ভর্তি ফি ১২ থেকে ১৪ লাখ!- এসব বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজের বিষয়ে সরকারী উচ্চ পর্যায়ের নজরদারি প্রয়োজন
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, বাংলাদেশে বেসরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে ভর্তি ফি ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকা। এ বিষয়ে কোন নীতিমালা নেই। বস্তুত বেসরকারী শিক্ষাখাতে এখন যেন রীতিমতো নৈরাজ্য চলছে, বিশেষ করে বেসরকারী এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করা হচ্ছে। এমনকি এ ধরনের কোন কোন কলেজে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভর্তি ফি এরও অধিক আদায় করছে বলে শোনা যায়।
শিক্ষাবিদরা একে ভর্তিবাণিজ্য বা সার্টিফিকেট বাণিজ্য বলে অভিহিত করেছেন। কারণ এ ধরনের বেশিরভাগ কলেজই তেমন মানসম্পন্ন নয়। কোন কোনটিতে উপযুক্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তা নেই বললেই চলে; সেই সঙ্গে নেই শিক্ষার পর্যাপ্ত উপকরণও। বিগত জোট সরকারের আমলে সারাদেশে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এ ধরনের বেশকিছু বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। এখনও এই উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। তবে এই প্রক্রিয়ায় বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর যা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত।এক সময় দেশে হাতেগোনা কয়েকটি সরকারী মেডিক্যাল কলেজ ছিল। স্বাধীনতার পর এদেশে সরকারী উদ্যোগে বেশকিছু মেডিক্যাল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। বিগত চল্লিশ বছরেরও বেশি সময়ে সরকারী মেডিক্যাল কলেজসমূহ থেকে এমবিবিএস পাস করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চিকিৎসক রাজধানীসহ দেশের নানা অঞ্চলে কর্মরত রয়েছেন। এই চিকিৎসকের সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। সাধারণত মেধাবী ছাত্রছাত্রীরাই মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পান। তবে আমাদের জনসংখ্যার তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা এখনও কম। মেধাবী অনেক ছাত্রছাত্রীই এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে ভর্তি হতে চান। এ চাহিদার কারণেই বেসরকারী উদ্যোগে কিছু মেডিক্যাল কলেজ গড়ে উঠেছে। এখানে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি ফি ও অন্যান্য খরচ এত বেশি যে, মূলত বিত্তবানদের সন্তানরা এখানে পড়াশোনা করতে পারেন। এসব কলেজে যারা ভর্তি হয়, তাদের অনেকেরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল ভাল নয়।
এসব বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজের বিষয়ে সরকারী উচ্চ পর্যায়ের নজরদারি প্রয়োজন। সেসব কলেজে ভর্তি ফি অত্যধিক; তা ব্যবসায়িক উদ্দেশে স্থাপিত হয়েছে সেটা পরিষ্কার। দেখতে দরকার এখানে ভর্তি ফি ও অন্যান্য খরচ এত বেশি কেন?
No comments