তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে লোকসভা অচল, অন্ধ্রে ধর্মঘট
তেলেঙ্গানাকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবিতে গতকাল বুধবার ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভা কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এপিদের হট্টগোলের মুখে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিনবার অধিবেশন মুলতবি করা হয়। এ ছাড়া হায়দরাবাদসহ অন্ধ্র প্রদেশের প্রায় ১০টি জেলায় গতকাল টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ধর্মঘট পালিত হয়।
তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে মঙ্গলবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট চলছে এসব এলাকায়।
অন্ধ্র প্রদেশ ভেঙে পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের দাবিতে স্থানীয় পর্যায়ে আন্দোলন শুরু হলে ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অন্ধ্রপ্রদেশ জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি শ্রী কৃষ্ণকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তেলেঙ্গানা বিষয়ে ছয়টি আলাদা সুপারিশ করে ডিসেম্বরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় শ্রী কৃষ্ণ কমিশন। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পার্লামেন্টের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়।
গতকাল সকাল ১১টায় লোকসভার অধিবেশন শুরুর পরপরই তেলেঙ্গানা রাজ্যের সমর্থক এমপিরা হট্টগোল শুরু করেন। তেলেঙ্গানা ইস্যু উত্থাপনের দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন কংগ্রেস এমপি প্রভাকর, এম জগন্নাথ, জি বিবেকানন্দসহ তেলেঙ্গানা-সংশ্লিষ্ট এলাকার আরো কয়েকজন এমপি। তেলেগু দেশম পার্টির এমপিরাও তাতে যোগ দেন। প্রশ্নোত্তর পর্বের পরে জিরো আওয়ারে এ বিষয়ে কথা বলতে পারবেন বলে এমপিদের শান্ত করার চেষ্টা করেন স্পিকার মীরা কুমার। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ২০ মিনিটের জন্য অধিবেশন মুলতবি করেন তিনি। অধিবেশন পুনরায় শুরু হলে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে আরো দুইবার অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং গতকালের অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় নেতা সুষমা স্বরাজ পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে বলেন, 'তেলেঙ্গানা এলাকার সব কিছুই স্থবির হয়ে আছে। চলছে কেবল রাবার বুলেট। বিষয়টি সঠিকভাবে সমাধান করা যায়। প্রধানমন্ত্রীও আজ এখানে আছেন। তিনি যদি আশ্বাস দেন, চলতি অধিবেশনেই পৃথক তেলেঙ্গানার ব্যাপারে সরকার বিল উত্থাপন করবে, তাহলে আমরা তাতে সমর্থন দেব।'
তেলেঙ্গানা ইস্যুতে হায়দরাবাদসহ অন্ধ্র প্রদেশের প্রায় ১০ জেলায় গতকালও ধর্মঘট পালিত হয়। তেলেঙ্গানা জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির ডাকা এ ধর্মঘটে সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিকাংশ দোকানপাট, ব্যবসাকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। রাস্তাঘাটও ছিল যানবাহনশূন্য। তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি, বিজেপি, সিপিআই ধর্মঘটে সমর্থন দিয়েছে। ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে গতকাল পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীগুলো সতর্কাবস্থায় ছিল। আগের দিন দুই হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে তারা। সূত্র : পিটিআই।
No comments