ভারত-চীন-শ্রীলংকা ত্রিভূজ: প্রতিরক্ষা মাত্রা by শান্তনু রায়-চৌধুরী
ভারত
মহাসাগরে ভারত-চীন প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রীলংকার সাথে তাদের নিজ
নিজ সামরিক সম্পর্ক এই সামুদ্রিক মহা খেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই প্রবন্ধে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে এই সম্পর্ক পরীক্ষা
করা হবে এবং এই অঞ্চলের ভবিষ্যত ভূরাজনৈতিক দৃশ্যপটের ওপর এর প্রভাব নিয়ে
আলোচনা করা হবে।
চীন ১৯৫০-এর দশক থেকে শ্রীলংকার প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী। তারা ছোট অস্ত্র, গোলাবারুদ, স্থলমাইন, নৌজাহাজ, বিমানসহ সামরিক সম্ভার রফতানি করছে। শ্রীলংকার গৃহযুদ্ধের সময় চীন ও শ্রীলংকার মধ্যকার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার হয়, চীন বিভিন্ন আকারে সহায়তা করে। ২০০৭ সালে ওই সময়কার প্রেসিডেন্ট মহিন্দা রাজাপাকসা চীন সফরকালে ৩৭.৬ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেন চীন থেকে জিয়ান-৭ জঙ্গিবিমান, বিমানবিধ্বংসী কামান, জেওয়াই-১১ ৩ডি বিমান নজরদারি রাডার, সাজোয়াঁ গাড়ি ও অন্যান্য অস্ত্র কেনার জন্য।
আরো সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও শ্রীলংকার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারে সফরে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়। ২০১২ সালে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর শ্রীলংকা সফরকালে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প নির্মাণের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করার কথা ঘোষণা করা হয়। শ্রীলংকার অফিসারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করে চীন। গত বছর কলম্বোতে চীনা দূতাবাসের এক সিনিয়র কর্নেল বলেন, দুই দেশ ও দুই সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিচক্ষণ সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ জোরালো করার আশা করছে চীন।
ভারতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে চীন ও শ্রীলংকার মধ্যে অস্ত্র হস্তান্তর ও সহযোগিতা বৃদ্ধি উদ্বেগের কারণ। ২০১৪ সালে এ ধরনের উদ্বেগ বাস্তবতায় পরিণত হয় কলম্বোতে দুটি চীনা সাবমেরিন ও একটি রণতরীকে নোঙর করার অনুমতি দেয়া হলে। ভারতের কাছে এটি অস্বাভাবিক ঘটনা মনে হয়। ভারত আগ্রাসীভাবে প্রতিবাদ না করলেও এই ঘটনাকে নয়া দিল্লি ও কলম্বোর মধ্যকার আস্থায় বড় ধরনের ঘাটতি এবং বেইজিংয়ের সাথে উত্তেজনা বাড়া হিসেবে দেখা হয়।
চীনা সাবমেরিন মোতায়েন মানে যদিও উস্কানি প্রদান বোঝায়নি, কিন্তু এতে অন্তত উদ্বেগ সৃষ্টি হয়, এই অঞ্চলে ভারতীয় নৌবাহিনীর শ্রেষ্ঠত্ব হ্রাস পাচ্ছে বলে ধরে নেয়া হয়। ঘন ঘন চীনা সফর উদ্বেগে পরিণত হয়। এর মধ্যেই জল্পনার সৃষ্টি হয় যে বন্দর নগরী ত্রিনকোমালিতে চীনারা একটি বিমান রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলছে। কৌশলগত অবস্থানে এই কেন্দ্রটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের কারণ মনে করা হয়। এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যকার বৃহত্তর নিরাপত্তা সঙ্কট আরো বাড়িয়ে দেয়, ভারতীয় মহাসাগরে শক্তি জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। আর চীনা অস্ত্র ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে- এমন আশঙ্কাও ভয়ের আরেকটি কারণ।
অবশ্য শ্রীলংকার সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতার ব্যাপারে ভারত কখনো থেমে থাকেনি। স্বাধীনতার প্রথম দুই দশকে শ্রীলংকার সামরিক কর্মকর্তারা ভারতের সামরিক একাডেমিগুলোতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করত। ১৯৭১ সালে একটি বিদ্রোহ দমন করতে ভারতের সহযোগিতা গ্রহণ করে শ্রীলংকা।
ভারত যদিও শ্রীলংকার কাছে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে সংযত থাকে, তবুও সে অস্ত্র চুক্তি করছে, রক্ষণাত্মক অস্ত্র বিক্রি করছে এলটিটিইকে টার্গেট করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নৌ ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছে।
আরো সাম্প্রতিক সময়ে সাগর এলাকায় সহায়তা করেছে ভারত। গত বছর ভারতীয় উপকূলীয় রক্ষা বাহিনী শ্রীলংকার উপকূলীয় রক্ষী বাহিনীকে একটি টহলযান উপহার দেয়। ২০০৬ ও ২০০৮ সালে শ্রীলংকাকে দুটি এ ধরনের যান দিয়েছিল ভারত। এর আগে তারা শ্রীলংকার সদস্যদের এসব যান চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিল।
শ্রীলংকা ২০১৪ সালে ৭৪ মিলিয়ন ডলারে দুটি আধুনিক টহল যানের অর্ডার দেয় ভারতকে। এ ধরনের যান ক্রয় শ্রীলংকার ছিল এটিই প্রথম।
শ্রীলংকার সাথে তিন ধরনের যৌথ মহড়া চালিয়েছে ভারত। ২০১৩ সাল থেকে মিত্রশক্তি নামের দ্বিপক্ষীয় মহড়া চলছে। ২০১৭ সালের মহড়ায় সন্ত্রাসদমনের দিকে নজর দেয়া হয়।
দুই নৌবাহিনীর মধ্যেও যৌথ মহড়া হচ্ছে। এছাড়া মালদ্বীপকে নিয়ে হচ্ছে দোস্তি মহড়া।
ভারত অনেক বছর ধরে শ্রীলংকার সামরিক বাহিনীর তিন শাখাকেই সফলভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে ভারতের তামিল নাড়ু রাজ্যে মাঝে মাঝে বিরোধিতার সৃষ্টি হলেও শ্রীলংকা ভারতে তাদের সামরিক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা অব্যাহত রাখা এবং অন্য কোনো দেশের বদলে ভারতকে অগ্রাধিকার দেয়ার নীতিতে অটল থাকার কথা ঘোষণা করে। ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত প্রায় ১৭ শ’ শ্রীলংকান অফিসার ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন, আর শ্রীলংকা নৌবাহিনীর প্রায় ৮০ ভাগ অফিসার ভারত থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
আর ২০১২ সালে ভারত ও শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এক সমঝোতা হয়, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক প্রতিরক্ষা সংলাপের সূচনা ঘটে। এতে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নিয়ে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা উদ্যোগগুলো পর্যালোচনা করেন।
ফলে শ্রীলংকায় ভারত এখন যেসব সুবিধা পেয়ে আসছে, সেগুলো চীন কখনো পায়নি। চীনের সাথে শ্রীলংকার প্রতিরক্ষা মূলত সরঞ্জাম বিক্রিকেন্দ্রিক। তবে হাম্বানতোতা বন্দরের মাধ্যমে শ্রীলংকার নৌবাহিনীর সাদার্ন কমান্ডের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে পারে চীন। যদিও শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বলা হয়েছে, হাম্বানতোতা বন্দরটি তারা কখনো সামরিক উদ্দেশ্য ব্যবহার করবে না।
অন্য দিকে ভারত সামরিক সম্ভার বিক্রি ও রফতানি কম করলেও শ্রীলংকান কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের দিক থেকে ভারতই আছে শীর্ষ গন্তব্য। এই সম্পর্ক আরো জোরদার হচ্ছে বার্ষিক মহড়াগুলোর মাধ্যমে।
শ্রীলংকার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা করার ক্ষেত্রে তাদের উচিত হবে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করা। চীনের সাথে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করা হলে ভারতের সাথে সমস্যার সৃষ্টি হবে। আর চীনের দিকে অতিরিক্ত ঝুঁকলে চীনা সামরিক বিক্রিতে প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে, পরিণতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে এর প্রভাব পড়তে পারে। ফলে শ্রীলংকাকে চেষ্টা করতে হবে বৃহৎ শক্তিগুলোকে না ক্ষ্যাপিয়ে নিজের স্বার্থটিই সর্বোচ্চ মাত্রায় নিয়ে যাওয়া।
চীন ১৯৫০-এর দশক থেকে শ্রীলংকার প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী। তারা ছোট অস্ত্র, গোলাবারুদ, স্থলমাইন, নৌজাহাজ, বিমানসহ সামরিক সম্ভার রফতানি করছে। শ্রীলংকার গৃহযুদ্ধের সময় চীন ও শ্রীলংকার মধ্যকার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার হয়, চীন বিভিন্ন আকারে সহায়তা করে। ২০০৭ সালে ওই সময়কার প্রেসিডেন্ট মহিন্দা রাজাপাকসা চীন সফরকালে ৩৭.৬ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেন চীন থেকে জিয়ান-৭ জঙ্গিবিমান, বিমানবিধ্বংসী কামান, জেওয়াই-১১ ৩ডি বিমান নজরদারি রাডার, সাজোয়াঁ গাড়ি ও অন্যান্য অস্ত্র কেনার জন্য।
আরো সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও শ্রীলংকার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারে সফরে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়। ২০১২ সালে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর শ্রীলংকা সফরকালে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প নির্মাণের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করার কথা ঘোষণা করা হয়। শ্রীলংকার অফিসারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করে চীন। গত বছর কলম্বোতে চীনা দূতাবাসের এক সিনিয়র কর্নেল বলেন, দুই দেশ ও দুই সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিচক্ষণ সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ জোরালো করার আশা করছে চীন।
ভারতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে চীন ও শ্রীলংকার মধ্যে অস্ত্র হস্তান্তর ও সহযোগিতা বৃদ্ধি উদ্বেগের কারণ। ২০১৪ সালে এ ধরনের উদ্বেগ বাস্তবতায় পরিণত হয় কলম্বোতে দুটি চীনা সাবমেরিন ও একটি রণতরীকে নোঙর করার অনুমতি দেয়া হলে। ভারতের কাছে এটি অস্বাভাবিক ঘটনা মনে হয়। ভারত আগ্রাসীভাবে প্রতিবাদ না করলেও এই ঘটনাকে নয়া দিল্লি ও কলম্বোর মধ্যকার আস্থায় বড় ধরনের ঘাটতি এবং বেইজিংয়ের সাথে উত্তেজনা বাড়া হিসেবে দেখা হয়।
চীনা সাবমেরিন মোতায়েন মানে যদিও উস্কানি প্রদান বোঝায়নি, কিন্তু এতে অন্তত উদ্বেগ সৃষ্টি হয়, এই অঞ্চলে ভারতীয় নৌবাহিনীর শ্রেষ্ঠত্ব হ্রাস পাচ্ছে বলে ধরে নেয়া হয়। ঘন ঘন চীনা সফর উদ্বেগে পরিণত হয়। এর মধ্যেই জল্পনার সৃষ্টি হয় যে বন্দর নগরী ত্রিনকোমালিতে চীনারা একটি বিমান রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলছে। কৌশলগত অবস্থানে এই কেন্দ্রটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের কারণ মনে করা হয়। এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যকার বৃহত্তর নিরাপত্তা সঙ্কট আরো বাড়িয়ে দেয়, ভারতীয় মহাসাগরে শক্তি জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। আর চীনা অস্ত্র ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে- এমন আশঙ্কাও ভয়ের আরেকটি কারণ।
অবশ্য শ্রীলংকার সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতার ব্যাপারে ভারত কখনো থেমে থাকেনি। স্বাধীনতার প্রথম দুই দশকে শ্রীলংকার সামরিক কর্মকর্তারা ভারতের সামরিক একাডেমিগুলোতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করত। ১৯৭১ সালে একটি বিদ্রোহ দমন করতে ভারতের সহযোগিতা গ্রহণ করে শ্রীলংকা।
ভারত যদিও শ্রীলংকার কাছে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে সংযত থাকে, তবুও সে অস্ত্র চুক্তি করছে, রক্ষণাত্মক অস্ত্র বিক্রি করছে এলটিটিইকে টার্গেট করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নৌ ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছে।
আরো সাম্প্রতিক সময়ে সাগর এলাকায় সহায়তা করেছে ভারত। গত বছর ভারতীয় উপকূলীয় রক্ষা বাহিনী শ্রীলংকার উপকূলীয় রক্ষী বাহিনীকে একটি টহলযান উপহার দেয়। ২০০৬ ও ২০০৮ সালে শ্রীলংকাকে দুটি এ ধরনের যান দিয়েছিল ভারত। এর আগে তারা শ্রীলংকার সদস্যদের এসব যান চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিল।
শ্রীলংকা ২০১৪ সালে ৭৪ মিলিয়ন ডলারে দুটি আধুনিক টহল যানের অর্ডার দেয় ভারতকে। এ ধরনের যান ক্রয় শ্রীলংকার ছিল এটিই প্রথম।
শ্রীলংকার সাথে তিন ধরনের যৌথ মহড়া চালিয়েছে ভারত। ২০১৩ সাল থেকে মিত্রশক্তি নামের দ্বিপক্ষীয় মহড়া চলছে। ২০১৭ সালের মহড়ায় সন্ত্রাসদমনের দিকে নজর দেয়া হয়।
দুই নৌবাহিনীর মধ্যেও যৌথ মহড়া হচ্ছে। এছাড়া মালদ্বীপকে নিয়ে হচ্ছে দোস্তি মহড়া।
ভারত অনেক বছর ধরে শ্রীলংকার সামরিক বাহিনীর তিন শাখাকেই সফলভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে ভারতের তামিল নাড়ু রাজ্যে মাঝে মাঝে বিরোধিতার সৃষ্টি হলেও শ্রীলংকা ভারতে তাদের সামরিক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা অব্যাহত রাখা এবং অন্য কোনো দেশের বদলে ভারতকে অগ্রাধিকার দেয়ার নীতিতে অটল থাকার কথা ঘোষণা করে। ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত প্রায় ১৭ শ’ শ্রীলংকান অফিসার ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন, আর শ্রীলংকা নৌবাহিনীর প্রায় ৮০ ভাগ অফিসার ভারত থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
আর ২০১২ সালে ভারত ও শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এক সমঝোতা হয়, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক প্রতিরক্ষা সংলাপের সূচনা ঘটে। এতে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নিয়ে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা উদ্যোগগুলো পর্যালোচনা করেন।
ফলে শ্রীলংকায় ভারত এখন যেসব সুবিধা পেয়ে আসছে, সেগুলো চীন কখনো পায়নি। চীনের সাথে শ্রীলংকার প্রতিরক্ষা মূলত সরঞ্জাম বিক্রিকেন্দ্রিক। তবে হাম্বানতোতা বন্দরের মাধ্যমে শ্রীলংকার নৌবাহিনীর সাদার্ন কমান্ডের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে পারে চীন। যদিও শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বলা হয়েছে, হাম্বানতোতা বন্দরটি তারা কখনো সামরিক উদ্দেশ্য ব্যবহার করবে না।
অন্য দিকে ভারত সামরিক সম্ভার বিক্রি ও রফতানি কম করলেও শ্রীলংকান কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের দিক থেকে ভারতই আছে শীর্ষ গন্তব্য। এই সম্পর্ক আরো জোরদার হচ্ছে বার্ষিক মহড়াগুলোর মাধ্যমে।
শ্রীলংকার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা করার ক্ষেত্রে তাদের উচিত হবে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করা। চীনের সাথে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করা হলে ভারতের সাথে সমস্যার সৃষ্টি হবে। আর চীনের দিকে অতিরিক্ত ঝুঁকলে চীনা সামরিক বিক্রিতে প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে, পরিণতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে এর প্রভাব পড়তে পারে। ফলে শ্রীলংকাকে চেষ্টা করতে হবে বৃহৎ শক্তিগুলোকে না ক্ষ্যাপিয়ে নিজের স্বার্থটিই সর্বোচ্চ মাত্রায় নিয়ে যাওয়া।
No comments