ডিএসইর সূচক আট হাজার পয়েন্টের মাইলফলক ছাড়াল



দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক আট হাজার পয়েন্টের নতুন মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
দুই দিন দরপতনের পর গতকাল মঙ্গলবার স্টক এক্সচেঞ্জটিতে সাধারণ মূল্যসূচক ১০৯ পয়েন্ট বেড়েছে। আর এতেই ডিএসইর সাধারণ সূচক গিয়ে ঠেকেছে আট হাজার ৮৩ পয়েন্টে।
সাধারণ সূচকের পাশাপাশি স্টক এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধনের পরিমাণও আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ডিএসইর বাজার মূলধন গতকাল এক দিনে চার হাজার ৯৩১ কোটি টাকা বেড়ে তিন লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার ঘরে পৌঁছেছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ৪০৪ পয়েন্ট বেড়ে ২২ হাজার ৮২৭ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, শেয়ারবাজারে নগদ অর্থের প্রবাহ ব্যাপক হারে বেড়েছে। সেই হারে বাড়েনি শেয়ারের সরবরাহ। আর চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্যহীনতার কারণেই বেশ কিছু দিন ধরেই বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছিল।
এ পরিস্থিতিতে শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে তালিকাভুক্ত রয়েছে—এমন কোম্পানিসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির শেয়ার বাজারে ছাড়তে নির্বাহী আদেশ দেন। এ খবরের পরপরই বাজার কিছুটা মূল্য সংশোধনের ধারায় ফিরতে শুরু করে। বিশেষ করে তিতাস, ডেসকো, পাওয়ার গ্রিডসহ তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে বড় ধরনের পতন ঘটে।
তবে কয়েক দিন ধরে বাজারে গুঞ্জন রয়েছে, সরকার ঘোষিত সময়ের মধ্যে এসব কোম্পানির শেয়ার বাজারে ছাড়তে পারবে না। এ কারণে গতকাল রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেশ খানিকটা বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, একটি মহল কম দামে কেনার লক্ষ্যে আগে থেকেই সরকারি শেয়ারের মূল্য কমিয়ে রাখতে বাজারে কারসাজি করছে। আর এর শিকার হয়েছেন হাজার হাজার সাধারণ বিনিয়োগকারী। তাঁদের অনেকে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির শেয়ার কিনে এখন পুঁজি হারাতে বসেছেন। এর ফলে এত দিন যারা সরকারি শেয়ার ছাড়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, তারাই আবার বিপক্ষে চলে যাচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের উচিত হবে, একটি নির্দিষ্ট দামের নিচে শেয়ার বিক্রি না করা। কারণ বর্তমানের নিম্নমুখী দামে শেয়ার বিক্রি করলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
বিশ্লেষকেরা আরও বলছেন, সরকারি শেয়ার ছাড়ার ঘোষণার পরপর নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) বাজার নজরদারি কিছুটা শিথিল করেছে। এ সুযোগে সব ধরনের কোম্পানির শেয়ারের দামই বাড়ানো হচ্ছে।
বাজার পরিস্থিতি: গতকাল দিনের শুরু থেকেই ডিএসইর সাধারণ সূচক ছিল বেশ ঊর্ধ্বমুখী। সকাল থেকেই বাড়তে থাকে বেশির ভাগ শেয়ারের দাম। যার প্রতিফলন ঘটে সূচকে।
এদিকে, বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়লেও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জেই লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। ডিএসইতে গতকাল প্রায় দুই হাজার ৩৩০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা আগের দিনের চেয়ে ৯৭ কোটি টাকা কম। আর সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২০৬ কোটি টাকা।
ডিএসইতে গতকাল ২৩৫ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪২টির কোম্পানির, কমেছে ৯০টির ও অপরিবর্তিত ছিল তিনটি কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৮৮টির। বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ৭৩টির ও অপরিবর্তিত ছিল আটটি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

No comments

Powered by Blogger.