সাহিত্যের রাজপুত্রের প্রয়াণবার্ষিকী আজ
সাহিত্যের রাজপুত্র হুমায়ূন আহমেদের প্রথম
প্রয়াণবার্ষিকী আজ শুক্রবার। বাংলা সাহিত্যের এই জনপ্রিয় লেখক
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছর ১৯ জুলাই বাংলাদেশ
সময় রাত সাড়ে ১১টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রয়াণবার্ষিকী
উপলক্ষে আজ নুহাশপল্লীতে ও ঢাকায় পৃথক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
নুহাশপল্লীর সেই লিচুতলায় আজ তাঁর সমাধি ভরে উঠবে ফুলে ফুলে। ভক্তকুল
অকুণ্ঠ কণ্ঠে উচ্চারণ করবে- 'কে বলে আজ তুমি নাই'।
আকাশচুম্বী জনপ্রিয় এই লেখকের মৃত্যুতে পুরো দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। নিউ ইয়র্ক থেকে ২৩ জুলাই দেশে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁর মরদেহ। বিমানবন্দর থেকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের উদ্দেশে কফিন সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে। সেখানে লাখো মানুষের অশ্রু-পুষ্পতে সিক্ত হয়েছিলেন তিনি। পরের দিন লাশ সমাহিত করা হয় তাঁর গড়ে তোলা নন্দনকানন নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।
বরেণ্য এই লেখকের বিদায়ের প্রথম বর্ষপূর্তিতে রত্নগর্ভা মা লেখকজননী আয়েশা ফয়েজ দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছেন। হুমায়ূন আহমেদের ছোট ভাই আহসান হাবীবের পল্লবীর বাসভবনে এ আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আহসান হাবীব কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আম্মা (আয়েশা ফয়েজ) নুহাশপল্লীতে যাবেন না। তিনি দু-একদিন পরে গিয়ে এক রাত থেকে আসবেন। আমাদের পক্ষ থেকে বাসায় মিলাদ ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।'
আমাদের গাজীপুর ও টঙ্গী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা কর্মসূচি রয়েছে নুহাশপল্লীতে। এখানে দোয়া ও ইফতারের আয়োজন করেছেন তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। এর পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াত, কবর জিয়ারত ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বাদ জুমা আশপাশের কয়েকটি মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্ররা কোরআন তেলাওয়াত করবে। পরে তারা কবর জিয়ারত এবং ইফতার ও দোয়ায় যোগ দেবে।
এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নানা অনুষ্ঠান প্রচারের মধ্য দিয়ে স্মরণ করবে কথার জাদুকরকে।
হুমায়ূন বিদায়ের দিনটি উপলক্ষে কাল শনিবার বিকেলে বেঙ্গল শিল্পালয়ে শোকসভার আয়োজন করেছেন তাঁর প্রকাশকরা। এ ছাড়া তাঁরা আজ শুক্রবার নুহাশপল্লীতে তাঁর কবর জিয়ারত করবেন।
জন্মস্থান নেত্রকোনায়ও নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। এর মধ্যে হুমায়ূন প্রতিষ্ঠিত স্কুল শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ, নিজ গ্রাম কুতুবপুর, মামার বাড়ি মোহনগঞ্জ, কেন্দুয়া উপজেলা সদর ও নেত্রকোনা জেলা শহরে পৃথক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান জানান, শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ ও কুতুবপুর গ্রামবাসীর যৌথ আয়োজনে দিনভর কর্মসূচিতে আছে সকাল ১০টায় হুমায়ূনের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। পরে শোকযাত্রা, শোকসভা, কোরআন খতম, মিলাদ, দোয়া ও ইফতার মাহফিল।
কেন্দুয়া উপজেলা সদরে হুমায়ূন স্মৃতি সংসদের সম্পাদক রহমান জীবন জানান, তাঁরা সকাল ১১টায় করবেন শোকযাত্রা। এ ছাড়াও তাঁদের আয়োজনে রয়েছে শোকসভা।
এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের মামার বাড়ি জেলার মোহনপঞ্জ উপজেলা সদরের চয়নিকা পাঠাগারের সভাপতি তাহমিনা সাত্তার জানান, বিকেল ৪টায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা, মিলাদ ও ইফতারের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
বাংলা সাহিত্যের এ জনপ্রিয় লেখক ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ফয়জুর রহমান আহমেদ ও আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা, আর মা গৃহিণী। খ্যাতিমান কম্পিউটার বিজ্ঞানী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁর ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।
পলিমার কেমিস্ট্রিতে আমেরিকার নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করে হুমায়ূন আহমেদ নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন শাস্ত্রে অধ্যাপনা করেন। এরপর সাহিত্য রচনাকেই তিনি তাঁর প্রধান কাজ হিসেবে গ্রহণ করেন। আমৃত্যু নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন লেখালেখিতে।
ব্যক্তিজীবনে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন আপাতদৃষ্টিতে একজন গম্ভীর মানুষ। তবে কিছুক্ষণ মেশার পর, কথা বলার পরই বোঝা যেত- এ গাম্ভীর্য নিছকই একটা খোলস এবং তা বড়ই ভঙ্গুর। তিনি অসম্ভব একজন ঠাট্টাপ্রিয় মানুষ। ব্যক্তিজীবনে তিনি খুবই রসিক, চমৎকার গল্পও বলতেন। আর এ হাস্যরসের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর রচনায় মধ্যবিত্তের হাসিকান্না, যাপিত জীবন তুলে ধরেছেন। কথাসাহিত্যে প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটলেও তিনি শুরু করেছিলেন কবিতা দিয়ে। এরপর নাটক, ছোটদের জন্য লেখা, সায়েন্স ফিকশন, চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শিল্প-সাহিত্যের যেখানেই তিনি হাত দিয়েছেন, সেখানেই ফলেছে সোনা, মণিমুক্তা।
আকাশচুম্বী জনপ্রিয় এই লেখকের মৃত্যুতে পুরো দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। নিউ ইয়র্ক থেকে ২৩ জুলাই দেশে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁর মরদেহ। বিমানবন্দর থেকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের উদ্দেশে কফিন সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে। সেখানে লাখো মানুষের অশ্রু-পুষ্পতে সিক্ত হয়েছিলেন তিনি। পরের দিন লাশ সমাহিত করা হয় তাঁর গড়ে তোলা নন্দনকানন নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।
বরেণ্য এই লেখকের বিদায়ের প্রথম বর্ষপূর্তিতে রত্নগর্ভা মা লেখকজননী আয়েশা ফয়েজ দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছেন। হুমায়ূন আহমেদের ছোট ভাই আহসান হাবীবের পল্লবীর বাসভবনে এ আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আহসান হাবীব কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আম্মা (আয়েশা ফয়েজ) নুহাশপল্লীতে যাবেন না। তিনি দু-একদিন পরে গিয়ে এক রাত থেকে আসবেন। আমাদের পক্ষ থেকে বাসায় মিলাদ ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।'
আমাদের গাজীপুর ও টঙ্গী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা কর্মসূচি রয়েছে নুহাশপল্লীতে। এখানে দোয়া ও ইফতারের আয়োজন করেছেন তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। এর পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াত, কবর জিয়ারত ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বাদ জুমা আশপাশের কয়েকটি মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্ররা কোরআন তেলাওয়াত করবে। পরে তারা কবর জিয়ারত এবং ইফতার ও দোয়ায় যোগ দেবে।
এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নানা অনুষ্ঠান প্রচারের মধ্য দিয়ে স্মরণ করবে কথার জাদুকরকে।
হুমায়ূন বিদায়ের দিনটি উপলক্ষে কাল শনিবার বিকেলে বেঙ্গল শিল্পালয়ে শোকসভার আয়োজন করেছেন তাঁর প্রকাশকরা। এ ছাড়া তাঁরা আজ শুক্রবার নুহাশপল্লীতে তাঁর কবর জিয়ারত করবেন।
জন্মস্থান নেত্রকোনায়ও নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। এর মধ্যে হুমায়ূন প্রতিষ্ঠিত স্কুল শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ, নিজ গ্রাম কুতুবপুর, মামার বাড়ি মোহনগঞ্জ, কেন্দুয়া উপজেলা সদর ও নেত্রকোনা জেলা শহরে পৃথক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান জানান, শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ ও কুতুবপুর গ্রামবাসীর যৌথ আয়োজনে দিনভর কর্মসূচিতে আছে সকাল ১০টায় হুমায়ূনের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। পরে শোকযাত্রা, শোকসভা, কোরআন খতম, মিলাদ, দোয়া ও ইফতার মাহফিল।
কেন্দুয়া উপজেলা সদরে হুমায়ূন স্মৃতি সংসদের সম্পাদক রহমান জীবন জানান, তাঁরা সকাল ১১টায় করবেন শোকযাত্রা। এ ছাড়াও তাঁদের আয়োজনে রয়েছে শোকসভা।
এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের মামার বাড়ি জেলার মোহনপঞ্জ উপজেলা সদরের চয়নিকা পাঠাগারের সভাপতি তাহমিনা সাত্তার জানান, বিকেল ৪টায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা, মিলাদ ও ইফতারের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
বাংলা সাহিত্যের এ জনপ্রিয় লেখক ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ফয়জুর রহমান আহমেদ ও আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা, আর মা গৃহিণী। খ্যাতিমান কম্পিউটার বিজ্ঞানী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁর ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।
পলিমার কেমিস্ট্রিতে আমেরিকার নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করে হুমায়ূন আহমেদ নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন শাস্ত্রে অধ্যাপনা করেন। এরপর সাহিত্য রচনাকেই তিনি তাঁর প্রধান কাজ হিসেবে গ্রহণ করেন। আমৃত্যু নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন লেখালেখিতে।
ব্যক্তিজীবনে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন আপাতদৃষ্টিতে একজন গম্ভীর মানুষ। তবে কিছুক্ষণ মেশার পর, কথা বলার পরই বোঝা যেত- এ গাম্ভীর্য নিছকই একটা খোলস এবং তা বড়ই ভঙ্গুর। তিনি অসম্ভব একজন ঠাট্টাপ্রিয় মানুষ। ব্যক্তিজীবনে তিনি খুবই রসিক, চমৎকার গল্পও বলতেন। আর এ হাস্যরসের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর রচনায় মধ্যবিত্তের হাসিকান্না, যাপিত জীবন তুলে ধরেছেন। কথাসাহিত্যে প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটলেও তিনি শুরু করেছিলেন কবিতা দিয়ে। এরপর নাটক, ছোটদের জন্য লেখা, সায়েন্স ফিকশন, চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শিল্প-সাহিত্যের যেখানেই তিনি হাত দিয়েছেন, সেখানেই ফলেছে সোনা, মণিমুক্তা।
No comments