চামড়া কিনতে চার ব্যাংকের ৩২২ কোটি টাকার ঋণ by ওবায়দুল্লাহ রনি

দুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে ব্যবসায়ীদের ৩২২ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার বাণিজ্যিক ব্যাংক। গত বছর ব্যাংকগুলো এ খাতে ঋণ দিয়েছিল ৩১৭ কোটি টাকা। তার আগের বছর দেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ২৪০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের বাইরে সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক এ খাতে শাখা পর্যায় থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সীমিত আকারে ঋণ দিয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


সূত্র জানায়, এ বছর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক ৩টি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৬৬ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। গত বছরও ব্যাংকটি এ খাতে একই পরিমাণ ঋণ দিয়েছিল। জনতা ব্যাংক গত বছরের মতো এবারও ১৫০ কোটি ঋণ দিচ্ছে। অগ্রণী ব্যাংক দিচ্ছে ৮০ কোটি টাকা। গত বছর ব্যাংকটি ৭৬ কোটি টাকা দিয়েছিল। রূপালী ব্যাংক দিচ্ছে ৩০ কোটি টাকা। গত বছর এ খাতে ব্যাংকটির ঋণ ছিল ২৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর ঋণ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এসব ঋণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দু'একদিনের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদের সভা ডেকে চামড়া ব্যবসায়ীদের দেওয়া ঋণের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। তবে কোনো খেলাপি প্রতিষ্ঠান যেন ঋণ না পায়
সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে বলে জানা গেছে। তথ্য মতে, চামড়া খাতে বর্তমানে ৪০০ কোটি টাকার মতো খেলাপি ঋণ রয়েছে। এর বেশির ভাগই বিতরণ করা হয়েছিল নব্বইয়ের দশকের প্রথমার্ধে। বর্তমানে এ খাতে ঋণ আদায়ের হার আগের তুলনায় ভালো। সতর্কতার সঙ্গে ব্যাংকগুলোর ঋণ অনুমোদনের ফলে খেলাপির প্রবণতা কমেছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, চামড়া কিনতে এক বছরের জন্য ঋণ দেওয়া হয়। এ ব্যবসায় জড়িত নিয়মিত গ্রাহকরা তা পেয়ে থাকেন। তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ঋণের টাকা দেওয়া হচ্ছে বড় বড় চামড়া প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিকে। তারা এ টাকা নিয়ে দিয়ে থাকেন চামড়ার আড়তদারদের। আড়তদারা দেন মাঠ পর্যায়ের চামড়া ব্যবসায়ীদের। চাহিদা বেশি থাকলেও পর্যাপ্ত তারল্য না থাকায় তারা চাহিদা অনুপাতে ঋণ দিতে পারছেন না বলে তিনি জানান।
ইপিবির তথ্য মতে, ২০১০-১১ অর্থবছর লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। গত অর্থবছর ৩ কোটি ৪৮ লাখ ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে হয়েছে ৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলার সমপরিমাণের চামড়াজাত পণ্য। আগের অর্থবছর এ খাতে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রফতানি হয়েছিল। সে হিসাবে ২০০৯-১০ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছর প্রায় ৯১ শতাংশ বেশি চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। চামড়াজাত পণ্য রফতানির বিপরীতে সরকার বর্তমানে ১৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দিয়ে থাকে। গত অর্থবছরও এ হার ১৫ শতাংশ নির্ধারিত ছিল। তবে ২০১১-১২ অর্থবছরের শুরুতে রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তার ঘোষণায় হার কমিয়ে সাড়ে ১২ শতাংশ করা হয়। এ নিয়ে রফতানিকারকদের বিরোধিতা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গত আগস্টে নগদ সহায়তা বাড়িয়ে পুনরায় ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.