ভালোবাসার স্রোত আইভীর বাড়িতে by দিলীপ কুমার মণ্ডল,
বিপুল বিজয়ের আনন্দের রেশ কাটেনি নারায়ণগঞ্জবাসীর। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত অবধি হাজারো মানুষের যেন একটাই ঠিকানা_শহরের দেওভোগে আইভীর বাসা। নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে একনজর দেখা আর শুভেচ্ছা জানাতেই এই গণস্রোত। কেউ ফুল হাতে, কেউ মিষ্টি, কেউবা ছোট্ট শিশুকে নিয়ে হাজির হচ্ছেন আইভীর বাসায়। মোটকথা, আইভী ক্রেজে ভাসছে নারায়ণগঞ্জ। আইভী যেন তাদের আইডল।
প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে যাওয়া নির্বাচনী ফলে কর্মী-সমর্থকরা যেন অনেকটাই আত্মহারা। তবে এত সব জনস্রোতেও সব কিছুতেই রয়েছে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। নবনির্বাচিত মেয়র ডা. আইভীও হাসিমুখে জনমানুষের ভালোবাসার প্রত্যুত্তর দিচ্ছেন। প্রায় এক মাসের ক্লান্তিকর ও ঘাম ঝরানো পরিশ্রম তাঁকে কাবু করতে পারেনি। প্রতিদিনই মানুষের সঙ্গে মিশছেন সাবলীলভাবে। তাদের আদর, স্নেহ, ভালোবাসা ও শুভেচ্ছাকে গ্রহণ করছেন অন্তর দিয়ে। অনুভব করছেন, এবার জনমানুষের এই স্নেহ-ভালোবাসার প্রতিদান দেওয়ার পালা।
রিকশাচালক ফজর আলী গতকাল মঙ্গলবার সকালে আইভীকে দেখতে এসেছিলেন দেওভোগের বাসায়। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বাসা থেকে বেরিয়ে বললেন, 'তাঁরে দেখনের শখ আছিলো, দেইখ্যা মনটা ভইরা গেল।'
বন্দর সোনাকান্দা এলাকার হোসিয়ারি শ্রমিক জামসেদ এসেছিলেন সকাল ১১টার দিকে। শত মানুষের ভিড় ঠেলে নবনির্বাচিত মেয়রকে একনজর দেখে তাঁর প্রতিক্রিয়া, 'আমার ভোটটা কাজে লাগছে।'
শহরের গলাচিপা এলাকার ফনিন্দ্র চন্দ্র সরকার ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন আইভীর বাসায়। তিনি বলেন, 'একজন ক্লিন ইমেজের মানুষ মেয়র হয়েছেন। এ জন্যই তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম।' তাঁর আশা, মেয়র আইভী দলমতে ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করবেন।
বাবুরাইল এলাকার আলী হোসেন বয়সের ভারে ন্যুব্জ। এ বয়সেও নাতির কাঁধে ভর দিয়ে আইভীকে দেখতে চলে এসেছেন দেওভোগের বাসায়। ভিড় ঠেলে ভেতরে ঢুকতে কষ্ট হচ্ছিল দেখে কয়েকজন কর্মী তাঁকে সহায়তা করলেন। নবনির্বাচিত মেয়রের মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করলেন,
'বাপের নাম রাখছো মা, দোয়া করি বাঁইচ্যা থাকো।' আইভীও প্রায় বাবার বয়সী আলী হোসেনের স্নেহের পরশে সিক্ত হলেন। বাবা আলী আহমেদ চুনকার কথা মনে পড়ে যাওয়ায়ই হয়তো অশ্রুসিক্ত হলেন তিনি।
নির্বাচন হয়ে গেছে গত রবিবার। এরপর বিরামহীনভাবে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত অবধি গণমানুষের ঢল নামছে আইভীর বাসায়। বাড়ির ভেতরে-বাইরে কেবলই মানুষ আর মানুষ। ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে আঙিনা। দলমত, জাতিভেদে সবাই আসছে, ভিড় করছে তাদের প্রিয় মানুষ আইভীকে দেখার জন্য। শীতলক্ষ্যা পারের গণমানুষের নেতা আইভী এখন শুধু নারায়ণগঞ্জের নন; নারায়ণগঞ্জ ছাপিয়ে তিনি এখন সারা দেশের মানুষেরই প্রিয় নেত্রী। তাঁকে দেখতে আসা মানুষের মুখে একটা কথাই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে, 'বাপের বেটি আইভী চুনকার চেয়েও এক ডিগ্রি ওপরে।'
গতকালও বিভিন্ন ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা তাঁদের মেয়রকে শুভেচ্ছা জানাতে হাজির হন তাঁর বাসায়। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিনুল্লাহ নূরীর নেতৃত্বে একটি দলও আইভীকে শুভেচ্ছা জানাতে আসে। হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহজালালের নেতৃত্বে একটি দল এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা নতুন মেয়রকে শুভেচ্ছা জানাতে দেওভোগের বাসায় হাজির হন।
নবনির্বাচিত মেয়র শীতলক্ষ্যা-কন্যা আইভীও তাঁদের শুভেচ্ছার জবাব দিয়েছেন কখনো হাত নেড়ে, মহিলাদের জড়িয়ে ধরে আর শিশুদের আদর করে। তিনি উপস্থিত লোকজন ও সংবাদকর্মীদের বলেছেন, 'আমি সবাইকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করতে চাই।' এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, 'আমার হয়তো পছন্দের দল আছে; কিন্তু আমি সবার মেয়র। দল-মতের ঊধর্ে্ব উঠে আমি কাজ করে যাব, অতীতে যেমনটি করেছি।' সর্ব প্রথম কোন কাজটি করবেন_এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'শহরের যানজট ও জলাবদ্ধতা দূর করা।'
বিশাল বিজয়ের নেপথ্যে...
আইভীর এই বিশাল বিজয়ের রহস্য কী? এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক থেকে সদ্য পদত্যাগকারী এস এম আকরাম কালের কণ্ঠকে জানান, 'আইভীর অ্যাডভান্টেজ হলো সে সিটিং মেয়র ছিল। জনগণের কাছে তার একটা ভালো ইমেজ তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক নারী ভোটারের সহানুভূতি ছিল তার প্রতি। তদুপরি শেষ মুহূর্তে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় বিএনপির সমর্থকরা তৈমূরের বিকল্প হিসেবে আইভীকেই বেছে নিয়েছেন।'
নির্বাচনে আইভীর পাশে থেকে দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জি এম আরাফাত। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, আইভীর প্রতি মানুষের বিশ্বাস ছিল। তিনি এর আগে যে কমিটমেন্ট করেছেন, সেটা পূরণ করার চেষ্টা করেছেন। এ কারণে দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মেয়র হিসেবে আইভীকে বেছে নিয়েছেন।
রিকশাচালক ফজর আলী গতকাল মঙ্গলবার সকালে আইভীকে দেখতে এসেছিলেন দেওভোগের বাসায়। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বাসা থেকে বেরিয়ে বললেন, 'তাঁরে দেখনের শখ আছিলো, দেইখ্যা মনটা ভইরা গেল।'
বন্দর সোনাকান্দা এলাকার হোসিয়ারি শ্রমিক জামসেদ এসেছিলেন সকাল ১১টার দিকে। শত মানুষের ভিড় ঠেলে নবনির্বাচিত মেয়রকে একনজর দেখে তাঁর প্রতিক্রিয়া, 'আমার ভোটটা কাজে লাগছে।'
শহরের গলাচিপা এলাকার ফনিন্দ্র চন্দ্র সরকার ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন আইভীর বাসায়। তিনি বলেন, 'একজন ক্লিন ইমেজের মানুষ মেয়র হয়েছেন। এ জন্যই তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম।' তাঁর আশা, মেয়র আইভী দলমতে ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করবেন।
বাবুরাইল এলাকার আলী হোসেন বয়সের ভারে ন্যুব্জ। এ বয়সেও নাতির কাঁধে ভর দিয়ে আইভীকে দেখতে চলে এসেছেন দেওভোগের বাসায়। ভিড় ঠেলে ভেতরে ঢুকতে কষ্ট হচ্ছিল দেখে কয়েকজন কর্মী তাঁকে সহায়তা করলেন। নবনির্বাচিত মেয়রের মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করলেন,
'বাপের নাম রাখছো মা, দোয়া করি বাঁইচ্যা থাকো।' আইভীও প্রায় বাবার বয়সী আলী হোসেনের স্নেহের পরশে সিক্ত হলেন। বাবা আলী আহমেদ চুনকার কথা মনে পড়ে যাওয়ায়ই হয়তো অশ্রুসিক্ত হলেন তিনি।
নির্বাচন হয়ে গেছে গত রবিবার। এরপর বিরামহীনভাবে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত অবধি গণমানুষের ঢল নামছে আইভীর বাসায়। বাড়ির ভেতরে-বাইরে কেবলই মানুষ আর মানুষ। ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে আঙিনা। দলমত, জাতিভেদে সবাই আসছে, ভিড় করছে তাদের প্রিয় মানুষ আইভীকে দেখার জন্য। শীতলক্ষ্যা পারের গণমানুষের নেতা আইভী এখন শুধু নারায়ণগঞ্জের নন; নারায়ণগঞ্জ ছাপিয়ে তিনি এখন সারা দেশের মানুষেরই প্রিয় নেত্রী। তাঁকে দেখতে আসা মানুষের মুখে একটা কথাই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে, 'বাপের বেটি আইভী চুনকার চেয়েও এক ডিগ্রি ওপরে।'
গতকালও বিভিন্ন ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা তাঁদের মেয়রকে শুভেচ্ছা জানাতে হাজির হন তাঁর বাসায়। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিনুল্লাহ নূরীর নেতৃত্বে একটি দলও আইভীকে শুভেচ্ছা জানাতে আসে। হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহজালালের নেতৃত্বে একটি দল এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা নতুন মেয়রকে শুভেচ্ছা জানাতে দেওভোগের বাসায় হাজির হন।
নবনির্বাচিত মেয়র শীতলক্ষ্যা-কন্যা আইভীও তাঁদের শুভেচ্ছার জবাব দিয়েছেন কখনো হাত নেড়ে, মহিলাদের জড়িয়ে ধরে আর শিশুদের আদর করে। তিনি উপস্থিত লোকজন ও সংবাদকর্মীদের বলেছেন, 'আমি সবাইকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করতে চাই।' এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, 'আমার হয়তো পছন্দের দল আছে; কিন্তু আমি সবার মেয়র। দল-মতের ঊধর্ে্ব উঠে আমি কাজ করে যাব, অতীতে যেমনটি করেছি।' সর্ব প্রথম কোন কাজটি করবেন_এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'শহরের যানজট ও জলাবদ্ধতা দূর করা।'
বিশাল বিজয়ের নেপথ্যে...
আইভীর এই বিশাল বিজয়ের রহস্য কী? এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক থেকে সদ্য পদত্যাগকারী এস এম আকরাম কালের কণ্ঠকে জানান, 'আইভীর অ্যাডভান্টেজ হলো সে সিটিং মেয়র ছিল। জনগণের কাছে তার একটা ভালো ইমেজ তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক নারী ভোটারের সহানুভূতি ছিল তার প্রতি। তদুপরি শেষ মুহূর্তে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় বিএনপির সমর্থকরা তৈমূরের বিকল্প হিসেবে আইভীকেই বেছে নিয়েছেন।'
নির্বাচনে আইভীর পাশে থেকে দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জি এম আরাফাত। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, আইভীর প্রতি মানুষের বিশ্বাস ছিল। তিনি এর আগে যে কমিটমেন্ট করেছেন, সেটা পূরণ করার চেষ্টা করেছেন। এ কারণে দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মেয়র হিসেবে আইভীকে বেছে নিয়েছেন।
No comments