এ অপরাজনীতি নির্মূল করতে হবে by মোহাম্মদ আলী আশরাফ
বিএনপি-জামায়াত
নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ-হরতালে জনজীবনে যখন নাভিশ্বাস, তখন ১৩
ফেব্রুয়ারি দেখলাম ব্যবসায়ীরা রাস্তায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে
দাবি তুলেছেন হরতাল নয়, শান্তি চাই। শ্রমিকরা বলছে, কাজ চাই; পরিক্ষার্থী
আর অভিভাবকরা বলছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ধ্বংসের নোংরা রাজনীতি
বন্ধ করুন। গাড়ির চালকরা বলছেন, ম্যাডাম জিয়া গাড়িতে পেট্রলবোমা মারা বন্ধ
করুন। তারপরও বিএনপি-জামায়াত শুক্র-শনিবার বাদ দিয়ে বাকি পাঁচ দিন টানা
হরতাল দিয়ে যাচ্ছে। খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের মনের মধ্যে কী পরিকল্পনা
আছে তা দলের নেতাকর্মীরা কেউ জানেন না। তারা শুধু জানেন, ভাইয়া বলেছেন তাই
বোমা মারতে হবে, দিতে হবে গাড়িতে আগুন। ১৯৬৪ সালে করাচিতে জন্ম নেয়া তারেক
রহমান ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে বিতর্কিত হয়েছিলেন, তারই
প্রেসক্রিপসনে বিএনপির সিনিয়র নেতারা টিয়া পাখির মতো বুলি আওড়ানোর পাশাপাশি
তার ধ্বংসাÍক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। এসব সিনিয়র নেতা কখনও জানতে
চাননি বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার অর্জন কী।
আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এসেছিলেন। তখন সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি অল্প সময়ে মালয়েশিয়ায় এত উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করলেন কীভাবে? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, দেখুন যখন ভালো কাজ করবেন তখন আপনার পক্ষে কিছু লোক বাহ্বা দেবে; আবার যখন কোনো খারাপ কাজ করবেন তখনও কিছু লোক পাশে থাকে। আসলে এটা বড় কথা নয়, নৈতিকতার সঙ্গে দেশকে ভালোবেসে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই মূল কথা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনও সে রকম একটি বিষয়। একদিকে দেশের উন্নয়ন ও সংবিধান রক্ষার চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে জামায়াত-বিএনপি ও হেফাজতের নৃশংসতা। দশম সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মানুষ পুড়িয়ে মারা, ব্যাংকে হামলা, রাস্তার আইল্যান্ডের গাছ উপড়ে ফেলা এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড হয়েছে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের বয়স ১৩ মাসের বেশি। এর মধ্যে ৬ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত অবরোধ-হরতালের সহিংসতায় মৃত্যুর সংখ্যা শতাধিক। আগুন ও ভাংচুর হয়েছে ১ হাজার ১১৪টি যানবাহনে, রেলে নাশকতার ঘটনা ১২টি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি দেড়শ জনের মতো আর সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬৫৪ জন। ঢাকার বাইরে কয়েকটি হাসপাতালে অসংখ্য রোগী আগুনে পুড়ে মৃত্যুশয্যায়, অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। অথচ বিএনপি নেত্রী এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডকে বলছেন গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন। জনগণকে পুড়িয়ে মারার পাশাপাশি বাংলাদেশকে ইরাক, আফগানিস্তান, মিসর, ফিলিস্তিন কিংবা লিবিয়ার মতো একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার হীন চেষ্টা কাদের নির্দেশনায় করা হচ্ছে তা খুঁজে দেখা দরকার। এদেশের মানুষ ১৯৫২ আর ৭১ সালে যেমন পাকিস্তানের নৃশংসতা বরদাশত করেনি, তেমনি ২০১৫ সালের নির্মমতাও মেনে নেবে না বলে আমার বিশ্বাস। আন্দোলন যদি জনগণের জন্য হয় তাহলে কেন তাদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে? বঙ্গবন্ধু যখন পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের শৃংখল ভাঙার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, সেদিনও তিনি সাধারণ মানুষের যেন কষ্ট না হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখে কর্মসূচি দিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে তিনি বলেছিলেন, রেল, বাস ও রিকশা চলবে যাতে আমার মানুষের কষ্ট না হয়। সাধারণ মানুষের জীবনে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রেখে বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতেন। দেশের রাজনীতিকদের উচিত জাতির জনকের রাজনৈতিক দর্শন চর্চা করা; কারণ তার মতো গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নেতা বিশ্বে বিরল।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম অনেক আগে লিখেছিলেন, বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে আমরা তখনও বসে, বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি হাদিস-কোরান চষে। কথাগুলো বাংলার মুসলমান সম্প্রদায়ের অজ্ঞতা ও কুসংস্কারকে ইঙ্গিত করে লিখেছিলেন নজরুল । তিনি যেসব বাঙালি মুসলমানের মনে আঘাত দিয়ে চেতনা জাগিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, তাদের উত্তরসূরিরা এখন ফতোয়াবাজিতে ব্যস্ত। তখন ছিল ধর্মীয় ফতোয়া আর এখন রাজনৈতিক ফতোয়া। শুধু তাই নয়, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নালিশ দিতে কথায় কথায় বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের কাছে যাচ্ছেন তথাকথিত দেশপ্রেমিক রাজনীতিক। কখনও রবার্ট গিবসন, কখনও তারানকো আবার কখনও নিশা দেশাই। অতীতে ছুটে গেছেন হ্যারি কে টমাস, বিউটিনেস, আনোয়ার চৌধুরী, মাসায়কি ইনুয়ী বা ড্যান ডব্লিউ মজিনার কাছে। গণতন্ত্রের জন্য লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে গণতন্ত্র অধরাই রয়ে গেছে। পশ্চিমা গোষ্ঠীর ইশারায় একদল বিপথগামী সেনা অফিসার ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। এরপর খন্দকার মোশতাককে সরিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে বলেছিলেন, আমি রাজনীতিকদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলব। সেই এজেন্ডা এখনও রয়ে গেছে। বিএনপি ও তাদের দোসররা বর্তমানে আরেকটি এক-এগারো তৈরির চেষ্টায় ব্যস্ত, সঙ্গে তথাকথিত সুশীল নামধারীরা।
অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না; বরং এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধে ইসলাম সব সময় সোচ্চার এবং হত্যাকারীর জন্য ইসলামে রয়েছে কঠিন শাস্তির বিধান। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কারও প্রাণ রক্ষা করেছে, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল (সূরা মায়িদা-৩২)। প্রতিদিন পত্রিকা ও টেলিভিশনে মানুষ পুড়িয়ে মারার খবর দেখে দিন শুরু হয়। মাঝে মাঝে টেলিভিশন ও খবরের কাগজ সরিয়ে রাখি যেন প্রতিদিন ঘটে যাওয়া দুঃসহ ঘটনাগুলো জীবন থেকে দূরে সরে থাকে। এত কিছুর পরও আশায় বুক বাঁধি। এ দেশ অতীতে অনেক বড় বিপর্যয়ের পরও মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। মানুষ হত্যার এ লীলা নিশ্চয়ই একদিন বন্ধ হবে। মা সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর পর স্বস্তির নিঃশ্বাস নেবে, ড্রাইভারের স্ত্রীকে আতংক নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে না। যাত্রীদের পুলিশ পাহারায় গাড়িতে চড়তে হবে না; আর প্রধানমন্ত্রীকে বার্ন ইউনিটের মানুষের আর্তনাদ শুনে কান্নায় চোখ মুছতে হবে না। যুদ্ধাপরাধীদের দোসর একটি রাজনৈতিক জোট জনগণ, গণতন্ত্র ও আপসহীনতার কথা বলে হত্যাযজ্ঞ চালাতে চালাতে একদিন পুরোপুরি মূল্যহীন ও নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে, এটা মাথায় রেখে কি তারা এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে পারেন না? গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে হলে মানুষকে নিয়ে ভাবতে হবে। যারা আজ মানুষ পুড়িয়ে মারছে, ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।
মোহাম্মদ আলী আশরাফ : সহসভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় কমিটি
আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এসেছিলেন। তখন সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি অল্প সময়ে মালয়েশিয়ায় এত উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করলেন কীভাবে? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, দেখুন যখন ভালো কাজ করবেন তখন আপনার পক্ষে কিছু লোক বাহ্বা দেবে; আবার যখন কোনো খারাপ কাজ করবেন তখনও কিছু লোক পাশে থাকে। আসলে এটা বড় কথা নয়, নৈতিকতার সঙ্গে দেশকে ভালোবেসে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই মূল কথা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনও সে রকম একটি বিষয়। একদিকে দেশের উন্নয়ন ও সংবিধান রক্ষার চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে জামায়াত-বিএনপি ও হেফাজতের নৃশংসতা। দশম সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মানুষ পুড়িয়ে মারা, ব্যাংকে হামলা, রাস্তার আইল্যান্ডের গাছ উপড়ে ফেলা এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড হয়েছে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের বয়স ১৩ মাসের বেশি। এর মধ্যে ৬ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত অবরোধ-হরতালের সহিংসতায় মৃত্যুর সংখ্যা শতাধিক। আগুন ও ভাংচুর হয়েছে ১ হাজার ১১৪টি যানবাহনে, রেলে নাশকতার ঘটনা ১২টি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি দেড়শ জনের মতো আর সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬৫৪ জন। ঢাকার বাইরে কয়েকটি হাসপাতালে অসংখ্য রোগী আগুনে পুড়ে মৃত্যুশয্যায়, অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। অথচ বিএনপি নেত্রী এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডকে বলছেন গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন। জনগণকে পুড়িয়ে মারার পাশাপাশি বাংলাদেশকে ইরাক, আফগানিস্তান, মিসর, ফিলিস্তিন কিংবা লিবিয়ার মতো একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার হীন চেষ্টা কাদের নির্দেশনায় করা হচ্ছে তা খুঁজে দেখা দরকার। এদেশের মানুষ ১৯৫২ আর ৭১ সালে যেমন পাকিস্তানের নৃশংসতা বরদাশত করেনি, তেমনি ২০১৫ সালের নির্মমতাও মেনে নেবে না বলে আমার বিশ্বাস। আন্দোলন যদি জনগণের জন্য হয় তাহলে কেন তাদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে? বঙ্গবন্ধু যখন পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের শৃংখল ভাঙার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, সেদিনও তিনি সাধারণ মানুষের যেন কষ্ট না হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখে কর্মসূচি দিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে তিনি বলেছিলেন, রেল, বাস ও রিকশা চলবে যাতে আমার মানুষের কষ্ট না হয়। সাধারণ মানুষের জীবনে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রেখে বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতেন। দেশের রাজনীতিকদের উচিত জাতির জনকের রাজনৈতিক দর্শন চর্চা করা; কারণ তার মতো গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নেতা বিশ্বে বিরল।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম অনেক আগে লিখেছিলেন, বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে আমরা তখনও বসে, বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি হাদিস-কোরান চষে। কথাগুলো বাংলার মুসলমান সম্প্রদায়ের অজ্ঞতা ও কুসংস্কারকে ইঙ্গিত করে লিখেছিলেন নজরুল । তিনি যেসব বাঙালি মুসলমানের মনে আঘাত দিয়ে চেতনা জাগিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, তাদের উত্তরসূরিরা এখন ফতোয়াবাজিতে ব্যস্ত। তখন ছিল ধর্মীয় ফতোয়া আর এখন রাজনৈতিক ফতোয়া। শুধু তাই নয়, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নালিশ দিতে কথায় কথায় বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের কাছে যাচ্ছেন তথাকথিত দেশপ্রেমিক রাজনীতিক। কখনও রবার্ট গিবসন, কখনও তারানকো আবার কখনও নিশা দেশাই। অতীতে ছুটে গেছেন হ্যারি কে টমাস, বিউটিনেস, আনোয়ার চৌধুরী, মাসায়কি ইনুয়ী বা ড্যান ডব্লিউ মজিনার কাছে। গণতন্ত্রের জন্য লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে গণতন্ত্র অধরাই রয়ে গেছে। পশ্চিমা গোষ্ঠীর ইশারায় একদল বিপথগামী সেনা অফিসার ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। এরপর খন্দকার মোশতাককে সরিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে বলেছিলেন, আমি রাজনীতিকদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলব। সেই এজেন্ডা এখনও রয়ে গেছে। বিএনপি ও তাদের দোসররা বর্তমানে আরেকটি এক-এগারো তৈরির চেষ্টায় ব্যস্ত, সঙ্গে তথাকথিত সুশীল নামধারীরা।
অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না; বরং এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধে ইসলাম সব সময় সোচ্চার এবং হত্যাকারীর জন্য ইসলামে রয়েছে কঠিন শাস্তির বিধান। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কারও প্রাণ রক্ষা করেছে, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল (সূরা মায়িদা-৩২)। প্রতিদিন পত্রিকা ও টেলিভিশনে মানুষ পুড়িয়ে মারার খবর দেখে দিন শুরু হয়। মাঝে মাঝে টেলিভিশন ও খবরের কাগজ সরিয়ে রাখি যেন প্রতিদিন ঘটে যাওয়া দুঃসহ ঘটনাগুলো জীবন থেকে দূরে সরে থাকে। এত কিছুর পরও আশায় বুক বাঁধি। এ দেশ অতীতে অনেক বড় বিপর্যয়ের পরও মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। মানুষ হত্যার এ লীলা নিশ্চয়ই একদিন বন্ধ হবে। মা সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর পর স্বস্তির নিঃশ্বাস নেবে, ড্রাইভারের স্ত্রীকে আতংক নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে না। যাত্রীদের পুলিশ পাহারায় গাড়িতে চড়তে হবে না; আর প্রধানমন্ত্রীকে বার্ন ইউনিটের মানুষের আর্তনাদ শুনে কান্নায় চোখ মুছতে হবে না। যুদ্ধাপরাধীদের দোসর একটি রাজনৈতিক জোট জনগণ, গণতন্ত্র ও আপসহীনতার কথা বলে হত্যাযজ্ঞ চালাতে চালাতে একদিন পুরোপুরি মূল্যহীন ও নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে, এটা মাথায় রেখে কি তারা এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে পারেন না? গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে হলে মানুষকে নিয়ে ভাবতে হবে। যারা আজ মানুষ পুড়িয়ে মারছে, ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।
মোহাম্মদ আলী আশরাফ : সহসভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় কমিটি
No comments