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম আদালতকে জানান, একাত্তরে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। উত্তরে আদালত জানান, আমরা অবহিত হলাম।
প্রসঙ্গত মাওলানা নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে গত বছরের ২১ জুলাই থেকে তদন্ত শুরু করা হয়। অন্য মামলায় তারা গ্রেফতার হলেও এ চারজনকে গত বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেফতার দেখানো হয়।
সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে ট্রাইব্যুনালের কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসামি পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুন্সি আহসান কবির আদালতে বলেন, মুজাহিদকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে একটি প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। অথচ আরামদায়ক গাড়িতে আসামিদের হাজির করার জন্য আদালতের নির্দেশ রয়েছে। এসময় জামায়াত নেতাদের আইনজীবী তাজুল ইসলাম আদালতে বলেন, আসামিদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বলতে দিচ্ছে না পুলিশ। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে কোনো সন্তোষজনক উত্তরও দিচ্ছে না তারা। এ সময় আদালত তাদের বক্তব্য শোনেন এবং পরে এমন হবে না বলে আইনজীবীদের আশ্বস্ত করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী আদালতে বলেন, নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আলাদা ৪টি তদন্ত প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। তা ভালো করে দেখতে হবে। যতটুকু দেখছি তাতে ভালো প্রমাণাদি রয়েছে। আমরা আদালতে ফরমাল চার্জের জন্য সময় প্রার্থনা করছি। এ সময় আদালত আগামী ৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিলের দিন ধার্য করেন।
এপর্যায়ে জামায়াত নেতাদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানিতে আইনজীবী তাজুল ইসলাম আদালতে বলেন, আজ ফরমাল চার্জ জমা দেয়ার কথা ছিল। তারা দেননি। জামায়াত নেতাদের ১৫ মাস জেলে আটক রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত আমরা ৬ বার তাদের জামিন চেয়েছি। তাজুল বলেন, তাদের দু’জন মন্ত্রী ছিলেন। ৪ জন দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতা। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থাও ভালো নয়। তাদের সবার বয়স ৬০-এর ওপরে। জামিন দিলে তারা কোথাও পালিয়ে যাবেন না। তাদের পাসপোর্ট প্রয়োজনে সারেন্ডার করা হবে। আইন অনুযায়ী তারা জামিন পান। অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার সবকিছু বিবেচনা করে তাদের আদালতে জামিনের প্রার্থনা করেন। এ সময় প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, তারা জামিনযোগ্য নয়। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, লুট, গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের ৮ ধারা মতে দক্ষ তদন্ত কর্মকর্তারা তদন্ত করেছেন। তাদের জামিন দিলে বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। এ সময় আদালত বলেন, বিচার বাধাগ্রস্ত হবে এরকম কথা বলেন কেন। বিচার বাধাগ্রস্ত কোথায় হলো? এসময় রাষ্ট্রপক্ষের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, যারা প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী সেই ১৯৫ জনকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমা করে দিয়েছিল। এখন যাদের আটক করা হয়েছে, তারা ’৭১ সালে ছাত্র-যুবক ছিলেন। ন্যায়বিচার করতে হলে সেই ১৯৫ জনের বিচার করতে হবে। তাজুল বলেন, জামিন দিলে বিচার বাধাগ্রস্ত হয় না। আমরা বিচার চাই, আসামিরাও বলছেন, ন্যায়বিচার চান। আসলে বিচারে বাধার কথা বলে ন্যায়বিচার প্রাপ্তিকে বাধাগ্রস্ত করাই তাদের উদ্দেশ্য। পরে আদালত জামায়াতের ৪ নেতার জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।
এরপর আসামি পক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম আরেকটি আবেদন করেন। তিনি অডিও এবং ভিজুয়াল রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে সাক্ষ্য সংরক্ষণের আরজি জানান। এ ব্যাপারে পরে নির্দেশনা দেয়ার কথা জানান ট্রাইব্যুনাল।
আরেক আবেদনে তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলা একাডেমী ও ন্যাশনাল লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ আসামি পক্ষকে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন সংবাদপত্র ও অন্যান্য নথি ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। এ বিষয়ে তিনি ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা চান। ট্রাইব্যুনাল তথ্য অধিকার আইনের আওতায় বাংলা একাডেমী ও ন্যাশনাল লাইব্রেরিকে তথ্য প্রদানের জন্য আবেদন করার পরামর্শ দেন।
অপর এক আবেদনে তাজুল ইসলাম বলেন, সাক্ষীদের নাম-ঠিকানা আমরা এখনও পাইনি। তাদের নাম-ঠিকানা দিতে রাষ্ট্রপক্ষ আইনগত বাধ্য। আদালত বলেন, সাক্ষীদের নাম-ঠিকানা দিলে তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। পরে আদেশে এ আবেদন নাকচ করে দেন।
সবশেষে প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম আদালতকে জানান, একাত্তরে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। উত্তরে আদালত জানান, আমরা অবহিত হলাম।
প্রসঙ্গত মাওলানা নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে গত বছরের ২১ জুলাই থেকে তদন্ত শুরু করা হয়। অন্য মামলায় তারা গ্রেফতার হলেও এ চারজনকে গত বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেফতার দেখানো হয়।
No comments