এমআরপি না থাকলে আরব আমিরাতে বিপাকে পড়বে ২ লাখ অভিবাসী
আর
মাত্র ৫ মাস সময়। এর মধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত প্রায় ২ লাখ
বাংলাদেশী অভিবাসীকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) সংগ্রহ করতে হবে।
যাদের কাছে হাতে লেখা পাসপোর্ট আছে তাদের অবশ্যই তা পরিবর্তন করে এমআরপি
পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন
(আইসিএও) সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ২৪শে নভেম্বরের পরে
বিশ্বে হাতে লেখা পাসপোর্ট গৃহীত হবে না। তাই যেসব ব্যক্তির কাছে এমআরপি
পাসপোর্ট নেই তাদের কোন দেশই ভিসা দেবে না। অথবা কোন দেশে প্রবেশ করতে দেবে
না কাউকে। তাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান
গালফ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সব বাংলাদেশীকে যত দ্রুত সম্ভব এমআরপি
পাসপোর্ট সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ২০১১ সাল থেকে এ
পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের কূটনৈতিক মিশনগুলো প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার
এমআরপি পাসপোর্ট ইস্যু করেছে। এখনও এমন পাসপোর্ট নেই প্রায় ২ লাখ
বাংলাদেশীর। তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাত থেকে আট লাখ বাংলাদেশী
আছেন। যারা এখনও এমআরপি পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন নি তাদের তিনি যত দ্রুত সম্ভব
এমআরপি পাসপোর্ট সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শেষ মুহূর্তের
জন্য অপেক্ষা না করে যত তাড়াতাড়ি হাতে লেখা পাসপোর্ট পরিবর্তন করে এমআরপি
পাসপোর্ট করতে হবে। সাধারণত একটি নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করতে ৬ থেকে আট
সপ্তাহ সময় লাগে। তাই যত দেরিতে পাসপোর্ট আধুনিকায়নের জন্য জমা পড়বে তত তা
প্রক্রিয়াকরণ করতে বিলম্ব হবে। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই শুধু নন, একই সঙ্গে
বাংলাদেশ মিশনকেই বেগ পেতে হবে, হয়রান হতে হবে। শ্রমিকদের জন্য এমআরপির ফি
১২৫ দিরহাম। অন্যান্য ক্ষেত্রে এ ফি ৪০৫ দিরহাম। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান
বলেন, যদিও আবুধাবি দূতাবাস ও দুবাইয়ের কনসুলেটের প্রতিদিন ৮০০ পাসপোর্ট
ইস্যু করার সক্ষমতা আছে, তথাপি এখন দিনে মাত্র ৫০০ আবেদনকারী আবেদন জমা
দিচ্ছেন। ‘ইদ্রিস’ নাসে একটি কোম্পানির কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার
পাসপোর্টবিষয়ক সার্ভিস নিয়ে থাকে। তাদের সার্ভিস সেন্টার আরও বাড়ানো হচ্ছে।
যখন তারা পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ শুরু করবে তখন আরও বেশিসংখ্যক পাসপোর্ট নবায়ন
করা সম্ভব হবে। মোহাম্মদ ইমরান বলেন, যদি কোন শ্রমিক বা কোন বাংলাদেশী তার
পাসপোর্ট পরিবর্তন করে এমআরপিতে পরিণত না করেন তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে
তারা ভিসা নবায়ন করাতে পারবেন না। এরই মধ্যে গালফ নিউজের এক খবরে বলা
হয়েছে, যাদের হাতে হাতে লেখা পাসপোর্ট আছে তারা নানা রকম বিড়ম্বনার শিকার
হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যদি সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই এ অবস্থা হয়
তাহলে এ সময়সীমা অর্থাৎ ২৪শে নভেম্বরের পরে তাদের অবস্থা আরও করুণ হবে।
২০১৩ সাল থেকে যাদের কাছে হাতে লেখা পাসপোর্ট আছে তাদের নতুন ভিসা দেয়া
বন্ধ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে যারা আগে ভিসা পেয়েছেন তাদের ভিসা
নবায়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে নতুন যারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবেন তাদের
অবশ্যই এমআরপি পাসপোর্ট থাকতে হবে। এখানে উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত
২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে যেসব পাকিস্তানির কাছে হাতে লেখা পাসপোর্ট আছে
তাদের নতুন ভিসা দেয়া বন্ধ রেখেছে। তবে যারা আগে থেকে ভিসা পেয়েছেন তাদের
ভিসা নবায়ন অব্যাহত রয়েছে। এর আগে পাকিস্তান দূতাবাস বলেছে, সংযুক্ত আরব
আমিরাতে যেসব পাকিস্তানির কাছে হাতে লেখা পাসপোর্ট আছে তাদের বেশির ভাগই
পাসপোর্ট এমআরপিতে রূপান্তর ঘটিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে গতকাল তাদের মন্তব্য
পাওয়া যায় নি।
No comments