অভিযোগপত্রে সাংসদেরা চার ভাই by কামনাশীষ শেখর
আমানুর রহমান খান,সহিদুর রহমান খান জাহিদুর রহমান খান,সানিয়াত খান |
টাঙ্গাইলে
আওয়ামী লীগের নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় দলের সাংসদ আমানুর রহমান খান
(রানা) ও তাঁর তিন ভাইসহ মোট ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
গত বুধবার জেলার বিচারিক হাকিম আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
আমানুর টাঙ্গাইল-৩ আসনে (ঘাটাইল) আওয়ামী লীগের সাংসদ। তাঁর তিন ভাই হলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান (মুক্তি), ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান (কাকন) ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খান (বাপ্পা)।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই খান পরিবার টাঙ্গাইল শহরে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। তাদের দাপটের মুখে এলাকায় ও দলে কেউই মুখ খুলতে সাহস পেতেন না। ফলে চার ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অর্ধশত মামলা হলেও বাদী ও সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হননি। এ কারণে অনেক মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। আবার কিছু মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকার প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে।
এ পরিস্থিতিতে ২০১২ সালের শেষ দিকে খান পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে তৎপরতা শুরু করেন। একই পদে সাংসদ আমানুরের ভাই সহিদুরও প্রার্থী হতে সক্রিয় ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে ফারুক আহমেদকে বিরত রাখতে না পেরে তাঁকে সাংসদ ও তাঁর ভাইয়েরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন বলে মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।
আলোচিত এ হত্যা মামলার তিন বছর পর অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও সাংসদ আমানুর, তাঁর তিন ভাইসহ আসামিদের ১০ জনই পলাতক। বাকি চারজন কারাগারে আছেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা খুবই কৌশলী হওয়ায় তাঁদের দীর্ঘদিনেও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
যদিও গত বছরের ৫ জুলাই বাজেট অধিবেশনে এক দিনের জন্য সংসদে যোগ দেন আমানুর। এরপর ২০ নভেম্বরও তাঁকে সংসদ এলাকায় দেখা গিয়েছিল।
নিহত ফারুক আহমেদ ছাত্রজীবনে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। একাত্তরে মুক্তাঞ্চল থেকে প্রকাশিত রণাঙ্গন নামের একটি পত্রিকার সহসম্পাদক ছিলেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ‘প্রতিরোধ যুদ্ধে’ অংশ নিয়ে পঙ্গু হন তিনি।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ দেহ পাওয়া যায় টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় তাঁর বাসার কাছের রাস্তায়। তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনি কোনো আসামির নাম উল্লেখ করেননি। প্রথমে থানার পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত শুরু করে।
তদন্ত শেষে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নাহার আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের তদন্তে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এখন চাই, মামলাটি দ্রুত বিচার আদালতে পাঠিয়ে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত নিশ্চিত হোক। সাংসদ আমানুরসহ তাঁর ভাইদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় অসন্তোষও প্রকাশ করেন নাহার আহমেদ।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, গত অক্টোবরে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার পর সাংসদ আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা দলের এখন কোনো পর্যায়েই নেই। তিনি বলেন, ফারুকের হত্যাকারীদের বিচারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকেও চাপ ছিল।
অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন সাংসদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির হোসেন, আনিছুল ইসলাম (রাজা), মোহাম্মদ আলী, সমীর, ফরিদ আহমেদ, আমানুরের দারোয়ান বাবু, যুবলীগের তৎকালীন নেতা আলমগীর হোসেন (চাঁন), নাসির উদ্দিন (নুরু), ছানোয়ার হোসেন ও সাবেক পৌর কমিশনার মাছুদুর রহমান।
এ ছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া পৌর কাউন্সিলর শফিকুল হক (শামীম), ফিরোজ আহমেদ ও মোহাম্মদ ফজলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। আরেক আসামি আবদুল হক ২০১৪ সালের ১০ আগস্ট প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হওয়ায় তাঁকেও অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে ৩৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ফারুক আহমেদ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি শিল্পকলা একাডেমি, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর সাধারণ সম্পাদক হওয়ার খুবই সম্ভাবনা ছিল। তাঁর জনপ্রিয়তা খান পরিবারের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ, খান পরিবারের সন্তান টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খানও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। ঘটনার মাস দেড়েক আগে সাংসদ আমানুর, তাঁর তিন ভাই এবং নাছিরউদ্দিন, ছানোয়ার হোসেন ও আলমগীর হোসেন ফারুককে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সাংসদের দুই ভাই সহিদুর ও জাহিদুর পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজেদের দায় এড়ানোর জন্য হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে বিদেশে যান।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমানুর ও তাঁর ছোট ভাই সানিয়াত তাঁদের কলেজপাড়া বাসভবনের কাছে গ্লোবাল ট্রেনিং সেন্টারে আনিছুল ইসলামের (সাংসদের ঘনিষ্ঠ) মাধ্যমে ফারুককে ডেকে আনান বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়। সেখানে ফারুককে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থিতা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন সানিয়াত। কিন্তু ফারুক রাজি হননি। একপর্যায়ে ফারুক কক্ষ থেকে বের হয়ে শৌচাগারে যান। শৌচাগার থেকে ফেরার পথে কবির হোসেন (সাংসদের ঘনিষ্ঠ) পিস্তল দিয়ে ফারুককে গুলি করেন। এরপর সাংসদ আমানুরের নির্দেশে আনিছুল, মোহাম্মদ আলী, আবদুল হক, সমীর ও কবীর ফারুকের মৃতদেহ তাঁর বাসার সামনে ফেলে আসেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতক আসামিদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হলে মামলা-সম্পর্কিত আরও অনেক সাক্ষ্য এবং ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হতো। তবে আসামিরা গ্রেপ্তার হলে বা আত্মসমর্পণ করলে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে অধিক সাক্ষ্য ও অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইল ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মাহফীজুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত শেষ করে মামলার আলামতসহ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। সাক্ষীদের সাক্ষ্য, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের জবানবন্দি, আসামিদের পূর্বাপর আচরণ ও ঘটনার সার্বিক পর্যালোচনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
আমানুর টাঙ্গাইল-৩ আসনে (ঘাটাইল) আওয়ামী লীগের সাংসদ। তাঁর তিন ভাই হলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান (মুক্তি), ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান (কাকন) ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খান (বাপ্পা)।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই খান পরিবার টাঙ্গাইল শহরে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। তাদের দাপটের মুখে এলাকায় ও দলে কেউই মুখ খুলতে সাহস পেতেন না। ফলে চার ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অর্ধশত মামলা হলেও বাদী ও সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হননি। এ কারণে অনেক মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। আবার কিছু মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকার প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে।
এ পরিস্থিতিতে ২০১২ সালের শেষ দিকে খান পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে তৎপরতা শুরু করেন। একই পদে সাংসদ আমানুরের ভাই সহিদুরও প্রার্থী হতে সক্রিয় ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে ফারুক আহমেদকে বিরত রাখতে না পেরে তাঁকে সাংসদ ও তাঁর ভাইয়েরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন বলে মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।
আলোচিত এ হত্যা মামলার তিন বছর পর অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও সাংসদ আমানুর, তাঁর তিন ভাইসহ আসামিদের ১০ জনই পলাতক। বাকি চারজন কারাগারে আছেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা খুবই কৌশলী হওয়ায় তাঁদের দীর্ঘদিনেও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
যদিও গত বছরের ৫ জুলাই বাজেট অধিবেশনে এক দিনের জন্য সংসদে যোগ দেন আমানুর। এরপর ২০ নভেম্বরও তাঁকে সংসদ এলাকায় দেখা গিয়েছিল।
নিহত ফারুক আহমেদ ছাত্রজীবনে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। একাত্তরে মুক্তাঞ্চল থেকে প্রকাশিত রণাঙ্গন নামের একটি পত্রিকার সহসম্পাদক ছিলেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ‘প্রতিরোধ যুদ্ধে’ অংশ নিয়ে পঙ্গু হন তিনি।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ দেহ পাওয়া যায় টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় তাঁর বাসার কাছের রাস্তায়। তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনি কোনো আসামির নাম উল্লেখ করেননি। প্রথমে থানার পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত শুরু করে।
তদন্ত শেষে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নাহার আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের তদন্তে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এখন চাই, মামলাটি দ্রুত বিচার আদালতে পাঠিয়ে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত নিশ্চিত হোক। সাংসদ আমানুরসহ তাঁর ভাইদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় অসন্তোষও প্রকাশ করেন নাহার আহমেদ।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, গত অক্টোবরে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার পর সাংসদ আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা দলের এখন কোনো পর্যায়েই নেই। তিনি বলেন, ফারুকের হত্যাকারীদের বিচারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকেও চাপ ছিল।
অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন সাংসদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির হোসেন, আনিছুল ইসলাম (রাজা), মোহাম্মদ আলী, সমীর, ফরিদ আহমেদ, আমানুরের দারোয়ান বাবু, যুবলীগের তৎকালীন নেতা আলমগীর হোসেন (চাঁন), নাসির উদ্দিন (নুরু), ছানোয়ার হোসেন ও সাবেক পৌর কমিশনার মাছুদুর রহমান।
এ ছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া পৌর কাউন্সিলর শফিকুল হক (শামীম), ফিরোজ আহমেদ ও মোহাম্মদ ফজলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। আরেক আসামি আবদুল হক ২০১৪ সালের ১০ আগস্ট প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হওয়ায় তাঁকেও অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে ৩৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ফারুক আহমেদ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি শিল্পকলা একাডেমি, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর সাধারণ সম্পাদক হওয়ার খুবই সম্ভাবনা ছিল। তাঁর জনপ্রিয়তা খান পরিবারের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ, খান পরিবারের সন্তান টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খানও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। ঘটনার মাস দেড়েক আগে সাংসদ আমানুর, তাঁর তিন ভাই এবং নাছিরউদ্দিন, ছানোয়ার হোসেন ও আলমগীর হোসেন ফারুককে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সাংসদের দুই ভাই সহিদুর ও জাহিদুর পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজেদের দায় এড়ানোর জন্য হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে বিদেশে যান।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমানুর ও তাঁর ছোট ভাই সানিয়াত তাঁদের কলেজপাড়া বাসভবনের কাছে গ্লোবাল ট্রেনিং সেন্টারে আনিছুল ইসলামের (সাংসদের ঘনিষ্ঠ) মাধ্যমে ফারুককে ডেকে আনান বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়। সেখানে ফারুককে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থিতা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন সানিয়াত। কিন্তু ফারুক রাজি হননি। একপর্যায়ে ফারুক কক্ষ থেকে বের হয়ে শৌচাগারে যান। শৌচাগার থেকে ফেরার পথে কবির হোসেন (সাংসদের ঘনিষ্ঠ) পিস্তল দিয়ে ফারুককে গুলি করেন। এরপর সাংসদ আমানুরের নির্দেশে আনিছুল, মোহাম্মদ আলী, আবদুল হক, সমীর ও কবীর ফারুকের মৃতদেহ তাঁর বাসার সামনে ফেলে আসেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতক আসামিদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হলে মামলা-সম্পর্কিত আরও অনেক সাক্ষ্য এবং ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হতো। তবে আসামিরা গ্রেপ্তার হলে বা আত্মসমর্পণ করলে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে অধিক সাক্ষ্য ও অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইল ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মাহফীজুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত শেষ করে মামলার আলামতসহ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। সাক্ষীদের সাক্ষ্য, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের জবানবন্দি, আসামিদের পূর্বাপর আচরণ ও ঘটনার সার্বিক পর্যালোচনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
No comments