জামায়াত নেতা সুবহানের বিচার শুরু
একাত্তরে হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ,
অগি্নসংযোগসহ আট ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে
আমির আবদুস সোবহানের (সুবহান) বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা
হয়েছে। বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল-১ গতকাল
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের দাখিল করা ৯টি অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করেন।
একই সঙ্গে আগামী ২৮ জানুয়ারি মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্যের জন্য
দিন ধার্য করা হয়েছে। চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পাবনার সাবেক
এমপি সুবহানের বিচার শুরু হলো। তবে চার্জ গঠনের পর আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে
থাকা সুবহান নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ শিমন সাংবাদিকদের জানান, সুবহানের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগি্নসংযোগ ও ষড়যন্ত্রের
অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ জামায়াত নেতা সুবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে ঢাকায় 'অপারেশন সার্চলাইট' শুরু হলে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে নিয়ে সুবহান পাবনায় হত্যা, গণহত্যা, অগি্নসংযোগ ও লুটপাট শুরু করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। পাবনা সদরের সাবেক সংসদ সদস্য সুবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের নামের তালিকা করে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে সরবরাহ করতেন তিনি। তার নেতৃত্বে পাবনা জেলার বিভিন্ন থানায় শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও মুজাহিদ বাহিনী গঠিত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে জামায়াত নেতা গোলাম আযমের সঙ্গে তিনিও পাকিস্তানে চলে যান। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি দেশে ফেরেন এবং পরে সংসদ সদস্য হন।
১৯৩৬ সালে পাবনার সুজানগর থানার তৈলকু ি গ্রামে জন্ম সুবহানের। পাকিস্তান আমলে পাবনা জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ছিলেন তিনি। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর তিনি পাবনা জেলা শান্তি কমিটির সেক্রেটারি এবং পরে ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।
২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর একটি ফৌজদারি মামলায় বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত টোল প্লাজা থেকে সুবহানকে গোয়েন্দা সংস্থা গ্রেফতার করে।
সুবহানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ :১. একাত্তরের ১৭ এপ্রিল সুবহান তার সহযোগী জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও বিহারিদের নিয়ে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া মোয়াজ্জেম হোসেন, মতলব আহম্মেদ, নাজমুল হক খানসহ স্বাধীনতাকামী লোকদের অপহরণ করে হত্যা করেন; ২. একাত্তরের ১৩ এপ্রিল তার নেতৃত্বে ও উপস্থিতিতে পাকিস্তান বাহিনী ও রাজাকাররা ঈশ্বরদী যুক্তিতলা গ্রামে লুটপাটসহ ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে ইসমাইল হোসেন, জয়নুদ্দিন মেম্বার, আহসান আলী, হারেছ আলী ও তাইজুদ্দিনকে হত্যা এবং তিনজনকে গুরুতর আহত করেন; ৩. একাত্তরের ১৬ মে ঈশ্বরদীর অরণখোলা গরুর হাট থেকে দু'জনকে অপহরণ করে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় (ঈশ্বরদী, পাবনা) নিয়ে নির্যাতন; ৪. একাত্তরের ২ মে সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঈশ্বরদীর সাহাপুর গ্রামে অসংখ্য বাড়িঘরের মালপত্র লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং চাঁদ আলী, আক্তার হোসেন, হামেজ উদ্দিন, রজব আলী, সোনা প্রামাণিকসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে; ৫. একাত্তরের ১১ মে সুবহানের নেতৃত্বে ও উপস্থিতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাবনা সদর থানাধীন কুলনিয়া ও দোগাছি গ্রামে সামছুদ্দিন, রাহাতুন নেসা, হরিপদ সাহা, চাঁদ আলীসহ সাতজনকে হত্যা করে এবং কয়েকটি বাড়িঘরে অগি্নসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়; ৬. একাত্তরের ১২ মে সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সুজানগর থানাধীন সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে মদন, চেতনা, রতনা, সমীর কুমার সাহা, বাসু সাহা, বাদল সাহা, ঘুঘড়ি, পুণ্য সাহা, রওশন, মহিউদ্দিন, আলমসহ জ্ঞাত-অজ্ঞাত আটশ' ব্যক্তিকে গণহত্যা ও বিভিন্ন লোকজনের বাড়িঘরের মালপত্র লুটপাট করে বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়; ৭. একাত্তরের ২০ মে সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাবনা সদর থানাধীন ভাড়ারা গ্রামে ১৮ নিরীহ লোককে অপহরণ করে। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রামের একটি স্কুলে হত্যা করে। অপর ১৭ জনকে পাবনা সদর নূরপুর বিদ্যুৎকন্দ্রে নিয়ে আটক করে নির্যাতন করে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আটঘরিয়া থানাধীন দেবোত্তর বাজারের পাশে বাঁশবাগানে গুলি করে হত্যা করে। অন্যদেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি; ৮. একাত্তরের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের যে কোনো দিন সুবহান স্থানীয় রাজাকারদের নিয়ে আতাইকুলা থানাধীন (সাবেক পাবনা সদর থানা) দুবলিয়া বাজার থেকে স্বাধীনতাকামী দু'জনকে অপহরণ করে কুচিয়ামাড়া গ্রামে একটি মন্দিরের ভেতরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন; ৯. একাত্তরের ৩০ অক্টোবর সুবহান রাজাকারদের নিয়ে ঈশ্বরদী থানাধীন বেতবাড়িয়া গ্রামে কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট করার পর বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন এবং চারজনকে অপহরণের পর হত্যা করেন।
প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ শিমন সাংবাদিকদের জানান, সুবহানের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগি্নসংযোগ ও ষড়যন্ত্রের
অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ জামায়াত নেতা সুবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে ঢাকায় 'অপারেশন সার্চলাইট' শুরু হলে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে নিয়ে সুবহান পাবনায় হত্যা, গণহত্যা, অগি্নসংযোগ ও লুটপাট শুরু করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। পাবনা সদরের সাবেক সংসদ সদস্য সুবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের নামের তালিকা করে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে সরবরাহ করতেন তিনি। তার নেতৃত্বে পাবনা জেলার বিভিন্ন থানায় শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও মুজাহিদ বাহিনী গঠিত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে জামায়াত নেতা গোলাম আযমের সঙ্গে তিনিও পাকিস্তানে চলে যান। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি দেশে ফেরেন এবং পরে সংসদ সদস্য হন।
১৯৩৬ সালে পাবনার সুজানগর থানার তৈলকু ি গ্রামে জন্ম সুবহানের। পাকিস্তান আমলে পাবনা জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ছিলেন তিনি। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর তিনি পাবনা জেলা শান্তি কমিটির সেক্রেটারি এবং পরে ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।
২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর একটি ফৌজদারি মামলায় বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত টোল প্লাজা থেকে সুবহানকে গোয়েন্দা সংস্থা গ্রেফতার করে।
সুবহানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ :১. একাত্তরের ১৭ এপ্রিল সুবহান তার সহযোগী জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও বিহারিদের নিয়ে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া মোয়াজ্জেম হোসেন, মতলব আহম্মেদ, নাজমুল হক খানসহ স্বাধীনতাকামী লোকদের অপহরণ করে হত্যা করেন; ২. একাত্তরের ১৩ এপ্রিল তার নেতৃত্বে ও উপস্থিতিতে পাকিস্তান বাহিনী ও রাজাকাররা ঈশ্বরদী যুক্তিতলা গ্রামে লুটপাটসহ ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে ইসমাইল হোসেন, জয়নুদ্দিন মেম্বার, আহসান আলী, হারেছ আলী ও তাইজুদ্দিনকে হত্যা এবং তিনজনকে গুরুতর আহত করেন; ৩. একাত্তরের ১৬ মে ঈশ্বরদীর অরণখোলা গরুর হাট থেকে দু'জনকে অপহরণ করে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় (ঈশ্বরদী, পাবনা) নিয়ে নির্যাতন; ৪. একাত্তরের ২ মে সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঈশ্বরদীর সাহাপুর গ্রামে অসংখ্য বাড়িঘরের মালপত্র লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং চাঁদ আলী, আক্তার হোসেন, হামেজ উদ্দিন, রজব আলী, সোনা প্রামাণিকসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে; ৫. একাত্তরের ১১ মে সুবহানের নেতৃত্বে ও উপস্থিতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাবনা সদর থানাধীন কুলনিয়া ও দোগাছি গ্রামে সামছুদ্দিন, রাহাতুন নেসা, হরিপদ সাহা, চাঁদ আলীসহ সাতজনকে হত্যা করে এবং কয়েকটি বাড়িঘরে অগি্নসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়; ৬. একাত্তরের ১২ মে সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সুজানগর থানাধীন সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে মদন, চেতনা, রতনা, সমীর কুমার সাহা, বাসু সাহা, বাদল সাহা, ঘুঘড়ি, পুণ্য সাহা, রওশন, মহিউদ্দিন, আলমসহ জ্ঞাত-অজ্ঞাত আটশ' ব্যক্তিকে গণহত্যা ও বিভিন্ন লোকজনের বাড়িঘরের মালপত্র লুটপাট করে বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়; ৭. একাত্তরের ২০ মে সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাবনা সদর থানাধীন ভাড়ারা গ্রামে ১৮ নিরীহ লোককে অপহরণ করে। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রামের একটি স্কুলে হত্যা করে। অপর ১৭ জনকে পাবনা সদর নূরপুর বিদ্যুৎকন্দ্রে নিয়ে আটক করে নির্যাতন করে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আটঘরিয়া থানাধীন দেবোত্তর বাজারের পাশে বাঁশবাগানে গুলি করে হত্যা করে। অন্যদেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি; ৮. একাত্তরের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের যে কোনো দিন সুবহান স্থানীয় রাজাকারদের নিয়ে আতাইকুলা থানাধীন (সাবেক পাবনা সদর থানা) দুবলিয়া বাজার থেকে স্বাধীনতাকামী দু'জনকে অপহরণ করে কুচিয়ামাড়া গ্রামে একটি মন্দিরের ভেতরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন; ৯. একাত্তরের ৩০ অক্টোবর সুবহান রাজাকারদের নিয়ে ঈশ্বরদী থানাধীন বেতবাড়িয়া গ্রামে কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট করার পর বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন এবং চারজনকে অপহরণের পর হত্যা করেন।
No comments