সেতুর জন্য আর কত অপেক্ষা
সুনামগঞ্জের
চলতি নদীর ওপর সেতুর প্রয়োজন থাকলেও তা কেন এত দিনে হয়নি, সেটা একটা
বিস্ময় বটে। এই নদীটিতে কোনো সেতু না থাকায় দুই পারের প্রায় ২০টি গ্রামের
মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শনিবার প্রথম আলোতে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন
প্রকাশিত হয়েছে। চলতি নদীতে সেতু না থাকায় নদীর দুই পারের মানুষ খুব
স্বাভাবিকভাবেই যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম সমস্যার মধ্যে পড়ছে । সেতু না থাকায়
নদীর দুই পারের বালাকান্দা বাজার, সাহেবনগর, কাইয়ারগাঁও, ডলুরা, জিনারপুর,
উড়ারকান্দা এলাকার ছয়টি স্থানে লোকজনকে পারাপারের জন্য খেয়ার ওপর ভরসা
করতে হয়। এ ধরনের যোগাযোগ যেমন সমস্যাপূর্ণ তেমনি সময়সাপেক্ষ। সবচেয়ে বেশি
সমস্যায় পড়ে শিক্ষার্থীরা, ঠিক সময়ে ক্লাসে আসা অনেক ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে
পড়ে। বর্ষা ও বৃষ্টির মৌসুমে এই নদীতে প্রবল স্রোত থাকে। সে সময়ে ঝুঁকি
নিয়ে স্কুলের শিক্ষার্থী, প্রবীণ ব্যক্তি, নারী ও শিশুদের পারাপার হতে হয়।
নদী পারাপারের সময় দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে। তিন বছর আগে নৌকা ডুবে এক
স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
এ ছাড়া সেতু না থাকায় বিভিন্ন গ্রামে
আবাদ হওয়া সবজি, কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য পণ্য জেলা শহরে পাঠাতে কৃষকেরা
দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। এলাকার লোকজন অনেক দিন ধরেই নদীতে একটি সেতু
নির্মাণের জোর দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের সেই দাবি যদি শুরু থেকে
ইসংশ্লিষ্টদের কাছে পাত্তা পেত, তাহলে এত দিনে হয়তো সেতুটি হয়ে যেত।
স্থানীয় পর্যায় থেকে চাপ না এলে বা কোনো কাজের গুরুত্ব যথাযথভাবে তুলে ধরতে
না পারলে এ ধরনের কাজে অর্থের বরাদ্দ বা প্রকল্প পাস করা সহজ নয়। চলতি
নদীতে দীর্ঘ দিনেও সেতু তৈরি না হওয়ার বিষয়টি সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন ও
জনপ্রতিনিধিদের ব্যর্থতা ও দুর্বলতাকেই তুলে ধরে। দীর্ঘ এই অপেক্ষার পর
সুনামগঞ্জ-৪ আসনের (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) সাংসদ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল
অধিদপ্তরের সদর উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনের সূত্রে জানা গেছে,
বালাকান্দা ও অক্ষয়নগর এলাকায় নদীর ওপর দুটি সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট
বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদিত হলে সেতু নির্মাণের কাজ
শুরু হবে। আমরা আশা করব, এই দুটি সেতু নির্মাণের কাজ যাতে দ্রুত শুরু হয়,
সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন যথাযথ উদ্যোগ নেবে এবং স্থানীয় মানুষের
ভোগান্তি পুরোপুরি দূর হয়ে যাবে।
No comments