সেচ- পানির সত্মর নেমে যাচ্ছে, নদীর পানি ও বৃষ্টির পানি ব্যবহার করম্নন প্রধানমন্ত্রী
দেশের ভূগর্ভস্থ পানির সত্মর ঠিক রাখতে কৃষি সেচে নদীর পানি ব্যবহারের ওপর গুরম্নত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কৃষি সেচে এখন মাটির নিচ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন করা হচ্ছে।
ফলে ভূগর্ভস্থ পানির সত্মর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এক সময় তা পরিবেশের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অথচ সরকারী বেসরকারী উদ্যোগে যদি নদী খননের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা বা প্রবাহ বাড়ানো যায় তাহলে ওই পানি দিয়েই সেচের পানির ব্যবস্থা করা যায়। প্রয়োজনীয় নদীগুলোকে খনন করা গেলে ভূগর্ভস্থ পানির সত্মর, বিদু্যত এবং কৃষকদের খরচ সবই বাঁচানো সম্ভব। তাই দেশের প্রয়োজনীয় নদীগুলো খনন করতে প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহণের জন্য সংশিস্নষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।মঙ্গলবার শেরে বাংলানগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (এনইসি) অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) এসব কথা বলেছেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের জলাভূমি বাঁচানোর ওপরও গুরম্নত্বারোপ করে তিনি বলেছেন, এখন থেকে কৃষি সেচে ব্যবহারের জন্য জলাভূমির পানি কিভাবে ধরে রাখা যায় একই সঙ্গে এসব জলাভূমি কিভাবে বাঁচানো যায় তাও চিনত্মা করে দেখার ওপর গুরম্নত্বারোপ করেন তিনি। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে শেখ হাসিনা সবার উদ্দেশ্যে বলেছেন, শুধু বর্তমান সময়ের কথা চিনত্মা করলে চলবে না। আগামী প্রজন্ম কিভাবে চলবে সে চিনত্মা এখন থেকেই করা উচিত। আমরা এখন যদি অতিমাত্রায় ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করি তাহলে আগামী প্রজন্ম বিপদে পড়ে যাবে। তাঁর মতে, বৃষ্টির পানি ধারে রাখার পাশাপাশি সকল নদীর নাব্য ও পানির প্রবাহ ধরে রাখা গেলে নদীর পানি দিয়েই সেচের পানিসহ প্রয়োজনীয় সকল কাজ সম্পন্ন করা যায়। তাই এ ব্যাপারে সকলকে চোখ কান খোলা রেখে যার যার এলাকার নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করতে নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি প্রয়োজনীয় নদী খননের জন্য প্রকল্প তৈরি করে একনেকে উপস্থাপন করতে বলেছেন।
এ দিকে বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) একে খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার গাজনা বিলের সংযোগ নদী খনন এবং মংস্য চাষ প্রকল্পসহ মোট ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট এক হাজার ৩শ' ১৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে ১শ' ৬৬ কোটি টাকা টাকার প্রকল্প সাহায্য ছাড়া বাকি ১ হাজার ১শ' ৪৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে রাজস্ব তহবিল থেকে।
প্রকল্পগুলো হচ্ছে, সড়ক ও রেলপথ বিভাগের ' রায়পুরা-নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, ব্যয় ৮৩ কোটি টাকা। পরিবহণযোগ্য ইস্পাত সেতু সংগ্রহ/স্থাপন প্রকল্প। এ প্রকল্পটির জন্য মোট ৩শ' ৬৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ফৌজদারহাট-সজিপিওয়াই- এসআরভি চট্টগ্রাম সেকশনের পুনর্বাসন প্রকল্প, যার ব্যয় ৮৩ কোটি টাকা। চট্টগাম ইপিজেড-এর একতলা কারখানা ভবনের পরিবর্তে চারতলা ভবন কারখানা নির্মাণ প্রকল্প, এতে ৩১ কোটি টাকা ব্যয় হবে। মৎস্য এবং পোল্ট্রি ফার্মের জন্য টিকা উৎপাদন প্রযুক্তি আধুনিকায়ন এবং গবেষণা সম্প্রসারণ প্রকল্প, এতে মোট ৫৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। পার্বত্য জেলাসমূহের ৬টি সড়ক নির্মাণ এবং উন্নয়ন প্রকল্প, এতে মোট ব্যয় হবে ২শ' ৮৪ কোটি টাকা। সর্বশেষ পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলের সংযোগ নদী খনন, সেচ সুবিধার উন্নয়ন এবং মৎস্য চাষ প্রকল্প। ৪শ' ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই গুরম্নত্বপূর্ণ প্রকল্পটি বাসত্মবায়ন করা হবে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পানি সম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনসহ সংশিস্নষ্ট মন্ত্রীগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সকল উপদেষ্টাসহ আরও অনেকে ওই বেঠকে উপস্থিত ছিলেন।
No comments