ঢাকা–চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্প: ব্যয় বাড়ছে ১৩৩৫ কোটি টাকা by আনোয়ার হোসেন
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার পদুয়ার বাজারে উড়ালসড়ক নির্মাণকাজের জন্য মহাসড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। বাড়তি যানবাহনের চাপে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। গত রোববার চলছিল মেরামতের কাজ l ছবি: হাসান রাজা |
ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজের ব্যয় বাড়ছে ১ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা বা
প্রায় ৬২ শতাংশ। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। এখন
বেড়ে হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। সময়মতো কাজ না হওয়ায়
ঠিকাদারদের অতিরিক্ত অর্থ দেওয়ার কারণে এই ব্যয় বেড়েছে।
ব্যয় বাড়লেও প্রকল্পের কাজ শেষই হচ্ছে না। দুই দফা সময় বৃদ্ধির পর এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। গত মাস পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৭০ শতাংশ।
প্রকল্পের অগ্রগতিসংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রকল্পের অধীন ১৯২ কিলোমিটার মহাসড়কের মধ্যে গত সপ্তাহ পর্যন্ত ১৪২ কিলোমিটার পিচ ঢালাই হয়েছে। তবে তা একটানা নয়, খানিক বাদে বাদে। ফলে পুরোনো সড়কের পাশাপাশি নতুন সড়ক পুরোপুরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
১৪২ কিলোমিটারের বাইরে মহাসড়কের ২০ কিলোমিটার পথ প্রাথমিক পাকা করার কাজ হয়েছে। এর ওপর পুনরায় পিচ ঢালাই হবে। বাকি ৩০ কিলোমিটার সড়কে এখনো মাটির কাজ চলছে; যার বেশির ভাগই পড়েছে কুমিল্লা থেকে ফেনীর মধ্যে।
আর প্রকল্পের অধীন সাতটি সেতু ও তিনটি উড়ালসড়ক নির্মাণকাজের ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছিল ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। চুক্তি অনুযায়ী দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। গত মাস পর্যন্ত অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্র জানায়, বাড়তি ব্যয় সংযোজন করে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ আরেকটি সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করছে। সেটি শিগগিরই অনুমোদনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ওই প্রস্তাবে প্রকল্পের সময়সীমা বৃদ্ধির প্রস্তাবও থাকবে। ২০০৬ সালে করা মূল প্রকল্প প্রস্তাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। ২০১২ সালে সংশোধনের পর তা দাঁড়ায় ৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এখন যে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, তাতে ব্যয় গিয়ে ঠেকছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।
গণখাতে ক্রয়সংক্রান্ত আইনে (পিপিআর) বলা হয়েছে, কোনো প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগের পর ওই ঠিকাদারের পেছনে মূল চুক্তির ৫০ শতাংশের বেশি খরচ করা যাবে না। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্পে বাড়তি খরচ হচ্ছে প্রায় ৬২ শতাংশ।
সওজ সূত্র জানায়, এই বাড়তি খরচের বেশির ভাগই যাচ্ছে ঠিকাদারের মাশুল হিসেবে। কারণ, ঠিকাদারের সঙ্গে করা চুক্তিতে মূল্যবৃদ্ধি যোগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এর ফলে বছর বছর নির্মাণসামগ্রী ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঠিকাদারের বিলও বাড়ানো হয়েছে। এ জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় যত বেড়েছে, ঠিকাদারের মাশুলও বেড়েছে সেই হারে।
আর দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণকাজ চলার কারণে এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পুরোনো সড়কটিও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সড়ক অচল হয়ে যাবে—এ আশঙ্কায় সওজ কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারদের দিয়ে সড়ক মেরামতের কাজ করায়। এর জন্য বাড়তি বিলও দিতে হয় ঠিকাদারদের। চুক্তিপত্রে নতুন সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি পুরোনো সড়কটিও চালু রাখার কথা বলা হয়। কিন্তু চীনা কোম্পানি সিনোহাইড্রো পুরোনো সড়ক মেরামতের কাজ করবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে সওজ চীনা কোম্পানির আওতাধীনসহ পুরো সড়কের মেরামতকাজের দায়িত্ব দেয় ওই প্রকল্পের বাকি দুই ঠিকাদার বাংলাদেশের রেজা কনস্ট্রাকশন ও তাহের ব্রাদার্স লিমিটেডকে।
প্রথমে সিদ্ধান্ত ছিল, পুরো মহাসড়কই হবে পিচের। কিন্তু পরে মহাসড়ক ঘেঁষে বাজার গড়ে ওঠা স্থানগুলোতে প্রায় দেড় লাখ বর্গমিটার কংক্রিটের ঢালাই দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য কিছু ব্যয় বাড়ে।
সময় বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক ইবনে আলম হাসান বলেন, তাঁরা এখনো ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন। না পারলে সেটা পরে দেখা যাবে। আর ব্যয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি এবং চুক্তির বাইরে কাজ করার কারণে ব্যয় বেড়েছে। পুনরায় ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
বাড়তি এই ব্যয় পিপিআরের লঙ্ঘন কি না, জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রতিবছরের মূল্যবৃদ্ধি আর বাড়তি কাজের খরচ এক জিনিস নয়। বাড়তি কাজের বিল ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের নিয়ম আছে। এ ক্ষেত্রে আইনের লঙ্ঘন হয়নি।
বাড়তি কাজের নামে বিল: দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেন করার ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১০ সালের জানুয়ারিতে। শর্ত ছিল, তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এরপর সময় বাড়িয়ে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। তাতেও ব্যর্থ হলে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় চলতি ডিসেম্বর পর্যন্ত। এখন আরেক দফা সময় বাড়াতে হবে।
সড়ক চার লেন করার কাজ ১০টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। সাতটি প্যাকেজের কাজ পায় চীনের সিনোহাইড্রো। বাংলাদেশের রেজা কনস্ট্রাকশন পায় দুটির এবং তাহের ব্রাদার্স পায় একটি।
সওজ সূত্র জানায়, মেরামত ও বাড়তি কাজ করার দাবি করে রেজা কনস্ট্রাকশন মূল চুক্তির চেয়ে প্রায় ১১৯ কোটি টাকা বাড়তি পেয়েছে। এর সঙ্গে বছর বছর মূল্যবৃদ্ধি তো আছেই। মূল্যবৃদ্ধি ছাড়া তাহের ব্রাদার্স বাড়তি পাচ্ছে প্রায় ৬৩ কোটি টাকা। সিনোহাইড্রো মেরামতসহ অন্য কিছু কাজ ছেড়ে দেওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়ছে না। তবে নির্মাণসামগ্রী ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাড়তি টাকা পাচ্ছে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সেতু ও উড়ালসড়কের কাজে ধীর গতি: সাতটি সেতু ও তিনটি উড়ালসড়কের কাজ ভাগ করা হয়েছে তিন ভাগে। এর মধ্যে চৌদ্দগ্রামের মিয়ার বাজারে একটি সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছিল তাহের অ্যান্ড সন্স। সেটির কাজ সময়মতো শেষ হয়েছে। আরও ছয়টি বড় সেতু ও তিনটি উড়ালসড়ক নির্মাণের দুটি আলাদা প্যাকেজের কাজ পেয়েছিল শিখো-পিবিএল (যৌথ) ও গ্যানন ডানকারলি অ্যান্ড কোম্পানি। দুটি প্রতিষ্ঠানকেই ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত মাস পর্যন্ত শিখো-বিপিএল কাজ করেছে ৫৬ শতাংশ। আর গ্যানন ডানকারলি করেছে ৮১ শতাংশ।
সওজ সূত্র জানিয়েছে, শিখো-পিবিএল যৌথভাবে কাজ পেলেও মূল দায়িত্ব পিবিএল বা প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেডের। বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠান ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পেও কাজ পেয়ে তা শেষ করতে পারছে না। সওজের চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলের অধীনে দুটি প্রকল্পের কাজ নিয়ে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করার কারণে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য চিঠি দিয়েছেন সওজের কর্মকর্তারা। অন্যদিকে গ্যানন ডানকারলি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান। এর কর্মকর্তাদের বেশির ভাগ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে থাকেন, বর্ষায় চলে যান। এ সময় সাধারণ শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়েও ঝামেলা তৈরি হয়।
ব্যয় বাড়লেও প্রকল্পের কাজ শেষই হচ্ছে না। দুই দফা সময় বৃদ্ধির পর এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। গত মাস পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৭০ শতাংশ।
প্রকল্পের অগ্রগতিসংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রকল্পের অধীন ১৯২ কিলোমিটার মহাসড়কের মধ্যে গত সপ্তাহ পর্যন্ত ১৪২ কিলোমিটার পিচ ঢালাই হয়েছে। তবে তা একটানা নয়, খানিক বাদে বাদে। ফলে পুরোনো সড়কের পাশাপাশি নতুন সড়ক পুরোপুরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
১৪২ কিলোমিটারের বাইরে মহাসড়কের ২০ কিলোমিটার পথ প্রাথমিক পাকা করার কাজ হয়েছে। এর ওপর পুনরায় পিচ ঢালাই হবে। বাকি ৩০ কিলোমিটার সড়কে এখনো মাটির কাজ চলছে; যার বেশির ভাগই পড়েছে কুমিল্লা থেকে ফেনীর মধ্যে।
আর প্রকল্পের অধীন সাতটি সেতু ও তিনটি উড়ালসড়ক নির্মাণকাজের ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছিল ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। চুক্তি অনুযায়ী দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। গত মাস পর্যন্ত অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্র জানায়, বাড়তি ব্যয় সংযোজন করে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ আরেকটি সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করছে। সেটি শিগগিরই অনুমোদনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ওই প্রস্তাবে প্রকল্পের সময়সীমা বৃদ্ধির প্রস্তাবও থাকবে। ২০০৬ সালে করা মূল প্রকল্প প্রস্তাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। ২০১২ সালে সংশোধনের পর তা দাঁড়ায় ৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এখন যে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, তাতে ব্যয় গিয়ে ঠেকছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।
গণখাতে ক্রয়সংক্রান্ত আইনে (পিপিআর) বলা হয়েছে, কোনো প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগের পর ওই ঠিকাদারের পেছনে মূল চুক্তির ৫০ শতাংশের বেশি খরচ করা যাবে না। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্পে বাড়তি খরচ হচ্ছে প্রায় ৬২ শতাংশ।
সওজ সূত্র জানায়, এই বাড়তি খরচের বেশির ভাগই যাচ্ছে ঠিকাদারের মাশুল হিসেবে। কারণ, ঠিকাদারের সঙ্গে করা চুক্তিতে মূল্যবৃদ্ধি যোগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এর ফলে বছর বছর নির্মাণসামগ্রী ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঠিকাদারের বিলও বাড়ানো হয়েছে। এ জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় যত বেড়েছে, ঠিকাদারের মাশুলও বেড়েছে সেই হারে।
আর দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণকাজ চলার কারণে এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পুরোনো সড়কটিও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সড়ক অচল হয়ে যাবে—এ আশঙ্কায় সওজ কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারদের দিয়ে সড়ক মেরামতের কাজ করায়। এর জন্য বাড়তি বিলও দিতে হয় ঠিকাদারদের। চুক্তিপত্রে নতুন সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি পুরোনো সড়কটিও চালু রাখার কথা বলা হয়। কিন্তু চীনা কোম্পানি সিনোহাইড্রো পুরোনো সড়ক মেরামতের কাজ করবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে সওজ চীনা কোম্পানির আওতাধীনসহ পুরো সড়কের মেরামতকাজের দায়িত্ব দেয় ওই প্রকল্পের বাকি দুই ঠিকাদার বাংলাদেশের রেজা কনস্ট্রাকশন ও তাহের ব্রাদার্স লিমিটেডকে।
প্রথমে সিদ্ধান্ত ছিল, পুরো মহাসড়কই হবে পিচের। কিন্তু পরে মহাসড়ক ঘেঁষে বাজার গড়ে ওঠা স্থানগুলোতে প্রায় দেড় লাখ বর্গমিটার কংক্রিটের ঢালাই দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য কিছু ব্যয় বাড়ে।
সময় বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক ইবনে আলম হাসান বলেন, তাঁরা এখনো ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন। না পারলে সেটা পরে দেখা যাবে। আর ব্যয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি এবং চুক্তির বাইরে কাজ করার কারণে ব্যয় বেড়েছে। পুনরায় ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
বাড়তি এই ব্যয় পিপিআরের লঙ্ঘন কি না, জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রতিবছরের মূল্যবৃদ্ধি আর বাড়তি কাজের খরচ এক জিনিস নয়। বাড়তি কাজের বিল ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের নিয়ম আছে। এ ক্ষেত্রে আইনের লঙ্ঘন হয়নি।
বাড়তি কাজের নামে বিল: দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেন করার ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১০ সালের জানুয়ারিতে। শর্ত ছিল, তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এরপর সময় বাড়িয়ে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। তাতেও ব্যর্থ হলে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় চলতি ডিসেম্বর পর্যন্ত। এখন আরেক দফা সময় বাড়াতে হবে।
সড়ক চার লেন করার কাজ ১০টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। সাতটি প্যাকেজের কাজ পায় চীনের সিনোহাইড্রো। বাংলাদেশের রেজা কনস্ট্রাকশন পায় দুটির এবং তাহের ব্রাদার্স পায় একটি।
সওজ সূত্র জানায়, মেরামত ও বাড়তি কাজ করার দাবি করে রেজা কনস্ট্রাকশন মূল চুক্তির চেয়ে প্রায় ১১৯ কোটি টাকা বাড়তি পেয়েছে। এর সঙ্গে বছর বছর মূল্যবৃদ্ধি তো আছেই। মূল্যবৃদ্ধি ছাড়া তাহের ব্রাদার্স বাড়তি পাচ্ছে প্রায় ৬৩ কোটি টাকা। সিনোহাইড্রো মেরামতসহ অন্য কিছু কাজ ছেড়ে দেওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়ছে না। তবে নির্মাণসামগ্রী ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাড়তি টাকা পাচ্ছে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সেতু ও উড়ালসড়কের কাজে ধীর গতি: সাতটি সেতু ও তিনটি উড়ালসড়কের কাজ ভাগ করা হয়েছে তিন ভাগে। এর মধ্যে চৌদ্দগ্রামের মিয়ার বাজারে একটি সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছিল তাহের অ্যান্ড সন্স। সেটির কাজ সময়মতো শেষ হয়েছে। আরও ছয়টি বড় সেতু ও তিনটি উড়ালসড়ক নির্মাণের দুটি আলাদা প্যাকেজের কাজ পেয়েছিল শিখো-পিবিএল (যৌথ) ও গ্যানন ডানকারলি অ্যান্ড কোম্পানি। দুটি প্রতিষ্ঠানকেই ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত মাস পর্যন্ত শিখো-বিপিএল কাজ করেছে ৫৬ শতাংশ। আর গ্যানন ডানকারলি করেছে ৮১ শতাংশ।
সওজ সূত্র জানিয়েছে, শিখো-পিবিএল যৌথভাবে কাজ পেলেও মূল দায়িত্ব পিবিএল বা প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেডের। বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠান ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পেও কাজ পেয়ে তা শেষ করতে পারছে না। সওজের চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলের অধীনে দুটি প্রকল্পের কাজ নিয়ে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করার কারণে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য চিঠি দিয়েছেন সওজের কর্মকর্তারা। অন্যদিকে গ্যানন ডানকারলি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান। এর কর্মকর্তাদের বেশির ভাগ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে থাকেন, বর্ষায় চলে যান। এ সময় সাধারণ শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়েও ঝামেলা তৈরি হয়।
No comments