বিপর্যয় সৃষ্টির আগেই দূষিত পানির প্রকোপ থামান- অক্ষম ঢাকা ওয়াসা

রাজধানীতে রমজান মাসে পানির সমস্যা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ঢাকা ওয়াসা। অথচ ওয়াসার পানি দুর্গন্ধ ছাড়ছে না, বাড়তি উপহার হিসেবে থাকছে পোকার সরবরাহ। কথা দিয়ে কথা না রাখা, অভিযোগ উঠলে দায় অস্বীকার করা, সমাধানে গড়িমসি করাই হয়ে দাঁড়িয়েছে ওয়াসার কাজের ধরন।


সেবার নমুনা এ রকম হলে জনগণের অর্থে প্রতিপালিত এসব প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি বলে কিছু থাকে কি? দূষিত পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ার দায়ও ওয়াসা কীভাবে অস্বীকার করবে?
অথচ ৯ জুলাই ওয়াসা কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিল, রমজানে নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি তো মিলবেই, উপরন্তু ভ্রাম্যমাণ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে, ১৫টি অভিযোগকেন্দ্র ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে, পরিদর্শক দল সজাগ থাকবে, আঞ্চলিক কর্মকর্তারা প্রস্তুত থাকবেন ইত্যাদি। বাস্তবে এসবের কিছুই দেখা যায়নি। একটি ঘটনায় ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজে প্রথম আলোর প্রতিবেদকের কাছে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েও পরে বেমালুম ভুলে গেছেন। রাজধানীর বহু এলাকা থেকেই পানি না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মনে রাখতে হবে, কয়েক বছর আগে পানির দাবিতে শনির আখড়ায় জনরোষের তাড়ায় স্থানীয় সাংসদকে পালাতেও হয়েছিল। গত বছরও রমজানের সময় ঢাকায় পানির ঘাটতি ছিল।
নোংরা পানির কারণে অনেক এলাকায় লোকজন বাসা পরিবর্তন করছে। পরিস্থিতি এ রকম থাকলে রাজধানীতে স্বাস্থ্যবিপর্যয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ার সংবাদও পাওয়া যাচ্ছে। ঘরে ঘরে জ্বরজারি বাড়ার সঙ্গে এর সম্পর্ক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বেশির ভাগ দেশেই গণসেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি তত্ত্বাবধানে থাকে, যাতে সেবা প্রদান অবাণিজ্যিক ও নিরবচ্ছিন্ন থাকে। বাংলাদেশে জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যর্থতার জন্য সরকারি সচেষ্টতার অভাবই দায়ী। পরিস্থিতির দাবি একটাই, মামুলি খুটখাট ছেড়ে সেবা খাতে নৈরাজ্য বন্ধে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিতে হবে। সংকট তো নতুন নয়, তাহলে সমাধান হচ্ছে না কেন?
বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাসের সমস্যা নিয়ে আধুনিক জীবন কোনোভাবেই চলতে পারবে না।

No comments

Powered by Blogger.