বিএনপিতে নানামুখী লবিং-তদবির by কাফি কামাল
আসন্ন
জাতীয় কাউন্সিল ও চলমান সাংগঠনিক পুনর্গঠনকে কেন্দ্র করে পদ হারানোর
আশঙ্কায় ভুগছেন বিএনপির শতাধিক নেতা। একদিকে কাউন্সিলকে সামনে রেখে চলমান
সাংগঠনিক পুনর্গঠনে চলছে তোড়জোড়। অন্যদিকে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে কাউন্সিলে
‘এক নেতা এক পদ’ ধারা যুক্ত ও বাস্তবায়নের আলোচনা শুরু হয়েছে সর্বত্র।
শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ইতিমধ্যে এ ইস্যুতে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
সামপ্রতিক বছরগুলোর আন্দোলন-সংগ্রাম এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে অনেকের ভূমিকা
নিয়ে এমনিতেই রয়েছে নানা প্রশ্ন। তার ওপর নতুন করে ‘এক নেতা এক পদ’-এর
সম্ভাবনা। ফলে কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে পদ হারানোর দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলা ও
মহানগর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশ। তৃণমূলে প্রভাব
বিস্তার করতে জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ পদ ছাড়তে নারাজ তারা। আবার
কেন্দ্রে নিজের অবস্থান সুসংহত করতে চান জাতীয় নির্বাহী কমিটির
গুরুত্বপূর্ণ পদ। আর এখানেই দেখা দিয়েছে বিপত্তি। এমন পরিস্থিতিতে তারা
ছুটছেন শীর্ষ নেতাদের বাসাবাড়িতে। চেষ্টা করছেন দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের
সদস্য ও সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর। কখনও একা কখনও সমমনারা
দলবদ্ধ হয়ে। তুলে ধরছেন নিজেদের পক্ষে নানা যুক্তি। দিচ্ছেন
আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেদের ভূমিকার ব্যাখ্যা। আবার পদোন্নতির আশায় ছুটছেন
কেউ কেউ। দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিতরা চালাচ্ছেন তৎপরতা। সবমিলিয়ে পদরক্ষা এবং
পদোন্নতির তদবির জোরালো হয়েছে বিএনপিতে।
সামপ্রতিক সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একাধিক মতবিনিময় সভায় আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ও দলের প্রতি নিবেদিতদের মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে পদ আঁকড়ে থাকা, অকর্মণ্য ও ব্যর্থ নেতাদের আগামী কমিটিতে নেতাকর্মীরা দেখতে চায় না বলেও মন্তব্য করেছেন। এছাড়া, হাইকমান্ডের নির্দেশে বিগত ছয় বছরে নেতাদের কর্মকাণ্ড, মামলা-হামলা-কারাবরণের ভিত্তিতে ও সরকারবিরোধী দুই দফার আন্দোলনে ত্যাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, সৎ, সক্রিয় এবং দক্ষ নেতাদের তালিকা করেছে কেন্দ্রীয় দপ্তর ও চেয়ারপারসন কার্যালয়। আসন্ন কাউন্সিলে দলের শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে- কেন্দ্রের তরফে এমন মনোভাব প্রকাশের পর লবিং-তদবিরে হঠাৎ সক্রিয় হয়েছেন নিষ্ক্রিয় নেতারা। হারিয়ে যাওয়া নেতাদের মুুখ দেখা যাচ্ছে দলের ঘরোয়া কর্মসূচি-নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর ও গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে। নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য, মামলা-জেল-জুলুম থেকে নিরাপদ থাকতে যারা এতদিন দলীয় কর্মকাণ্ড এড়িয়ে চলছিলেন, কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে পদ রক্ষা-পদোন্নতির তদবিরে ব্যস্ত হয়েছেন তারা। এতে নতুন করে ভিড় বাড়ছে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও চেয়ারপারসন কার্যালয়ে। কয়েকদিন আগে নয়াপল্টনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ছুটে এসেছিলেন রাজশাহীর এক নেতা। যিনি বিএনপির একটি জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সম্পাদক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় দপ্তরে দায়িত্বপালনকারী একজন কর্মকর্তা। যার বাড়ি ওই নেতার জেলায় এবং যিনি একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা। ওই নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্যের কাছে এসেছিলেন তদবিরে। কিন্তু তার মুখের ওপর আন্দোলন সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দপ্তরে কর্মরত ওই কর্মকর্তা। এ নিয়ে মৃদু তর্কের পর কার্যালয়ে চলে যান ওই কর্মকর্তা। কিন্তু এরপর পাক্কা তিনঘণ্টা স্থায়ী কমিটির ওই সদস্যের কাছে অবস্থান করেন ওই কেন্দ্রীয় সম্পাদক। এতদিন যারা কারাগারে যাওয়ার ভয়ে আত্মগোপনে ছিলেন তাদের অনেকেই এখন জামিনের জন্য আবেদন করছেন। পদ রক্ষা পাবে এ ধারণায় আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যাচ্ছেন। এমন নেতাদের মধ্যে রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরাও। যারা বিদেশে ছিলেন তারাও এখন দেশে ফিরছেন। বিএনপির রাজশাহী অঞ্চলের একজন সিনিয়র নেতা দীর্ঘদিন থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। কয়েকদিন আগে দুইজনের কাঁধে ভর দিয়ে তিনিও হাজিরা দিয়েছেন চেয়ারপারসন কার্যালয়ে। কেউ কেউ আবার অনুগতদের দিয়ে চালাচ্ছেন তার নানা ইতিবাচক ভূমিকা ও ত্যাগের প্রচারণা।
তবে কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, বছরের পর বছর ‘লবিং’ ভিত্তিক নেতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছেন কর্মীবান্ধব নেতারা। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এবার সে পরিস্থিতি পাল্টাতে যাচ্ছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান লবিং-তদবিরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, অনেকে যোগাযোগ করছেন। যারা এতদিন দলের খবর নেননি তারাও সক্রিয় হচ্ছেন। আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি, কোনো পদের জন্য সুপারিশ করতে পারবো না। তদবিরে কোনো কাজ হবে না। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ বলেন, আমরা জেনেছি- চলমান পুনর্গঠন কার্যক্রমকে অনেক জেলার শীর্ষ নেতারা কৌশলে বিলম্ব করছেন। সেই সঙ্গে তারা বড় বড় নেতাদের কাছে তদবির করছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি- অতীতে যারা দলের ক্ষতি করেছে, দলের মূলধারার ক্ষতি করেছে, নেত্রীর বিরোধিতা করেছে, আন্দোলন-সংগ্রামে ইচ্ছাকৃতভাবে নিষ্ক্রিয় থেকেছে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া উচিত নয়। আর মূল্যায়নের জন্য ত্যাগী ও সৎ নেতারা তদবির করলে দোষের কিছু নেই।
কাউন্সিলের আগেই তৃণমূল পুনর্গঠনে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার নিশ্চয়তা না থাকায় জেলা বা মহানগর কমিটিতে থাকবেন কিনা এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা। বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা জানান, অনেক সময় কেন্দ্রীয় কমিটির পদ পেয়ে জেলা ও মহানগরের শীর্ষ পদকে বেশি গুরুত্ব দেন নেতারা। কারণ সে পদে থাকলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাওয়া যায়। আবার উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া ও জেলা থেকে উপজেলা পর্যন্ত কমিটি গঠনে রাখা যায় প্রত্যক্ষ ভূমিকা। এতে একদিকে দলে অবস্থান শক্তিশালী হয় অন্যদিকে পছন্দের লোকজনদের কমিটি গঠন, পছন্দের লোকদের মনোনয়ন দেয়া ও তাদের ব্যবহার করে নানা সুবিধা পাওয়া যায়। ফলে জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ নেতারা পড়েছেন দোটানায়। কেন্দ্রীয় পদের জন্য লড়বেন না রক্ষা করবেন জেলা-মহানগরের পদ। চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। তাই তারা নানা অজুহাতে ও কৃত্রিম প্রতিবন্ধকতা তৈরির মাধ্যমে বিলম্ব করছেন পুনর্গঠন কর্মকাণ্ডের। জানা গেছে, কাউন্সিলের আগে এ পুনর্গঠন কার্যক্রম অসম্পূর্ণ রাখতে পারলেই তাদের সুবিধা হয়। গঠনতন্ত্রে সংশোধনীর মাধ্যমে ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি বাস্তবায়ন হলেও কৌশলে তারা আদায় করবেন সে সুবিধা। কোনো কারণে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সম্মানজনক পদ না পেলেও পরবর্তী লবিং-তদবিরের মাধ্যমে অটুট রাখবেন জেলা ও মহানগরের পদ। বিএনপির তৃণমূল নেতারা বলছেন, কেন্দ্রীয় অনেক নেতাই স্থানীয় কমিটিতে পদ দখল করে থাকেন। এতে স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠনের অনেক ত্যাগী নেতাকেই পদবঞ্চিত হতে হয়। ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে দলের সাংগঠনিক কাঠামো। কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা ও মহানগর কমিটির আলাদা নেতৃত্ব থাকলে একদিকে পদবঞ্চিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংগঠকই নেতৃত্বে আসবেন। অন্যদিকে পরস্পরের প্রতি তৈরি হবে জবাবদিহিতা।
সামপ্রতিক সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একাধিক মতবিনিময় সভায় আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ও দলের প্রতি নিবেদিতদের মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে পদ আঁকড়ে থাকা, অকর্মণ্য ও ব্যর্থ নেতাদের আগামী কমিটিতে নেতাকর্মীরা দেখতে চায় না বলেও মন্তব্য করেছেন। এছাড়া, হাইকমান্ডের নির্দেশে বিগত ছয় বছরে নেতাদের কর্মকাণ্ড, মামলা-হামলা-কারাবরণের ভিত্তিতে ও সরকারবিরোধী দুই দফার আন্দোলনে ত্যাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, সৎ, সক্রিয় এবং দক্ষ নেতাদের তালিকা করেছে কেন্দ্রীয় দপ্তর ও চেয়ারপারসন কার্যালয়। আসন্ন কাউন্সিলে দলের শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে- কেন্দ্রের তরফে এমন মনোভাব প্রকাশের পর লবিং-তদবিরে হঠাৎ সক্রিয় হয়েছেন নিষ্ক্রিয় নেতারা। হারিয়ে যাওয়া নেতাদের মুুখ দেখা যাচ্ছে দলের ঘরোয়া কর্মসূচি-নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর ও গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে। নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য, মামলা-জেল-জুলুম থেকে নিরাপদ থাকতে যারা এতদিন দলীয় কর্মকাণ্ড এড়িয়ে চলছিলেন, কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে পদ রক্ষা-পদোন্নতির তদবিরে ব্যস্ত হয়েছেন তারা। এতে নতুন করে ভিড় বাড়ছে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও চেয়ারপারসন কার্যালয়ে। কয়েকদিন আগে নয়াপল্টনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ছুটে এসেছিলেন রাজশাহীর এক নেতা। যিনি বিএনপির একটি জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সম্পাদক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় দপ্তরে দায়িত্বপালনকারী একজন কর্মকর্তা। যার বাড়ি ওই নেতার জেলায় এবং যিনি একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা। ওই নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্যের কাছে এসেছিলেন তদবিরে। কিন্তু তার মুখের ওপর আন্দোলন সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দপ্তরে কর্মরত ওই কর্মকর্তা। এ নিয়ে মৃদু তর্কের পর কার্যালয়ে চলে যান ওই কর্মকর্তা। কিন্তু এরপর পাক্কা তিনঘণ্টা স্থায়ী কমিটির ওই সদস্যের কাছে অবস্থান করেন ওই কেন্দ্রীয় সম্পাদক। এতদিন যারা কারাগারে যাওয়ার ভয়ে আত্মগোপনে ছিলেন তাদের অনেকেই এখন জামিনের জন্য আবেদন করছেন। পদ রক্ষা পাবে এ ধারণায় আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যাচ্ছেন। এমন নেতাদের মধ্যে রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরাও। যারা বিদেশে ছিলেন তারাও এখন দেশে ফিরছেন। বিএনপির রাজশাহী অঞ্চলের একজন সিনিয়র নেতা দীর্ঘদিন থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। কয়েকদিন আগে দুইজনের কাঁধে ভর দিয়ে তিনিও হাজিরা দিয়েছেন চেয়ারপারসন কার্যালয়ে। কেউ কেউ আবার অনুগতদের দিয়ে চালাচ্ছেন তার নানা ইতিবাচক ভূমিকা ও ত্যাগের প্রচারণা।
তবে কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, বছরের পর বছর ‘লবিং’ ভিত্তিক নেতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছেন কর্মীবান্ধব নেতারা। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এবার সে পরিস্থিতি পাল্টাতে যাচ্ছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান লবিং-তদবিরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, অনেকে যোগাযোগ করছেন। যারা এতদিন দলের খবর নেননি তারাও সক্রিয় হচ্ছেন। আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি, কোনো পদের জন্য সুপারিশ করতে পারবো না। তদবিরে কোনো কাজ হবে না। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ বলেন, আমরা জেনেছি- চলমান পুনর্গঠন কার্যক্রমকে অনেক জেলার শীর্ষ নেতারা কৌশলে বিলম্ব করছেন। সেই সঙ্গে তারা বড় বড় নেতাদের কাছে তদবির করছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি- অতীতে যারা দলের ক্ষতি করেছে, দলের মূলধারার ক্ষতি করেছে, নেত্রীর বিরোধিতা করেছে, আন্দোলন-সংগ্রামে ইচ্ছাকৃতভাবে নিষ্ক্রিয় থেকেছে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া উচিত নয়। আর মূল্যায়নের জন্য ত্যাগী ও সৎ নেতারা তদবির করলে দোষের কিছু নেই।
কাউন্সিলের আগেই তৃণমূল পুনর্গঠনে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার নিশ্চয়তা না থাকায় জেলা বা মহানগর কমিটিতে থাকবেন কিনা এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা। বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা জানান, অনেক সময় কেন্দ্রীয় কমিটির পদ পেয়ে জেলা ও মহানগরের শীর্ষ পদকে বেশি গুরুত্ব দেন নেতারা। কারণ সে পদে থাকলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাওয়া যায়। আবার উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া ও জেলা থেকে উপজেলা পর্যন্ত কমিটি গঠনে রাখা যায় প্রত্যক্ষ ভূমিকা। এতে একদিকে দলে অবস্থান শক্তিশালী হয় অন্যদিকে পছন্দের লোকজনদের কমিটি গঠন, পছন্দের লোকদের মনোনয়ন দেয়া ও তাদের ব্যবহার করে নানা সুবিধা পাওয়া যায়। ফলে জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ নেতারা পড়েছেন দোটানায়। কেন্দ্রীয় পদের জন্য লড়বেন না রক্ষা করবেন জেলা-মহানগরের পদ। চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। তাই তারা নানা অজুহাতে ও কৃত্রিম প্রতিবন্ধকতা তৈরির মাধ্যমে বিলম্ব করছেন পুনর্গঠন কর্মকাণ্ডের। জানা গেছে, কাউন্সিলের আগে এ পুনর্গঠন কার্যক্রম অসম্পূর্ণ রাখতে পারলেই তাদের সুবিধা হয়। গঠনতন্ত্রে সংশোধনীর মাধ্যমে ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি বাস্তবায়ন হলেও কৌশলে তারা আদায় করবেন সে সুবিধা। কোনো কারণে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সম্মানজনক পদ না পেলেও পরবর্তী লবিং-তদবিরের মাধ্যমে অটুট রাখবেন জেলা ও মহানগরের পদ। বিএনপির তৃণমূল নেতারা বলছেন, কেন্দ্রীয় অনেক নেতাই স্থানীয় কমিটিতে পদ দখল করে থাকেন। এতে স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠনের অনেক ত্যাগী নেতাকেই পদবঞ্চিত হতে হয়। ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে দলের সাংগঠনিক কাঠামো। কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা ও মহানগর কমিটির আলাদা নেতৃত্ব থাকলে একদিকে পদবঞ্চিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংগঠকই নেতৃত্বে আসবেন। অন্যদিকে পরস্পরের প্রতি তৈরি হবে জবাবদিহিতা।
No comments