জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে by ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন
উৎসবমুখর পরিবেশেই নির্বাচন হতে যাচ্ছে
চারটি সিটি করপোরেশনে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন
মোটামুটি আগের কমিশনের পথেই এগিয়ে চলেছে। নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা
হয়েছে ব্যাপক।
পরিস্থিতি অনুযায়ী তাকে অতিরিক্তই বলা যায়।
সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সাবধানতার কথা বলতে হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে
রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা দুর্বলতা আছে বলে আমার
মনে হয়েছে। বরিশালে যে ঘটনা ঘটেছে সেটাকে এরই পরিণতি বলে মনে করা যেতে
পারে। সেখানকার ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়াবাড়িও হতে পারত। কিন্তু সেখানকার
প্রার্থীরা সেই পথে এগিয়ে যাননি, যা কাঙ্ক্ষিতও।
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ থাকতে পারে। এমন অভিযোগ-পাল্টাঅভিযোগ সাধারণত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে। তবে আমরা কমিশনে থাকাকালে যেসব নির্দেশনা প্রতিষ্ঠা করে এসেছি, সেই কারণে কারচুপি করে পার পাওয়া কঠিন হবে বৈকি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও তাই অনুসরণ করছে। আরেকটি বিষয়, কারচুপি করে এখন বাঁচা যায় না। অনেক দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকে নির্বাচনে। তথ্য ও প্রচারমাধ্যম এখন অনেক শক্তিশালী। প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমগুলো জনগণের সামনে যেকোনো ঘটনাকে তুলে ধরছে। এত চোখকে ফাঁকি দিয়ে কিছু করে ফেলা এত সহজ নয়। আইনও আছে প্রয়োজনীয়। যদি সেই আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে কারচুপি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
সিটি করপোরেশনের নির্বাচন একটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। জাতীয় বিষয়ও এই নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর কারণেই এটা হয়েছে। সামনেই রয়েছে জাতীয় নির্বাচন। স্বাভাবিক কারণেই জাতীয় নির্বাচনের কিছু আবহাওয়া এমনিতেই আছে। সেই সঙ্গে প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচিতি, প্রার্থীদের সমর্থিত দলগুলোর নেতা-মন্ত্রীদের নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার মতো ঘটনায় স্থানীয় সরকারের নির্বাচন এখন জাতীয় নির্বাচনের মহড়া বলে মনে হতে পারে। প্রার্থীদের দাবিদাওয়া এবং তাঁদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা-প্রতিশ্রুতিগুলো দেখুন। এক পক্ষ বলছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা, আরেক পক্ষ বলছে সরকারকে বাধ্য করা হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করার ব্যাপারে। ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এখন প্রকারান্তরে জাতীয় নির্বাচনের মতোই গুরুত্ব পেয়ে গেছে। এই রাজনৈতিকীকরণের ব্যাপারটা সাদামাটাভাবে শেষ হয়ে যাবে, এমন বলা যায় না। নির্বাচনে যদি বিরোধী দল জয়ী হয় তাহলে এক ধরনের উত্তেজনা থাকবে। তারা বলবে, সারা দেশে সরকারবিরোধী মানসিকতার জয় হয়েছে। সর্বোপরি আমাদের আন্দোলনের সুফল এটা। বলবে, সরকারের জনপ্রিয়তা কতটা কমে গেছে, এর প্রমাণ এটা। আর যদি সরকারি দল বিজয়ী হয় তাহলে কারচুপির অভিযোগ উত্থাপন করবে জোরালোভাবে।
আবার জাতীয় সংসদের নির্বাচনের সঙ্গে এর পার্থক্য আছে। জাতীয় সংসদের নির্বাচনের সঙ্গে দলের ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয়টি জড়িত। কিন্তু এই নির্বাচনে কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়া নির্ভর করে না। তা সত্ত্বেও এই নির্বাচনকে জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোই। তারা ঘটা করে মনোনয়ন দেওয়ার মতো প্রার্থীদের দলীয় সমর্থন জ্ঞাপন করেছেন। এখন ফল ভালো-মন্দ যাই হোক, তার প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়াটা স্বাভাবিক। শুধু তাই নয়, নির্বাচনের আগে মন্ত্রী-নেতাদের নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী মহানগরীতে নির্বাচনের আগে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সব মিলে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আর এটা নেই।
নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি হয়েছে। এটা কালো টাকা কিংবা সাদা টাকা বড় কথা নয়। টাকা ছড়ানো প্রতিরোধ করতে উন্নত কোনো কৌশল আসলে আমরা বের করতে পারিনি। আমাদের সময় কিছুটা সফল হয়েছিলাম নির্বাচনী এলাকায় কমিটি করে দেওয়ার মাধ্যমে। এই কমিটির কাছে দৈনন্দিন খরচের একটা হিসাব জমা দিতে হতো। এতে করে কিছুটা ফল পাওয়া গেছে। এখন নির্বাচন কমিশন তেমন কিছু করেছে কি না জানি না।
আর টাকা ছড়ানোর ব্যাপারটা আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। নির্বাচনের সংস্কৃতিও বলা যায়। অতীতেও হয়েছে, এখনো হচ্ছে। তবে এখন কিন্তু মানুষ আর আগের মতো নেই। অনেক সচেতন হয়ে গেছে তারা। টাকার বিনিময়ে ভোট পাওয়া যাবে, এর নিশ্চয়তা নেই। যদি এমন হতো তাহলে নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লার ভোটের ফল ভিন্ন রকমও হতে পারত।
স্থানীয় সরকার পদ্ধতিকে হয়তো দলীয়করণ করা হোক নতুবা সংবিধান অনুযায়ী নির্দলীয় ব্যবস্থার অধীনে নিশ্চিত করা হোক। অরাজনৈতিক কিন্তু রাজনীতির পুরো ব্যবহার করে যে নির্বাচন হয়, তার স্বকীয় ধারা প্রতিষ্ঠা হয় কী করে?
এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। আসলে এ ব্যাপারটিও আমাদের খেয়াল করতে হবে। আমাদের সংবিধান এমন কোনো বাধা দেয়নি, যাতে কোনো কম শিক্ষিত লোক নির্বাচন কিংবা রাজনীতি করতে পারবেন না। কারণ শিক্ষিত মানে তো শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই বোঝায় না। এর পরও একটা কথা আছে, আমাদের এখানে শিক্ষিতের হারও তেমন নয়। যে কারণে ইচ্ছা থাকলেও শিক্ষাগত যোগ্যতা বেঁধে দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরও একটা কথা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, যুগ হচ্ছে আধুনিক। এখানে নিরক্ষর কিংবা অশিক্ষিত লোকের পক্ষে তাল মিলিয়ে চলা কষ্টকর বৈকি।
এবারের নির্বাচনে হানাহানি হয়েছে কম। অত্যন্ত আশাপ্রদ পরিবেশ হিসেবে বর্ণনা করা যায়। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশই আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তবে নির্বাচন কমিশন যদি আরেকটু শক্ত থাকত তাহলে সামান্য যেটুকু খারাপ পরিস্থিতি হয়েছে, সেটাও হতো না।
আজকের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে, যাতে কোনো কারচুপির আশ্রয় কেউ নিতে না পারে। আমাদের এখানে নির্বাচনী ফল প্রত্যাখ্যান করার কৌশল পুরনো। এখনো পরাজিত প্রার্থী বলে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে।
এমন অভিযোগের পেছনে শক্তিশালী প্রমাণাদি হাজির না করতে পারলে কারচুপির অভিযোগ উত্থাপন করে কোনো লাভ হবে না। (অনুলিখন)
লেখক : সাবেক নির্বাচন কমিশনার
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ থাকতে পারে। এমন অভিযোগ-পাল্টাঅভিযোগ সাধারণত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে। তবে আমরা কমিশনে থাকাকালে যেসব নির্দেশনা প্রতিষ্ঠা করে এসেছি, সেই কারণে কারচুপি করে পার পাওয়া কঠিন হবে বৈকি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও তাই অনুসরণ করছে। আরেকটি বিষয়, কারচুপি করে এখন বাঁচা যায় না। অনেক দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকে নির্বাচনে। তথ্য ও প্রচারমাধ্যম এখন অনেক শক্তিশালী। প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমগুলো জনগণের সামনে যেকোনো ঘটনাকে তুলে ধরছে। এত চোখকে ফাঁকি দিয়ে কিছু করে ফেলা এত সহজ নয়। আইনও আছে প্রয়োজনীয়। যদি সেই আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে কারচুপি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
সিটি করপোরেশনের নির্বাচন একটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। জাতীয় বিষয়ও এই নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর কারণেই এটা হয়েছে। সামনেই রয়েছে জাতীয় নির্বাচন। স্বাভাবিক কারণেই জাতীয় নির্বাচনের কিছু আবহাওয়া এমনিতেই আছে। সেই সঙ্গে প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচিতি, প্রার্থীদের সমর্থিত দলগুলোর নেতা-মন্ত্রীদের নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার মতো ঘটনায় স্থানীয় সরকারের নির্বাচন এখন জাতীয় নির্বাচনের মহড়া বলে মনে হতে পারে। প্রার্থীদের দাবিদাওয়া এবং তাঁদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা-প্রতিশ্রুতিগুলো দেখুন। এক পক্ষ বলছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা, আরেক পক্ষ বলছে সরকারকে বাধ্য করা হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করার ব্যাপারে। ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এখন প্রকারান্তরে জাতীয় নির্বাচনের মতোই গুরুত্ব পেয়ে গেছে। এই রাজনৈতিকীকরণের ব্যাপারটা সাদামাটাভাবে শেষ হয়ে যাবে, এমন বলা যায় না। নির্বাচনে যদি বিরোধী দল জয়ী হয় তাহলে এক ধরনের উত্তেজনা থাকবে। তারা বলবে, সারা দেশে সরকারবিরোধী মানসিকতার জয় হয়েছে। সর্বোপরি আমাদের আন্দোলনের সুফল এটা। বলবে, সরকারের জনপ্রিয়তা কতটা কমে গেছে, এর প্রমাণ এটা। আর যদি সরকারি দল বিজয়ী হয় তাহলে কারচুপির অভিযোগ উত্থাপন করবে জোরালোভাবে।
আবার জাতীয় সংসদের নির্বাচনের সঙ্গে এর পার্থক্য আছে। জাতীয় সংসদের নির্বাচনের সঙ্গে দলের ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয়টি জড়িত। কিন্তু এই নির্বাচনে কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়া নির্ভর করে না। তা সত্ত্বেও এই নির্বাচনকে জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোই। তারা ঘটা করে মনোনয়ন দেওয়ার মতো প্রার্থীদের দলীয় সমর্থন জ্ঞাপন করেছেন। এখন ফল ভালো-মন্দ যাই হোক, তার প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়াটা স্বাভাবিক। শুধু তাই নয়, নির্বাচনের আগে মন্ত্রী-নেতাদের নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী মহানগরীতে নির্বাচনের আগে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সব মিলে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আর এটা নেই।
নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি হয়েছে। এটা কালো টাকা কিংবা সাদা টাকা বড় কথা নয়। টাকা ছড়ানো প্রতিরোধ করতে উন্নত কোনো কৌশল আসলে আমরা বের করতে পারিনি। আমাদের সময় কিছুটা সফল হয়েছিলাম নির্বাচনী এলাকায় কমিটি করে দেওয়ার মাধ্যমে। এই কমিটির কাছে দৈনন্দিন খরচের একটা হিসাব জমা দিতে হতো। এতে করে কিছুটা ফল পাওয়া গেছে। এখন নির্বাচন কমিশন তেমন কিছু করেছে কি না জানি না।
আর টাকা ছড়ানোর ব্যাপারটা আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। নির্বাচনের সংস্কৃতিও বলা যায়। অতীতেও হয়েছে, এখনো হচ্ছে। তবে এখন কিন্তু মানুষ আর আগের মতো নেই। অনেক সচেতন হয়ে গেছে তারা। টাকার বিনিময়ে ভোট পাওয়া যাবে, এর নিশ্চয়তা নেই। যদি এমন হতো তাহলে নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লার ভোটের ফল ভিন্ন রকমও হতে পারত।
স্থানীয় সরকার পদ্ধতিকে হয়তো দলীয়করণ করা হোক নতুবা সংবিধান অনুযায়ী নির্দলীয় ব্যবস্থার অধীনে নিশ্চিত করা হোক। অরাজনৈতিক কিন্তু রাজনীতির পুরো ব্যবহার করে যে নির্বাচন হয়, তার স্বকীয় ধারা প্রতিষ্ঠা হয় কী করে?
এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। আসলে এ ব্যাপারটিও আমাদের খেয়াল করতে হবে। আমাদের সংবিধান এমন কোনো বাধা দেয়নি, যাতে কোনো কম শিক্ষিত লোক নির্বাচন কিংবা রাজনীতি করতে পারবেন না। কারণ শিক্ষিত মানে তো শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই বোঝায় না। এর পরও একটা কথা আছে, আমাদের এখানে শিক্ষিতের হারও তেমন নয়। যে কারণে ইচ্ছা থাকলেও শিক্ষাগত যোগ্যতা বেঁধে দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরও একটা কথা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, যুগ হচ্ছে আধুনিক। এখানে নিরক্ষর কিংবা অশিক্ষিত লোকের পক্ষে তাল মিলিয়ে চলা কষ্টকর বৈকি।
এবারের নির্বাচনে হানাহানি হয়েছে কম। অত্যন্ত আশাপ্রদ পরিবেশ হিসেবে বর্ণনা করা যায়। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশই আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তবে নির্বাচন কমিশন যদি আরেকটু শক্ত থাকত তাহলে সামান্য যেটুকু খারাপ পরিস্থিতি হয়েছে, সেটাও হতো না।
আজকের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে, যাতে কোনো কারচুপির আশ্রয় কেউ নিতে না পারে। আমাদের এখানে নির্বাচনী ফল প্রত্যাখ্যান করার কৌশল পুরনো। এখনো পরাজিত প্রার্থী বলে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে।
এমন অভিযোগের পেছনে শক্তিশালী প্রমাণাদি হাজির না করতে পারলে কারচুপির অভিযোগ উত্থাপন করে কোনো লাভ হবে না। (অনুলিখন)
লেখক : সাবেক নির্বাচন কমিশনার
No comments