খালেদার গ্রেপ্তারে সঙ্কট বাড়বে
সাবেক
প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হলে
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশের
একটি আদালত তার বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করে। সরকার ও বিএনপি উভয় পক্ষই
জরুরি ভিত্তিতে উত্তেজনা প্রশমনের উদ্যোগ না নিলে রাজনৈতিক সঙ্কট দেশকে
মারাত্মক অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। বাংলাদেশ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা
ব্রাসেলস ভিত্তিক বেসরকারি শক্তিশালী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ
(আইসিজি) এ কথা বলেছে। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্কট পর্যালোচনা করে
বাংলাদেশকে রেখেছে ‘কনফ্লিক্ট রিস্ক এলার্ট’-এ। একই অবস্থা ইয়েমেনের।
আইসিজি একটি নিরপেক্ষ, অলাভজনক সংগঠন। তারা বিশ্বের ভয়াবহ সব সংঘাত
প্রতিরোধ ও তা সমাধানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২রা মার্চ তারা ক্রাইসিস
ওয়াচ বা সঙ্কট পর্যবেক্ষণের অধীনে তাদের মাসিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ
প্রসঙ্গে বলেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সঙ্কট অব্যাহত আছে। দেশের স্থিতিশীলতার
জন্য এটা ভয়াবহ এক হুমকি। বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র
ডাকে সারা দেশে অবরোধ চলছে জানুয়ারির প্রথম দিক থেকে। এতে নিহত হয়েছেন
শতাধিক মানুষ। গত ২৫শে ফেব্রুয়ারি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। তাকে গ্রেপ্তার করা হলে সহিংসতা আরও
বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ৬ই ফেব্রুয়ারি বিএনপি ও তার মিত্র জামায়াতে
ইসলামীর কর্মকাণ্ডকে মধ্যপ্রাচ্যের জিহাদি গ্রুপ ইসলামিক স্টেট ( আইএস,
আগের নাম আইসিল) -এর সঙ্গে তুলনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে
দেখা গেছে সঙ্কট সমাধানের জন্য সুশীল সমাজের উদ্যোগ। দেশব্যাপী প্রতিবাদ
বিক্ষোভসহ অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সুপরিচিত জুরিস্ট,
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের কিছু ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠন
করা হয়েছে একটি নতুন কমিটি। তারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সংলাপে বসার জন্য
চাপ সৃষ্টি করেছে। গঠনমূলক সংলাপে বসতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি
নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।
ঢাকায় নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ আছেন খালেদা জিয়া। ১১ই ফেব্রুয়ারি সেখানে
খাদ্য ও পানীয় নিতে অস্থায়ীভাবে বাধা দেয় পুলিশ। নিষিদ্ধ ঘোষিত হিজবুত
তাহরিরের পোস্টার প্রকাশ করার জন্য ১৮ই ফেব্রুয়ারি একটি পত্রিকার বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শেখ হাসিনা। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত
যুদ্ধাপরাধের বিচার করার জন্য গঠন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
‘বিতর্কিত’ ওই আদালত ১৮ই ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতা আবদুস
সুবহানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছে।
No comments