ভয়াবহ রাজনৈতিক সঙ্কটে মালদ্বীপ

ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ মালদ্বীপ ভয়াবহ রাজনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে গ্রেফতার, বরখাস্ত কিংবা ইমপ্রিচমেন্ট করতে পারে- এমন শঙ্কায় অনিশ্চিত অবস্থায় পড়ে গেছে দেশটি। এ প্রেক্ষাপটে অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আনিল রোববার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক বক্তৃতায় বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতার করার আদেশ দেয়, তবে তা হবে অসাংবিধানিক ও অবৈধ। আমি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে বলব তারা যেন কোনো ধরনের অসাংবিধানিক আদেশ পালন না করে। দেশটির শীর্ষ আদালত গত সপ্তাহে ৯ রাজনৈতিক ভিন্নমতালম্বী ও ১২ এমপিকে মুক্তির নির্দেশ দেয়ার পর নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় মালদ্বীপে। এদের মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদও রয়েছেন। তিনি দুর্নীতির অভিযোগে কারাভোগ করলেও চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মুক্তি পাওয়া ১২ এমপি পার্লামেন্টে যোগ দিলে সেখানে বিরোধী দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। ফলে সরকারের পতন অনিবার্য।
এর মধ্যেই রোববার পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি জেনারেল আহমদ মোহাম্মদ অপ্রত্যাশিতভাবে পদত্যাগ করেছেন। শনিবার পার্লামেন্ট উদ্বোধনী অধিবেশন বাতিল করে এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধথ করার ঘোষণা দেয়। মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন চীনপন্থী হিসেবে বিবেচিত। তিনি সম্প্রতি চীনের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছেন। এর ফলে ভারত মহাসাগরে অত্যন্ত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশটিতে চীনের প্রভাব ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট নাশিদ ভারতপন্থী হিসেবে বিবেচিত। তিনি অনেক দিন ধরেই ইয়ামিনকে উৎখাত করার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুমও সম্প্রতি তার সাথে যোগ দিয়েছেন। তিনি ইয়ামিনের সৎভাই হলেও তার সাথে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। তিনি নাশিদের সাথে যোগ দিয়েছেন। চলতি বছরই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। কারাদণ্ড হওয়ায় নাশিদ তাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তবে মামুন আবদুল গাইয়ুম ঘোষণা করেছেন, তিনি তাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

No comments

Powered by Blogger.