সরকারি হাসপাতালে ৫৮৫টি যন্ত্র বাক্সবন্দী by শিশির মোড়ল
দেশের বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজ, জেলা ও
সদর হাসপাতাল এবং উপজেলা হাসপাতালে ৫৮৫টি যন্ত্র পড়ে আছে। বাক্সবন্দী এসব
যন্ত্র বিভিন্ন সরকারের আমলে হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
অনেক যন্ত্র মোড়কের ভেতরে থেকেই নষ্ট হয়ে গেছে।সম্প্রতি স্বাস্থ্য
মন্ত্রণালয়ের অধীন কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস
ডিপো-সিএমএসডি) একটি জরিপ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, এসব
যন্ত্র স্থাপন বা চালুও করা হয়নি। এগুলো প্রতিষ্ঠানের বারান্দায়, গুদামে
বা কোনো কক্ষের কোনায় পড়ে রয়েছে। অধিকাংশের মোড়কই খোলা হয়নি। ধুলা
জমেছে মোড়কের ওপর। যন্ত্রগুলো সরবরাহের তারিখ অনুযায়ী, এগুলোর ৬৫ শতাংশই
বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এ
বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঠানো এ যন্ত্রের সংখ্যা ৩৭৯টি।একাধিক
হাসপাতালের পরিচালক ও সিভিল সার্জন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা চাহিদাপত্র না
দিলেও সিএমএসডি যন্ত্র পাঠায়। নেত্রকোনার সিভিল সার্জন সাহিদ উদ্দীন আহমেদ
বলেন, জেলা সদর হাসপাতালে ৬০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর পাঠানো হয়েছে
কয়েক বছর আগে। এখানে বড় জেনারেটর বসানোর জায়গা নেই। জেনারেটর চালানোর
তেল কেনারও বরাদ্দ সরকার দেয়নি। আজও সেটা চালু করা যায়নি। বারবার
সিএমএসডিকে চিঠি লিখেও লাভ হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সিএমএসডি,
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের একটি চক্র এ
অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার সঙ্গে জড়িত। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে অতীতেও
অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ও কেনা
হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও চিকিৎসাশিক্ষা) মো. আইয়ুবুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। সভায় অচল যন্ত্রপাতি ফেলে দেওয়া (ডিসপোজ) এবং সচল যন্ত্রপাতি যেসব হাসপাতালে দরকার, সেখানে পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এম হাফিজউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, প্রয়োজনের ভিত্তিতেই যন্ত্রপাতি কেনা উচিত। অনেক হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রের অভাবে রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, এত যন্ত্রপাতি পড়ে থাকার অর্থ বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থের অপচয়।
বাক্সবন্দী যন্ত্র: সিএমএসডি ২০০৩ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ২৪টি জেনারেটর (৪০ থেকে ৬০ কেভিএ শক্তিসম্পন্ন) জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে পাঠায়। এর একটিও চালু নেই। এর মধ্যে ম্যাকস ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করেছিল ২১টি। ১৯টি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। বাকি দুটি এ সরকারের আমলে।
বাক্সবন্দীর তালিকায় অ্যানেসথেসিয়া যন্ত্রের সংখ্যাই বেশি। অস্ত্রোপচারের আগে রোগীকে এ যন্ত্রের সাহায্যে অচেতন করা হয়। ২০০৩ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সিএমএসডি ৫২টি হাসপাতালে ৫৫টি এ যন্ত্র পাঠিয়েছিল। এর মধ্যে ২০১০ সালে তিনটি যন্ত্র পাঠিয়েছিল কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে। জেলার সিভিল সার্জন হোসাইন সারোয়ার খান (সম্প্রতি বদলি হয়েছেন) এসব যন্ত্র হাসপাতালের কোথায় কী অবস্থায় আছে, তা প্রথম আলোকে জানাতে পারেননি।
যন্ত্রের তালিকায় আরও রয়েছে হাইড্রোলিক ওটি টেবিল (৫৪টি), ডেলিভারি টেবিল (১৮টি), ইনকিউবেটর (৩৬টি), হট এয়ার বাথ (৪৫টি), অটোক্লেভ যন্ত্র (৫৪টি), অস্ত্রোপচার বাতি, জরুরি বাতি (৭১টি), সার্জিক্যাল ডায়াথার্মি যন্ত্র (১০টি), এক্স-রে যন্ত্র (২২টি), শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র (২৯টি), ব্লাড ব্যাংক রেফ্রিজারেটর ও ক্রাইয়ো ফ্রিজার (১২টি), বেবি ইনকিউবেটর (১৬টি), ফটোথেরাপি যন্ত্র (২২টি), ডেন্টাল চেয়ার ইউনিট (১৪টি) এবং অন্যান্য যন্ত্র (১০৩টি)।
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান: সিএমএসডির প্রতিবেদনে দেখা যায়, ম্যাকস ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, আইএফএ সিন্ডিকেট, প্রোমিস্কো লিমিটেড, টেক স্কোয়ার্ড, এমা এন্টারপ্রাইজ, এসএস সায়েন্টিফিক, ওয়াইডস্প্রেড সলুশন, সিটি ইলেকট্রোমেডিকস, এম/এস পালু, আল-মদিনা ফার্মা, ডায়ামেড, প্যানটেক, বিপণন লিমিটেড, স্টারলিং মালটি টেকনোলজিস, শাহীন এন্টারপ্রাইজ, ট্রেড ভিশন, ইউরেশিয়া এন্টারপ্রাইজ, ট্রান্সমেড লিমিটেড, সিমেন্স, জিইসি, ট্রেড হাউস, ব্রাদার করপোরেশন, ডেলোনিক্স, বাবেল করপোরেশন, তাজ করপোরেশন, ট্রেড লিংকার্স, অ্যাকসেস বায়োটেক লিমিটেড, আল ফাতাহ, ইউনিক বিজনেস সিস্টেম, স্ট্রিম, সানি ট্রেডিং বিভিন্ন সময়ে এসব যন্ত্র সরবরাহ করেছে।
২০১১ সালে আইএফএ সিন্ডিকেটের কাছ কেনা ছয়টি ওটি টেবিল পাঠানো হয় নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এইচ এম মোসলেহ্ উদ্দিন জানান, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান টেবিল দিয়ে চলে গেছে। টেবিল ব্যবহার হাতে-কলমে শেখানোর শর্ত ছিল। কিন্তু তারা আর আসেনি। সিএমএসডিকে বারবার লেখা হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি।
ঘটনা পুরোনো: কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ১৯৮৭ সালের ১ মার্চ সিএমএসডি পানি বিশুদ্ধ করার জন্য একটি ডিস্ট্রিল ওয়াটার প্ল্যান্ট রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। ২৬ বছরেও যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়নি। যন্ত্রটি কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেনা হয়েছিল, তা আর উদ্ধার করতে পারেনি সিএমএসডি। এদিকে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ডিস্ট্রিল ওয়াটার প্ল্যান্ট সরবরাহ করা হয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে। এই যন্ত্রটিও এখনো চালু হয়নি।
সুপারিশ উপেক্ষিত: জরিপ এর আগেও হয়েছে, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় যন্ত্র কেনা বন্ধ হয়নি। ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তায় নেদারল্যান্ডসের সিমিড ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট সার্ভে’ নামে একটি জরিপ করে। তাতে দেখা যায়, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা কর্মসূচির আওতায় কেনা চিকিৎসা যন্ত্রপাতির ৫০ শতাংশ ব্যবহার হয়। ১৬ শতাংশ যন্ত্রের মোড়কই খোলা হয়নি। ১৭ শতাংশ নষ্ট। বাকি ১৭ শতাংশ ব্যবহার উপযোগী হলেও ব্যবহার করা হয় না।
ওই জরিপ প্রতিবেদনের সুপারিশে যন্ত্রপাতির মূল্যায়ন, পরিকল্পনা, ব্যবহার, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে নীতিমালা তৈরি এবং দরপত্র প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে যন্ত্রপাতি ক্রয়, সরবরাহ এবং চূড়ান্তভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত একটি গতিবিধি পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি (ট্র্যাকিং সিস্টেম) চালু করার কথা বলা হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ব্যবস্থাপনা দল বা ইউনিট গঠন করারও সুপারিশ করা হয়। এ পর্যন্ত সুপারিশ বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নেয়নি।
এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, এত যন্ত্রপাতি কেন বাক্সবন্দী পড়ে আছে, তার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হওয়া উচিত। সরকারি অর্থ অপচয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও চিকিৎসাশিক্ষা) মো. আইয়ুবুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। সভায় অচল যন্ত্রপাতি ফেলে দেওয়া (ডিসপোজ) এবং সচল যন্ত্রপাতি যেসব হাসপাতালে দরকার, সেখানে পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এম হাফিজউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, প্রয়োজনের ভিত্তিতেই যন্ত্রপাতি কেনা উচিত। অনেক হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রের অভাবে রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, এত যন্ত্রপাতি পড়ে থাকার অর্থ বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থের অপচয়।
বাক্সবন্দী যন্ত্র: সিএমএসডি ২০০৩ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ২৪টি জেনারেটর (৪০ থেকে ৬০ কেভিএ শক্তিসম্পন্ন) জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে পাঠায়। এর একটিও চালু নেই। এর মধ্যে ম্যাকস ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করেছিল ২১টি। ১৯টি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। বাকি দুটি এ সরকারের আমলে।
বাক্সবন্দীর তালিকায় অ্যানেসথেসিয়া যন্ত্রের সংখ্যাই বেশি। অস্ত্রোপচারের আগে রোগীকে এ যন্ত্রের সাহায্যে অচেতন করা হয়। ২০০৩ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সিএমএসডি ৫২টি হাসপাতালে ৫৫টি এ যন্ত্র পাঠিয়েছিল। এর মধ্যে ২০১০ সালে তিনটি যন্ত্র পাঠিয়েছিল কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে। জেলার সিভিল সার্জন হোসাইন সারোয়ার খান (সম্প্রতি বদলি হয়েছেন) এসব যন্ত্র হাসপাতালের কোথায় কী অবস্থায় আছে, তা প্রথম আলোকে জানাতে পারেননি।
যন্ত্রের তালিকায় আরও রয়েছে হাইড্রোলিক ওটি টেবিল (৫৪টি), ডেলিভারি টেবিল (১৮টি), ইনকিউবেটর (৩৬টি), হট এয়ার বাথ (৪৫টি), অটোক্লেভ যন্ত্র (৫৪টি), অস্ত্রোপচার বাতি, জরুরি বাতি (৭১টি), সার্জিক্যাল ডায়াথার্মি যন্ত্র (১০টি), এক্স-রে যন্ত্র (২২টি), শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র (২৯টি), ব্লাড ব্যাংক রেফ্রিজারেটর ও ক্রাইয়ো ফ্রিজার (১২টি), বেবি ইনকিউবেটর (১৬টি), ফটোথেরাপি যন্ত্র (২২টি), ডেন্টাল চেয়ার ইউনিট (১৪টি) এবং অন্যান্য যন্ত্র (১০৩টি)।
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান: সিএমএসডির প্রতিবেদনে দেখা যায়, ম্যাকস ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, আইএফএ সিন্ডিকেট, প্রোমিস্কো লিমিটেড, টেক স্কোয়ার্ড, এমা এন্টারপ্রাইজ, এসএস সায়েন্টিফিক, ওয়াইডস্প্রেড সলুশন, সিটি ইলেকট্রোমেডিকস, এম/এস পালু, আল-মদিনা ফার্মা, ডায়ামেড, প্যানটেক, বিপণন লিমিটেড, স্টারলিং মালটি টেকনোলজিস, শাহীন এন্টারপ্রাইজ, ট্রেড ভিশন, ইউরেশিয়া এন্টারপ্রাইজ, ট্রান্সমেড লিমিটেড, সিমেন্স, জিইসি, ট্রেড হাউস, ব্রাদার করপোরেশন, ডেলোনিক্স, বাবেল করপোরেশন, তাজ করপোরেশন, ট্রেড লিংকার্স, অ্যাকসেস বায়োটেক লিমিটেড, আল ফাতাহ, ইউনিক বিজনেস সিস্টেম, স্ট্রিম, সানি ট্রেডিং বিভিন্ন সময়ে এসব যন্ত্র সরবরাহ করেছে।
২০১১ সালে আইএফএ সিন্ডিকেটের কাছ কেনা ছয়টি ওটি টেবিল পাঠানো হয় নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এইচ এম মোসলেহ্ উদ্দিন জানান, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান টেবিল দিয়ে চলে গেছে। টেবিল ব্যবহার হাতে-কলমে শেখানোর শর্ত ছিল। কিন্তু তারা আর আসেনি। সিএমএসডিকে বারবার লেখা হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি।
ঘটনা পুরোনো: কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ১৯৮৭ সালের ১ মার্চ সিএমএসডি পানি বিশুদ্ধ করার জন্য একটি ডিস্ট্রিল ওয়াটার প্ল্যান্ট রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। ২৬ বছরেও যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়নি। যন্ত্রটি কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেনা হয়েছিল, তা আর উদ্ধার করতে পারেনি সিএমএসডি। এদিকে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ডিস্ট্রিল ওয়াটার প্ল্যান্ট সরবরাহ করা হয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে। এই যন্ত্রটিও এখনো চালু হয়নি।
সুপারিশ উপেক্ষিত: জরিপ এর আগেও হয়েছে, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় যন্ত্র কেনা বন্ধ হয়নি। ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তায় নেদারল্যান্ডসের সিমিড ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট সার্ভে’ নামে একটি জরিপ করে। তাতে দেখা যায়, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা কর্মসূচির আওতায় কেনা চিকিৎসা যন্ত্রপাতির ৫০ শতাংশ ব্যবহার হয়। ১৬ শতাংশ যন্ত্রের মোড়কই খোলা হয়নি। ১৭ শতাংশ নষ্ট। বাকি ১৭ শতাংশ ব্যবহার উপযোগী হলেও ব্যবহার করা হয় না।
ওই জরিপ প্রতিবেদনের সুপারিশে যন্ত্রপাতির মূল্যায়ন, পরিকল্পনা, ব্যবহার, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে নীতিমালা তৈরি এবং দরপত্র প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে যন্ত্রপাতি ক্রয়, সরবরাহ এবং চূড়ান্তভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত একটি গতিবিধি পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি (ট্র্যাকিং সিস্টেম) চালু করার কথা বলা হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ব্যবস্থাপনা দল বা ইউনিট গঠন করারও সুপারিশ করা হয়। এ পর্যন্ত সুপারিশ বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নেয়নি।
এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, এত যন্ত্রপাতি কেন বাক্সবন্দী পড়ে আছে, তার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হওয়া উচিত। সরকারি অর্থ অপচয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে।
No comments