যেনতেন নির্বাচন যদি হয়েই যায় by জিয়াউদ্দিন তারেক আলী
এলিয়টের
বিখ্যাত কয়েকটি লাইন বিষ্ণু দে অনুবাদ করেছিলেন এভাবে_ 'এই চালেই তো
দুনিয়া শেষ, হুঙ্কারে নয়, কাতরানিতেই।' রোববার বিরোধী দলের নেত্রীকে শুধু
হুঙ্কার দিতেই দেখলাম না, অশালীন ভাষা প্রয়োগে তিনি যে পারঙ্গম, সেটাও
জানতে পারলাম। আমরা আশা করব, দেশের বড় দুই দলের পরিণতি যেন কাতরানিতেই শেষ
না হয়। কারণ গত ৭০ বছরের অভিজ্ঞতা আমাদের বলে যে, রাজনীতির অনুশীলন ছাড়া
দেশ পরিচালন দেশের জন্য ভালো হয় না। আমাদের দুই দল যদি সেটা বুঝতে না চায়,
তবে জনগণেরই উচিত হবে এমন ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে রাজনীতিতে সুস্থতা ও
শালীনতা কেবল ভোটের পণ্য না হয়ে তার অনুশীলন যেন গোটা ৫ বছর ধরেই চলে। দেশে
যেনতেন প্রকারের একটা নির্বাচন মনে হয় অনুষ্ঠিত হয়ে যাবেই। সিপিডিসহ
কয়েকটি সংগঠনের একটি নাগরিক উদ্যোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রীর নীরবতা দেখে
মনে হয়েছে, তিনিও এবার রাজনৈতিক স্বস্তির দিকে কিছুটা মনোনিবেশ করবেন।
১৯৪৭ সাল থেকেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব বাঙালি যে আপন করে ডাকার মতো একটি
মাতৃভূমি দেখতে চেয়েছিল। তার বহিঃপ্রকাশও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং
জঙ্গিবাদ দমনের প্রয়াস থেকে দেখা যাচ্ছে। ভাগ্য আমাদের সুপ্রসন্ন যে,
বাঙালির শাশ্বত চরিত্রকে বদলে দেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ
অর্থশক্তির জোর খাটিয়ে যে চেষ্টা করে যাচ্ছে, তা বড় ধরনের একটা হোঁচট খাবে
আগামী নির্বাচনের পরে। আওয়ামী লীগের কাছে আমাদের প্রত্যাশা যে, বৈশ্বিক
কিছু রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক বাস্তবতা এবং দেশীয় রাজনীতির মধ্যে কিছু কৌশলী
মিশ্রণ_ এসব বাস্তবতার আলোকে তারা ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার রূপ দেবে। আর
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কাছে আমাদের প্রত্যাশা যে, তারা বাংলাদেশের মানুষের
প্রতি যথাযোগ্য সম্মান দেখিয়ে তাদের বাংলাদেশ-পলিসি নির্ধারণ পাকিস্তানি
কিছু পরামর্শকের হাতে ছেড়ে না দিয়ে বাঙালির সহনশীল ইসলামকে তারা মর্যাদা
দেবেন এবং তার পরমতসহিষুষ্ণতাকে তারা শ্রদ্ধার চোখে দেখবেন। বিশ্বসভায়
অবদান রাখতে হলে ওয়াহাবী মার্কা ইসলাম যে তাদেরও বর্জন করতে হবে, সে
সত্যটিও তারা অচিরেই অনুধাবন করবেন বলে আমরা মনে করি। আর এমনটিও যদি আমরা
আশা করি যে, বাঙালির বাউলিয়া-সহজিয়া ইসলামের বোধ তাদের চিন্তাকেও কিছুটা
স্পর্শ করবে, তাতে দোষ কোথায়!
তবে এর বাইরে অতি শিগগিরই আমাদের আরও কিছু বিবেচনা গুরুত্ব দিয়ে এখনই ফয়সালা করে নেওয়া উচিত হবে। সেটি হচ্ছে, বাংলাদেশের আঞ্চলিক ও ভৌগোলিক কিছু প্রেক্ষাপট সংক্রান্ত। প্রথমেই হচ্ছে ভৌগোলিক অবস্থান। ভবিষ্যতের দুই বৃহত্তম জনগোষ্ঠী চীন ও ভারতের মধ্যকার স্থানে বাংলাদেশের অবস্থান। এই দুই দেশের বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমাদের নিজেদের কিছু অর্থ উপার্জন হোক সেটা আমরা চাই এবং সেজন্য ভারত, মিয়ানমার ও চীনের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তিটি আর সময়ক্ষেপণ না করে সম্মাদন করে ফেলতে হবে। ভারতীয় জুজুর ভয়ে এবার আর দেরি করাটা উচিত হবে না। দেশে এমন একটি যরমযধিু ংুংঃবস স্থাপন করতে হবে, যা হবে গরু, ছাগল, দোকানপাটবিবর্জিত যরমযধিু_যেটা টেকনাফ দিয়ে ঢুকে বেনাপোল হয়ে বেরিয়ে যেতে কোনো যানবাহনের যেন ৬ ঘণ্টার বেশি না লাগে। এ ছাড়া আমরা ভবিষ্যৎ পৃথিবীর ব্যস্ততম সমূদ্রপথে অবস্থিত একটি দেশ। সেই হিসেবে গভীর সমুদ্রবন্দর, আরও দু'তিনটি সমুদ্রবন্দর আমাদের স্থাপন করা একটি জরুরি এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান এসবই অতি সত্বর আমাদের করা উচিত। নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণও সে সঙ্গে আমাদের করতে হবে। ব্যাপারটি এত জরুরি যে, আগামী ৫ বছরে ডিজাইন শেষ করে কাজ শুরু করে দিতে হবে। এখানে বিদেশি আধিপত্যের কথা স্বভাবতই উঠে আসে। বর্তমান বিশ্বে এক শক্তিমান দেশ এসে আর একটি দেশের বন্দর দখল করে নিচ্ছে, এমন চিন্তা নিতান্তই হাস্যকর।
আমাদের আরও মনে রাখতে হবে যে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যে সাতটি রাজ্য আছে তাদের সঙ্গে আমাদের হার্দিক যোগাযোগ অনেকটাই বাড়াতে হবে_ তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা সম্পর্কে উন্নাসিক একটি মনোভাব না নিয়ে (যেটা আমরা চাকমা, মারমাদের বেলায় করে থাকি) তাদের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করতে হবে। এই সাতটি রাজ্যের উন্নয়নের অংশীদার আমরা হতে পারলে আমাদের শিল্প-কারখানাও যথেষ্ট বৃদ্ধি করা সম্ভব। তাছাড়া এদের সঙ্গে আমাদের উন্নত সম্পর্কের কারণে চীন ও ভারতের সঙ্গেও আমাদের দরকষাকষির হাত শক্ত হবে।
আওয়ামী লীগের আর একটি আশু করণীয় হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দেওয়া। ৫০ বছরের একটি প্রেক্ষিতকে বিবেচনায় রেখে এই কাজটি এখনই শুরু করতে হবে। ইউনিভার্সিটি শিক্ষার চেয়েও জোরেশোরে বৃত্তিমূলক এবং প্রাযুক্তিক শিক্ষা নতুন ছাঁদে গড়তে হবে। মৃতপ্রায় বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে প্রতিটি ইউনিয়নে। এ ব্যাপারে এনজিওদের একটি ভূমিকা রাখতে দিলে তারা অতি সত্বর এই কাজটি শুরু করে দিতে পারবে। এ ছাড়া প্রাথমিক আর মাধ্যমিক পাঠক্রমকে আরও বেশি বিজ্ঞাননির্ভর এবং বিশ্লেষণমনস্ক করে তুলে ঢ়ৎড়নষবস ংড়ষারহম-এর দিকে ছাত্রদের উন্নত বিশ্বের জনগণের সঙ্গে সঙ্গে চীনের মতো দেশও বয়সের ভারে ক্রমেই ন্যুব্জ হয়ে পড়ছে। কায়িক পরিশ্রম দেওয়ার মতো সুস্থ মানুষের একটি বিশাল উৎসস্থল হতে পারে বাংলাদেশ। এমনটি চিন্তা করা প্রলাপপ্রসূত নয় যে, আগামী ২৫ বছরে দেশের আরও ৫ কোটি মানুষ বিদেশে কাজ করবে। তবে দেশের যুব সমাজের চিন্তাধারণা, ধ্যান-ধারণারও আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। অন্য একটি জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, দর্শন, ধর্ম ইত্যাদির প্রতি তাদের শ্রদ্ধাশীল করে তুলতে হবে। অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে স্কুলের পাঠক্রম প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পরিবর্তন করতে হবে। ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কেও প্রচলিত ধারণার আমূল পরিবর্তন করতে হবে। দেশের মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসঙ্গ এখানে স্বভাবতই উঠে আসে। সরকার গত পাঁচ বছরে মাদ্রাসা শিক্ষা স্পর্শ করার সাহস পায়নি। এবার সে বুলেটে কামড় দিতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষাক্রমকে বিজ্ঞাননির্ভর এবং সমাজসচেতন করে তুলতে হবে। কওমি মাদ্রাসাগুলোকে সরকারের খবরদারির আওতায় আনতে হবে অতি দ্রুততার সঙ্গে। আওয়ামী লীগের তৃতীয় উদ্যোগ নিতে হবে স্থানীয় সরকার প্রশাসনকে। সেখানে সত্যিকার অর্থে স্থানীয় নির্বাচিত সরকারকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এটা করার ফলে রাজনৈতিক দলগুলোরই লাভ হবে এবং দলটি এমপি সাহেবের মর্জি, দয়াদাক্ষিণ্যনির্ভর না হয়ে প্রকৃত অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক রূপ ধারণ করবে। এর ফলে আগামী নির্বাচনে প্রকৃত অর্থেই জনগণের কিছু প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে আসবেন। সমাজের কিছু ভালো মানুষ সাংসদ হিসেবে দেশসেবা করতে পারবেন।
অহেতুক দোলাচলে না ভুগে সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিকেই সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী পাস করিয়ে নেওয়া উচিত হবে। কোনো রকম ব্যাখ্যাশ্রিত না রেখে নির্ভেজাল অসাম্প্রদায়িকতাকে আবার প্রতিস্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া সংবিধানের একটি অপরিবর্তনীয় ধারা হিসেবে জনগণের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের বিস্তারে সরকার সচেষ্ট থাকবে_ এ রকম একটি ধারা উপস্থাপন করতে হবে সংবিধানে। এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টিও বিবেচনায় আনতে হবে। সরকারের এটাও স্বীকার করে নিতে হবে যে, গত ৫ বছরে তারা অনেক ভালো কাজের মধ্যে ভুলভ্রান্তিও যথেষ্ট করেছে। এই স্বীকারোক্তি এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আওয়ামী লীগ আবার ১৯৭০ সালের মহিমায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে জনগণের দল হিসেবে।
ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
তবে এর বাইরে অতি শিগগিরই আমাদের আরও কিছু বিবেচনা গুরুত্ব দিয়ে এখনই ফয়সালা করে নেওয়া উচিত হবে। সেটি হচ্ছে, বাংলাদেশের আঞ্চলিক ও ভৌগোলিক কিছু প্রেক্ষাপট সংক্রান্ত। প্রথমেই হচ্ছে ভৌগোলিক অবস্থান। ভবিষ্যতের দুই বৃহত্তম জনগোষ্ঠী চীন ও ভারতের মধ্যকার স্থানে বাংলাদেশের অবস্থান। এই দুই দেশের বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমাদের নিজেদের কিছু অর্থ উপার্জন হোক সেটা আমরা চাই এবং সেজন্য ভারত, মিয়ানমার ও চীনের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তিটি আর সময়ক্ষেপণ না করে সম্মাদন করে ফেলতে হবে। ভারতীয় জুজুর ভয়ে এবার আর দেরি করাটা উচিত হবে না। দেশে এমন একটি যরমযধিু ংুংঃবস স্থাপন করতে হবে, যা হবে গরু, ছাগল, দোকানপাটবিবর্জিত যরমযধিু_যেটা টেকনাফ দিয়ে ঢুকে বেনাপোল হয়ে বেরিয়ে যেতে কোনো যানবাহনের যেন ৬ ঘণ্টার বেশি না লাগে। এ ছাড়া আমরা ভবিষ্যৎ পৃথিবীর ব্যস্ততম সমূদ্রপথে অবস্থিত একটি দেশ। সেই হিসেবে গভীর সমুদ্রবন্দর, আরও দু'তিনটি সমুদ্রবন্দর আমাদের স্থাপন করা একটি জরুরি এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান এসবই অতি সত্বর আমাদের করা উচিত। নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণও সে সঙ্গে আমাদের করতে হবে। ব্যাপারটি এত জরুরি যে, আগামী ৫ বছরে ডিজাইন শেষ করে কাজ শুরু করে দিতে হবে। এখানে বিদেশি আধিপত্যের কথা স্বভাবতই উঠে আসে। বর্তমান বিশ্বে এক শক্তিমান দেশ এসে আর একটি দেশের বন্দর দখল করে নিচ্ছে, এমন চিন্তা নিতান্তই হাস্যকর।
আমাদের আরও মনে রাখতে হবে যে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যে সাতটি রাজ্য আছে তাদের সঙ্গে আমাদের হার্দিক যোগাযোগ অনেকটাই বাড়াতে হবে_ তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা সম্পর্কে উন্নাসিক একটি মনোভাব না নিয়ে (যেটা আমরা চাকমা, মারমাদের বেলায় করে থাকি) তাদের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করতে হবে। এই সাতটি রাজ্যের উন্নয়নের অংশীদার আমরা হতে পারলে আমাদের শিল্প-কারখানাও যথেষ্ট বৃদ্ধি করা সম্ভব। তাছাড়া এদের সঙ্গে আমাদের উন্নত সম্পর্কের কারণে চীন ও ভারতের সঙ্গেও আমাদের দরকষাকষির হাত শক্ত হবে।
আওয়ামী লীগের আর একটি আশু করণীয় হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দেওয়া। ৫০ বছরের একটি প্রেক্ষিতকে বিবেচনায় রেখে এই কাজটি এখনই শুরু করতে হবে। ইউনিভার্সিটি শিক্ষার চেয়েও জোরেশোরে বৃত্তিমূলক এবং প্রাযুক্তিক শিক্ষা নতুন ছাঁদে গড়তে হবে। মৃতপ্রায় বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে প্রতিটি ইউনিয়নে। এ ব্যাপারে এনজিওদের একটি ভূমিকা রাখতে দিলে তারা অতি সত্বর এই কাজটি শুরু করে দিতে পারবে। এ ছাড়া প্রাথমিক আর মাধ্যমিক পাঠক্রমকে আরও বেশি বিজ্ঞাননির্ভর এবং বিশ্লেষণমনস্ক করে তুলে ঢ়ৎড়নষবস ংড়ষারহম-এর দিকে ছাত্রদের উন্নত বিশ্বের জনগণের সঙ্গে সঙ্গে চীনের মতো দেশও বয়সের ভারে ক্রমেই ন্যুব্জ হয়ে পড়ছে। কায়িক পরিশ্রম দেওয়ার মতো সুস্থ মানুষের একটি বিশাল উৎসস্থল হতে পারে বাংলাদেশ। এমনটি চিন্তা করা প্রলাপপ্রসূত নয় যে, আগামী ২৫ বছরে দেশের আরও ৫ কোটি মানুষ বিদেশে কাজ করবে। তবে দেশের যুব সমাজের চিন্তাধারণা, ধ্যান-ধারণারও আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। অন্য একটি জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, দর্শন, ধর্ম ইত্যাদির প্রতি তাদের শ্রদ্ধাশীল করে তুলতে হবে। অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে স্কুলের পাঠক্রম প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পরিবর্তন করতে হবে। ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কেও প্রচলিত ধারণার আমূল পরিবর্তন করতে হবে। দেশের মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসঙ্গ এখানে স্বভাবতই উঠে আসে। সরকার গত পাঁচ বছরে মাদ্রাসা শিক্ষা স্পর্শ করার সাহস পায়নি। এবার সে বুলেটে কামড় দিতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষাক্রমকে বিজ্ঞাননির্ভর এবং সমাজসচেতন করে তুলতে হবে। কওমি মাদ্রাসাগুলোকে সরকারের খবরদারির আওতায় আনতে হবে অতি দ্রুততার সঙ্গে। আওয়ামী লীগের তৃতীয় উদ্যোগ নিতে হবে স্থানীয় সরকার প্রশাসনকে। সেখানে সত্যিকার অর্থে স্থানীয় নির্বাচিত সরকারকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এটা করার ফলে রাজনৈতিক দলগুলোরই লাভ হবে এবং দলটি এমপি সাহেবের মর্জি, দয়াদাক্ষিণ্যনির্ভর না হয়ে প্রকৃত অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক রূপ ধারণ করবে। এর ফলে আগামী নির্বাচনে প্রকৃত অর্থেই জনগণের কিছু প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে আসবেন। সমাজের কিছু ভালো মানুষ সাংসদ হিসেবে দেশসেবা করতে পারবেন।
অহেতুক দোলাচলে না ভুগে সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিকেই সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী পাস করিয়ে নেওয়া উচিত হবে। কোনো রকম ব্যাখ্যাশ্রিত না রেখে নির্ভেজাল অসাম্প্রদায়িকতাকে আবার প্রতিস্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া সংবিধানের একটি অপরিবর্তনীয় ধারা হিসেবে জনগণের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের বিস্তারে সরকার সচেষ্ট থাকবে_ এ রকম একটি ধারা উপস্থাপন করতে হবে সংবিধানে। এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টিও বিবেচনায় আনতে হবে। সরকারের এটাও স্বীকার করে নিতে হবে যে, গত ৫ বছরে তারা অনেক ভালো কাজের মধ্যে ভুলভ্রান্তিও যথেষ্ট করেছে। এই স্বীকারোক্তি এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আওয়ামী লীগ আবার ১৯৭০ সালের মহিমায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে জনগণের দল হিসেবে।
ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
No comments