কঠিন অঙ্ক মেলানোর স্বপ্ন by নোমান মোহাম্মদ
স্বপ্নের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটি বড় অদ্ভুত। এটি নাকি রঙহীন, গন্ধহীন। অথচ স্বপ্নের চেয়ে রঙিন ও সুরভিত আর কী হতে পারে! বিশ্বাস হচ্ছে না? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ পঞ্চম দিনের খেলা শুরুর আগে বাংলাদেশ ক্যাম্পের স্বপ্নের কথাটি নাঈম ইসলামের মুখে শুনেই দেখুন, 'আমাদের লক্ষ্য এই ম্যাচ জেতা। যদি চতুর্থ ইনিংসে ৫০৮ রান তাড়া করে জিততে পারি, তাহলে সেটি নতুন রেকর্ড হবে। আমরা তা-ই করার চেষ্টা করব।'স্বপ্নের নাটাই ধরে আকাশে বর্ণিল ঘুড়ি ওড়ানো বন্ধ করে এবার আসুন বাস্তবতার জমিনে। দেখে নিন ইতিহাস কী বলে। নাঈম যেটিকে সম্ভব মনে করছেন, ১৩৪ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের দুই হাজার ১১ ম্যাচের মধ্যে কোনোটিতেই তা হয়নি।
পাঁচ শতাধিক রান তাড়া করে কখনো জেতেনি কোনো দল। চতুর্থ ইনিংসে ৪১৮ রান তাড়া করে জেতার নজিরই সর্বোচ্চ মাইলফলক। ২০০৩ সালে অ্যান্টিগায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই কীর্তি। ১০টি টেস্ট খেলুড়ে দেশ থেকে পরিধি কমিয়ে কেবল বাংলাদেশে নিয়ে আসুন। ১১ বছরে যে তিনটি জয়, এর মধ্যে একটি কেবল চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে। ২০০৯ সালে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সে লক্ষ্য ছিল এবারের অর্ধেকেরও কম। ২১৫! জয় না পেলেও চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের বড় বড় রানগুলো দেখুন। আড়াই শ'র বেশি রান মাত্র পাঁচবার। সর্বোচ্চ ৪১৩। তার পরও জেতার লক্ষ্য নিয়ে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ! স্বপ্ন-রেণুর এই ওড়াউড়ি দেখার পরও কি স্বপ্নকে বর্ণ-গন্ধহীন মনে হচ্ছে?
খালি চোখে হিসাবটা অবশ্য খুব জটিল না। কাল ৪৭ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রান জড়ো করেছে স্বাগতিকরা। অর্থাৎ ওভারপ্রতি রান ৩.৪৯। আজ সাত উইকেট হাতে নিয়ে ৯০ ওভারে চাই আরো ৩৪৪ রান। ওভারপ্রতি তুলতে হবে ৩.৮২ রান। কাগজ-কলমের হিসাবে খুবই সম্ভব। কিন্তু পরিসংখ্যানের খেলা হলেও ক্রিকেট তো আর অঙ্ক মেনে চলে না। পাটিগণিতের সূত্র মিলিয়ে এই চাহিদা পূরণ তাই অসম্ভবেরই নামান্তর। চাইলে বাংলাদেশ একবার মনশ্চক্ষে দেখে নিতে পারে ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টটি। সেবার এ মিরপুরে ৫২১ রান তাড়া করতে নেমে একসময় জয়ের কক্ষপথেই ছিল স্বাগতিকরা। মোহাম্মদ আশরাফুলের ধ্রুপদী সেঞ্চুরিতে যার শুরু, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের বিস্ময়কর শতরান জুটিতে যা ধেয়ে যাচ্ছিল পূর্ণতার দিকে। একসময় ৬ উইকেটে ৪০৩ রানে পেঁৗছে যাওয়ার অর্থ, জয়ের ১১৮ রান দূরত্বে চলে আসা। কিন্তু ওই পর্যন্তই! ৯৬ রান করে সাকিব আউট হওয়ার পর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ইনিংস। ৪১৩ রানে অল আউট হয়ে ১০৭ রানের হার মেনে নিতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ।
ইতিহাস-টিতিহাস মনে করিয়েও নাঈমকে টলানো গেল না তাঁর অবস্থান থেকে। টেস্টের পঞ্চম দিনের উইকেট জুজুতেও কাবু করা গেল না তাঁকে, 'এখন পর্যন্ত যেমন উইকেট আছে এবং যেমন ব্যাটিং করছি, তাতে জয় অসম্ভব মনে হচ্ছে না।' এই জয়ের জন্য পরিকল্পনাও ব্যাখ্যা করেছেন এ ব্যাটসম্যান, 'জিততে হলে ব্যাটসম্যানদের প্রয়োগ ক্ষমতা অবশ্যই দেখাতে হবে। শুধু বুঝলাম যে এই উইকেটে ব্যাটিং করা সহজ কিন্তু সেটি প্রয়োগ করে দেখাতে পারলাম না_তাহলে তো হবে না। আজ পর্যন্ত যা দেখলাম, তাতে এখানে ব্যাটিং করাটা বেশ সহজ।' তবে সেশনে সেশনে রং বদলের টেস্ট ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই যে হতে পারে, সেটিও মানছেন নাঈম। মানছেন বলেই বলছেন এমনটা, 'কাল আমাদের প্রথম অ্যাপ্রোচ থাকবে সেশন বাই সেশন খেলা। যদি তা খেলতে পারি, অবশ্যই জিতব। আর যদি কাল প্রথম সেশনে অনেক উইকেট হারিয়ে ফেলি, তাহলে আর জেতার টার্গেট করব না। আসলে নির্ভর করছে আমরা প্রথম সেশন কেমন খেলি তার ওপর। আমরা যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে অবশ্যই ফল আমাদের পক্ষে আসবে।'
নাঈমের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণ হয়তো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বেশি বেশি শট খেলার প্রবণতা। সেটা মনে করিয়ে আগের দিনই কোচ স্টুয়ার্ট ল একরকম ধুয়ে দিয়েছিলেন শিষ্যদের। কিন্তু ধোলাইতেই কি আর এত দিনের মজ্জাগত অভ্যাস আমূল বদলে যাবে! যাবে না বলেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পক্ষে সারা দিন মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকা যতটা কঠিন, হয়তো মেরে-কেটে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে ফেলা এর চেয়ে তুলনামূলকভাবে সহজ। দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে সেটি স্বীকারও করে গেলেন নাঈম, 'আমরা যদি পুরো দিন খেলতে পারি, তাহলে মনে হয় না ড্র হবে। তাহলে আমরা অবশ্যই জিতব।'
জিতবে বাংলাদেশ! বর্ণিল-সুগন্ধী এ স্বপ্ন দেখতে দোষ কী!
খালি চোখে হিসাবটা অবশ্য খুব জটিল না। কাল ৪৭ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রান জড়ো করেছে স্বাগতিকরা। অর্থাৎ ওভারপ্রতি রান ৩.৪৯। আজ সাত উইকেট হাতে নিয়ে ৯০ ওভারে চাই আরো ৩৪৪ রান। ওভারপ্রতি তুলতে হবে ৩.৮২ রান। কাগজ-কলমের হিসাবে খুবই সম্ভব। কিন্তু পরিসংখ্যানের খেলা হলেও ক্রিকেট তো আর অঙ্ক মেনে চলে না। পাটিগণিতের সূত্র মিলিয়ে এই চাহিদা পূরণ তাই অসম্ভবেরই নামান্তর। চাইলে বাংলাদেশ একবার মনশ্চক্ষে দেখে নিতে পারে ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টটি। সেবার এ মিরপুরে ৫২১ রান তাড়া করতে নেমে একসময় জয়ের কক্ষপথেই ছিল স্বাগতিকরা। মোহাম্মদ আশরাফুলের ধ্রুপদী সেঞ্চুরিতে যার শুরু, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের বিস্ময়কর শতরান জুটিতে যা ধেয়ে যাচ্ছিল পূর্ণতার দিকে। একসময় ৬ উইকেটে ৪০৩ রানে পেঁৗছে যাওয়ার অর্থ, জয়ের ১১৮ রান দূরত্বে চলে আসা। কিন্তু ওই পর্যন্তই! ৯৬ রান করে সাকিব আউট হওয়ার পর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ইনিংস। ৪১৩ রানে অল আউট হয়ে ১০৭ রানের হার মেনে নিতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ।
ইতিহাস-টিতিহাস মনে করিয়েও নাঈমকে টলানো গেল না তাঁর অবস্থান থেকে। টেস্টের পঞ্চম দিনের উইকেট জুজুতেও কাবু করা গেল না তাঁকে, 'এখন পর্যন্ত যেমন উইকেট আছে এবং যেমন ব্যাটিং করছি, তাতে জয় অসম্ভব মনে হচ্ছে না।' এই জয়ের জন্য পরিকল্পনাও ব্যাখ্যা করেছেন এ ব্যাটসম্যান, 'জিততে হলে ব্যাটসম্যানদের প্রয়োগ ক্ষমতা অবশ্যই দেখাতে হবে। শুধু বুঝলাম যে এই উইকেটে ব্যাটিং করা সহজ কিন্তু সেটি প্রয়োগ করে দেখাতে পারলাম না_তাহলে তো হবে না। আজ পর্যন্ত যা দেখলাম, তাতে এখানে ব্যাটিং করাটা বেশ সহজ।' তবে সেশনে সেশনে রং বদলের টেস্ট ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই যে হতে পারে, সেটিও মানছেন নাঈম। মানছেন বলেই বলছেন এমনটা, 'কাল আমাদের প্রথম অ্যাপ্রোচ থাকবে সেশন বাই সেশন খেলা। যদি তা খেলতে পারি, অবশ্যই জিতব। আর যদি কাল প্রথম সেশনে অনেক উইকেট হারিয়ে ফেলি, তাহলে আর জেতার টার্গেট করব না। আসলে নির্ভর করছে আমরা প্রথম সেশন কেমন খেলি তার ওপর। আমরা যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে অবশ্যই ফল আমাদের পক্ষে আসবে।'
নাঈমের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণ হয়তো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বেশি বেশি শট খেলার প্রবণতা। সেটা মনে করিয়ে আগের দিনই কোচ স্টুয়ার্ট ল একরকম ধুয়ে দিয়েছিলেন শিষ্যদের। কিন্তু ধোলাইতেই কি আর এত দিনের মজ্জাগত অভ্যাস আমূল বদলে যাবে! যাবে না বলেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পক্ষে সারা দিন মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকা যতটা কঠিন, হয়তো মেরে-কেটে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে ফেলা এর চেয়ে তুলনামূলকভাবে সহজ। দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে সেটি স্বীকারও করে গেলেন নাঈম, 'আমরা যদি পুরো দিন খেলতে পারি, তাহলে মনে হয় না ড্র হবে। তাহলে আমরা অবশ্যই জিতব।'
জিতবে বাংলাদেশ! বর্ণিল-সুগন্ধী এ স্বপ্ন দেখতে দোষ কী!
No comments