বাবার মৃত্যু বৃথা যেতে দেবেন না by তৃষা আহমেদ
মুক্তমনা
ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা লেখক ও বল্গগার অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ডের ১৫ ঘণ্টা পর
যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্কুলে অধ্যয়নরত তার মেয়ে তৃষা আহমেদ ফেসবুকে
প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তার বাবা অভিজিৎ রায়ের কর্ম ছড়িয়ে দিয়ে তার মৃত্যু
বৃথা যেতে না দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। ফেসবুকে পোস্ট করা লেখাটির
ভাষান্তর...
আমার বাবা বাংলা ভাষার বিখ্যাত একজন লেখক। তিনি আসলে বিজ্ঞান এবং বিশ্বাস সম্পর্কিত লেখার জন্য বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বাবার লেখা একটি বই প্রকাশ করতে গত সপ্তাহে তিনি ও আমার মা বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। ১৫ ঘণ্টা আগে ধর্মীয় উগ্রবাদীরা আমার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আমার মা মারাত্মক যখম হয়েছেন এবং তিনি এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমার বাবার মৃত্যুর ঘটনা বাংলাদেশে এখন প্রধান সংবাদ শিরোনাম। আমি যে কারণে এটা সবার সঙ্গে শেয়ার করছি, সেটা আমার জন্য নয়, বরং আমার বাবার জন্যই। একটি উন্নত পৃথিবীর লক্ষ্যে তিনি মুক্তমত প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন। আমার বয়স যখন ছয়, তখন থেকেই আমার মা-বাবার মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে (তৃষা অভিজিতের স্ত্রী বন্যার আগের ঘরের মেয়ে)। আমার ১২ বছর বয়স থেকেই তিনি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু, আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত একজন, আমার নাচের সঙ্গী এবং আমার আদর্শ বাবা হয়ে উঠেছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি একবারও আমাকে বলেননি যে উত্তেজিত হয়ো না কিংবা বিনয়ী হতে হবে, বরং তিনি আমাকে সাহসী হতে, ভীতু না হতে বলেছিলেন। আর বলতেন, জানতে হবে অনেক কিছু।
যদি এটা বলা হয়, আমি এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবং বিপর্যস্ত, তাহলে কম বলা হবে। কিন্তু এই খারাপ বিশ্বটাকে ভালো করতে 'যুদ্ধ' করার জন্য কারণের কোনো অভাব নেই। বাবা, তোমার ভালোবাসা আর শিক্ষা, এই দুটিই আমি সারাজীবন বহন করব। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, বাবা। আমার জীবনে যে উপহার তুমি দিয়েছ তার প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।
এ মুহূর্তে আমাকে সাহায্যের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত কাজটি হবে প্রত্যেকে (এমনকি যাদের সঙ্গে আমার কখনও দেখা হয়নি) বাবার কর্ম শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন। আমার বাবার প্রতি যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে, সেটার প্রতিবাদ যুক্তরাষ্ট্রেও হওয়া উচিত। এই দেশের দুর্নীতি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন যে, আমার সন্দেহ হচ্ছে এ ঘটনার কোনো সুষ্ঠু বিচার আদৌ হবে কি-না। আমি চাই এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, যুক্তরাষ্ট্রেও সংবাদের শিরোনাম হোক। আমার বাবার প্রতি যে নৃশংসতা হয়েছে, তা স্কুল, কমিউনিটিগুলোতে জানালে আমি খুব খুশি হবো। দয়া করে আমার বাবার মৃত্যুকে বৃথা যেতে দেবেন না।
আমার বাবাকে যে নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে, এর ন্যায়বিচারে সাহায্য করতে অনুগ্রহ করে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখুন। শব্দকে হত্যা করা যায় না।
প্রয়াত অভিজিৎ রায়ের কন্যা
আমার বাবা বাংলা ভাষার বিখ্যাত একজন লেখক। তিনি আসলে বিজ্ঞান এবং বিশ্বাস সম্পর্কিত লেখার জন্য বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বাবার লেখা একটি বই প্রকাশ করতে গত সপ্তাহে তিনি ও আমার মা বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। ১৫ ঘণ্টা আগে ধর্মীয় উগ্রবাদীরা আমার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আমার মা মারাত্মক যখম হয়েছেন এবং তিনি এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমার বাবার মৃত্যুর ঘটনা বাংলাদেশে এখন প্রধান সংবাদ শিরোনাম। আমি যে কারণে এটা সবার সঙ্গে শেয়ার করছি, সেটা আমার জন্য নয়, বরং আমার বাবার জন্যই। একটি উন্নত পৃথিবীর লক্ষ্যে তিনি মুক্তমত প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন। আমার বয়স যখন ছয়, তখন থেকেই আমার মা-বাবার মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে (তৃষা অভিজিতের স্ত্রী বন্যার আগের ঘরের মেয়ে)। আমার ১২ বছর বয়স থেকেই তিনি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু, আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত একজন, আমার নাচের সঙ্গী এবং আমার আদর্শ বাবা হয়ে উঠেছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি একবারও আমাকে বলেননি যে উত্তেজিত হয়ো না কিংবা বিনয়ী হতে হবে, বরং তিনি আমাকে সাহসী হতে, ভীতু না হতে বলেছিলেন। আর বলতেন, জানতে হবে অনেক কিছু।
যদি এটা বলা হয়, আমি এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবং বিপর্যস্ত, তাহলে কম বলা হবে। কিন্তু এই খারাপ বিশ্বটাকে ভালো করতে 'যুদ্ধ' করার জন্য কারণের কোনো অভাব নেই। বাবা, তোমার ভালোবাসা আর শিক্ষা, এই দুটিই আমি সারাজীবন বহন করব। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, বাবা। আমার জীবনে যে উপহার তুমি দিয়েছ তার প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।
এ মুহূর্তে আমাকে সাহায্যের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত কাজটি হবে প্রত্যেকে (এমনকি যাদের সঙ্গে আমার কখনও দেখা হয়নি) বাবার কর্ম শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন। আমার বাবার প্রতি যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে, সেটার প্রতিবাদ যুক্তরাষ্ট্রেও হওয়া উচিত। এই দেশের দুর্নীতি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন যে, আমার সন্দেহ হচ্ছে এ ঘটনার কোনো সুষ্ঠু বিচার আদৌ হবে কি-না। আমি চাই এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, যুক্তরাষ্ট্রেও সংবাদের শিরোনাম হোক। আমার বাবার প্রতি যে নৃশংসতা হয়েছে, তা স্কুল, কমিউনিটিগুলোতে জানালে আমি খুব খুশি হবো। দয়া করে আমার বাবার মৃত্যুকে বৃথা যেতে দেবেন না।
আমার বাবাকে যে নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে, এর ন্যায়বিচারে সাহায্য করতে অনুগ্রহ করে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখুন। শব্দকে হত্যা করা যায় না।
প্রয়াত অভিজিৎ রায়ের কন্যা
No comments