গরিবের বড়লোক এমপি
ভারতের বর্তমান (১৬তম) লোকসভার সাংসদদের দরিদ্র বলার উপায় নেই। কারণ, এক বছর আগে শপথগ্রহণের সময় তাঁদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১৪ দশমিক ৬ কোটি রুপি। গত এক বছরে সংখ্যাটি সম্ভবত বেড়েছে |
ভারতে
প্রতি পাঁচজন নাগরিকের মধ্যে একজন দরিদ্র। কিন্তু তাঁদের ভোটে যাঁরা
দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার সাংসদ হয়েছেন, তাঁরা বেশ বড়লোক।
ভারতের জনগণ ও তাঁদের জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সম্পদের এই বৈষম্যের চিত্র সম্প্রতি আনন্দবাজার পত্রিকার এক সম্পাদকীয়তে উঠে এসেছে।
‘দরিদ্র নারায়ণ’ শিরোনামের ওই সম্পাদকীয়র ভাষ্যমতে, ভারতের বর্তমান (১৬তম) লোকসভার সাংসদদের দরিদ্র বলার উপায় নেই। কারণ, এক বছর আগে শপথগ্রহণের সময় তাঁদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১৪ দশমিক ৬ কোটি রুপি। গত এক বছরে সংখ্যাটি সম্ভবত বেড়েছে।
শপথগ্রহণের সময় ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাংসদদের গড় সম্পদের পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৬ কোটি রুপি। আর তেলুগু দেশম পার্টির সাংসদদের গড় সম্পদ ছিল ৬৪ কোটি রুপি।
ভারতের সরকারি মাপকাঠি অনুযায়ী, দৈনিক ৩২ রুপি খরচ করতে সক্ষম ব্যক্তিরা ‘দরিদ্র’ নয়। এই মাপকাঠি অনুযায়ী, দেশটির প্রতি পাঁচজন নাগরিকের একজন দরিদ্র।
২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১২৮ কোটি। দরিদ্রের সরকারি মাপকাঠি বিবেচনায় নিলে দেশটির ২৫ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।
আনন্দবাজার বলছে, দেশটির ভোটারদের সঙ্গে তাঁদের জনপ্রতিনিধিদের সম্পদের এই বিপুল ব্যবধান চোখ এড়ানোর মতো নয়। সম্পত্তির নিরিখে সাংসদেরা জনগণের চেয়ে অনেক ওপরে। তাঁদের সুযোগ-সুবিধাও অনেক।
আক্ষরিক অর্থেই দেশটির সাংসদদের তেমন কোনো খরচ গুনতে হয় না। ২০১০ সালে ভারতের মন্ত্রিসভা সাংসদদের বেতন-ভাতা তিন গুণ বাড়ানোর জন্য একটি প্রস্তাব পাস করে। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, সাংসদদের মাসিক বেতন ৫০ হাজার রুপি। পার্লামেন্টে হাজিরায় দিনপ্রতি দুই হাজার রুপি। অফিস ভাতা ও নির্বাচনী এলাকার ভাতা বাবদ মাসে ৪৫ হাজার রুপি করে। বিনা মূল্যে বিমান সুবিধা, প্রথম শ্রেণির শীতাতপনিয়ন্ত্রিত রেল ভ্রমণ, বিনা মূল্যে আবাসনসহ অন্য অনেক সুবিধা সাংসদেরা ভোগ করেন। এতেও তাঁরা তুষ্ট নন।
সরকার সাধারণ মানুষকে এলপিজির ভর্তুকি ছেড়ে দিতে বলে। খাদ্য ভর্তুকিতে বরাদ্দ নিয়ে করে চুলচেরা বিশ্লেষণ। অথচ, পার্লামেন্টের ক্যানটিনে বছরে ১৪ কোটি রুপি ভর্তুকি দেওয়া হয়। ভর্তুকির এই পরিমাণ ৯০ শতাংশের কাছাকাছি। এই ভর্তুকি নিয়ে এত দিন কোনো সাংসদ একটা টুঁ শব্দ পর্যন্ত করেননি। তথ্যের অধিকার আইনে ভর্তুকির এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর সাংসদেরা বলছেন, কাজটি ঠিক হয়নি। আদেশ জারি হলে তাঁরা ভর্তুকি ছেড়ে দিতে রাজি। কিন্তু আপাতত তা পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভর্তুকির ব্যাপারে সাংসদদের হাউস কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। কমিটি সুপারিশ করলে ভর্তুকি তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু অতীত ইতিহাস বলে, এসব ব্যাপারে দিন কয়েক হইচই হয়। শেষমেশ যেই সেই অবস্থা—ভর্তুকির সুবিধা বাতিল হয় না।
অবান্তর ভর্তুকির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ ব্যাপারে তিনি কী পদক্ষেপ নেন, তা দেখার বিষয়।
আনন্দবাজার বলছে, সাংসদদের গড় সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি রুপি। এর পরও করদাতাদের অর্থে তাঁদের কার্যত নিখরচায় খাওয়ার বিষয়টি বিস্ময়কর। অবিলম্বে এই প্রথা রদ করা দরকার।
কেউ কেউ হয়তো বলতে পারেন, খরচ সামান্য। বছরে মাত্র ১৪ কোটি রুপি! এ নিয়ে এত লাফালাফির দরকার কী? কিন্তু প্রশ্নটি অঙ্কের নয়, নৈতিকতার। ভর্তুকিতে অধিকার একমাত্র দরিদ্রের। যাঁদের বাজারদরে পণ্য কেনার সামর্থ্য আছে, তাঁদের এক পয়সাও ভর্তুকি দেওয়া অন্যায়। প্রথাটি এত দিন চলেছে, অন্যায় হয়েছে। এখন তা রদ না করলে দ্বিগুণ অন্যায় হবে।
ভারতের জনগণ ও তাঁদের জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সম্পদের এই বৈষম্যের চিত্র সম্প্রতি আনন্দবাজার পত্রিকার এক সম্পাদকীয়তে উঠে এসেছে।
‘দরিদ্র নারায়ণ’ শিরোনামের ওই সম্পাদকীয়র ভাষ্যমতে, ভারতের বর্তমান (১৬তম) লোকসভার সাংসদদের দরিদ্র বলার উপায় নেই। কারণ, এক বছর আগে শপথগ্রহণের সময় তাঁদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১৪ দশমিক ৬ কোটি রুপি। গত এক বছরে সংখ্যাটি সম্ভবত বেড়েছে।
শপথগ্রহণের সময় ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাংসদদের গড় সম্পদের পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৬ কোটি রুপি। আর তেলুগু দেশম পার্টির সাংসদদের গড় সম্পদ ছিল ৬৪ কোটি রুপি।
ভারতের সরকারি মাপকাঠি অনুযায়ী, দৈনিক ৩২ রুপি খরচ করতে সক্ষম ব্যক্তিরা ‘দরিদ্র’ নয়। এই মাপকাঠি অনুযায়ী, দেশটির প্রতি পাঁচজন নাগরিকের একজন দরিদ্র।
২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১২৮ কোটি। দরিদ্রের সরকারি মাপকাঠি বিবেচনায় নিলে দেশটির ২৫ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।
আনন্দবাজার বলছে, দেশটির ভোটারদের সঙ্গে তাঁদের জনপ্রতিনিধিদের সম্পদের এই বিপুল ব্যবধান চোখ এড়ানোর মতো নয়। সম্পত্তির নিরিখে সাংসদেরা জনগণের চেয়ে অনেক ওপরে। তাঁদের সুযোগ-সুবিধাও অনেক।
আক্ষরিক অর্থেই দেশটির সাংসদদের তেমন কোনো খরচ গুনতে হয় না। ২০১০ সালে ভারতের মন্ত্রিসভা সাংসদদের বেতন-ভাতা তিন গুণ বাড়ানোর জন্য একটি প্রস্তাব পাস করে। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, সাংসদদের মাসিক বেতন ৫০ হাজার রুপি। পার্লামেন্টে হাজিরায় দিনপ্রতি দুই হাজার রুপি। অফিস ভাতা ও নির্বাচনী এলাকার ভাতা বাবদ মাসে ৪৫ হাজার রুপি করে। বিনা মূল্যে বিমান সুবিধা, প্রথম শ্রেণির শীতাতপনিয়ন্ত্রিত রেল ভ্রমণ, বিনা মূল্যে আবাসনসহ অন্য অনেক সুবিধা সাংসদেরা ভোগ করেন। এতেও তাঁরা তুষ্ট নন।
সরকার সাধারণ মানুষকে এলপিজির ভর্তুকি ছেড়ে দিতে বলে। খাদ্য ভর্তুকিতে বরাদ্দ নিয়ে করে চুলচেরা বিশ্লেষণ। অথচ, পার্লামেন্টের ক্যানটিনে বছরে ১৪ কোটি রুপি ভর্তুকি দেওয়া হয়। ভর্তুকির এই পরিমাণ ৯০ শতাংশের কাছাকাছি। এই ভর্তুকি নিয়ে এত দিন কোনো সাংসদ একটা টুঁ শব্দ পর্যন্ত করেননি। তথ্যের অধিকার আইনে ভর্তুকির এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর সাংসদেরা বলছেন, কাজটি ঠিক হয়নি। আদেশ জারি হলে তাঁরা ভর্তুকি ছেড়ে দিতে রাজি। কিন্তু আপাতত তা পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভর্তুকির ব্যাপারে সাংসদদের হাউস কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। কমিটি সুপারিশ করলে ভর্তুকি তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু অতীত ইতিহাস বলে, এসব ব্যাপারে দিন কয়েক হইচই হয়। শেষমেশ যেই সেই অবস্থা—ভর্তুকির সুবিধা বাতিল হয় না।
অবান্তর ভর্তুকির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ ব্যাপারে তিনি কী পদক্ষেপ নেন, তা দেখার বিষয়।
আনন্দবাজার বলছে, সাংসদদের গড় সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি রুপি। এর পরও করদাতাদের অর্থে তাঁদের কার্যত নিখরচায় খাওয়ার বিষয়টি বিস্ময়কর। অবিলম্বে এই প্রথা রদ করা দরকার।
কেউ কেউ হয়তো বলতে পারেন, খরচ সামান্য। বছরে মাত্র ১৪ কোটি রুপি! এ নিয়ে এত লাফালাফির দরকার কী? কিন্তু প্রশ্নটি অঙ্কের নয়, নৈতিকতার। ভর্তুকিতে অধিকার একমাত্র দরিদ্রের। যাঁদের বাজারদরে পণ্য কেনার সামর্থ্য আছে, তাঁদের এক পয়সাও ভর্তুকি দেওয়া অন্যায়। প্রথাটি এত দিন চলেছে, অন্যায় হয়েছে। এখন তা রদ না করলে দ্বিগুণ অন্যায় হবে।
No comments