আত্মীয়তার বন্ধনে রাজনীতি-৫, কবির, পন্নী, শাহ পরিবার by কাফি কামাল
বাংলাদেশের
রাজনৈতিক ইতিহাস ও শিক্ষা-দীক্ষায় বিখ্যাত ফরিদপুরের কবির পরিবার। বিচিত্র
ও বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী এ পরিবারের সদস্যরা। এ পরিবারের উজ্জ্বলতম
সদস্য হলেন বিখ্যাত কবি ও ভারতের নেহেরু এবং শাস্ত্রী সরকারের
শিক্ষামন্ত্রী প্রয়াত হুমায়ুন কবির। হুমায়ুন কবিরের মেয়ে লায়লা কবিরের
স্বামী হচ্ছেন ভারতের প্রখ্যাত রাজনীতিক, বাজপেয়ী সরকারের সাবেক
প্রতিরক্ষা, শিল্প ও রেলওয়ে মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্দেজ। হুমায়ুন কবিরের এক
ভাই হলেন ভারতের প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা জাহাঙ্গীর কবির। তার ছেলে আলতামাস
কবির ছিলেন ভারতের ৩৯তম প্রধান বিচারপতি। হুমায়ুন কবিরের আরেক ভাই আকবর
কবির ছিলেন জিয়াউর রহমান সরকারের তথ্য উপদেষ্টা। আকবর কবিরের মেয়ে হলেন
সিগমা হুদা ও খুশী কবির। সিগমা হুদার স্বামী বিএনএ’র সভাপতি ও সাবেক
মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। আবার নাজমুল হুদার সম্পর্কে চাচা আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সালমান এফ রহমান। কবির পরিবারের আরেক সন্তান
ফিরোজ কবির বিয়ে করেছেন রাঙ্গামাটির রাজপরিবারে। রাজা ত্রিদিব রায়ের প্রথম
স্ত্রী কালা সোনা চাকমাকে। রাজা ত্রিদিব রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান হলেন
ওয়ান ইলেভেন সরকারের উপদেষ্টা চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। রাজা
দেবাশীষ রায়ের বাবা রাজা ত্রিবিদ রায় মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ
নিয়ে পরে পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে আজীবনের সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রী ঘোষিত
হন। আর রাজা দেবাশীষ রায়ের দাদি বিনীতা রায় জিয়া সরকারের আমলে উপদেষ্টা
ছিলেন। কবির পরিবারের সন্তান আলমগীর কবির ছিলেন আইজিপি ও কেয়ারটেকার
সরকারের উপদেষ্টা। কবির পরিবারের সন্তান দারা কবিরের স্ত্রী হলেন শহীদ
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মীয়। অন্যদিকে নওগাঁর কবির পরিবারের সন্তান
বিএনপি সরকারের প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান এলডিপি নেতা আলমগীর কবির। তার বোন
জামাই হলেন একদা বাম নেতা ও পরে আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি ওহিদুর রহমান।
আলমগীর কবিরের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন বুলু ২০০৮ সালের নির্বাচনে লড়েছেন
বিএনপির সমর্থনে।
২০দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি। তার দাদা রাজনীতিবিদ মসিউর রহমান যাদু মিয়া নিজে জিয়া সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী ও পিতা শফিকুল গানি স্বপন জিয়া সরকারের এমপি ও এরশাদ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। ন্যাপ নেতা প্রয়াত শফিকুল গানি স্বপন ও বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত কর্নেল (অব.) আকবর হোসেন সম্পর্কে বেয়াই। আকবর হোসেনের ছেলে সাদ্দামের স্ত্রী ফারিয়া হোসেন হলেন শফিকুল গানি স্বপনের মেয়ে। জেবেল রহমান গানির ফুপু মুক্তি রহমান হচ্ছেন এরশাদের শ্যালক কূটনীতিবিদ মহিউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী। আরেক ফুপু রিটা রহমান বিয়ে করেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট মেজর (অব.) খায়রুজ্জামানকে। যাদু মিয়ার বড় ভাই প্রখ্যাত বাম নেতা সিধু মিয়া। তার মেয়ে বিখ্যাত মডেল বিবি রাসেল। আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া হলেন সাবেক মন্ত্রী শফিকুল গানি স্বপনের আপন ফুফাতো বোন। আবার তার মামাতো বোনের জামাই হচ্ছেন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর শ্যালক শেখ ইফনুস সজীব। জেবেল রহমান গানি’র মা নাজহাত গানি শবনমের ফুফাতো ভাই হচ্ছেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ। আর শবনমের মামাতো ভাই সাবেক স্পিকার হুমায়ুন খান পন্নী। আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি তারানা হালিমও আসমা কিবরিয়ার ছোট বোনের ভাগনি এবং জেবেল রহমানের ফুফাতো বোন। শবনমের খালু হলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার ভাসুর রফিকউদ্দিন সিদ্দিকী। যিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মে. জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকীর বড় ভাই। আবার যাদু মিয়ার ভাতিজী জামাই হলেন আওয়ামী লীগে এককালের প্রভাবশালী নেতা মহিউদ্দিন আহমেদের শ্যালক।
নারায়ণগঞ্জের খানবাহাদুর ওসমান আলী ছিলেন বৃটিশ আমলে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তার ছেলে শামসুজ্জোহা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং সাবেক এমপি। খান বাহাদুর ওসমান আলীর নাতি ও শামসুদ্দোহার তিন পুত্র নাসিম ওসমান, সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান। এমপি শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ নেতা ও আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি। তার বড় ভাই প্রয়াত নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও এমপি ছিলেন। তার আরেক ভাই সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টির এমপি। শামীম ওসমানের মা নাগিনা জোহা হলেন অবিভক্ত বাংলার মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবুল হাসিমের চাচাতো বোন। সে হিসেবে আবুল হাসিমের ছেলে বিশিষ্ট লেখক ও বামপন্থি নেতা বদরুদ্দীন উমর তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। একই সূত্রে তাদের দূরসম্পর্কীয় আত্মীয় হলেন চট্টগ্রামের কাদের চৌধুরী পরিবার। আবার শামীম ওসমানের চাচি হলেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী।
টাঙ্গাইলের করটিয়ার বিখ্যাত জমিদার পরিবারের সন্তান, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ওয়াজেদ আলী খান পন্নী (চাঁদ মিয়া) এমপিএ। তার পিতা খুররম খান পন্নী ছিলেন কূটনীতিক ও এমপি। পন্নী পরিবারের আরেক সদস্য সাবেক ডেপুটি স্পিকার হুমায়ুন খান পন্নী। পন্নী পরিবারের অন্য দুই সদস্য মোরশেদ আলী খান পন্নী ও বায়াজীদ খান পন্নী এমপি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকায় জনমত গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রেখে আলোচিত পন্নী পরিবারের সন্তান আমেনা পন্নী। ন্যাপ (মোজাফফর)-এর সভাপতি ও অস্থায়ী সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের শ্যালক হলেন বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও মন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার। মোজাফ্ফর আহমদের স্ত্রী আমিনা আহমদ নিজেও একজন সাবেক এমপি। বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনোয়ারুল কবির তালুকদার ছিলেন সালাম তালুকদারের ভাতিজা। তার আরেক ভাতিজা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদুল আলম তালুকদার। আনোয়ারুল কবির তালুকদার হলেন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমীর হোসেন আমুর চাচাতো বোনের জামাই। পাকিস্তান আমলে আইউব খানের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন সিরাজগঞ্জের আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। তার ছেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। টুকুর বেয়াই হলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম। এরশাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ডা. এমএ মতিন হলেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বোন ড. তাসমিমার স্বামী। আবার ডা. মতিনের ছেলে ডা. এমএ মুহিত বিএনপি নেতা। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর শ্বশুর শিক্ষাবিদ ও কূটনীতিক আবদুস সোবহান খান চৌধুরী।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ। তার চাচা ফকির শাহাবুদ্দিন আহমেদ ছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অ্যাটর্নি জেনারেল। তার ছোটভাই বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান আলোচিত বিচারপতি। আবার বাংলাদেশের প্রথম স্পিকার ও রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শাহ আবদুল হামিদ। তার ছেলে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপি শাহ জাহাঙ্গীর কবির। শাহ আবদুল হামিদের নাতি বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর। আবার শাহ আবদুল হামিদের শ্যালক হলেন জিয়া সরকারের এমপি সিরাজুল ইসলাম বুধু মিয়া। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তার ভায়রা হলেন আওয়ামী লীগ সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম। তাদের শ্বশুর হলেন পল্লীকবিখ্যাত জসীমউদ্দীন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ নিজেও একজন সাবেক এমপি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু। তার দুই বেয়াই পরস্পরবিরোধী দুই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার বড় ছেলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের শ্বশুর মির্জা ইস্কান্দার আলী জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং দিগন্ত মিডিয়ার এমডি। মেজ ছেলে তাফসীর আওয়ালের শ্বশুর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ও শিল্পপতি নুরুল ইসলাম বিএসসি। তার ছেলের বউ হলেন দৈনিক যুগান্তরের প্রকাশক সালমা ইসলামের কন্যা। সালমা ইসলাম হলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি নুরুল ইসলাম বাবুলের সহধর্মিণী। আবার নুরুল ইসলাম বিএসসির বেয়াই হলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি নেতা ও শিল্পপতি কামালউদ্দিন চৌধুরী। যিনি চট্টগ্রাম-১ আসন থেকে ৯ম সংসদে বিএনপির প্রতীকে লড়েছেন। নুরুল ইসলাম বিএসসির আরেক বেয়াই হলেন কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সাবেক এমপি পদপ্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপি।
২০দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি। তার দাদা রাজনীতিবিদ মসিউর রহমান যাদু মিয়া নিজে জিয়া সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী ও পিতা শফিকুল গানি স্বপন জিয়া সরকারের এমপি ও এরশাদ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। ন্যাপ নেতা প্রয়াত শফিকুল গানি স্বপন ও বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত কর্নেল (অব.) আকবর হোসেন সম্পর্কে বেয়াই। আকবর হোসেনের ছেলে সাদ্দামের স্ত্রী ফারিয়া হোসেন হলেন শফিকুল গানি স্বপনের মেয়ে। জেবেল রহমান গানির ফুপু মুক্তি রহমান হচ্ছেন এরশাদের শ্যালক কূটনীতিবিদ মহিউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী। আরেক ফুপু রিটা রহমান বিয়ে করেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট মেজর (অব.) খায়রুজ্জামানকে। যাদু মিয়ার বড় ভাই প্রখ্যাত বাম নেতা সিধু মিয়া। তার মেয়ে বিখ্যাত মডেল বিবি রাসেল। আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া হলেন সাবেক মন্ত্রী শফিকুল গানি স্বপনের আপন ফুফাতো বোন। আবার তার মামাতো বোনের জামাই হচ্ছেন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর শ্যালক শেখ ইফনুস সজীব। জেবেল রহমান গানি’র মা নাজহাত গানি শবনমের ফুফাতো ভাই হচ্ছেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ। আর শবনমের মামাতো ভাই সাবেক স্পিকার হুমায়ুন খান পন্নী। আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি তারানা হালিমও আসমা কিবরিয়ার ছোট বোনের ভাগনি এবং জেবেল রহমানের ফুফাতো বোন। শবনমের খালু হলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার ভাসুর রফিকউদ্দিন সিদ্দিকী। যিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মে. জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকীর বড় ভাই। আবার যাদু মিয়ার ভাতিজী জামাই হলেন আওয়ামী লীগে এককালের প্রভাবশালী নেতা মহিউদ্দিন আহমেদের শ্যালক।
নারায়ণগঞ্জের খানবাহাদুর ওসমান আলী ছিলেন বৃটিশ আমলে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তার ছেলে শামসুজ্জোহা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং সাবেক এমপি। খান বাহাদুর ওসমান আলীর নাতি ও শামসুদ্দোহার তিন পুত্র নাসিম ওসমান, সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান। এমপি শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ নেতা ও আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি। তার বড় ভাই প্রয়াত নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও এমপি ছিলেন। তার আরেক ভাই সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টির এমপি। শামীম ওসমানের মা নাগিনা জোহা হলেন অবিভক্ত বাংলার মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবুল হাসিমের চাচাতো বোন। সে হিসেবে আবুল হাসিমের ছেলে বিশিষ্ট লেখক ও বামপন্থি নেতা বদরুদ্দীন উমর তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। একই সূত্রে তাদের দূরসম্পর্কীয় আত্মীয় হলেন চট্টগ্রামের কাদের চৌধুরী পরিবার। আবার শামীম ওসমানের চাচি হলেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী।
টাঙ্গাইলের করটিয়ার বিখ্যাত জমিদার পরিবারের সন্তান, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ওয়াজেদ আলী খান পন্নী (চাঁদ মিয়া) এমপিএ। তার পিতা খুররম খান পন্নী ছিলেন কূটনীতিক ও এমপি। পন্নী পরিবারের আরেক সদস্য সাবেক ডেপুটি স্পিকার হুমায়ুন খান পন্নী। পন্নী পরিবারের অন্য দুই সদস্য মোরশেদ আলী খান পন্নী ও বায়াজীদ খান পন্নী এমপি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকায় জনমত গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রেখে আলোচিত পন্নী পরিবারের সন্তান আমেনা পন্নী। ন্যাপ (মোজাফফর)-এর সভাপতি ও অস্থায়ী সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের শ্যালক হলেন বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও মন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার। মোজাফ্ফর আহমদের স্ত্রী আমিনা আহমদ নিজেও একজন সাবেক এমপি। বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনোয়ারুল কবির তালুকদার ছিলেন সালাম তালুকদারের ভাতিজা। তার আরেক ভাতিজা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদুল আলম তালুকদার। আনোয়ারুল কবির তালুকদার হলেন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমীর হোসেন আমুর চাচাতো বোনের জামাই। পাকিস্তান আমলে আইউব খানের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন সিরাজগঞ্জের আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। তার ছেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। টুকুর বেয়াই হলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম। এরশাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ডা. এমএ মতিন হলেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বোন ড. তাসমিমার স্বামী। আবার ডা. মতিনের ছেলে ডা. এমএ মুহিত বিএনপি নেতা। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর শ্বশুর শিক্ষাবিদ ও কূটনীতিক আবদুস সোবহান খান চৌধুরী।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ। তার চাচা ফকির শাহাবুদ্দিন আহমেদ ছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অ্যাটর্নি জেনারেল। তার ছোটভাই বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান আলোচিত বিচারপতি। আবার বাংলাদেশের প্রথম স্পিকার ও রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শাহ আবদুল হামিদ। তার ছেলে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপি শাহ জাহাঙ্গীর কবির। শাহ আবদুল হামিদের নাতি বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর। আবার শাহ আবদুল হামিদের শ্যালক হলেন জিয়া সরকারের এমপি সিরাজুল ইসলাম বুধু মিয়া। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তার ভায়রা হলেন আওয়ামী লীগ সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম। তাদের শ্বশুর হলেন পল্লীকবিখ্যাত জসীমউদ্দীন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ নিজেও একজন সাবেক এমপি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু। তার দুই বেয়াই পরস্পরবিরোধী দুই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার বড় ছেলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের শ্বশুর মির্জা ইস্কান্দার আলী জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং দিগন্ত মিডিয়ার এমডি। মেজ ছেলে তাফসীর আওয়ালের শ্বশুর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ও শিল্পপতি নুরুল ইসলাম বিএসসি। তার ছেলের বউ হলেন দৈনিক যুগান্তরের প্রকাশক সালমা ইসলামের কন্যা। সালমা ইসলাম হলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি নুরুল ইসলাম বাবুলের সহধর্মিণী। আবার নুরুল ইসলাম বিএসসির বেয়াই হলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি নেতা ও শিল্পপতি কামালউদ্দিন চৌধুরী। যিনি চট্টগ্রাম-১ আসন থেকে ৯ম সংসদে বিএনপির প্রতীকে লড়েছেন। নুরুল ইসলাম বিএসসির আরেক বেয়াই হলেন কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সাবেক এমপি পদপ্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপি।
No comments