রাজধানীতে সন্দেহ হলেই গুলি করছে পুলিশ- রেহাই পাচ্ছেন না নিরপরাধরাও by আবু সালেহ আকন
রাজধানীতে
যাকে তাকে গুলি করছে পুলিশ। এ পর্যন্ত যে ক’জন পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন
তাদের প্রত্যেকের দাবি তারা নিরপরাধ পথচারী। পুলিশ বিনা কারণে তাদেরকে ধরে
অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেছে। এই বক্তব্যের পক্ষে তাদের কাছে যথেষ্ট
সাক্ষ্যপ্রমাণও রয়েছে। এদের কেউ রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, আবার কেউ কেউ
অভিযোগ করেছেন পুলিশ তাদেরকে থানায় ধরে নিয়ে গুলি করেছে। তবে পুলিশের
বক্তব্য একটিইÑ ‘তারা নাশকতাকারী’। পুলিশের ওপর হামলা, আগুন লাগানোর সময়
কিংবা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ বা যানবাহন ভাঙচুরের সময় তাদেরকে গুলি করা হয়েছে
বলে পুলিশ দাবি করেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে রাজধানীর
যাত্রাবাড়ী থেকে ধোলাইপাড় যাওয়ার রাস্তায় পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন আতাউর
রহমান (২৭) নামে এক যুবক। পুলিশের দাবি একটি বিআরটিসি বাসে পেট্রলবোমা
নিক্ষেপের চেষ্টা করায় আতাউরকে গুলি করে পুলিশ। কিন্তু হাসপাতালে আতাউর ও
তার স্বজন অভিযোগ করেছেন, শুধু শুধুই তাকে গুলি করা হয়েছে। তিনি কিছুই
করেননি। পুলিশ সামনে থেকে তার ডান পায়ের হাঁটুতে গুলি করে। আতাউরের বাড়ি
নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ির কৃষ্ণপুর গ্রামে। তার বাবার নাম জসিমউদ্দিন।
যাত্রাবাড়ীর দীন মোহাম্মদ মার্কেটের পাঁচতলায় তার একটি অ্যামব্রয়ডারির
দোকান রয়েছে। নাম সাদিয়া অ্যামব্রয়ডারি হাউজ। নারায়ণগঞ্জে স্যাম ডিজাইন
গার্মেন্ট থেকে টি-শার্টের কিছু অর্ডার পেয়েছেন। ওখানে কিছু টাকা পাওনা
ছিল। সেই টাকা নিয়ে ঢাকায় এসে ধোলাইপাড়ে নামেন এবং সেখানে রাস্তার পাশে
প্রস্রাব করতে বসেন। তখন স্থানীয় কয়েক যুবক তাকে ধরে মারধর দিয়ে পুলিশের
কাছে দেয়। পুলিশকে কিছু বলার আগেই পুলিশ তার পা লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলি
করার পরে পুলিশ তাকে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আতাউরের চাচা মুহাম্মদ কবির হোসেন বলেন, তারা ওই মার্কেটে একই সাথে ব্যবসায় করেন। তিনি বলেন, বিকেল ৪টার পরে তার সাথে আর কথা হয়নি। পরে রাত ১০টার দিকে শুনতে পারেন তাকে পুলিশ গুলি করেছে। আতাউরের মামা আবুল হোসেন বলেছেন, তারা কেউ কোনো রাজনীতি করেন না। কারো সাথে তাদের বিবাদও নেই। কেন পুলিশ এভাবে ঘটনা ঘটালো তা বুঝতে পারছেন না তিনি।
গতকাল বিকেলে পুলিশ ৯০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল নেতা শুভকে গ্রেফতার করতে পোস্তগোলা এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় শুভকে না পেলেও পুলিশ পেয়ে যায় তার ভাই জিদানকে। জিদান ওই এলাকার একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র। পুলিশ তার ওপর গুলি চালায়। এ সময় গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পায়নি জিদান। পুলিশ তাকে ধরে রাস্তার ওপর ফেলে বেদম প্রহার করে। সেখান থেকে তাকে নিয়ে আটকে রাখা হয় শ্যামপুর থানায়। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা থানা ঘেরাও করার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পুলিশ তাদের ওপর কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। পরে জিদানকে পুলিশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
মো: কাওছার (৩০)। বাবা শামসুল হক। বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে। মাদারটেক চৌরাস্তায় কাঁচামালের ব্যবসায় করেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর থেকে ঢাকায় আসেন তিনি। টেম্পোতে বাসাবোর বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে শাহজাহানপুর আমতলা এলাকায় জটলা দেখে অন্যদের সাথে নেমে পড়েন কাওছার। পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করলে তারা দৌড় দেন। এ সময় পুলিশ কাওছারকে ধরে পায়ে গুলি করে।
পরে পুলিশ তাকে বোমাবাজ বানিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। কাওছার বলেন, তিনি কাঁচামালের ব্যবসায় করে সংসার চালান।
রজধানীর মোহাম্মদপুরে আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক (৩৭) ও নাজমুল হোসেন (৪৭) নামে দু’জন গুলিতে আহত হন। তাদের অভিযোগ পুলিশ তাদের পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেছে।
রাজধানীর শ্যামপুরে আব্দুল হামিদ নামে একজনকে পায়ে গুলি করেছে পুলিশ। হামিদ ও তার স্বজনদের অভিযোগ পুলিশ রাস্তা থেকে আটকের পর তার পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে।
২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবীতে ইসমাইল হোসেন (৩০) নামে একজনকে গুলি করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, এক দল দুর্বৃত্ত ককটেল হামলা চালানোর চেষ্টা করছিল। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে ইসমাইল আহত হন। ইসমাইল বলছেন, তিনি একজন গাড়িচালক। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে পায়ে গুলি করেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জের কলাদিয়া থেকে একটি সাদা প্রাইভেট কার নিয়ে বাড্ডার আফতাবনগরে যায় শাকিল কসাই, পিয়ার হোসেন ও শহিদুল ইসলাম নামে তিন যুবক। স্থানীয় জনতা তাদেরকে ডাকাত সন্দেহে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ তাদেরকে গাড়িতে তুলেই গুলি করে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বঙ্গবাজারে দুই পথচারীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে পুলিশ। প্রবাসী আবদুর রহমান (৩০) ও ব্যবসায়ী মোমিন (৩৫) এ গুলির শিকার হন। ঘটনার পর পুলিশ দাবি করে, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালানোর সময় পুলিশের গুলিতে তারা আহত হয়েছে। আহতদের দাবি, তারা একজন সিঙ্গাপুর প্রবাসী, অন্যজন সিটি গোল্ডের ব্যবসায়ী। পুলিশ তাদের ধরে গুলি করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন প্রায়ই পুলিশের গুলিতে রাজধানীসহ সারা দেশে অনেকে হতাহত হচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের অনেকেরই দাবি পুলিশ বিনা কারণে কোনো বাছবিচার ছাড়াই ধরে ধরে গুলি করেছে। অনুসন্ধানেও দেখা গেছে অনেকেই নির্দোষ-নিরপরাধ। একেবারেই পথচারীকে ধরে গুলি করছে পুলিশ।
আতাউরের চাচা মুহাম্মদ কবির হোসেন বলেন, তারা ওই মার্কেটে একই সাথে ব্যবসায় করেন। তিনি বলেন, বিকেল ৪টার পরে তার সাথে আর কথা হয়নি। পরে রাত ১০টার দিকে শুনতে পারেন তাকে পুলিশ গুলি করেছে। আতাউরের মামা আবুল হোসেন বলেছেন, তারা কেউ কোনো রাজনীতি করেন না। কারো সাথে তাদের বিবাদও নেই। কেন পুলিশ এভাবে ঘটনা ঘটালো তা বুঝতে পারছেন না তিনি।
গতকাল বিকেলে পুলিশ ৯০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল নেতা শুভকে গ্রেফতার করতে পোস্তগোলা এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় শুভকে না পেলেও পুলিশ পেয়ে যায় তার ভাই জিদানকে। জিদান ওই এলাকার একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র। পুলিশ তার ওপর গুলি চালায়। এ সময় গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পায়নি জিদান। পুলিশ তাকে ধরে রাস্তার ওপর ফেলে বেদম প্রহার করে। সেখান থেকে তাকে নিয়ে আটকে রাখা হয় শ্যামপুর থানায়। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা থানা ঘেরাও করার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পুলিশ তাদের ওপর কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। পরে জিদানকে পুলিশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
মো: কাওছার (৩০)। বাবা শামসুল হক। বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে। মাদারটেক চৌরাস্তায় কাঁচামালের ব্যবসায় করেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর থেকে ঢাকায় আসেন তিনি। টেম্পোতে বাসাবোর বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে শাহজাহানপুর আমতলা এলাকায় জটলা দেখে অন্যদের সাথে নেমে পড়েন কাওছার। পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করলে তারা দৌড় দেন। এ সময় পুলিশ কাওছারকে ধরে পায়ে গুলি করে।
পরে পুলিশ তাকে বোমাবাজ বানিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। কাওছার বলেন, তিনি কাঁচামালের ব্যবসায় করে সংসার চালান।
রজধানীর মোহাম্মদপুরে আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক (৩৭) ও নাজমুল হোসেন (৪৭) নামে দু’জন গুলিতে আহত হন। তাদের অভিযোগ পুলিশ তাদের পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেছে।
রাজধানীর শ্যামপুরে আব্দুল হামিদ নামে একজনকে পায়ে গুলি করেছে পুলিশ। হামিদ ও তার স্বজনদের অভিযোগ পুলিশ রাস্তা থেকে আটকের পর তার পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে।
২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবীতে ইসমাইল হোসেন (৩০) নামে একজনকে গুলি করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, এক দল দুর্বৃত্ত ককটেল হামলা চালানোর চেষ্টা করছিল। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে ইসমাইল আহত হন। ইসমাইল বলছেন, তিনি একজন গাড়িচালক। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে পায়ে গুলি করেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জের কলাদিয়া থেকে একটি সাদা প্রাইভেট কার নিয়ে বাড্ডার আফতাবনগরে যায় শাকিল কসাই, পিয়ার হোসেন ও শহিদুল ইসলাম নামে তিন যুবক। স্থানীয় জনতা তাদেরকে ডাকাত সন্দেহে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ তাদেরকে গাড়িতে তুলেই গুলি করে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বঙ্গবাজারে দুই পথচারীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে পুলিশ। প্রবাসী আবদুর রহমান (৩০) ও ব্যবসায়ী মোমিন (৩৫) এ গুলির শিকার হন। ঘটনার পর পুলিশ দাবি করে, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালানোর সময় পুলিশের গুলিতে তারা আহত হয়েছে। আহতদের দাবি, তারা একজন সিঙ্গাপুর প্রবাসী, অন্যজন সিটি গোল্ডের ব্যবসায়ী। পুলিশ তাদের ধরে গুলি করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন প্রায়ই পুলিশের গুলিতে রাজধানীসহ সারা দেশে অনেকে হতাহত হচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের অনেকেরই দাবি পুলিশ বিনা কারণে কোনো বাছবিচার ছাড়াই ধরে ধরে গুলি করেছে। অনুসন্ধানেও দেখা গেছে অনেকেই নির্দোষ-নিরপরাধ। একেবারেই পথচারীকে ধরে গুলি করছে পুলিশ।
No comments