তৃতীয় দেশকে সুবিধা দিতে ভারতের অনীহা by কাজী জেবেল
নৌ
ট্রানজিট প্রটোকল সংশোধনীর খসড়ায় ভারত আপত্তি তুলে পরিবর্তনের প্রস্তাব
দিয়েছে। খসড়া প্রস্তাবটি বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর ভারত এই
আপত্তি তুলল। নতুন প্রস্তাবে ভারত নদীপথে ট্রানজিটের আওতায় তৃতীয় দেশে পণ্য
চলাচলের বিধানটি বাতিলের সুপারিশ করেছে। এছাড়া অপারেশনাল মূল্যবৃদ্ধির
সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ বাড়ানোর বিধানও বাদ দিয়ে ভারত নতুন
খসড়া পাঠিয়েছে।
ভারত নৌ ট্রানজিট প্রটোকলের খসড়া নতুন করে পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব শফিক আলম মেহেদী বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। তিনি এ বিষয়ে যুগান্তরকে বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি সই হবে। সফরকালেই আমরা বাণিজ্য চুক্তির আওতায় নৌ ট্রানজিট প্রটোকল সই করব। বাণিজ্য চুক্তির ভূমিকায় তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহনের কথা রয়েছে। ফলে নৌ ট্রানজিট প্রটোকলের ভূমিকাতেও আমরা সেটা উল্লেখ করেছি। বাণিজ্য চুক্তি থেকে নৌ ট্রানজিট প্রটোকলকে আলাদা করার সুযোগ নেই।’
ভারতের প্রস্তাব সম্পর্কে পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর যুগান্তরকে বলেন, নৌ প্রটোকল ট্রানজিটে নতুনত্ব ছিল তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহনের সুবিধা দেয়ার বিষয়টি। এতে নৌপথের নাব্য সাপেক্ষে নেপাল ও ভুটান থেকে পাথর, কাঠসহ বিভিন্ন পণ্য কম খরচে পরিবহনের সুবিধা পাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ভারতের ওই প্রস্তাব মেনে নিলে আমরা এসব সুবিধা পাব না। তিনি বলেন, সরকারের উচিত হবে রাজনৈতিকভাবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি উপস্থাপন করা।
আগামী ৬ ও ৭ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফর করবেন। এই সফরকালে নদীপথে ট্রানজিট প্রটোকলের সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা আছে। এ উপলক্ষে নৌপথে ট্রানজিট সংক্রান্ত প্রটোকলের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর ভারত তাদের আপত্তির কথা জানায়, যা নিয়ে সরকার বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। ভারতের নতুন প্রস্তাব গ্রহণ করতে হলে খসড়াটি আবার যাচাই-বাছাই (ভেটিং) এবং নতুন করে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের প্রয়োজন হবে বলে এ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যা সময়সাপেক্ষ বিষয়। ভারতের এই প্রস্তাব পাওয়ার পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে।
১৮ মে মন্ত্রিসভায় খসড়া প্রটোকল অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বলেন, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকে টার্গেট করে তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহনের বিষয়টি ট্রানজিট প্রটোকলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, এতে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চুক্তি, কনভেনশন কিংবা চর্চা প্রয়োগ করা এবং পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে ট্রানজিট গ্যারন্টি দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর ভারতের দেয়া নতুন খসড়ায় পুরো এ বিষয়টি মুছে দিয়ে তাতে যে দেশের পণ্য পরিবহন করা হবে, তা ওই দেশের আইনে পণ্য চলাচলের বিধান প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। খসড়ায় বাংলাদেশের নদীপথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারত বাংলাদেশকে বছরে ১০ কোটি টাকা দেয়ার বিধান রয়েছে। এই চার্জ রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বৃদ্ধি সাপেক্ষে বাড়ানোর কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু ভারতের নতুন পরিবর্তিত খসড়ায় রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বৃদ্ধির কথা মুছে ফেলা হয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন এসব পরিবর্তন সংবলিত নতুন খসড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে বিষয়টিতে বাংলাদেশের সম্মতি চেয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশন বলেছে, ভারতের মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের আগেই এ ব্যাপারে বাংলাদেশের মতামত পাওয়া প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভারতের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে দেশের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে খসড়া অনুমোদনের পর তা পরিবর্তন করা সময়সাপেক্ষ। এছাড়া উভয় দেশ কর্তৃক চূড়ান্তকৃত বাণিজ্য চুক্তির (ট্রেড এগ্রিমেন্ট) সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। এই বিষয়টি ভারতকে জানিয়ে দেয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর নৌ ট্রানজিট প্রটোকলে কোনো পরিবর্তনের প্রস্তাব ভারত করেছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত প্রটোকলের খসড়ায় তৃতীয় দেশের অন্তর্ভুক্তির যে কথা বলা হয়েছে সেটা অবশ্যই প্রত্যাশিত। কেননা এতে করে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নদীপথে ট্রানজিট ও বাণিজ্য প্রটোকলের অধীনে ১৯৭২ সাল থেকেই ভারত ট্রানজিট সুবিধা ভোগ করছে। তিন বছর পরপর বাণিজ্য চুক্তি নবায়নের পাশাপাশি নদীপথে ট্রানজিট প্রটোকলও নবায়ন করতে হয়। এবার ওই প্রটোকলে সংশোধনীতে প্রতি চার বছর অতিবাহিত হওয়ার পর কোনো পক্ষ আপত্তি না করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই চুক্তি নবায়ন হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারত নৌ ট্রানজিট প্রটোকলের খসড়া নতুন করে পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব শফিক আলম মেহেদী বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। তিনি এ বিষয়ে যুগান্তরকে বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি সই হবে। সফরকালেই আমরা বাণিজ্য চুক্তির আওতায় নৌ ট্রানজিট প্রটোকল সই করব। বাণিজ্য চুক্তির ভূমিকায় তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহনের কথা রয়েছে। ফলে নৌ ট্রানজিট প্রটোকলের ভূমিকাতেও আমরা সেটা উল্লেখ করেছি। বাণিজ্য চুক্তি থেকে নৌ ট্রানজিট প্রটোকলকে আলাদা করার সুযোগ নেই।’
ভারতের প্রস্তাব সম্পর্কে পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর যুগান্তরকে বলেন, নৌ প্রটোকল ট্রানজিটে নতুনত্ব ছিল তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহনের সুবিধা দেয়ার বিষয়টি। এতে নৌপথের নাব্য সাপেক্ষে নেপাল ও ভুটান থেকে পাথর, কাঠসহ বিভিন্ন পণ্য কম খরচে পরিবহনের সুবিধা পাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ভারতের ওই প্রস্তাব মেনে নিলে আমরা এসব সুবিধা পাব না। তিনি বলেন, সরকারের উচিত হবে রাজনৈতিকভাবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি উপস্থাপন করা।
আগামী ৬ ও ৭ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফর করবেন। এই সফরকালে নদীপথে ট্রানজিট প্রটোকলের সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা আছে। এ উপলক্ষে নৌপথে ট্রানজিট সংক্রান্ত প্রটোকলের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর ভারত তাদের আপত্তির কথা জানায়, যা নিয়ে সরকার বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। ভারতের নতুন প্রস্তাব গ্রহণ করতে হলে খসড়াটি আবার যাচাই-বাছাই (ভেটিং) এবং নতুন করে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের প্রয়োজন হবে বলে এ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যা সময়সাপেক্ষ বিষয়। ভারতের এই প্রস্তাব পাওয়ার পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে।
১৮ মে মন্ত্রিসভায় খসড়া প্রটোকল অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বলেন, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকে টার্গেট করে তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহনের বিষয়টি ট্রানজিট প্রটোকলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, এতে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চুক্তি, কনভেনশন কিংবা চর্চা প্রয়োগ করা এবং পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে ট্রানজিট গ্যারন্টি দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর ভারতের দেয়া নতুন খসড়ায় পুরো এ বিষয়টি মুছে দিয়ে তাতে যে দেশের পণ্য পরিবহন করা হবে, তা ওই দেশের আইনে পণ্য চলাচলের বিধান প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। খসড়ায় বাংলাদেশের নদীপথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারত বাংলাদেশকে বছরে ১০ কোটি টাকা দেয়ার বিধান রয়েছে। এই চার্জ রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বৃদ্ধি সাপেক্ষে বাড়ানোর কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু ভারতের নতুন পরিবর্তিত খসড়ায় রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বৃদ্ধির কথা মুছে ফেলা হয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন এসব পরিবর্তন সংবলিত নতুন খসড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে বিষয়টিতে বাংলাদেশের সম্মতি চেয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশন বলেছে, ভারতের মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের আগেই এ ব্যাপারে বাংলাদেশের মতামত পাওয়া প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভারতের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে দেশের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে খসড়া অনুমোদনের পর তা পরিবর্তন করা সময়সাপেক্ষ। এছাড়া উভয় দেশ কর্তৃক চূড়ান্তকৃত বাণিজ্য চুক্তির (ট্রেড এগ্রিমেন্ট) সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। এই বিষয়টি ভারতকে জানিয়ে দেয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর নৌ ট্রানজিট প্রটোকলে কোনো পরিবর্তনের প্রস্তাব ভারত করেছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত প্রটোকলের খসড়ায় তৃতীয় দেশের অন্তর্ভুক্তির যে কথা বলা হয়েছে সেটা অবশ্যই প্রত্যাশিত। কেননা এতে করে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নদীপথে ট্রানজিট ও বাণিজ্য প্রটোকলের অধীনে ১৯৭২ সাল থেকেই ভারত ট্রানজিট সুবিধা ভোগ করছে। তিন বছর পরপর বাণিজ্য চুক্তি নবায়নের পাশাপাশি নদীপথে ট্রানজিট প্রটোকলও নবায়ন করতে হয়। এবার ওই প্রটোকলে সংশোধনীতে প্রতি চার বছর অতিবাহিত হওয়ার পর কোনো পক্ষ আপত্তি না করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই চুক্তি নবায়ন হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
No comments