সংলাপ না হলে চরমপন্থার উত্থান ঘটতে পারে -বিশিষ্টজনদের অভিমত
(ড. আকবর আলি খান; খন্দকার মাহবুব হোসেন; ড. দিলারা চৌধুরী; ড. বদিউল আলম মজুমদার; ড. আসিফ নজরুল)
দেশে চলমান সঙ্কটকে রাজনৈতিক উল্লেখ করে তা সমাধানে সংলাপের কথা বলেছেন
বিশিষ্টজনেরা। তারা আরো বলেছেন, সংলাপের জন্য সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।
দমন-পীড়ন চালিয়ে বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।
এভাবে চলতে থাকলে সঙ্কট দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং পরিণতিতে দেশে চরমপন্থার
উত্থান ঘটতে পারে।
ড. আকবর আলি খান
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, উভয়পক্ষের মধ্যে সংলাপ হলে দেশে চলমান সঙ্কট সমাধানের একটা পথ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু সংলাপ-সমঝোতা না হলে সে সম্ভাবনা ক্ষীণ। সে ক্ষেত্রে সুশীলসমাজেরও কিছু করার থাকবে না। সঙ্কট দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকবে। সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হবে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, দেশে যে সঙ্কট বিরাজ করছে তা একটি রাজনৈতিক সঙ্কট। আজ দেশে যে হরতাল-অবরোধ চলছে তার মূল কারণ ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন। নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি এটিকে অবৈধ বলে আসছে। আন্তর্জাতিক মহলও এই নির্বাচনকে সমর্থন দেয়নি। সরকারও বলেছিল সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন। আমরা আশা করেছিলাম, তার দ্রুতই একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। বিএনপি জোটও একটি বৈধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলছে। তাদের পক্ষ থেকে সংলাপের আহ্বানও জানানো হয়েছে। কিন্তু সরকার তখন বলেছেÑ বিএনপির আন্দোলনের ক্ষমতা নেই, তারা অসার হুমকি দিচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এই আইনজীবী আরো বলেন, সরকার দেশের মানুষের প্রতিটি গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তারা দেশ পরিচালনা করছে। হাজার হাজার লোক কারাগারে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নামে হাজার হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সুশীলসমাজসহ বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছেÑ শুধু সংলাপেই চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন হতে পারে। কিন্তু সরকার এটিকে রাজনৈতিক সঙ্কট হিসেবে স্বীকার না করে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা উল্লেখ করে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। আমি মনে করিÑ অবশ্যই এটা একটা রাজনৈতিক সমস্যা এবং সংলাপেই এর সামাধান করতে হবে। আর এই সংলাপে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। তারা যদি বিএনপি জোটের সাথে বসতে না চায় তবে তৃতীয় কোনো পক্ষের সাথেও আলোচনা করতে পারে, তবে অবশ্যই তাদের আলোচনা করতে হবে এবং সঙ্কটের সমাধান করতে হবে।
ড. দিলারা চৌধুরী
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেছেন, সুশীলসমাজের সংলাপের উদ্যোগে সরকার হয়তো সাড়া দেবে না। আগে আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে একটা সংলাপ সংলাপ খেলা হতো। কিন্তু এবার সেই খেলাটাও হবে না। সুশীলসমাজ যে উদ্যোগ নিয়েছে তার কোনো মানে নেই বলে মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই শিক্ষক। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সুশীলরা জনগণকে সম্পৃক্ত করে ক্ষমতাসীনদের ওপর একটা চাপ তৈরি করেন। কিন্তু আমাদের দেশের সুশীলদের জনসম্পৃক্ততা নেই। পাশাপাশি তাদের মধ্যেও মেরুকরণ আছে। তাই তারা চিঠি দিয়ে সংলাপের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। সংলাপ এই সরকার করবে না।
দিলারা চৌধুরী আরো বলেন, যারা জোর করে ক্ষমতায় আছে তাদের চাপ না দিলে লড়বে না। আমি বহুদিন ধরে বলছিÑ আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের হাত থেকে রাজনীতি বের হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে- সরকার শেষ পর্যন্ত আরো হার্ড লাইনে যাবে। ফলে চলমান অস্থিরতা চলতেই থাকবে। শেষ পর্যন্ত এটা চরমপন্থার দিকে মোড় নিতে পারে। দেশে চরমপন্থী শক্তির উত্থান ঘটতে পারে। তখন সাংবিধানিক শাসন বলতে কিছু থাকবে না। খুবই সঙ্কটময় অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। সরকার দমন চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কত লোক মারছে- তার কোনো পরিসংখ্যান আমরা জানি না। পৃথিবীর অনেক দেশে এভাবে দমন চালিয়ে অনেক শক্তি ক্ষমতায় থেকে গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত তারা টিকতে পারেনি।
ড. বদিউল আলম মজুমদার
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, উভয়পক্ষের মধ্যে কার্যকর সংলাপের জন্য দেশের রাষ্ট্রপতি একটা উদ্যোগ নিতে পারেন। তিনি সবার অভিভাবক। তবে সংলাপ হতে হবে কার্যকর। লোক দেখানো সংলাপ আমরা চাচ্ছি না। সংলাপ ছাড়া চলমান সঙ্কটের সমাধান হবে না। আমরা সংলাপের বিকল্প কোনো কিছু দেখছি না। সরকার সংলাপে রাজি না হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। দমন-পীড়নের মাধ্যমে সরকার যদি জিতেও যায় সেটিকে জিতা বলা যাবে না। আসলে এভাবে কেউ-ই জিততে পারবে না। সরকার কঠোর হলে সাময়িকভাবে কিছুটা শান্তভাব ফিরে এলেও তা টেকসই হবে না। তিনি আরো বলেন, সংলাপ-সমঝোতা হলো রাজনীতির ভাষা। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে। আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে। অন্যথায় পরিণতি ভয়াবহ হবে। আমরা একটা জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারি।
ড. আসিফ নজরুল
বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, চলমান সঙ্কট সমাধানে উভয়পক্ষের মধ্যে সংলাপ না হলে দেশে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। বিএনপি এখন সংলাপ চাচ্ছে। দেশে তাদের সমর্থন রয়েছে ৩৫-৪০ শতাংশ মানুষের। এত বড় একটা রাজনৈতিক দলকে দমন-পীড়ন চালিয়ে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য তাদের যে বৈধ দাবি তার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও সমর্থন রয়েছে। তাদের বৈধ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একটা সংলাপ জরুরি। কিন্তু ক্ষমতাসীনেরা যদি সংলাপে না বসে তাহলে সঙ্কট দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং দেশে ফ্যাসিবাদী শক্তি কায়েম হবে। এ ধরনের পরিস্থিতি সংবিধান ও গণতন্ত্রের পরিপন্থী। আইনের এই অধ্যাপক আরো বলেন, সংলাপ হতে হবে অবশ্যই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। আর এ ক্ষেত্রে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। কেউ কেউ বলেন- শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংলাপে কী লাভ? আমার বক্তব্য হচ্ছে- এরশাদবিরোধী আন্দোলনেও সবাই সরকার পরিবর্তন চেয়েছিলেন। সেটা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তখন অন্যান্য প্রক্রিয়ারও সংস্কারের প্রশ্ন এসেছিল এবং সেগুলো করা হয়েছে। তাই এই সময়েও সংলাপের বিষয় হতে হবে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন।
ড. আকবর আলি খান
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, উভয়পক্ষের মধ্যে সংলাপ হলে দেশে চলমান সঙ্কট সমাধানের একটা পথ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু সংলাপ-সমঝোতা না হলে সে সম্ভাবনা ক্ষীণ। সে ক্ষেত্রে সুশীলসমাজেরও কিছু করার থাকবে না। সঙ্কট দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকবে। সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হবে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, দেশে যে সঙ্কট বিরাজ করছে তা একটি রাজনৈতিক সঙ্কট। আজ দেশে যে হরতাল-অবরোধ চলছে তার মূল কারণ ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন। নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি এটিকে অবৈধ বলে আসছে। আন্তর্জাতিক মহলও এই নির্বাচনকে সমর্থন দেয়নি। সরকারও বলেছিল সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন। আমরা আশা করেছিলাম, তার দ্রুতই একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। বিএনপি জোটও একটি বৈধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলছে। তাদের পক্ষ থেকে সংলাপের আহ্বানও জানানো হয়েছে। কিন্তু সরকার তখন বলেছেÑ বিএনপির আন্দোলনের ক্ষমতা নেই, তারা অসার হুমকি দিচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এই আইনজীবী আরো বলেন, সরকার দেশের মানুষের প্রতিটি গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তারা দেশ পরিচালনা করছে। হাজার হাজার লোক কারাগারে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নামে হাজার হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সুশীলসমাজসহ বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছেÑ শুধু সংলাপেই চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন হতে পারে। কিন্তু সরকার এটিকে রাজনৈতিক সঙ্কট হিসেবে স্বীকার না করে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা উল্লেখ করে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। আমি মনে করিÑ অবশ্যই এটা একটা রাজনৈতিক সমস্যা এবং সংলাপেই এর সামাধান করতে হবে। আর এই সংলাপে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। তারা যদি বিএনপি জোটের সাথে বসতে না চায় তবে তৃতীয় কোনো পক্ষের সাথেও আলোচনা করতে পারে, তবে অবশ্যই তাদের আলোচনা করতে হবে এবং সঙ্কটের সমাধান করতে হবে।
ড. দিলারা চৌধুরী
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেছেন, সুশীলসমাজের সংলাপের উদ্যোগে সরকার হয়তো সাড়া দেবে না। আগে আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে একটা সংলাপ সংলাপ খেলা হতো। কিন্তু এবার সেই খেলাটাও হবে না। সুশীলসমাজ যে উদ্যোগ নিয়েছে তার কোনো মানে নেই বলে মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই শিক্ষক। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সুশীলরা জনগণকে সম্পৃক্ত করে ক্ষমতাসীনদের ওপর একটা চাপ তৈরি করেন। কিন্তু আমাদের দেশের সুশীলদের জনসম্পৃক্ততা নেই। পাশাপাশি তাদের মধ্যেও মেরুকরণ আছে। তাই তারা চিঠি দিয়ে সংলাপের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। সংলাপ এই সরকার করবে না।
দিলারা চৌধুরী আরো বলেন, যারা জোর করে ক্ষমতায় আছে তাদের চাপ না দিলে লড়বে না। আমি বহুদিন ধরে বলছিÑ আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের হাত থেকে রাজনীতি বের হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে- সরকার শেষ পর্যন্ত আরো হার্ড লাইনে যাবে। ফলে চলমান অস্থিরতা চলতেই থাকবে। শেষ পর্যন্ত এটা চরমপন্থার দিকে মোড় নিতে পারে। দেশে চরমপন্থী শক্তির উত্থান ঘটতে পারে। তখন সাংবিধানিক শাসন বলতে কিছু থাকবে না। খুবই সঙ্কটময় অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। সরকার দমন চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কত লোক মারছে- তার কোনো পরিসংখ্যান আমরা জানি না। পৃথিবীর অনেক দেশে এভাবে দমন চালিয়ে অনেক শক্তি ক্ষমতায় থেকে গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত তারা টিকতে পারেনি।
ড. বদিউল আলম মজুমদার
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, উভয়পক্ষের মধ্যে কার্যকর সংলাপের জন্য দেশের রাষ্ট্রপতি একটা উদ্যোগ নিতে পারেন। তিনি সবার অভিভাবক। তবে সংলাপ হতে হবে কার্যকর। লোক দেখানো সংলাপ আমরা চাচ্ছি না। সংলাপ ছাড়া চলমান সঙ্কটের সমাধান হবে না। আমরা সংলাপের বিকল্প কোনো কিছু দেখছি না। সরকার সংলাপে রাজি না হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। দমন-পীড়নের মাধ্যমে সরকার যদি জিতেও যায় সেটিকে জিতা বলা যাবে না। আসলে এভাবে কেউ-ই জিততে পারবে না। সরকার কঠোর হলে সাময়িকভাবে কিছুটা শান্তভাব ফিরে এলেও তা টেকসই হবে না। তিনি আরো বলেন, সংলাপ-সমঝোতা হলো রাজনীতির ভাষা। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে। আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে। অন্যথায় পরিণতি ভয়াবহ হবে। আমরা একটা জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারি।
ড. আসিফ নজরুল
বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, চলমান সঙ্কট সমাধানে উভয়পক্ষের মধ্যে সংলাপ না হলে দেশে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। বিএনপি এখন সংলাপ চাচ্ছে। দেশে তাদের সমর্থন রয়েছে ৩৫-৪০ শতাংশ মানুষের। এত বড় একটা রাজনৈতিক দলকে দমন-পীড়ন চালিয়ে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য তাদের যে বৈধ দাবি তার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও সমর্থন রয়েছে। তাদের বৈধ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একটা সংলাপ জরুরি। কিন্তু ক্ষমতাসীনেরা যদি সংলাপে না বসে তাহলে সঙ্কট দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং দেশে ফ্যাসিবাদী শক্তি কায়েম হবে। এ ধরনের পরিস্থিতি সংবিধান ও গণতন্ত্রের পরিপন্থী। আইনের এই অধ্যাপক আরো বলেন, সংলাপ হতে হবে অবশ্যই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। আর এ ক্ষেত্রে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। কেউ কেউ বলেন- শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংলাপে কী লাভ? আমার বক্তব্য হচ্ছে- এরশাদবিরোধী আন্দোলনেও সবাই সরকার পরিবর্তন চেয়েছিলেন। সেটা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তখন অন্যান্য প্রক্রিয়ারও সংস্কারের প্রশ্ন এসেছিল এবং সেগুলো করা হয়েছে। তাই এই সময়েও সংলাপের বিষয় হতে হবে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন।
No comments