মেধা ও যোগ্যতার স্বীকৃতি চাই-বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চাকরি ত্যাগ
যে দেশে যেকোনো সরকারি চাকরি খুব কাঙ্ক্ষিত বিষয়, সেখানে গত পাঁচ বছরে দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলো থেকে ১৪৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন। এটি নিঃসন্দেহে কৌতূহলোদ্দীপক খবর। এ পাঁচ বছরের মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশিসংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সরকারি চাকরি ছেড়েছেন ২০১০ সালে।
ওই এক বছরেই ৪৪ জনের চাকরিত্যাগ কি এই ইঙ্গিত বহন করে যে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সরকারি চাকরি ত্যাগের প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে?
একটি দেশের সরকারি স্বাস্থ্য খাতের অবস্থার বিচারে এটি একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা। খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেই মন্তব্য করা হয়েছে, এই প্রবণতা ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা’ নিশ্চিত করার পথে বড় বাধা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক মন্তব্য করেছেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলো বেশি বেতন দিয়ে চিকিৎসকদের কিনে নিচ্ছে। বেশি সুবিধা পেলে চিকিৎসকেরা সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবেন—এটাকে স্বাভাবিক বলেই তিনি বর্ণনা করেন। কিন্তু এ কথা সম্ভবত সম্পূর্ণ সত্য নয় যে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চলে যাচ্ছেন শুধুই বেশি বেতন আর বেশি সুযোগ-সুবিধার কারণে। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে আরও কিছু বাস্তব কারণ তুলে ধরা হয়েছে।
যেমন—সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত চিকিৎসকদের পদায়ন, পদোন্নতি, বদলি ইত্যাদি ক্ষেত্রে মেধা ও দক্ষতার পরিবর্তে রাজনৈতিক পরিচয় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। একজন মেধাবী, দক্ষ, পরিশ্রমী ও দায়িত্ববান চিকিৎসক যদি এই পেশাগত গুণাবলির মর্যাদা না পান, তবে তাঁর মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। উপরন্তু শুধু রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার জোরেই যদি তাঁর চেয়ে কম মেধাবী, কম দক্ষ সহকর্মীরা পদায়ন, পদোন্নতি, বদলির ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব পান, তাহলে মেধাবীদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি দেখা দেয়।
এমনিতে সরকারি চিকিৎসকদের বেতন-ভাতা বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর তুলনায় অনেক কম; আর্থিক সুযোগ-সুবিধার বিচারে সরকারি চাকরি তাঁদের কাছে এখন আর লোভনীয় নয়। এই অবস্থার সঙ্গে পদায়ন-পদোন্নতিতে অন্যায্য বৈষম্য যুক্ত হয়েছে বলে তাঁদের মধ্যে চাকরি ছাড়ার প্রবণতা বাড়ছে।
কিন্তু এটি বেশ উদ্বেগের কথা। কারণ, সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম: ১৭টি মেডিকেল কলেজের মোট সাড়ে চার হাজার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদের অর্ধেকই শূন্য রয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ১৮৩টি পদের বিপরীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন মাত্র ৫৪ জন। এই অবস্থায় যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা চাকরি ছেড়ে দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চলে যেতে থাকেন, তাহলে সরকারি খাতের চিকিৎসাব্যবস্থায় গুরুতর সংকট সৃষ্টি হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের ধরাছোঁয়ার একদম বাইরে চলে যাবে।
তেমন অবস্থার সৃষ্টি যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সরকারি চাকরি ত্যাগের প্রবণতা বন্ধ করার কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, পেশাজীবী চিকিৎসকদের এবং সরকারের—উভয় পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষিত হয় এমন সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। প্রথম কাজটি হওয়া উচিত—চিকিৎসকদের পদায়ন, পদোন্নতি, বদলির ক্ষেত্রে সব ধরনের রাজনৈতিক বিবেচনা সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করা। মেধা, দক্ষতা এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূচকগুলোই হতে হবে তাঁদের পদায়ন-পদোন্নতি প্রদানের মাপকাঠি।
একটি দেশের সরকারি স্বাস্থ্য খাতের অবস্থার বিচারে এটি একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা। খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেই মন্তব্য করা হয়েছে, এই প্রবণতা ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা’ নিশ্চিত করার পথে বড় বাধা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক মন্তব্য করেছেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলো বেশি বেতন দিয়ে চিকিৎসকদের কিনে নিচ্ছে। বেশি সুবিধা পেলে চিকিৎসকেরা সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবেন—এটাকে স্বাভাবিক বলেই তিনি বর্ণনা করেন। কিন্তু এ কথা সম্ভবত সম্পূর্ণ সত্য নয় যে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চলে যাচ্ছেন শুধুই বেশি বেতন আর বেশি সুযোগ-সুবিধার কারণে। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে আরও কিছু বাস্তব কারণ তুলে ধরা হয়েছে।
যেমন—সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত চিকিৎসকদের পদায়ন, পদোন্নতি, বদলি ইত্যাদি ক্ষেত্রে মেধা ও দক্ষতার পরিবর্তে রাজনৈতিক পরিচয় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। একজন মেধাবী, দক্ষ, পরিশ্রমী ও দায়িত্ববান চিকিৎসক যদি এই পেশাগত গুণাবলির মর্যাদা না পান, তবে তাঁর মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। উপরন্তু শুধু রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার জোরেই যদি তাঁর চেয়ে কম মেধাবী, কম দক্ষ সহকর্মীরা পদায়ন, পদোন্নতি, বদলির ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব পান, তাহলে মেধাবীদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি দেখা দেয়।
এমনিতে সরকারি চিকিৎসকদের বেতন-ভাতা বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর তুলনায় অনেক কম; আর্থিক সুযোগ-সুবিধার বিচারে সরকারি চাকরি তাঁদের কাছে এখন আর লোভনীয় নয়। এই অবস্থার সঙ্গে পদায়ন-পদোন্নতিতে অন্যায্য বৈষম্য যুক্ত হয়েছে বলে তাঁদের মধ্যে চাকরি ছাড়ার প্রবণতা বাড়ছে।
কিন্তু এটি বেশ উদ্বেগের কথা। কারণ, সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম: ১৭টি মেডিকেল কলেজের মোট সাড়ে চার হাজার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদের অর্ধেকই শূন্য রয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ১৮৩টি পদের বিপরীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন মাত্র ৫৪ জন। এই অবস্থায় যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা চাকরি ছেড়ে দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চলে যেতে থাকেন, তাহলে সরকারি খাতের চিকিৎসাব্যবস্থায় গুরুতর সংকট সৃষ্টি হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের ধরাছোঁয়ার একদম বাইরে চলে যাবে।
তেমন অবস্থার সৃষ্টি যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সরকারি চাকরি ত্যাগের প্রবণতা বন্ধ করার কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, পেশাজীবী চিকিৎসকদের এবং সরকারের—উভয় পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষিত হয় এমন সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। প্রথম কাজটি হওয়া উচিত—চিকিৎসকদের পদায়ন, পদোন্নতি, বদলির ক্ষেত্রে সব ধরনের রাজনৈতিক বিবেচনা সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করা। মেধা, দক্ষতা এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূচকগুলোই হতে হবে তাঁদের পদায়ন-পদোন্নতি প্রদানের মাপকাঠি।
No comments