মৃত্যুর নির্মমতায় থমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব by শর্মী চক্রবর্তী
‘আমি ভাবি নাই বাঁচমু। বাঁচার জন্য পাগলের মতো করেছি। এদিকে ওদিকে খোঁজাখুঁজি করেছি। আওয়াজ দিছি। প্রথম কেউরে পাই নাই। হায়রে কি আর্তনাদ।
ও ভাই কেউ আছেন আমারে একটু বাঁচান না ভাই। আমার দু’পায়ের উপর ছিল দেয়ালের বিম। তার যে কি যন্ত্রণা। এখনো ভাবলে গা শিওরে উঠে। তখন ভাবছিলাম আর মনে হয় বাইর হইতে পারমু না, কেউ রে দেখতে পারমু না। তখন আল্লাহর কাছে মাপ চাইয়া নিছি। আল্লাহ আমার সব গোনাহ মাপ কইরা দিও আমার স্বামীরে ভালো রাইখো। তখন আল্লাহর দূত হইয়া আইসা আমারে এক উদ্ধারকর্মী ভাই উদ্ধার করছে। সে পর্যন্ত বিমের চাপায় আমার পা পচা শুরু হইছিল। ভবন ধসের ৪র্থ দিন আমারে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। এখন কৃত্রিম পায়ের সাহায্যে চলছি। দুই পা হারাইয়া জীবন ফিরা পাইছি!’ এই ছিল জীবন নিয়ে ফিরে আসা রেবেকার কথা। শুধু রেবেকাই নন অনেক দরিদ্র শ্রমিক কেউ পা হারিয়ে, কেউ হাত হারিয়ে, কেউ অর্ধেক পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে টিকে আছেন। হাজারো পরিবার এখনও স্বজনদের জন্য হাহাকার করছেন। ২৪শে এপ্রিল সকাল পৌনে ৯টা। অন্য আর দশটা দিনের মতোই শুরু হয়েছে নতুন আর একটা দিন। হঠাৎ বিকট শব্দে সাভারে ৯ তলা রানা প্লাজা ভবন ধসে পড়ে। প্রায় এক মিনিটের মধ্যে বহুতল ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। কিছু অংশ মাটির নিচে দেবে যায়। এসময় রানা প্লাজার আশপাশ ও সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকা কেঁপে ওঠে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। আতঙ্কিত লোকজন দৌড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে থাকেন। মৃত্যুর মিছিলে, স্বজনহারাদের আর্তনাদে, আহতদের আহাজারিতে শুধু সাভারই নয় সারা দেশ ছিল কষ্টে নিমজ্জিত। স্মরণকালের ভয়াবহ ভবন ধসের ধ্বংস বিভীষিকায় প্রাণ হারিয়েছে সহস্রাধিকের বেশি শ্রমিক। শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্ব মিডিয়ায়ও ছিল এই আলোচনা। এবছর বিশ্বের শীর্ষ ১০ রিপোর্টের মধ্যে স্থান পেয়েছে সাভারের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য রিপোর্টের ভেতর থেকে গুরুত্ব ও ভয়াবহতা বিচার করে বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন শীর্ষ ১০টি রিপোর্টের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এর ৭ম স্থানে অবস্থান করছে বাংলাদেশের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি। বিবরণে বলা হয়, ২৪শে এপ্রিল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অদূরে রানা প্লাজা ভবনধস স্মরণকালের সব থেকে ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনা। ভবন ধসে ১১০০’রও বেশি কর্মী প্রাণ হারান। বাংলাদেশে ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী গুরুত্বপূর্ণ গার্মেন্ট খাতে নিম্নমানের কর্মপরিবেশের বিষয়টি ভয়াবহ পন্থায় মনে করিয়ে দিয়েছে ওই দুর্ঘটনা। ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে শীর্ষ সব ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের জন্য পোশাক তৈরি করা কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ উন্নতিকল্পে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনা শুরু হয়। নভেম্বর মাসে ওয়াল-মার্ট, গ্যাপ এবং এইচঅ্যান্ডএম সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত গ্রুপ তাদের কর্মীদের জন্য আরও উন্নত মান নিশ্চিত করতে সম্মত হয়। তবে সার্বিক অগ্রগতি তেমন হয়নি। ওই ভবন ধসের পরেও বিচ্ছিন্ন কিছু গার্মেন্ট কারখানায় আগুনের ঘটনায় কমপক্ষে ১৮ জন মারা গেছে। বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাতের কর্মীরা এখনও মজুরি বৃদ্ধির আবেদন করে যাচ্ছে। বিশ্বের মধ্যে দেশটির কর্মীরা সব থেকে নিম্ন মজুরি উপার্জন করে থাকে। টাইম ম্যাগাজিনের শীর্ষ ১০ রিপোর্টের ৭ নম্বরে এভাবেই উঠে আসে রানা প্লাজা ভবন ধসের ঘটনা। বিদায়ী বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ছিল এটি। টানা এক মাস ধরে এই ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয়েছে জীবিত ও মৃত মানুষ। ১১২৭ জন নিহত হন ভবন ধসের ঘটনায়। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় ২৪৩৮ জন জীবিত মানুষ, ১২ জন উদ্ধারের পর হাসপাতালে মারা যান, ৮৩৬ মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়, ২৯১ অ-শনাক্ত মৃতদেহ জুরাইন কবরস্থানে দাফন, ৩১৬ জন নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে, ২২৩ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের অনেকেরই স্থান হয়েছিল সাভারের জাতীয় পক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি)। অনেকে পরিবারের কাছে ফিরে গেলেও স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে। পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেকে। ২৪শে এপ্রিল থেকে ১৪ই মে পর্যন্ত চলেছে উদ্ধার কাজ। টানা ২১ দিন উদ্ধারের পরও অনেকে ফিরে পায়নি তাদের স্বজনদের। নয় তলা ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে ছিলো অনেকে। প্রথম দিন মধ্যরাত পর্যন্ত ১৩৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এদের ৮০ জনের পরিচয় নিশ্চিত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে সহস্রাধিক মানুষকে। তাদের অনেকের অবস্থা ছিল গুরুতর। এদের অনেকের হাত ও পা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছিল বিচ্ছিন্ন। দিনে ভেতর থেকে তারা বাঁচার আকুতি জানালেও রাতে তাদের সে আর্তনাদ ক্ষীণ হয়ে আসছিল। আগের দিন ভবনে ফাটল ধরা পড়ে। ফাটল ধরা পড়ার পর শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে কারখানাগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ভবনটি ধসে পড়ার পরই দেখা যায় এক মর্মন্তুদ চিত্র। পিলার পড়ে কারও মাথা থেঁতলে পড়ে আছে। কারও পা টুকরা টুকরা হয়ে রডের সঙ্গে লেগে আছে। কারও শরীরের ওপর ছাদ পড়ে থেঁতলে গেছে। রক্তে ভেসে গেছে মেঝ। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে বাঁচার আকুতি, কান্না আর মৃত্যু গোঙানি শুনে চোখের পানি ফেলেছেন উপস্থিত উদ্ধারকারীরাও।
ঘটনার পরপরই উদ্ধার কাজে ছুটে যান স্থানীয় লোকজন। একে একে বের করে আনেন নিহতদের নিথর দেহ। আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় বের করে নেয়া হয় বিভিন্ন হাসপাতালে। উদ্ধারকাজে একে একে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবীরাও অংশ নেন উদ্ধারকাজে। এছাড়াও সারা দেশ থেকে মানুষ ছুটে আসে উদ্ধারকাজে। সেখানে অনেকেই অনেককে চিনে না। কিন্তু প্রাণ রক্ষায় সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করেছে। ছাত্রছাত্রীরাও ছুটে গেছে সেখানে। এছাড়া, বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন এবং সাধারণ মানুষও ছুটে যায় সেখানে। তবে পুরো ভবনটি ধসে পড়ায় এবং বিপজ্জনক অবস্থায় থাকায় উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হয়। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় চাপা পড়া জীবিতদের উদ্ধার করতে অনেক সময় লেগে যায়। ধসে পড়ার সময় ৯ তলা ভবনের তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত ও আট তলায় অবস্থিত ৬টি ফ্লোরে শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। এছাড়া, প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় মার্কেট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ছিল। সব মিলিয়ে ওই ভবনে ৪/৫ হাজার লোক ছিলেন। এদের বেশির ভাগই ভবন থেকে বের হতে পারেননি। ভবনধসের এ ঘটনা বিশ্বে বড় ধরনের একটি শিল্পবিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যা বাংলাদেশের তৈরী পোশাক খাতকে বিশ্ববাজারে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের দাফন খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা আর আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার করে নগদ টাকা দেয়া হয়। সরকারি হিসাবে ৮৩৬টি মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ২৯১টি মৃতদেহ অ-শনাক্ত হিসেবে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। শনাক্তের জন্য এই দেহগুলো থেকে ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কাছে ৩১৬ জন নিখোঁজের তথ্য রয়েছে।
রানা প্লাজার ওপরের ছয়টি তলায় পাঁচটি পোশাক কারখানা, দোতলা ও নিচতলার এক অংশে বিপণিবিতান, আরেক অংশে ব্র্যাক ব্যাংকের সাভার শাখার কার্যক্রম চলছিল। ২৩শে এপ্রিল সকালেই রানা প্লাজার তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বিম, দেয়াল ও স্তম্ভে ফাটল দেখা দেয়। ধসের আতঙ্কে পোশাক কারখানাগুলোর শ্রমিকেরা হুড়োহুড়ি করে বের হয়ে আসেন। ওই দিন ছুটি দিয়ে দেয়া হয়। খবর শুনে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীরা। ওই দিন বিকালেই ইউএনও গণমাধ্যমকে বলেন, সে রকম কিছু হয়নি। পরদিন (২৪শে এপ্রিল) সকালে পোশাক কারখানাগুলোর মালিকেরা মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে ফোন করিয়ে ডেকে আনেন শ্রমিকদের। শ্রমিকেরা যেতে না চাইলে জোর করে তাদের কারখানায় ঢোকানো হয়। সকাল আটটার দিকে কাজ শুরু করার কিছু সময় পরই প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে বিকট শব্দে ধসে পড়ে নয়তলা ভবনটি। মাথার ওপর পড়া ইট-কংক্রিটে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে সেখানেই প্রাণ হারান সহস্রাধিক মানুষ। অনেকের গলিত লাশ বের করা হয় ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে। ধ্বংসস্তূপের ভেতরে সুড়ঙ্গ কেটে জীবন বাজি রেখে ঢুকে পড়েন উদ্ধারকারীরা। হাঁকডাক দিয়ে আহতদের অবস্থান শনাক্ত করে একের পর এক বের করে আনছিলেন জীবিত মানুষদের। অক্সিজেনের অভাব, হাঁসফাঁস করা গরমে কাজ করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অনেকেই। তবু থেমে থাকেনি উদ্ধারকাজ। ভবন ধসের পঞ্চম দিনে জীবিত উদ্ধার করা হয় কিউ এম এ সাদিক নামের পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তাকে। তখন তৃতীয় তলায় শাহীনা নামের এক শ্রমিককে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। কিন্তু রাত ১০টায় সুড়ঙ্গে আগুন ধরে যাওয়ায় শাহীনাকে আর জীবিত উদ্ধার করা যায়নি। সেই আগুনে দগ্ধ হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান উদ্ধারকর্মী এজাজউদ্দীন কায়কোবাদ।
মৃত্যুঞ্জয়ী রেশমা: সাভারের ভয়াবহ রানা প্লাজা ধসের ঘটনার ১৭ দিন (৩৯১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট পর) পর উদ্ধার হয়েছে গার্মেন্ট কর্মী রেশমা। অলৌকিক! অবিশ্বাস্য ঘটনা। ক্ষণিকের জন্য হাজারো লাশের শোক ভুলিয়ে দিয়েছেন তিনি। সবার চোখে আনন্দাশ্রু ঝরেছে। উদ্ধার-মুহূর্ত ছিল সেখানে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে হাত তুলে মোনাজাত করেন। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে যান নামাজে। এমনই অবস্থায় যখন তাকে সুড়ঙ্গ কেটে বাইরে বের করে আনা হয় তখন আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে এলাকা। মিরাকল এক ঘটনা। কিভাবে এ ১৭ দিন রানা প্লাজার কংক্রিটের স্তূপে চাপা পড়েছিলেন তিনি। ধ্বংসস্তূপের ভিতর জীবিত মানুষ পাওয়া যখন কোন আশাই ছিল না, তখনই ঘটে গেল এই অভাবনীয় ঘটনা। জীবিত অবস্থায় বের করা হয় পোশাক শ্রমিক রেশমাকে। গত ৩রা নভেম্বর রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজের ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরির পক্ষ থেকে ১৫৭ জনের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১১৬ জন নারী ও ৪১ জন পুরুষ। ফলাফল হস্তান্তর করা হয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়ে। অন্যদিকে পরিবারের সদস্যরা ডিএনএ’র ব্যাপারে কোন তথ্য না পাওয়ায় ১৬৫ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি।
সাভারে রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে এখনো হাড়গোড়ের সন্ধান মিলছে। গত ২৭শে ডিসেম্বর পথশিশুরা রড ও বিভিন্ন পরিত্যক্ত মালামাল সংগ্রহ করতে গিয়ে এসব কুড়িয়ে পায়। এ নিয়ে গত ১৫ দিনে ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি কঙ্কাল, দুটি মাথার খুলি ও হাড়গোড় পাওয়া গেছে। ধ্বংসস্তূপে বার বার কঙ্কাল, মাথার খুলি ও হাড়গোড় পাওয়ার কারণে স্থানীয় জনসাধারণসহ নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনেরা ধ্বংসস্তূপের ভেতরে তল্লাশির ব্যবস্থা করার দাবিও জানিয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া হাড়গোড় উদ্ধার করে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছেন। এর আগে ১৩ ও ২২শে ডিসেম্বর ওই ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি কঙ্কাল ও মাথার খুলি পাওয়া গেছে।
ভবন ধসের ঘটনায় সারা বাংলাদেশের মানুষ একত্রিত হয়ে কাজ করেছে। শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া সহ সাধারণ মানুষও এগিয়ে এসেছিল আহতদের বাঁচাতে। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের একান্ত চেষ্টায় চলেছিল উদ্ধার কাজ। কেউ জানে না কি কার পরিচয়। তখন একটি পরিচয় ছিল সবার। সকলেই মানুষ। এই ভাবনা থেকেই এগিয়ে গিয়েছিলেন সবাই। তবে এই ভবন ধসের ঘটনা নিয়ে আলোচনা- সমালোচনা ছিলো মুখরিত। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এই ঘটনায় বিরোধী দলকে দায়ী করে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দেন। তিনি বলেন- বিরোধী দলের হরতালে জামায়াত-শিবির ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা আন্দোলনের সময় বিল্ডিং- এর পিলার ধরে নাড়াচাড়া করায় সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এ বক্তব্যে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ভবনধসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে। ধসে পড়া ভবনটির মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আবদুল খালেক ও পাঁচটি কারখানার মালিকসহ ১১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর মধ্যে আবদুল খালেক জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। এখনও তদন্ত কাজ চলছে।
No comments