নীরবতা ভাঙল উত্তর কোরিয়া আটক জাহাজ ফেরতের দাবি
পানামায় নিজেদের জাহাজ আটক করার বিষয়ে
নীরবতা ভেঙেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটি আটক জাহাজটি ফেরত দেওয়ার জন্য পানামার
কাছে দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে পানামা জাহাজটিতে পরিদর্শন চালাতে
জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার মিত্র কিউবা ইতিমধ্যে
বলেছে, ওই জাহাজে তাদের কিছু সেকেলে অস্ত্র মেরামতের জন্য এশীয় দেশটিতে
পাঠানো হয়েছিল। উত্তর কোরিয়ার বার্তা সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ
এজেন্সির প্রকাশ করা (কেসিএনএন) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ওই কার্গো পুরোনো কিছু অস্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।
একটি বৈধ চুক্তির আওতায় ওই অস্ত্রগুলো মেরামতের পর কিউবায় ফেরত পাঠানোর
কথা ছিল।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আটক জাহাজটি এবং এর নাবিকদের কোনো
প্রকার বিলম্ব না করে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে পানামার কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা
নিতে হবে।’ কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগ
দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, জাহাজটির ওই চালান কিউবার সঙ্গে সম্পাদিত
একটি বৈধ চুক্তির আওতাভুক্ত। এর আগে কিউবা বলেছিল, চোং চোন গ্যাং নামের
জাহাজটিতে পরিবহন করা মূল চালান চিনির সঙ্গে থাকা সামরিক
অস্ত্র-সরঞ্জামগুলো সোভিয়েত আমলে তৈরি। ‘সেকেলে’ ওই ক্ষেপণাস্ত্র এবং
যন্ত্রপাতিগুলো উত্তর কোরিয়ায় মেরামতের জন্য পাঠানো হয়েছিল। উত্তর
কোরিয়াও এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছে। পানামা গত সোমবার প্রশান্ত মহাসাগর ও
আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে সংযোগকারী পানামা খাল পার হয়ে কিউবার দিকে
অগ্রসর হতে থাকা জাহাজটি আটক করে। মাদকদ্রব্যের চালান রয়েছে, এমন সন্দেহে
তাতে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্র পাওয়ার তথ্য প্রকাশ করে দেশটি। এ ঘটনার সময়
জাহাজটির ক্যাপ্টেন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছিলেন পানামার
প্রেসিডেন্ট রিকার্ডো মার্টিনেইলি। জাহাজে থাকা মালামালের ব্যাপারে এর ৩৫
জন নাবিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের ছয় বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে
বলে পানামার মাদকবিরোধী আদালতের অভিযোক্তা হাভিয়ার কারাবালো বুধবার
সাংবাদিকদের বলেছেন। পুলিশ জাহাজটির চিনির বস্তাগুলো খালাস করছে। তারা আরও
অস্ত্র লুকানো আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে। এদিকে পানামার কর্তৃপক্ষ বলেছে,
তারা আটক জাহাজটিতে অনুসন্ধান চালাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি
আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী হোসে রাউল মুলিনো বলেন,
‘বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের হাতে হস্তান্তর করা হচ্ছে। কী করতে
হবে সে ব্যাপারে তারাই সিদ্ধান্ত নেবে।’ জাহাজটির সব মালামাল নামানো শেষ
হলে আগস্ট মাসের শুরুর দিকে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচজন তদন্তকারী পানামায়
পৌঁছাবেন বলে দেশটির সরকার আশা করছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন পানামার
পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, নিরাপত্তা পরিষদের অবরোধ কমিটি
বিষয়টিকে দ্রুততার সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। বিতর্কিত
পরমাণু কর্মসূচির কারণে উত্তর কোরিয়ার ওপরে জাতিসংঘের যে অবরোধ বলবৎ
রয়েছে, তার আওতায় দেশটি ক্ষুদ্র অস্ত্র ছাড়া কোনো প্রকার অস্ত্র আমদানি
বা রপ্তানি করতে পারে না। ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আগেও বিভিন্ন সময়ে দেশটির
সন্দেহভাজন জাহাজে তল্লাশি করা হয়েছে। রয়টার্স ও এএফপি।
No comments