এক বছরেই ৬ অধিনায়ক!
এক বছরে ৬ অধিনায়কের অধীনে খেলতে পারে কোন দল? পাকিস্তানের কথাই মনে আসবে সবার আগে। তাদের অধিনায়কত্ব নিয়েই মিউজিক্যাল চেয়ার বেশি চলে। কিন্তু বিস্ময়করভাবে এই উত্তরটা অবশ্য পাকিস্তান নয়, ইংল্যান্ড। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, ২০১১ সালে ইংলিশ ক্রিকেটাররা খেলেছে ছয় অধিনায়কের নেতৃত্বে। তাই বলে ভেবে বসবেন না দ্বন্দ্ব আর কোন্দলে জর্জরিত ইংল্যান্ড। তাহলে টেস্টে আর টোয়েন্টি টোয়েন্টির বিশ্বসেরা হতে পারত না তারা। বরং ইংলিশ বোর্ডের নতুন করে দল ঢেলে সাজানো আর কিছুটা নিয়তির কারণেই হয়েছে এমনটা।
২০১১ সালটা তারা শুরু করেছিল অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের নেতৃত্বে অ্যাশেজের সিডনি টেস্ট দিয়ে। অস্ট্রেলিয়াকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে জিতে নেয় অ্যাশেজটাও। টেস্ট সিরিজ শেষে ইংল্যান্ড অ্যাডিলেড আর মেলবোর্নে খেলেছিল দুটি টোয়েন্টি টোয়েন্টি। অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস খেলেননি ম্যাচ দুটি আর নেতৃত্ব দেন পল কলিংউড। তাঁর নেতৃত্বেই টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংলিশরা। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ শেষে টেস্টে বেশি মনোযোগ দিতে স্ট্রাউস সিদ্ধান্ত নেন ওয়ানডের অধিনায়কত্ব ছাড়ার। আর ভবিষ্যতের কথা ভেবে টোয়েন্টি টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় কলিংউডকে। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে আলাদা তিনজনকে দেওয়া হয় নেতৃত্বের ভার। স্ট্রাউস দায়িত্ব পান টেস্টের, অ্যালিস্টার কুক ওয়ানডের আর স্টুয়ার্ট ব্রড টোয়েন্টি টোয়েন্টির।
দেশের মাটিতে কুক ওয়ানডে সিরিজে নেতৃত্ব দেন ভারত, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আর টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে ব্রড। আগস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ডাবলিনে একটি ওয়ানডে ম্যাচও খেলে তারা। ম্যাচটিতে কুক, পিটারসেন, ব্রডসহ দলের সেরা তারকাদের বিশ্রাম দেওয়ায় অধিনায়কত্ব পান এউইন মরগান। বছরের পঞ্চম অধিনায়ক হিসেবে ম্যাচটিতে ১১ রানের জয় এনে দেন তিনি। চোটের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলতে পারেননি স্টুয়ার্ট ব্রড। তাঁর অনুপস্থিতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেন গ্রায়েম সোয়ান। ইংল্যান্ড পেয়ে যায় বছরের ষষ্ঠ অধিনায়ককে! সর্বশেষ ২০০১ সালে পাঁচজন আলাদা অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলেছিল তারা।
ক্রিকেট ইতিহাসে এক বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ঘটল ছয়জন আলাদা অধিনায়কের নেতৃত্বে কোনো দলের খেলার ঘটনা। ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ে খেলেছিল ছয় অধিনায়কের নেতৃত্বে। অথচ জিম্বাবুয়ে তাদের ইতিহাসের ৮৫টি টেস্ট খেলেছে মাত্র ৮ অধিনায়কের নেতৃত্বে। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ে ৪৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে টেস্ট ১১ আর ওয়ানডে খেলেছিল ৩৭টি। ৪৮ ম্যাচের ২৭টিরই নেতৃত্ব দিয়েছেন হিথ স্ট্রিক। সে বছরের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কোকাকোলা কাপের প্রথম ওয়ানডের আগে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান স্ট্রিক। বোর্ডের সঙ্গে মতের মিল না হওয়াতেই এ পদত্যাগ। সহ-অধিনায়ক গাই হুইটালও দায়িত্ব নিতে চাননি দলের। তাই ভারটা এসে পড়ে গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারের ওপর। ম্যাচটিতে ২৭ রানে হারে জিম্বাবুয়ে। এরপর স্ট্রিকের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলে বোর্ড আর তাঁকে রাখা হয় নির্বাচক প্যানেলে। তাই ভারতের বিপক্ষে পরের ম্যাচেই নেতৃত্ব দেন স্ট্রিক। আর একটা মাত্র ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়েই সরে যেতে হয় গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারকে। কিন্তু টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচের আগে স্ট্রিক চোট পেয়ে বসায় দায়িত্ব পান হুইটাল। অর্থাৎ পরপর তিন ম্যাচে আলাদা তিনজন অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলার বিরল রেকর্ড গড়ে বসে জিম্বাবুয়ে।
সে বছরেরই অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে তিনজন আলাদা অধিনায়কের অধীনে খেলেছিল তারা। চোটের কারণে প্রথম ম্যাচে না থাকায় দায়িত্ব পান হুইটাল। স্ট্রিক ফিরলেও চতুর্থ ও পঞ্চম ওয়ানডেতে মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছিল আবার হুইটাল, স্ট্রিক দুজনকেই। তাই দুই ম্যাচের জন্য দায়িত্ব পান অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল। এরপর হিথ স্ট্রিক নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালে অক্টোবরে শারজায় খালিজ টাইমস ট্রফিতে নেতৃত্ব পান ব্রায়ান মারফি। তাঁর নেতৃত্বে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা টুর্নামেন্টের চার ম্যাচেই হারে জিম্বাবুয়ে। তাই মারফি দায়িত্ব হারান ৪ ম্যাচ পরই। নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে দায়িত্বটা পান স্টুয়ার্ট কার্লাইল। তিনি দায়িত্বে ছিলেন ছয় টেস্ট আর ১২ ওয়ানডের।
ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে ছাড়া আর কোনো দলই এক বছরে খেলেনি ছয় অধিনায়কের অধীনে। এক বছরে পাঁচ অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলার রেকর্ড আছে সাতবার, যার তিনটিই আবার পাকিস্তানের। এ ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুবার, ভারত ও ইংল্যান্ড একবার করে খেলেছে পাঁচ অধিনায়কের অধীনে। প্রথমবার ১৯৩০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাঁচটি টেস্ট খেলেছিল আলাদা পাঁচ অধিনায়কের নেতৃত্বে। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের সব দেশ মিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে খেলে বলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে নিয়ম করা হয়েছিল যে দেশে টেস্ট হবে অধিনায়কও নির্বাচন করবে সেই দেশ। তাই প্রথম টেস্টে নেতৃত্ব দেন বার্বাডোজের টেডি হোড, দ্বিতীয় টেস্টে ত্রিনিদাদের নেলসন বিটেনকোর্ট (সেটাই তাঁর একমাত্র টেস্ট), তৃতীয় টেস্টে গায়ানার মরিস ফার্নান্দেজ ও চতুর্থ টেস্টে জ্যামাইকার কার্ল নুনেস। সে বছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে অ্যাডিলেডের টাইমলেস টেস্টের অধিনায়ক ছিলেন আবার জেকি গ্রান্ট। অর্থাৎ এক বছরে আলাদা পাঁচ অধিনায়ক পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ২০০৭ সালে আলাদা পাঁচ অধিনায়কের অধীনে পাঁচ টেস্ট, ২৩ ওয়ানডে ও পাঁচটি টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিল ক্যারিবিয়ানরা। এই ৩৩ ম্যাচের মধ্যে ব্রায়ানা লারা ১২, ক্রিস গেইল ১২, রামনরেশ সারওয়ান চার, ড্যারেন গঙ্গা দুই আর ড্যারেন ব্রাভোর অধীনে তারা খেলেছিল তিন ম্যাচ।
১৯৯৫ সালের পর পাকিস্তান এক বছরে আলাদা পাঁচ অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলেছে ২০০৯ ও ২০১০ সালে। পাকিস্তান ২০০৯ সালটা শুরু করেছিল শোয়েব মালিকের নেতৃত্বে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে হারার পর দায়িত্ব হারান মালিক আর তিন ফরম্যাটেরই নেতৃত্ব পান ইউনিস খান। আরব আমিরাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচটি না খেলায় সে বছর প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দেন মিসবাহ-উল হক। বিশ্বকাপের পর ইউনিস খান টোয়েন্টি টোয়েন্টি থেকে অবসর নিলে তাঁর জায়গায় আনা হয় শহীদ আফ্রিদিকে। অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারার পর ওয়ানডে আর টেস্টের অধিনায়কত্ব ছেড়ে কিছুদিন বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ইউনিস আর বছরের পঞ্চম অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন মোহাম্মদ ইউসুফ।
২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের চারটি খেলার পর পঞ্চমটিতে ছিলেন না ইউসুফ। তাঁর জায়গায় অধিনায়কত্ব করা আফ্রিদি বল কামড়ে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ায় টোয়েন্টি টোয়েন্টির দায়িত্ব দেওয়া হয় শোয়েব মালিককে। অস্ট্রেলিয়া সফরে ব্যর্থতা আর দ্বন্দ্বের জেরে পিসিবি আজীবন নিষিদ্ধ করে ইউসুফ ও ইউনিসকে আর এক বছরের জন্য মালিককে। তাই অবসর ভেঙে টেস্টে ফেরার পর নাটকীয়ভাবে তিন ফরম্যাটেরই নেতৃত্ব পেয়ে যান আফ্রিদি। কিন্তু লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে হারার পর নাটকীয়ভাবে আবারও টেস্ট থেকে অবসর নেন তিনি আর দায়িত্ব পান সালমান বাট। কিন্তু স্পট ফিঙ্ংি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে দায়িত্ব হারান বাটও। তাই টেস্টের অধিনায়কত্ব দেওয়া হয় মিসবাহকে আর ওয়ানডে ও টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে আফ্রিদিকে। গত বছর এই পাঁচজন অধিনায়কের অধীনেই খেলেছিল তারা। এর আগে ১৯৯৫ সালে ৩০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে ৯টি সেলিম মালিক, দুটি মঈন খান, একটি সাঈদ আনোয়ার, ১০টি রমিজ রাজা আর ওয়াসিম আকরামের অধীনে পাকিস্তান খেলেছিল ৮ ম্যাচ।
এ ছাড়া ভারত ১৯৫৯ সালে ৯টি টেস্টের মধ্যে চারটি গায়কোয়াড়, দুটি গুলাবরায় রামচাঁদ আর একটি করে টেস্ট খেলেছিল ভিনু মানকড়, হেমু অধিকারী ও পঙ্কজ রায়ের অধীনে। ২০০১ সালে ইংল্যান্ড ২৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে নাসের হুসেইনের অধীনে ১৪, গ্রাহাম থর্পের তিন, অ্যালেক স্টুয়ার্টের সাত, মাইলে আথারটনের দুই আর মার্কাস ট্রেসকোথিকের নেতৃত্বে খেলেছিল এক ম্যাচ।
বছরে চার অধিনায়কের অধীনে খেলার রেকর্ডও আছে ১৬ বার। এর মধ্যে অবশ্য বাংলাদেশের নাম নেই। ক্রিকইনফো অবলম্বনে
দেশের মাটিতে কুক ওয়ানডে সিরিজে নেতৃত্ব দেন ভারত, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আর টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে ব্রড। আগস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ডাবলিনে একটি ওয়ানডে ম্যাচও খেলে তারা। ম্যাচটিতে কুক, পিটারসেন, ব্রডসহ দলের সেরা তারকাদের বিশ্রাম দেওয়ায় অধিনায়কত্ব পান এউইন মরগান। বছরের পঞ্চম অধিনায়ক হিসেবে ম্যাচটিতে ১১ রানের জয় এনে দেন তিনি। চোটের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলতে পারেননি স্টুয়ার্ট ব্রড। তাঁর অনুপস্থিতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেন গ্রায়েম সোয়ান। ইংল্যান্ড পেয়ে যায় বছরের ষষ্ঠ অধিনায়ককে! সর্বশেষ ২০০১ সালে পাঁচজন আলাদা অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলেছিল তারা।
ক্রিকেট ইতিহাসে এক বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ঘটল ছয়জন আলাদা অধিনায়কের নেতৃত্বে কোনো দলের খেলার ঘটনা। ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ে খেলেছিল ছয় অধিনায়কের নেতৃত্বে। অথচ জিম্বাবুয়ে তাদের ইতিহাসের ৮৫টি টেস্ট খেলেছে মাত্র ৮ অধিনায়কের নেতৃত্বে। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ে ৪৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে টেস্ট ১১ আর ওয়ানডে খেলেছিল ৩৭টি। ৪৮ ম্যাচের ২৭টিরই নেতৃত্ব দিয়েছেন হিথ স্ট্রিক। সে বছরের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কোকাকোলা কাপের প্রথম ওয়ানডের আগে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান স্ট্রিক। বোর্ডের সঙ্গে মতের মিল না হওয়াতেই এ পদত্যাগ। সহ-অধিনায়ক গাই হুইটালও দায়িত্ব নিতে চাননি দলের। তাই ভারটা এসে পড়ে গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারের ওপর। ম্যাচটিতে ২৭ রানে হারে জিম্বাবুয়ে। এরপর স্ট্রিকের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলে বোর্ড আর তাঁকে রাখা হয় নির্বাচক প্যানেলে। তাই ভারতের বিপক্ষে পরের ম্যাচেই নেতৃত্ব দেন স্ট্রিক। আর একটা মাত্র ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়েই সরে যেতে হয় গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারকে। কিন্তু টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচের আগে স্ট্রিক চোট পেয়ে বসায় দায়িত্ব পান হুইটাল। অর্থাৎ পরপর তিন ম্যাচে আলাদা তিনজন অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলার বিরল রেকর্ড গড়ে বসে জিম্বাবুয়ে।
সে বছরেরই অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে তিনজন আলাদা অধিনায়কের অধীনে খেলেছিল তারা। চোটের কারণে প্রথম ম্যাচে না থাকায় দায়িত্ব পান হুইটাল। স্ট্রিক ফিরলেও চতুর্থ ও পঞ্চম ওয়ানডেতে মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছিল আবার হুইটাল, স্ট্রিক দুজনকেই। তাই দুই ম্যাচের জন্য দায়িত্ব পান অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল। এরপর হিথ স্ট্রিক নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালে অক্টোবরে শারজায় খালিজ টাইমস ট্রফিতে নেতৃত্ব পান ব্রায়ান মারফি। তাঁর নেতৃত্বে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা টুর্নামেন্টের চার ম্যাচেই হারে জিম্বাবুয়ে। তাই মারফি দায়িত্ব হারান ৪ ম্যাচ পরই। নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে দায়িত্বটা পান স্টুয়ার্ট কার্লাইল। তিনি দায়িত্বে ছিলেন ছয় টেস্ট আর ১২ ওয়ানডের।
ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে ছাড়া আর কোনো দলই এক বছরে খেলেনি ছয় অধিনায়কের অধীনে। এক বছরে পাঁচ অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলার রেকর্ড আছে সাতবার, যার তিনটিই আবার পাকিস্তানের। এ ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুবার, ভারত ও ইংল্যান্ড একবার করে খেলেছে পাঁচ অধিনায়কের অধীনে। প্রথমবার ১৯৩০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাঁচটি টেস্ট খেলেছিল আলাদা পাঁচ অধিনায়কের নেতৃত্বে। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের সব দেশ মিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে খেলে বলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে নিয়ম করা হয়েছিল যে দেশে টেস্ট হবে অধিনায়কও নির্বাচন করবে সেই দেশ। তাই প্রথম টেস্টে নেতৃত্ব দেন বার্বাডোজের টেডি হোড, দ্বিতীয় টেস্টে ত্রিনিদাদের নেলসন বিটেনকোর্ট (সেটাই তাঁর একমাত্র টেস্ট), তৃতীয় টেস্টে গায়ানার মরিস ফার্নান্দেজ ও চতুর্থ টেস্টে জ্যামাইকার কার্ল নুনেস। সে বছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে অ্যাডিলেডের টাইমলেস টেস্টের অধিনায়ক ছিলেন আবার জেকি গ্রান্ট। অর্থাৎ এক বছরে আলাদা পাঁচ অধিনায়ক পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ২০০৭ সালে আলাদা পাঁচ অধিনায়কের অধীনে পাঁচ টেস্ট, ২৩ ওয়ানডে ও পাঁচটি টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিল ক্যারিবিয়ানরা। এই ৩৩ ম্যাচের মধ্যে ব্রায়ানা লারা ১২, ক্রিস গেইল ১২, রামনরেশ সারওয়ান চার, ড্যারেন গঙ্গা দুই আর ড্যারেন ব্রাভোর অধীনে তারা খেলেছিল তিন ম্যাচ।
১৯৯৫ সালের পর পাকিস্তান এক বছরে আলাদা পাঁচ অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলেছে ২০০৯ ও ২০১০ সালে। পাকিস্তান ২০০৯ সালটা শুরু করেছিল শোয়েব মালিকের নেতৃত্বে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে হারার পর দায়িত্ব হারান মালিক আর তিন ফরম্যাটেরই নেতৃত্ব পান ইউনিস খান। আরব আমিরাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচটি না খেলায় সে বছর প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দেন মিসবাহ-উল হক। বিশ্বকাপের পর ইউনিস খান টোয়েন্টি টোয়েন্টি থেকে অবসর নিলে তাঁর জায়গায় আনা হয় শহীদ আফ্রিদিকে। অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারার পর ওয়ানডে আর টেস্টের অধিনায়কত্ব ছেড়ে কিছুদিন বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ইউনিস আর বছরের পঞ্চম অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন মোহাম্মদ ইউসুফ।
২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের চারটি খেলার পর পঞ্চমটিতে ছিলেন না ইউসুফ। তাঁর জায়গায় অধিনায়কত্ব করা আফ্রিদি বল কামড়ে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ায় টোয়েন্টি টোয়েন্টির দায়িত্ব দেওয়া হয় শোয়েব মালিককে। অস্ট্রেলিয়া সফরে ব্যর্থতা আর দ্বন্দ্বের জেরে পিসিবি আজীবন নিষিদ্ধ করে ইউসুফ ও ইউনিসকে আর এক বছরের জন্য মালিককে। তাই অবসর ভেঙে টেস্টে ফেরার পর নাটকীয়ভাবে তিন ফরম্যাটেরই নেতৃত্ব পেয়ে যান আফ্রিদি। কিন্তু লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে হারার পর নাটকীয়ভাবে আবারও টেস্ট থেকে অবসর নেন তিনি আর দায়িত্ব পান সালমান বাট। কিন্তু স্পট ফিঙ্ংি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে দায়িত্ব হারান বাটও। তাই টেস্টের অধিনায়কত্ব দেওয়া হয় মিসবাহকে আর ওয়ানডে ও টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে আফ্রিদিকে। গত বছর এই পাঁচজন অধিনায়কের অধীনেই খেলেছিল তারা। এর আগে ১৯৯৫ সালে ৩০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে ৯টি সেলিম মালিক, দুটি মঈন খান, একটি সাঈদ আনোয়ার, ১০টি রমিজ রাজা আর ওয়াসিম আকরামের অধীনে পাকিস্তান খেলেছিল ৮ ম্যাচ।
এ ছাড়া ভারত ১৯৫৯ সালে ৯টি টেস্টের মধ্যে চারটি গায়কোয়াড়, দুটি গুলাবরায় রামচাঁদ আর একটি করে টেস্ট খেলেছিল ভিনু মানকড়, হেমু অধিকারী ও পঙ্কজ রায়ের অধীনে। ২০০১ সালে ইংল্যান্ড ২৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে নাসের হুসেইনের অধীনে ১৪, গ্রাহাম থর্পের তিন, অ্যালেক স্টুয়ার্টের সাত, মাইলে আথারটনের দুই আর মার্কাস ট্রেসকোথিকের নেতৃত্বে খেলেছিল এক ম্যাচ।
বছরে চার অধিনায়কের অধীনে খেলার রেকর্ডও আছে ১৬ বার। এর মধ্যে অবশ্য বাংলাদেশের নাম নেই। ক্রিকইনফো অবলম্বনে
No comments