রাজনৈতিক সুস্বপ্ন

চারদিকে হানাহানি, মারামারি, বাগিবতণ্ডা। এই যখন রাজনীতির অবস্থা, তখন কিছু রাজনৈতিক সুস্বপ্ন দেখেছেন
আলিম আল রাজি ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি আদর গতকাল রাজধানীর পল্টন এলাকা হঠাৎ ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি আদরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরের দিকে হঠাৎ ছাত্রলীগ একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি পল্টন এলাকায় পৌঁছালে উল্টো দিক থেকে ছাত্রদলের আরেকটি মিছিল আসে। দুটি মিছিল মুখোমুখি হলে দৃশ্যপট বদলে যায় হঠাৎ। দুই দলের নেতা-কর্মীরা প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীদের গায়ে-মাথায় হাত বোলাতে থাকেন। এ সময় তাঁদের বলতে শোনা যায়, বেঁচে থাকো বাবা, বেঁচে থাকো। একে অপরের আচরণে দুই দলের নেতা-কর্মীই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেকে তখন হাউমাউ করে কান্নাকাটি শুরু করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবার মাঝে এক পিস টিস্যু আর একটি করে লাল গোলাপ সরবরাহ করেন। এদিকে হাত বোলানোর কারণে অনেকে আরামে রাস্তায়ই ঘুমিয়ে পড়েন বলে জানিয়েছে আরেকটি সূত্র। ঘুমিয়ে নাক ডাকতে শুরু করেন অনেকে। তাঁদের নাক ডাকার শব্দে এলাকায় শব্দদূষণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিবেশবাদীরা।

সংসদে মিষ্টি মিষ্টি কবিতা আবৃত্তি
অনেক দিন পর সংসদে ফিরে সবাইকে মিষ্টি মিষ্টি কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়েছেন বিরোধী দলের সাংসদেরা। কবিতার জবাবে ছড়া আবৃত্তি করে শোনান সরকারদলীয় এমপিরা। এ সময় জাতীয় সংসদে এক মনোরম পরিস্থিতির অবতারণা হয়। একে অপরের ছড়া ও কবিতা শুনে মুগ্ধ হয়ে যান স্পিকারসহ উপস্থিত সবাই। একযোগে সবাই টেবিল চাপড়িয়ে বাহবা জানান আবৃত্তিশিল্পীদের। এ সময় কিছু ছড়া অতিরিক্ত মিষ্টি হয়ে যাওয়ায় আপত্তি তোলেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কয়েকজন সাংসদ। বিশেষ করে বিরোধীদলীয় সাংসদ সৈয়দ আসিফা আশরাফি পাপিয়ার ছড়াটি মাত্রাতিরিক্ত মিষ্টি হয়ে যাওয়ায় তাঁর ছড়া এক্সপাঞ্জ করার জন্য অনুরোধ জানান স্পিকার। সৈয়দ আসিফা আশরাফি পাপিয়ার ছড়াটি ছিল এ রকম—
আটুল বাটুল শ্যামলা শাটুল শ্যামলা গেল হাটে
আমাদের চিল্লানিতে সংসদ যে ফাটে!
আর ফেটো না আর ফেটো না, আমি আছি ভাই
মুখের চোটে হয়ে যাবে অন্য সবাই ছাই।

বিরোধী দলের সমাবেশ সম্প্রচার করতে হবে
রেডিও-টেলিভিশনকে সরকারের নির্দেশ
সব রেডিও-টেলিভিশনকে বিরোধী দলের সমাবেশ সরাসরি সম্প্রচারের জন্য নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যেভাবেই হোক, বিরোধী দলের সমাবেশ সরাসরি দেখাতে হবে। না দেখালে খবর আছে। এদিকে এ রকম নির্দেশ পেয়ে বিপাকে পড়েছে রেডিও স্টেশনগুলো। নিখিল বঙ্গ রেডিও সমিতির সভাপতি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এ কি বিপদে পড়লাম ভাই বলেন দেখি? রেডিওতে এখন সমাবেশ দেখাব কীভাবে!’ একটি সূত্র জানায়, এর জন্য রেডিওর আবিষ্কারক মার্কনিকে দায়ী করছেন রেডিও-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁদের ধারণা, মার্কনি সাহেব রেডিওতে ছবি দেখানোর একটা সিস্টেম করে দিলেই আজকে এ বিপদে পড়তে হতো না তাঁদের। এদিকে মার্কনিকে আসামি করে সরকার একটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে আরেকটি সূত্র। সরকার মনে করে, মার্কনির কারণেই আজ রেডিও বিরোধী দলের সমাবেশ দেখাতে পারছে না। অথচ বিরোধী দলের সমাবেশ দেখানো দরকার। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘মার্কনির খবর আছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে ধরে কনি মারা হবে।’

সীমাহীন উন্নয়নের প্রতিবাদে
আগামীকাল সারা দেশে হরতাল ডেকেছে বিএনপি
আগামীকাল সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এক নেতা বলেন, সরকার সারা দেশে সীমাহীন উন্নয়নমূলক কাজ করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সরকার সব উন্নয়ন করে ফেললে আমরা পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় এসে করবটা কী? তখন আমাদের তো বসে বসে অলস দিন কাটানো ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না। আমাদের দলের বেশির ভাগ সদস্যের স্বাস্থ্য বেশ ভালো। ঘরে বসে কেবল খাওয়াদাওয়া করলে তাঁরা আরও মোটা হবেন। মোটা হলে ব্লাডপ্রেসার বাড়বে, হার্টের রোগ হবে, ডায়াবেটিস হবে। এটা হবে, ওটা হবে। আমরা অকালে মারা পড়ব। তাই আমরা ধারণা করছি, আমাদের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যেই সরকার এত উন্নয়ন করছে। আরেক নেতা ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, এখনই উন্নয়ন থামাতে হবে। সব উন্নয়ন করে ফেললে আমরা কি ঘোড়ার ঘাস কাটব? বিটিভির খবরে তখন কি ঘোড়ার ঘাস কাটা দেখাব? তাই কাল হরতাল। সরকার তেড়িবেড়ি বন্ধ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে সরকারদলীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁদের ফোনে শোনা যায়, ‘দুঃখিত, আপনার ডায়ালকৃত নম্বরের মালিক এই মুহূর্তে উন্নয়নকাজে ব্যস্ত আছেন। অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন। ধন্যবাদ।’

No comments

Powered by Blogger.