লেগুনাচালকেরা শিশু-কিশোর, পৃষ্ঠপোষকতায় পুলিশ! by মাসুদ রানা
গাজীপুর
থেকে বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন চলা শত শত যাত্রীবাহী লেগুনার (হিউম্যান
হলার) চালক এবং সহযোগীরা বেশির ভাগই শিশু ও কিশোর। এসব চালকের নেই কোনো
ড্রাইভিং লাইসেন্স। পুরোনো এসব লেগুনার বেশির ভাগেরই ফিটনেস নেই। যার
কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানি।
গত সোমবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের পোড়াবাড়ীতে আসামি বহনকারী পুলিশের একটি লেগুনা দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়। আহত হয় ১৩ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ, অন্যরা আসামি। গাজীপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই লেগুনার চালক কিশোর বয়সের। দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তাকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের চালানো লেগুনায় লাশ বহন, এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার, আসামি আদালতে আনা-নেওয়াসহ সব কাজই করছে পুলিশ। পর্যাপ্ত পরিবহন না থাকাকেই এর কারণ বলে দাবি পুলিশের। আর লাইসেন্সবিহীন চালক দিয়ে ফিটনেসবিহীন লেগুনা চালানোকে বৈধ করতে বিনা বাক্যেই এসব গাড়ি পুলিশ চাওয়ামাত্র পেয়ে যায়।
পরিবহনশ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে রাজেন্দ্রপুর, সালনার দিকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ লেগুনা চলাচল করে। এ ছাড়া চান্দনা চৌরাস্তা থেকে শিববাড়ী, শিমুলতলী পর্যন্ত চলাচল করে ১২০টি লেগুনা, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কোনাবাড়ী ও চন্দ্রা পর্যন্ত যাত্রী আনা-নেওয়া করে প্রায় দেড় শ লেগুনা।
গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুরে চলাচলরত অনেক লেগুনার চালকই শিশু-কিশোর। এদের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই। পুলিশের চাহিদামতো গাড়ি নেই। যার কারণে পুলিশের প্রতিদিনের কাজে লেগুনা ব্যবহার করতে হয়। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
গত সোমবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের পোড়াবাড়ীতে আসামি বহনকারী পুলিশের একটি লেগুনা দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়। আহত হয় ১৩ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ, অন্যরা আসামি। গাজীপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই লেগুনার চালক কিশোর বয়সের। দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তাকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের চালানো লেগুনায় লাশ বহন, এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার, আসামি আদালতে আনা-নেওয়াসহ সব কাজই করছে পুলিশ। পর্যাপ্ত পরিবহন না থাকাকেই এর কারণ বলে দাবি পুলিশের। আর লাইসেন্সবিহীন চালক দিয়ে ফিটনেসবিহীন লেগুনা চালানোকে বৈধ করতে বিনা বাক্যেই এসব গাড়ি পুলিশ চাওয়ামাত্র পেয়ে যায়।
পরিবহনশ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে রাজেন্দ্রপুর, সালনার দিকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ লেগুনা চলাচল করে। এ ছাড়া চান্দনা চৌরাস্তা থেকে শিববাড়ী, শিমুলতলী পর্যন্ত চলাচল করে ১২০টি লেগুনা, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কোনাবাড়ী ও চন্দ্রা পর্যন্ত যাত্রী আনা-নেওয়া করে প্রায় দেড় শ লেগুনা।
গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুরে চলাচলরত অনেক লেগুনার চালকই শিশু-কিশোর। এদের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই। পুলিশের চাহিদামতো গাড়ি নেই। যার কারণে পুলিশের প্রতিদিনের কাজে লেগুনা ব্যবহার করতে হয়। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
গতকাল
মঙ্গলবার সরেজমিনে গাজীপুরের টঙ্গী বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, সেখানে
দাঁড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি লেগুনা। লেগুনার শিশু সহযোগীরা যাত্রীদের স্টেশন
রোড, গাজীপুরা বলে ডাকাডাকি করছে। বেলা পৌনে একটার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ
মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় লেগুনাস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, তিন
দিকের সড়কেই লেগুনার কারণেই যানজট লেগে আছে। সেখানে যেতেই ১০ বছরের শিশু
ফেরদৌস হাত ধরে টানাটানি করছে, ‘উঠেন ভাই, এখনই চলো যাবে।’ সে জানায়, এক
বছর ধরে লেগুনার সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। প্রতিদিন তার মজুরি ২০০ টাকা।
চালক হবে কবে, জানতে চাইলে সে বলে, ‘আরে, কী কন ভাই, আমি তো এহনই লেগুনা
চালাইতে পারি। ওস্তাত মাঝেমধ্যে আমারে চালাইতে দেয়। আর কিছু দিন গেলেই
ওস্তাত হইয়া জামু।’
লেগুনার চালক নজরুল ইসলাম। বয়স ১৮ বছর। তিনি জানান, প্রথম দুই বছর হেলপার হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর তিনি গাড়ির চালক হয়ে। লেগুনা চালানোর জন্য তিনি প্রতিদিন ৫০০ টাকা পান।
চান্দনা চৌরাস্তায় কথা হয় চালক সোহেল মিয়া, আবু রায়হান, সুমন ও মারুফ হেসেনের সঙ্গে। এদের সবার বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছর। চালক গিয়াস উদ্দিন জানায়, তার বয়স যখন নয় বছর, তখন থেকেই চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করত। পরে কিছু দিন ঝালমুড়ি বিক্রির পর লেগুনার সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করে। এখন তার বয়স ১৫-১৬। দুই বছর আগে থেকে সে লেগুনাচালক হয়েছে। সহযোগী থাকাকালে কখনো এক শ, কখনো দেড় শ টাকা পেত। চালক হওয়ার পর এখন সে পায় ৫০০ টাকা।
পুলিশের ভরসা অবৈধ লেগুনা: গাজীপুরের ছয়টি থানা, দুটি পুলিশ ফাঁড়ি ও পাঁচটি পুলিশ ক্যাম্পের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন কাজে পুলিশ লেগুনা ব্যবহার করে আসছে। এর জন্য গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা লেগুনাস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন ৩০–৩৫টি লেগুনা রিকুইজিশন করা হয়।
লেগুনার চালক মো. রুবেল মিয়া বলেন, ‘লেগুনার চালকেরা সবাই সহযোগী থেকে চালক হয়েছে। তাদের কোনো লাইসেন্সও নেই। প্রতি সপ্তাহে তিন দিন করে পুলিশের ডিউটি করতে হয়। যার কারণে তাদের পুলিশও কিছু বলে না।’
গত মঙ্গলবার সকালে জয়দেবপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল মোমেন কয়েকজন আসামিকে একটি লেগুনায় করে গাজীপুর আদালতে নিয়ে যান। জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আসামি লেগুনায় আনব, নাকি হেলিকপ্টারে করে আনব?’
লেগুনার চালক নজরুল ইসলাম। বয়স ১৮ বছর। তিনি জানান, প্রথম দুই বছর হেলপার হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর তিনি গাড়ির চালক হয়ে। লেগুনা চালানোর জন্য তিনি প্রতিদিন ৫০০ টাকা পান।
চান্দনা চৌরাস্তায় কথা হয় চালক সোহেল মিয়া, আবু রায়হান, সুমন ও মারুফ হেসেনের সঙ্গে। এদের সবার বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছর। চালক গিয়াস উদ্দিন জানায়, তার বয়স যখন নয় বছর, তখন থেকেই চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করত। পরে কিছু দিন ঝালমুড়ি বিক্রির পর লেগুনার সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করে। এখন তার বয়স ১৫-১৬। দুই বছর আগে থেকে সে লেগুনাচালক হয়েছে। সহযোগী থাকাকালে কখনো এক শ, কখনো দেড় শ টাকা পেত। চালক হওয়ার পর এখন সে পায় ৫০০ টাকা।
পুলিশের ভরসা অবৈধ লেগুনা: গাজীপুরের ছয়টি থানা, দুটি পুলিশ ফাঁড়ি ও পাঁচটি পুলিশ ক্যাম্পের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন কাজে পুলিশ লেগুনা ব্যবহার করে আসছে। এর জন্য গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা লেগুনাস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন ৩০–৩৫টি লেগুনা রিকুইজিশন করা হয়।
লেগুনার চালক মো. রুবেল মিয়া বলেন, ‘লেগুনার চালকেরা সবাই সহযোগী থেকে চালক হয়েছে। তাদের কোনো লাইসেন্সও নেই। প্রতি সপ্তাহে তিন দিন করে পুলিশের ডিউটি করতে হয়। যার কারণে তাদের পুলিশও কিছু বলে না।’
গত মঙ্গলবার সকালে জয়দেবপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল মোমেন কয়েকজন আসামিকে একটি লেগুনায় করে গাজীপুর আদালতে নিয়ে যান। জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আসামি লেগুনায় আনব, নাকি হেলিকপ্টারে করে আনব?’
No comments