খেলাপি হয়ে যাচ্ছেন রফতানিকারকেরা by আশরাফুল ইসলাম
খেলাপি হয়ে যাচ্ছেন রফতানিকারকেরা। ব্যাংকের ঋণ নিয়ে অনেকেই পরিশোধ করতে পারছেন না। সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) ব্যবহারকারীরা। ইডিএফ তহবিলের অর্থও অনেকেই ফেরত দিতে পারছেন না। যথাসময়ে অর্থ ফেরত দিতে না পারায় বাধ্যবাধকতার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার অ্যাকাউন্ট থেকে সমপরিমাণ অর্থ সমন্বয় করে নিচ্ছে। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, এ পরিস্থিতিতে উভয় সঙ্কটে পড়েছে দেশের ব্যাংকিং খাত। একদিকে রফতানিকারকেরা ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে; এজন্য ব্যাংকের আয় থেকে অতিরিক্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে, পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুদে-আসলে পরিশোধ করতে গিয়ে ব্যাংকের নিট আয় কমে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতিতে অনেকেই সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন না। অনেকের রফতানির অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। অনেকেই সময়মতো কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছেন না। কেউ কেউ শ্রমিক ছাটাই করছেন। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের অর্থ তারা কিভাবে ফেরত দেবেন।
জানা গেছে, অনেক সময় রফতানিকারক পুঁজির অভাবে রফতানিমুখী পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতে পারেন না। কাঁচামালের অভাবে পণ্য উৎপাদন করতে না পারায় যথাসময়ে পণ্যও সরবরাহ করা যায় না। এতে প্রভাব পড়ে সামগ্রিক রফতানি আয়ের ওপর। রফতানি আয় বাড়াতে ব্যবসায়ীদের পুঁজির জোগান দেয়ার জন্য ১৯৮৯ সালে রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন তহবিলের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ডলার। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে পর্যায়ক্রমে তা ১৫০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে এ তহবিল বরাদ্দ দেয়া হয়। এ জন্য রফতানিকারকের সর্বোচ্চ সুদ লাইবর রেটের সাথে আড়াই শতাংশ গুনতে হয়। আড়াই শতাংশের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক পায় এক শতাংশের সাথে লাইবর রেট (লন্ডন ইন্টার ব্যাংক রেট) ও বাণিজ্যিক ব্যাংক গ্রাহকদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ হিসেবে পায় দেড় শতাংশ।
রফতানিকারক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে আবার ওই ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ ফেরত দিয়ে থাকে। একজন রফতানিকারক সর্বোচ্চ দেড় কোটি ডলার ঋণসুবিধা পান এ তহবিল থেকে। আর তারা এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ১৮০ দিন বা ৬ মাসের জন্য এ ঋণসুবিধা পান। কেউ ৬ মাসের মধ্যে ঋণ ফেরত দিতে না পারলে উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আরো ৯০ দিন বা তিন মাস বাড়ানো হয়। অর্থাৎ সর্বোচ্চ ২৭০ দিনের জন্য এ ঋণসুবিধা পান রফতানিকারকরা।
ইডিএফ তহবিলের নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংক গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ইডিএফ থেকে অর্থ নেবে। আবার গ্রাহক ব্যাংককে পরিশোধ করলে ব্যাংক তাদের দেড় শতাংশ সার্ভিস চার্জ রেখে বাকি অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দেবে। অর্থাৎ কোনো গ্রাহক অর্থ ফেরত না দিলে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক তার সাথে ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার অ্যাকাউন্ট (এফসি) থেকে সমন্বয় করে নেবে।
ব্যাংকারেরা জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতিতে অনেক রফতানিকারকই রফতানি উন্নয়ন তহবিলের অর্থ ফেরত দিতে পারছেন না। এতে তারা দুই ধরনের সমস্যায় পড়ছেন। প্রথমত, ইড়িএফ ঋণ ২৭০ দিন পরিশোধ করতে না পারলেই তা খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে। আর খেলাপি হলেই ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্ট থেকে লাইবরের সাথে এক শতাংশ সুদসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমন্বয় করে নিচ্ছে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর আয় থেকে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ সমন্বয় করায় তাদের বৈদেশিক মুদ্রা আটকে যাচ্ছে। ফলে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম মুর্শেদী গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতিতে অনেকেরই রফতানি অর্ডার বাতিল হয়ে যাচ্ছে। অনেকই যথাসময়ে রফতানিকারকদের পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন না। পাশাপাশি ইউরোর ব্যাপক দরপতনের কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ পর্যায়ে কারখানা চালু রাখাই এখন দায় হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ৫০০ কোটি টাকার ওপরে যেসব ঋণ নবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক তার নীতিমালা শিথিল করেছে, একইভাবে রফতানিকারকদের সুযোগ দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গতকাল নয়া দিগন্তকে জানান, গতকালও সাতটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ লাখ ডলার সমন্বয় করা হয়েছে। যথাসময়ে রফতানি উন্নয়ন তহবিলের অর্থ ফেরত দিতে না পারায় তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ কেটে রাখা হচ্ছে। তবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। নতুন কিছু নয়।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতিতে অনেকেই সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন না। অনেকের রফতানির অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। অনেকেই সময়মতো কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছেন না। কেউ কেউ শ্রমিক ছাটাই করছেন। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের অর্থ তারা কিভাবে ফেরত দেবেন।
জানা গেছে, অনেক সময় রফতানিকারক পুঁজির অভাবে রফতানিমুখী পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতে পারেন না। কাঁচামালের অভাবে পণ্য উৎপাদন করতে না পারায় যথাসময়ে পণ্যও সরবরাহ করা যায় না। এতে প্রভাব পড়ে সামগ্রিক রফতানি আয়ের ওপর। রফতানি আয় বাড়াতে ব্যবসায়ীদের পুঁজির জোগান দেয়ার জন্য ১৯৮৯ সালে রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন তহবিলের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ডলার। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে পর্যায়ক্রমে তা ১৫০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে এ তহবিল বরাদ্দ দেয়া হয়। এ জন্য রফতানিকারকের সর্বোচ্চ সুদ লাইবর রেটের সাথে আড়াই শতাংশ গুনতে হয়। আড়াই শতাংশের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক পায় এক শতাংশের সাথে লাইবর রেট (লন্ডন ইন্টার ব্যাংক রেট) ও বাণিজ্যিক ব্যাংক গ্রাহকদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ হিসেবে পায় দেড় শতাংশ।
রফতানিকারক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে আবার ওই ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ ফেরত দিয়ে থাকে। একজন রফতানিকারক সর্বোচ্চ দেড় কোটি ডলার ঋণসুবিধা পান এ তহবিল থেকে। আর তারা এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ১৮০ দিন বা ৬ মাসের জন্য এ ঋণসুবিধা পান। কেউ ৬ মাসের মধ্যে ঋণ ফেরত দিতে না পারলে উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আরো ৯০ দিন বা তিন মাস বাড়ানো হয়। অর্থাৎ সর্বোচ্চ ২৭০ দিনের জন্য এ ঋণসুবিধা পান রফতানিকারকরা।
ইডিএফ তহবিলের নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংক গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ইডিএফ থেকে অর্থ নেবে। আবার গ্রাহক ব্যাংককে পরিশোধ করলে ব্যাংক তাদের দেড় শতাংশ সার্ভিস চার্জ রেখে বাকি অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দেবে। অর্থাৎ কোনো গ্রাহক অর্থ ফেরত না দিলে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক তার সাথে ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার অ্যাকাউন্ট (এফসি) থেকে সমন্বয় করে নেবে।
ব্যাংকারেরা জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতিতে অনেক রফতানিকারকই রফতানি উন্নয়ন তহবিলের অর্থ ফেরত দিতে পারছেন না। এতে তারা দুই ধরনের সমস্যায় পড়ছেন। প্রথমত, ইড়িএফ ঋণ ২৭০ দিন পরিশোধ করতে না পারলেই তা খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে। আর খেলাপি হলেই ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্ট থেকে লাইবরের সাথে এক শতাংশ সুদসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমন্বয় করে নিচ্ছে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর আয় থেকে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ সমন্বয় করায় তাদের বৈদেশিক মুদ্রা আটকে যাচ্ছে। ফলে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম মুর্শেদী গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতিতে অনেকেরই রফতানি অর্ডার বাতিল হয়ে যাচ্ছে। অনেকই যথাসময়ে রফতানিকারকদের পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন না। পাশাপাশি ইউরোর ব্যাপক দরপতনের কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ পর্যায়ে কারখানা চালু রাখাই এখন দায় হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ৫০০ কোটি টাকার ওপরে যেসব ঋণ নবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক তার নীতিমালা শিথিল করেছে, একইভাবে রফতানিকারকদের সুযোগ দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গতকাল নয়া দিগন্তকে জানান, গতকালও সাতটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ লাখ ডলার সমন্বয় করা হয়েছে। যথাসময়ে রফতানি উন্নয়ন তহবিলের অর্থ ফেরত দিতে না পারায় তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ কেটে রাখা হচ্ছে। তবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। নতুন কিছু নয়।
No comments